অনুসন্ধান
আর্কাইভ
বিভাগ
সম্পাদকীয়
সংখ্যা: ৩০২তম সংখ্যা | বিভাগ: সম্পাদকীয়
সম্পাদকীয়
সব প্রশংসা মুবারক খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য; যিনি সকল সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের নবী, রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত দুরূদ শরীফ ও সালাম মুবারক।
ইরান, ইসরায়েলের সাথে যুদ্ধ স্থগিতে- যেন হাফ ছেড়ে বেঁচেছে বিশ্ব মুসলিম। কিছু দিন পূর্বে পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধ বন্ধেও মুসলমান যেন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিলো। বিষয়টা কি তাই?
মুহাক্কিকগণ মনে করেন, এক্ষেত্রে অনুশোচনা বা তওবার দিকটি বহুমাত্রিক।
ভারতের সাথে যুদ্ধ বন্ধে এবং ইসরায়েলের সাথেও যুদ্ধ স্থগিতে পাকিস্তান এবং ইরান দুটি রাষ্ট্রই কিন্তু বিশ্ব সন্ত্রাসী, ইসলাম ও মুসলমান বিদ্বেষী কুখ্যাত আমেরিকার মোড়লী পানা দ্বারাই প্রভাবিত হয়। অপরদিকে মুসলিম উম্মাহর প্রাণ কেন্দ্র সৌদি আরবের প্রতিরক্ষামন্ত্রী প্রিন্স খালিদ বিন সালমান ৩০শে মে ২০২৫ (সৌদী রাজ পরিবারের কোন প্রভাবশালী সদস্য হিসাবে দুই দশকেরও বেশী সময় পর যে সফর করে) ইরানের সর্বোচ্চ নেতা খামেনীকে সতর্ক করে বলেছে, (সন্ত্রাসী) ট্রাম্পের সাথে চুক্তি করুন নইলে ইসরায়েলি হামলার ঝুঁকি নেন।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা খামেনির কাছে এই বিশেষ বার্তা পেঁৗছে দিতে সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ ছেলে প্রিন্স খালিদ বিন সালমানকে তেহরান সফরে পাঠায়।
ট্রাম্পকে সিজদা দিয়ে (নাউযুবিল্লাহ) ক্ষমতায় থাকতে হবে- এ শিরকী চেতনা বাস্তবেই যে মধ্যপ্রাচ্যের আমীর-বাদশাহর মধ্যে প্রবলভাবে বিরাজমান তা ট্রাম্পের সাম্প্রতিক সফরেও খুব কলঙ্কজনক এবং নির্লজ্জজনক ভাবে মাঝে প্রকাশ পেয়েছে। নাউযুবিল্লাহ!
বার্তাসংস্থা বলছে, ট্রাম্পের বিমান যখন সৌদির আকাশসীমায় প্রবেশ করে ঠিক তারপরই দেশটির বিমানবাহিনীর এফ-১৫ যুদ্ধবিমান তার বিমানকে এস্কোর্ট দিয়ে রিয়াদ বিমানবন্দর পর্যন্ত নিয়ে আসে। শুরুতে তাকে সাদা আরব ঘোড়ার মাধ্যমে অভ্যর্থনা জানানো হয় এবং তার চলার পথে বিছানো হয় বিখ্যাত বেগুনি গালিচা।
চুক্তির যথাসীমা ৬০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে ১ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত করার আহ্বান জানায় ট্রাম্প। সৌদি তা গ্রহণ করে।
ট্রাম্পের সাথে চুক্তির মধ্যে রয়েছে সৌদি মহাকাশ সংস্থা এবং নাসার মধ্যে এবং আরব চিতাবাঘের জন্য একটি নিবেদিত প্রদর্শনী স্থাপনের জন্য চুক্তি এবং ক্রীড়া উন্নয়নের জন্য ৪ বিলিয়ন ডলারের মত সব ফালতু ও হারাম কাজের চুক্তি।
এরপর সৌদি আরব থেকে কাতার গিয়েছে ট্রাম্প। হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, ট্রাম্প ও কাতারের আমির শেখ তামিমের মধ্যে অন্তত ১.২ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনৈতিক বিনিময়ের চুক্তি করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
এছাড়া কাতার সরকারের পক্ষ থেকে ট্রাম্পকে ৪০০ মিলিয়ন ডলারের একটি বোয়িং-৭৪৭ বিমান উপহার দেওয়া হয়েছে।
এরপর বড় ধরণের চমক দিয়েছে আরব আমিরাত। যুক্তরাষ্ট্রে ১.৪ ট্রিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেছে দেশটির প্রেসিডেন্ট শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান।
ট্রাম্প আরব আমিরাতে পৌঁছার পর দুই সারিতে দাঁড়িয়ে থাকা মেয়েরা তাদের লম্বা চুল দুলিয়ে তাকে স্বাগত জানায় ও সে মাঝখান দিয়ে হেঁটে যায়।
প্রশ্ন উঠে আরব ভূমির মত পবিত্র স্থানে মেয়েদের চুল নাচিয়ে, এফ ১৫ যুদ্ধবিমান দিয়ে অভ্যর্থনা, ৪০০ মিলিয়ন ডলারের বিমান উপহার দেয়া এবং ৩ ট্রিলিয়ন ডলারের বেশী বিনিয়োগ দেয়া। এই শীর্ষ সন্ত্রাসী ট্রাম্প যে কত নিষ্ঠুর, নির্মম, নির্দয় এবং মুসলমান ও ইসলাম বিদ্বেষী তা কি সারা বিশ্বে সবচেয়ে বেশী প্রচারিত নয়?
