সাইয়্যিদুল বাররি ওয়াল বাহর, ইমামুস সাক্বালাইন, তাজেদারে মদীনা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আওলাদগণের ফযীলত

সংখ্যা: ১০৫তম সংখ্যা | বিভাগ:

-মাস্টার মুহম্মদ মুঈনুদ্দীন

الحسن والحسين سيدا شباب اهل الجنة.

অর্থঃ- “হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, হযরত ইমাম হাসান ও হুসাইন রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা হচ্ছেন বেহেশ্তের যুবকদের সাইয়্যিদ বা সর্দার। অতএব যারা হযরত ইমাম হাসান ও হযরত ইমাম হুসাইন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা-এর বংশের সন্তান বা আওলাদ তাঁরাই আওলাদে রসূল বা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বংশধর। আর এ কথা জানা ও বিশ্বাস করা আবশ্যক যে, সারা পৃথিবীর বিভিন্নস্থানে বহু আওলাদে রসূলগণ রয়েছেন।

এ মর্মে হাদীস শরীফে উল্লেখ করা হয়েছে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্ নাবিয়্যীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,

ان اولادى كسفينة نوح من دخلها نجا.

অর্থঃ- “আমার আওলাদগণ (এর উদাহরণ হলো তারা) হযরত নূহ আলাইহিস্ সালাম-এর কিস্তির ন্যায়। যে তাতে প্রবেশ করেছে (যে আমার আওলাদগণকে মুহব্বত করে) সেই নাযাত পেয়েছে।” (সিররুশ্ শাহাদাতাইন)

অন্য হাদীস শরীফে উল্লেখ করা হয়েছে, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,

 ان اولادى كحطة بنى اسرائي من قالها نجا.

অর্থঃ- “আমার আওলাদগণ বণী ইসরাঈলের হিত্তাতুন-এর ন্যায়। যারা তা বলেছে (যারা আমার আওলাদগণকে তা’যীম-তাকরীম করেছে) তারা নাযাতপ্রাপ্ত।” (সিররুশ্ শাহাদাতাইন) আওলাদে রসূলগণের ফযীলত সম্পর্কে অন্য হাদীস শরীফে উল্লেখ করা হয়েছে, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,

انا تارك فيكم الثقلين اولهما كتب الله فيه الهذى والنور فخذوا بكتب الله واستمسكوابه فحث على كتب الله ورغب فيه ثم قال واهل بيتى اذكر كم الله فى اهل بيتى اذكركم الله فى اهل بيتى.

অর্থঃ- “আমি তোমাদের জন্য দু’টি জিনিস রেখে যাচ্ছি। প্রথমটি হলো, আল্লাহ্ পাক-এর কিতাব। যার মধ্যে রয়েছে হিদায়েত ও নূর। তোমরা কিতাবুল্লাহ্কে দৃঢ়ভাবে আঁকড়িয়ে ধরো। তিনি কিতাবুল্লাহ্র প্রতি উৎসাহ  প্রদান করলেন। অতঃপর বললেন, দ্বিতীয়টি হলো, আমার আহলে বাইত বা (আওলাদগণ) বংশধর। তাঁদের ব্যাপারে তোমাদেরকে আমি সতর্ক করছি, তাঁদের ব্যাপারে তোমাদের সতর্ক করছি।” (মুসলিম শরীফ, মিশকাত শরীফ/৫৬৮)

অন্য হাদীস শরীফে উল্লেখ  করা হয়েছে, আখিরী রসূল, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,

انى تركت فيكم ما ان اخذتم به لن تضلوا كتب الله وعترت اهل بيتى.

অর্থঃ- “নিশ্চয়ই  আমি তোমাদের নিকট দু’টি জিনিস রেখে যাচ্ছি। যদি তোমরা তা  আঁকড