বিশ্ব সন্ত্রাসী আমেরিকার মদদে দেয়া অস্ত্রে দখলদার ইসরায়েল কিভাবে গাজায় পাখির মত গুলি করে মুসলমানদের শহীদ করছে, ক্ষুধায় শহীদ করছে, ইতিহাসের নিষ্ঠুর নিপীড়ন করছে, তাও কি সৌদি শাসকরা অবগত নয়?
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বুশ বলেছে, নানা ত্রুটি সত্ত্বেও মুসলিম বিশ্বের মোকাবেলায় ট্রাম্প হচ্ছে সেরা প্রেসিডেন্ট।
উল্লেখ্য, ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর আমেরিকায় কথিত সন্ত্রাসী হামলার পর সে বলেছিলো, ‘ক্রুসেড শুরু হয়ে গেছে।’ এরপর সে তালেবান উৎখাতের নামে আফগানিস্তানে হামলা চালায় এবং ২০০৩ সালে সন্ত্রাসবাদের অজুহাত তুলে ইরাকে সামরিক আগ্রাসন চালায়। এসব আগ্রাসনে লাখ লাখ মুসলমান শহীদ হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন অগণিত মানুষ।
এছাড়া, এ দুটি দেশ অনেকটা চিরতরে পঙ্গু হয়ে যাওয়ার মতো অবস্থায় পড়েছে। পাশাপাশি সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের নামে সারাবিশ্বকে অস্থির করে তুলেছিলো বুশ। এরপরও সে ট্রাম্পকে মুসলমানদের মোকাবেলায় সেরা প্রেসিডেন্ট মনে করছে! প্রশ্ন উঠছে তাহলে ট্রাম্পের নেয়া পদক্ষেপগুলো কতটা ভয়াবহ ও ঘৃণিত?
নির্বাচনী প্রচারণা চলাকালীন এই ট্রাম্পই বলেছিলো- ‘পৃথিবীতে শান্তি ফিরিয়ে আনতে মুসলিম সম্প্রদায়কে মঙ্গল গ্রহে পাঠিয়ে দেয়া উচিত’।
দায়িত্ব নেয়ার পরেই ট্রাম্প এক নির্বাহী আদেশ জারি করে সাতটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের নাগরিকদের আমেরিকাতে প্রবেশ বন্ধ করে দিয়েছে।
চরম দুঃখজনক বিষয় যে শীর্ষ সন্ত্রাসী ও ইসলাম বিদ্বেষী ট্রাম্প কেন মধ্যপ্রাচ্য সফরে আসলো তা বাদশাহ আমীররা অনুধাবনে ব্যর্থ।
বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ঋণগ্রস্ত দেশ যুক্তরাষ্ট্র। তাদের স্বীকৃত সংবাদ সংস্থা মতে, দেশটির জাতীয় ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭৩ ট্রিলিয়ন ডলারে, যা প্রতি তিন মাসে প্রায় ১ ট্রিলিয়ন ডলার করে বাড়ছে। কিন্তু প্রকৃত হিসেব এর চেয়ে অনেক বেশী।
এমন অবস্থায় সম্প্রতি মার্কিন কংগ্রেসের একটি গুরুত্বপূর্ণ কমিটি ট্রাম্পের ২০১৭ সালের করছাড় বিল দীর্ঘায়নের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এতে করে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় ঋণে আরও ৫ ট্রিলিয়ন ডলার যুক্ত হতে পারে, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলবে।
বিবিসির উত্তর আমেরিকা বিষয়ক সংবাদদাতা অ্যান্থনি তার প্রতিবেদনে লেখে, ট্রাম্প বাঁচার জন্য নতুন অর্থনৈতিক চুক্তির দিকে মনোযোগ দিচ্ছে। যদিও তার প্রশাসনে জাতীয় এবং ব্যক্তিগত চুক্তির মধ্যে সীমারেখা কিছুটা অস্পষ্ট, তবুও সে সৌদি আরব, কাতার ও আরব আমিরাত সফরের মাধ্যমে মার্কিন অর্থনীতিতে আরব বিনিয়োগ আরও বাড়াতে চায়।
মূলত: নিজের দেশকে বাঁচাতে মুসলিম দেশ থেকে অর্থ লুটতেই মূলত: ট্রাম্পের এ সফর।
৩ ট্রিলিয়ন ডলারে হয় ৩ কোটি ৬৪ লাখ, ৭৪ হাজার, ৯০০ কোটি টাকা মাত্র! এক কোটি- দুই কোটি- একশো কোটি এভাবে যেতে যেতে ৩ কোটি কোটি!
আমাদের বর্তমান রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন এর মতো। সে হিসাবে ধরলে আমাদের দেশের ১৫০ গুণ রিজার্ভের সমান!
এতগুলো টাকার বিনিময়ে, ট্রাম্পের রিকন্ডিশন অস্ত্র ক্রয়ের বিপরীতে কাতার, আমিরাত এবং সৌদীর একটাই শান্তি- নিরাপত্তা।
অথচ পবিত্র কুরআন শরীফে মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র মক্কা শরীফ, পবিত্র মদীনা শরীফকে ‘বালাদুল আমীন’ বা নিরাপদ নগরী বর্ণনা করেছেন।
কিন্তু আরব শাসকদের মহান আল্লাহ পাক ও নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের প্রতি ঈমান নেই।
আসলে ওরা ইহুদীদের বংশধর। কাজেই ইসরায়েলের সাথে ওদের সখ্যতা এবং ওদের গুরু ট্রাম্পের প্রতিই ওদের নির্ভরতা।
কাজেই মুসলিম বিশ্বকে শুধু দুই বিশ্ব সন্ত্রাসী ট্রাম্প-নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধেই গর্জে উঠলে হবে না। সৌদি শাসক এবং তাদের পৃষ্ঠপোষকতা সালাফী লা-মাযহাবীদের বিরুদ্ধেও চরম প্রতিবাদ ও প্রতিহতের প্রত্যয় প্রকাশ করতে হবে। ইনশাআল্লাহ!
কারণ তারাই এদেশে সৌদি আরবের প্রশংসা, সৌদি শাসকের গুণগাথা প্রচারে এবং প্রতিষ্ঠায় আকণ্ঠ নিমজ্জিত। যে কারণে সৌদি তথা আরব শাসকরা যে নাটের গুরু সে চেতনা সাধারণ মুসলমানের কম। এর পরিবর্তন করতে হবে। এই অপরাধীদের চিিহ্নত করতে হবে।
পাশাপাশি বলার অপেক্ষা রাখে- বাংলাদেশ, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরান, মিশর, তুরস্ক, পাকিস্তান এই মুসলিম দেশগুলো যদি এক সাথে বসে মুসলিম বিশ্বের সমস্যা সমাধানে ঐকমত্যে পৌঁছতে পারে তবে বিশ্বের সব কুফরী শক্তিরই ক্ষমতা চূর্ণ-বিচূর্ণ হবে। অর্থাৎ তারা সারাবিশ্বে পূর্ণ মাত্রায় নাস্তানাবুদ হবে। ইনশাআল্লাহ!
ছহিবে সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্শির্দ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবত মুবারক-এ কেবলমাত্র তা লাভ করা সম্ভব। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে তা নছীব করুন। আমীন।
আরও পড়ুন:
কপিরাইট © ১৪৩৬ হিজরী মাসিক আল বাইয়্যিনাত, সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
আর্কাইভ
বিভাগ
সম্পাদকীয়
সংখ্যা: ৩০২তম সংখ্যা | বিভাগ: সম্পাদকীয়
সম্পাদকীয়
সব প্রশংসা মুবারক খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য; যিনি সকল সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের নবী, রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত দুরূদ শরীফ ও সালাম মুবারক।
ইরান, ইসরায়েলের সাথে যুদ্ধ স্থগিতে- যেন হাফ ছেড়ে বেঁচেছে বিশ্ব মুসলিম। কিছু দিন পূর্বে পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধ বন্ধেও মুসলমান যেন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিলো। বিষয়টা কি তাই?
মুহাক্কিকগণ মনে করেন, এক্ষেত্রে অনুশোচনা বা তওবার দিকটি বহুমাত্রিক।
ভারতের সাথে যুদ্ধ বন্ধে এবং ইসরায়েলের সাথেও যুদ্ধ স্থগিতে পাকিস্তান এবং ইরান দুটি রাষ্ট্রই কিন্তু বিশ্ব সন্ত্রাসী, ইসলাম ও মুসলমান বিদ্বেষী কুখ্যাত আমেরিকার মোড়লী পানা দ্বারাই প্রভাবিত হয়। অপরদিকে মুসলিম উম্মাহর প্রাণ কেন্দ্র সৌদি আরবের প্রতিরক্ষামন্ত্রী প্রিন্স খালিদ বিন সালমান ৩০শে মে ২০২৫ (সৌদী রাজ পরিবারের কোন প্রভাবশালী সদস্য হিসাবে দুই দশকেরও বেশী সময় পর যে সফর করে) ইরানের সর্বোচ্চ নেতা খামেনীকে সতর্ক করে বলেছে, (সন্ত্রাসী) ট্রাম্পের সাথে চুক্তি করুন নইলে ইসরায়েলি হামলার ঝুঁকি নেন।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা খামেনির কাছে এই বিশেষ বার্তা পেঁৗছে দিতে সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ ছেলে প্রিন্স খালিদ বিন সালমানকে তেহরান সফরে পাঠায়।
ট্রাম্পকে সিজদা দিয়ে (নাউযুবিল্লাহ) ক্ষমতায় থাকতে হবে- এ শিরকী চেতনা বাস্তবেই যে মধ্যপ্রাচ্যের আমীর-বাদশাহর মধ্যে প্রবলভাবে বিরাজমান তা ট্রাম্পের সাম্প্রতিক সফরেও খুব কলঙ্কজনক এবং নির্লজ্জজনক ভাবে মাঝে প্রকাশ পেয়েছে। নাউযুবিল্লাহ!
বার্তাসংস্থা বলছে, ট্রাম্পের বিমান যখন সৌদির আকাশসীমায় প্রবেশ করে ঠিক তারপরই দেশটির বিমানবাহিনীর এফ-১৫ যুদ্ধবিমান তার বিমানকে এস্কোর্ট দিয়ে রিয়াদ বিমানবন্দর পর্যন্ত নিয়ে আসে। শুরুতে তাকে সাদা আরব ঘোড়ার মাধ্যমে অভ্যর্থনা জানানো হয় এবং তার চলার পথে বিছানো হয় বিখ্যাত বেগুনি গালিচা।
চুক্তির যথাসীমা ৬০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে ১ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত করার আহ্বান জানায় ট্রাম্প। সৌদি তা গ্রহণ করে।
ট্রাম্পের সাথে চুক্তির মধ্যে রয়েছে সৌদি মহাকাশ সংস্থা এবং নাসার মধ্যে এবং আরব চিতাবাঘের জন্য একটি নিবেদিত প্রদর্শনী স্থাপনের জন্য চুক্তি এবং ক্রীড়া উন্নয়নের জন্য ৪ বিলিয়ন ডলারের মত সব ফালতু ও হারাম কাজের চুক্তি।
এরপর সৌদি আরব থেকে কাতার গিয়েছে ট্রাম্প। হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, ট্রাম্প ও কাতারের আমির শেখ তামিমের মধ্যে অন্তত ১.২ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনৈতিক বিনিময়ের চুক্তি করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
এছাড়া কাতার সরকারের পক্ষ থেকে ট্রাম্পকে ৪০০ মিলিয়ন ডলারের একটি বোয়িং-৭৪৭ বিমান উপহার দেওয়া হয়েছে।
এরপর বড় ধরণের চমক দিয়েছে আরব আমিরাত। যুক্তরাষ্ট্রে ১.৪ ট্রিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেছে দেশটির প্রেসিডেন্ট শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান।
ট্রাম্প আরব আমিরাতে পৌঁছার পর দুই সারিতে দাঁড়িয়ে থাকা মেয়েরা তাদের লম্বা চুল দুলিয়ে তাকে স্বাগত জানায় ও সে মাঝখান দিয়ে হেঁটে যায়।
প্রশ্ন উঠে আরব ভূমির মত পবিত্র স্থানে মেয়েদের চুল নাচিয়ে, এফ ১৫ যুদ্ধবিমান দিয়ে অভ্যর্থনা, ৪০০ মিলিয়ন ডলারের বিমান উপহার দেয়া এবং ৩ ট্রিলিয়ন ডলারের বেশী বিনিয়োগ দেয়া। এই শীর্ষ সন্ত্রাসী ট্রাম্প যে কত নিষ্ঠুর, নির্মম, নির্দয় এবং মুসলমান ও ইসলাম বিদ্বেষী তা কি সারা বিশ্বে সবচেয়ে বেশী প্রচারিত নয়?
বিশ্ব সন্ত্রাসী আমেরিকার মদদে দেয়া অস্ত্রে দখলদার ইসরায়েল কিভাবে গাজায় পাখির মত গুলি করে মুসলমানদের শহীদ করছে, ক্ষুধায় শহীদ করছে, ইতিহাসের নিষ্ঠুর নিপীড়ন করছে, তাও কি সৌদি শাসকরা অবগত নয়?
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বুশ বলেছে, নানা ত্রুটি সত্ত্বেও মুসলিম বিশ্বের মোকাবেলায় ট্রাম্প হচ্ছে সেরা প্রেসিডেন্ট।
উল্লেখ্য, ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর আমেরিকায় কথিত সন্ত্রাসী হামলার পর সে বলেছিলো, ‘ক্রুসেড শুরু হয়ে গেছে।’ এরপর সে তালেবান উৎখাতের নামে আফগানিস্তানে হামলা চালায় এবং ২০০৩ সালে সন্ত্রাসবাদের অজুহাত তুলে ইরাকে সামরিক আগ্রাসন চালায়। এসব আগ্রাসনে লাখ লাখ মুসলমান শহীদ হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন অগণিত মানুষ।
এছাড়া, এ দুটি দেশ অনেকটা চিরতরে পঙ্গু হয়ে যাওয়ার মতো অবস্থায় পড়েছে। পাশাপাশি সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের নামে সারাবিশ্বকে অস্থির করে তুলেছিলো বুশ। এরপরও সে ট্রাম্পকে মুসলমানদের মোকাবেলায় সেরা প্রেসিডেন্ট মনে করছে! প্রশ্ন উঠছে তাহলে ট্রাম্পের নেয়া পদক্ষেপগুলো কতটা ভয়াবহ ও ঘৃণিত?
নির্বাচনী প্রচারণা চলাকালীন এই ট্রাম্পই বলেছিলো- ‘পৃথিবীতে শান্তি ফিরিয়ে আনতে মুসলিম সম্প্রদায়কে মঙ্গল গ্রহে পাঠিয়ে দেয়া উচিত’।
দায়িত্ব নেয়ার পরেই ট্রাম্প এক নির্বাহী আদেশ জারি করে সাতটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের নাগরিকদের আমেরিকাতে প্রবেশ বন্ধ করে দিয়েছে।
চরম দুঃখজনক বিষয় যে শীর্ষ সন্ত্রাসী ও ইসলাম বিদ্বেষী ট্রাম্প কেন মধ্যপ্রাচ্য সফরে আসলো তা বাদশাহ আমীররা অনুধাবনে ব্যর্থ।
বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ঋণগ্রস্ত দেশ যুক্তরাষ্ট্র। তাদের স্বীকৃত সংবাদ সংস্থা মতে, দেশটির জাতীয় ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭৩ ট্রিলিয়ন ডলারে, যা প্রতি তিন মাসে প্রায় ১ ট্রিলিয়ন ডলার করে বাড়ছে। কিন্তু প্রকৃত হিসেব এর চেয়ে অনেক বেশী।
এমন অবস্থায় সম্প্রতি মার্কিন কংগ্রেসের একটি গুরুত্বপূর্ণ কমিটি ট্রাম্পের ২০১৭ সালের করছাড় বিল দীর্ঘায়নের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এতে করে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় ঋণে আরও ৫ ট্রিলিয়ন ডলার যুক্ত হতে পারে, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলবে।
বিবিসির উত্তর আমেরিকা বিষয়ক সংবাদদাতা অ্যান্থনি তার প্রতিবেদনে লেখে, ট্রাম্প বাঁচার জন্য নতুন অর্থনৈতিক চুক্তির দিকে মনোযোগ দিচ্ছে। যদিও তার প্রশাসনে জাতীয় এবং ব্যক্তিগত চুক্তির মধ্যে সীমারেখা কিছুটা অস্পষ্ট, তবুও সে সৌদি আরব, কাতার ও আরব আমিরাত সফরের মাধ্যমে মার্কিন অর্থনীতিতে আরব বিনিয়োগ আরও বাড়াতে চায়।
মূলত: নিজের দেশকে বাঁচাতে মুসলিম দেশ থেকে অর্থ লুটতেই মূলত: ট্রাম্পের এ সফর।
৩ ট্রিলিয়ন ডলারে হয় ৩ কোটি ৬৪ লাখ, ৭৪ হাজার, ৯০০ কোটি টাকা মাত্র! এক কোটি- দুই কোটি- একশো কোটি এভাবে যেতে যেতে ৩ কোটি কোটি!
আমাদের বর্তমান রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন এর মতো। সে হিসাবে ধরলে আমাদের দেশের ১৫০ গুণ রিজার্ভের সমান!
এতগুলো টাকার বিনিময়ে, ট্রাম্পের রিকন্ডিশন অস্ত্র ক্রয়ের বিপরীতে কাতার, আমিরাত এবং সৌদীর একটাই শান্তি- নিরাপত্তা।
অথচ পবিত্র কুরআন শরীফে মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র মক্কা শরীফ, পবিত্র মদীনা শরীফকে ‘বালাদুল আমীন’ বা নিরাপদ নগরী বর্ণনা করেছেন।
কিন্তু আরব শাসকদের মহান আল্লাহ পাক ও নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের প্রতি ঈমান নেই।
আসলে ওরা ইহুদীদের বংশধর। কাজেই ইসরায়েলের সাথে ওদের সখ্যতা এবং ওদের গুরু ট্রাম্পের প্রতিই ওদের নির্ভরতা।
কাজেই মুসলিম বিশ্বকে শুধু দুই বিশ্ব সন্ত্রাসী ট্রাম্প-নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধেই গর্জে উঠলে হবে না। সৌদি শাসক এবং তাদের পৃষ্ঠপোষকতা সালাফী লা-মাযহাবীদের বিরুদ্ধেও চরম প্রতিবাদ ও প্রতিহতের প্রত্যয় প্রকাশ করতে হবে। ইনশাআল্লাহ!
কারণ তারাই এদেশে সৌদি আরবের প্রশংসা, সৌদি শাসকের গুণগাথা প্রচারে এবং প্রতিষ্ঠায় আকণ্ঠ নিমজ্জিত। যে কারণে সৌদি তথা আরব শাসকরা যে নাটের গুরু সে চেতনা সাধারণ মুসলমানের কম। এর পরিবর্তন করতে হবে। এই অপরাধীদের চিিহ্নত করতে হবে।
পাশাপাশি বলার অপেক্ষা রাখে- বাংলাদেশ, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরান, মিশর, তুরস্ক, পাকিস্তান এই মুসলিম দেশগুলো যদি এক সাথে বসে মুসলিম বিশ্বের সমস্যা সমাধানে ঐকমত্যে পৌঁছতে পারে তবে বিশ্বের সব কুফরী শক্তিরই ক্ষমতা চূর্ণ-বিচূর্ণ হবে। অর্থাৎ তারা সারাবিশ্বে পূর্ণ মাত্রায় নাস্তানাবুদ হবে। ইনশাআল্লাহ!
ছহিবে সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্শির্দ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবত মুবারক-এ কেবলমাত্র তা লাভ করা সম্ভব। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে তা নছীব করুন। আমীন।
আরও পড়ুন:
বিভাগ
সম্পাদকীয়
সংখ্যা: ৩০২তম সংখ্যা | বিভাগ: সম্পাদকীয়
সম্পাদকীয়
সব প্রশংসা মুবারক খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য; যিনি সকল সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের নবী, রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত দুরূদ শরীফ ও সালাম মুবারক।
ইরান, ইসরায়েলের সাথে যুদ্ধ স্থগিতে- যেন হাফ ছেড়ে বেঁচেছে বিশ্ব মুসলিম। কিছু দিন পূর্বে পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধ বন্ধেও মুসলমান যেন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিলো। বিষয়টা কি তাই?
মুহাক্কিকগণ মনে করেন, এক্ষেত্রে অনুশোচনা বা তওবার দিকটি বহুমাত্রিক।
ভারতের সাথে যুদ্ধ বন্ধে এবং ইসরায়েলের সাথেও যুদ্ধ স্থগিতে পাকিস্তান এবং ইরান দুটি রাষ্ট্রই কিন্তু বিশ্ব সন্ত্রাসী, ইসলাম ও মুসলমান বিদ্বেষী কুখ্যাত আমেরিকার মোড়লী পানা দ্বারাই প্রভাবিত হয়। অপরদিকে মুসলিম উম্মাহর প্রাণ কেন্দ্র সৌদি আরবের প্রতিরক্ষামন্ত্রী প্রিন্স খালিদ বিন সালমান ৩০শে মে ২০২৫ (সৌদী রাজ পরিবারের কোন প্রভাবশালী সদস্য হিসাবে দুই দশকেরও বেশী সময় পর যে সফর করে) ইরানের সর্বোচ্চ নেতা খামেনীকে সতর্ক করে বলেছে, (সন্ত্রাসী) ট্রাম্পের সাথে চুক্তি করুন নইলে ইসরায়েলি হামলার ঝুঁকি নেন।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা খামেনির কাছে এই বিশেষ বার্তা পেঁৗছে দিতে সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ ছেলে প্রিন্স খালিদ বিন সালমানকে তেহরান সফরে পাঠায়।
ট্রাম্পকে সিজদা দিয়ে (নাউযুবিল্লাহ) ক্ষমতায় থাকতে হবে- এ শিরকী চেতনা বাস্তবেই যে মধ্যপ্রাচ্যের আমীর-বাদশাহর মধ্যে প্রবলভাবে বিরাজমান তা ট্রাম্পের সাম্প্রতিক সফরেও খুব কলঙ্কজনক এবং নির্লজ্জজনক ভাবে মাঝে প্রকাশ পেয়েছে। নাউযুবিল্লাহ!
বার্তাসংস্থা বলছে, ট্রাম্পের বিমান যখন সৌদির আকাশসীমায় প্রবেশ করে ঠিক তারপরই দেশটির বিমানবাহিনীর এফ-১৫ যুদ্ধবিমান তার বিমানকে এস্কোর্ট দিয়ে রিয়াদ বিমানবন্দর পর্যন্ত নিয়ে আসে। শুরুতে তাকে সাদা আরব ঘোড়ার মাধ্যমে অভ্যর্থনা জানানো হয় এবং তার চলার পথে বিছানো হয় বিখ্যাত বেগুনি গালিচা।
চুক্তির যথাসীমা ৬০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে ১ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত করার আহ্বান জানায় ট্রাম্প। সৌদি তা গ্রহণ করে।
ট্রাম্পের সাথে চুক্তির মধ্যে রয়েছে সৌদি মহাকাশ সংস্থা এবং নাসার মধ্যে এবং আরব চিতাবাঘের জন্য একটি নিবেদিত প্রদর্শনী স্থাপনের জন্য চুক্তি এবং ক্রীড়া উন্নয়নের জন্য ৪ বিলিয়ন ডলারের মত সব ফালতু ও হারাম কাজের চুক্তি।
এরপর সৌদি আরব থেকে কাতার গিয়েছে ট্রাম্প। হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, ট্রাম্প ও কাতারের আমির শেখ তামিমের মধ্যে অন্তত ১.২ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনৈতিক বিনিময়ের চুক্তি করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
এছাড়া কাতার সরকারের পক্ষ থেকে ট্রাম্পকে ৪০০ মিলিয়ন ডলারের একটি বোয়িং-৭৪৭ বিমান উপহার দেওয়া হয়েছে।
এরপর বড় ধরণের চমক দিয়েছে আরব আমিরাত। যুক্তরাষ্ট্রে ১.৪ ট্রিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেছে দেশটির প্রেসিডেন্ট শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান।
ট্রাম্প আরব আমিরাতে পৌঁছার পর দুই সারিতে দাঁড়িয়ে থাকা মেয়েরা তাদের লম্বা চুল দুলিয়ে তাকে স্বাগত জানায় ও সে মাঝখান দিয়ে হেঁটে যায়।
প্রশ্ন উঠে আরব ভূমির মত পবিত্র স্থানে মেয়েদের চুল নাচিয়ে, এফ ১৫ যুদ্ধবিমান দিয়ে অভ্যর্থনা, ৪০০ মিলিয়ন ডলারের বিমান উপহার দেয়া এবং ৩ ট্রিলিয়ন ডলারের বেশী বিনিয়োগ দেয়া। এই শীর্ষ সন্ত্রাসী ট্রাম্প যে কত নিষ্ঠুর, নির্মম, নির্দয় এবং মুসলমান ও ইসলাম বিদ্বেষী তা কি সারা বিশ্বে সবচেয়ে বেশী প্রচারিত নয়?
বিশ্ব সন্ত্রাসী আমেরিকার মদদে দেয়া অস্ত্রে দখলদার ইসরায়েল কিভাবে গাজায় পাখির মত গুলি করে মুসলমানদের শহীদ করছে, ক্ষুধায় শহীদ করছে, ইতিহাসের নিষ্ঠুর নিপীড়ন করছে, তাও কি সৌদি শাসকরা অবগত নয়?
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বুশ বলেছে, নানা ত্রুটি সত্ত্বেও মুসলিম বিশ্বের মোকাবেলায় ট্রাম্প হচ্ছে সেরা প্রেসিডেন্ট।
উল্লেখ্য, ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর আমেরিকায় কথিত সন্ত্রাসী হামলার পর সে বলেছিলো, ‘ক্রুসেড শুরু হয়ে গেছে।’ এরপর সে তালেবান উৎখাতের নামে আফগানিস্তানে হামলা চালায় এবং ২০০৩ সালে সন্ত্রাসবাদের অজুহাত তুলে ইরাকে সামরিক আগ্রাসন চালায়। এসব আগ্রাসনে লাখ লাখ মুসলমান শহীদ হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন অগণিত মানুষ।
এছাড়া, এ দুটি দেশ অনেকটা চিরতরে পঙ্গু হয়ে যাওয়ার মতো অবস্থায় পড়েছে। পাশাপাশি সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের নামে সারাবিশ্বকে অস্থির করে তুলেছিলো বুশ। এরপরও সে ট্রাম্পকে মুসলমানদের মোকাবেলায় সেরা প্রেসিডেন্ট মনে করছে! প্রশ্ন উঠছে তাহলে ট্রাম্পের নেয়া পদক্ষেপগুলো কতটা ভয়াবহ ও ঘৃণিত?
নির্বাচনী প্রচারণা চলাকালীন এই ট্রাম্পই বলেছিলো- ‘পৃথিবীতে শান্তি ফিরিয়ে আনতে মুসলিম সম্প্রদায়কে মঙ্গল গ্রহে পাঠিয়ে দেয়া উচিত’।
দায়িত্ব নেয়ার পরেই ট্রাম্প এক নির্বাহী আদেশ জারি করে সাতটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের নাগরিকদের আমেরিকাতে প্রবেশ বন্ধ করে দিয়েছে।
চরম দুঃখজনক বিষয় যে শীর্ষ সন্ত্রাসী ও ইসলাম বিদ্বেষী ট্রাম্প কেন মধ্যপ্রাচ্য সফরে আসলো তা বাদশাহ আমীররা অনুধাবনে ব্যর্থ।
বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ঋণগ্রস্ত দেশ যুক্তরাষ্ট্র। তাদের স্বীকৃত সংবাদ সংস্থা মতে, দেশটির জাতীয় ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭৩ ট্রিলিয়ন ডলারে, যা প্রতি তিন মাসে প্রায় ১ ট্রিলিয়ন ডলার করে বাড়ছে। কিন্তু প্রকৃত হিসেব এর চেয়ে অনেক বেশী।
এমন অবস্থায় সম্প্রতি মার্কিন কংগ্রেসের একটি গুরুত্বপূর্ণ কমিটি ট্রাম্পের ২০১৭ সালের করছাড় বিল দীর্ঘায়নের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এতে করে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় ঋণে আরও ৫ ট্রিলিয়ন ডলার যুক্ত হতে পারে, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলবে।
বিবিসির উত্তর আমেরিকা বিষয়ক সংবাদদাতা অ্যান্থনি তার প্রতিবেদনে লেখে, ট্রাম্প বাঁচার জন্য নতুন অর্থনৈতিক চুক্তির দিকে মনোযোগ দিচ্ছে। যদিও তার প্রশাসনে জাতীয় এবং ব্যক্তিগত চুক্তির মধ্যে সীমারেখা কিছুটা অস্পষ্ট, তবুও সে সৌদি আরব, কাতার ও আরব আমিরাত সফরের মাধ্যমে মার্কিন অর্থনীতিতে আরব বিনিয়োগ আরও বাড়াতে চায়।
মূলত: নিজের দেশকে বাঁচাতে মুসলিম দেশ থেকে অর্থ লুটতেই মূলত: ট্রাম্পের এ সফর।
৩ ট্রিলিয়ন ডলারে হয় ৩ কোটি ৬৪ লাখ, ৭৪ হাজার, ৯০০ কোটি টাকা মাত্র! এক কোটি- দুই কোটি- একশো কোটি এভাবে যেতে যেতে ৩ কোটি কোটি!
আমাদের বর্তমান রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন এর মতো। সে হিসাবে ধরলে আমাদের দেশের ১৫০ গুণ রিজার্ভের সমান!
এতগুলো টাকার বিনিময়ে, ট্রাম্পের রিকন্ডিশন অস্ত্র ক্রয়ের বিপরীতে কাতার, আমিরাত এবং সৌদীর একটাই শান্তি- নিরাপত্তা।
অথচ পবিত্র কুরআন শরীফে মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র মক্কা শরীফ, পবিত্র মদীনা শরীফকে ‘বালাদুল আমীন’ বা নিরাপদ নগরী বর্ণনা করেছেন।
কিন্তু আরব শাসকদের মহান আল্লাহ পাক ও নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের প্রতি ঈমান নেই।
আসলে ওরা ইহুদীদের বংশধর। কাজেই ইসরায়েলের সাথে ওদের সখ্যতা এবং ওদের গুরু ট্রাম্পের প্রতিই ওদের নির্ভরতা।
কাজেই মুসলিম বিশ্বকে শুধু দুই বিশ্ব সন্ত্রাসী ট্রাম্প-নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধেই গর্জে উঠলে হবে না। সৌদি শাসক এবং তাদের পৃষ্ঠপোষকতা সালাফী লা-মাযহাবীদের বিরুদ্ধেও চরম প্রতিবাদ ও প্রতিহতের প্রত্যয় প্রকাশ করতে হবে। ইনশাআল্লাহ!
কারণ তারাই এদেশে সৌদি আরবের প্রশংসা, সৌদি শাসকের গুণগাথা প্রচারে এবং প্রতিষ্ঠায় আকণ্ঠ নিমজ্জিত। যে কারণে সৌদি তথা আরব শাসকরা যে নাটের গুরু সে চেতনা সাধারণ মুসলমানের কম। এর পরিবর্তন করতে হবে। এই অপরাধীদের চিিহ্নত করতে হবে।
পাশাপাশি বলার অপেক্ষা রাখে- বাংলাদেশ, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরান, মিশর, তুরস্ক, পাকিস্তান এই মুসলিম দেশগুলো যদি এক সাথে বসে মুসলিম বিশ্বের সমস্যা সমাধানে ঐকমত্যে পৌঁছতে পারে তবে বিশ্বের সব কুফরী শক্তিরই ক্ষমতা চূর্ণ-বিচূর্ণ হবে। অর্থাৎ তারা সারাবিশ্বে পূর্ণ মাত্রায় নাস্তানাবুদ হবে। ইনশাআল্লাহ!
ছহিবে সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্শির্দ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবত মুবারক-এ কেবলমাত্র তা লাভ করা সম্ভব। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে তা নছীব করুন। আমীন।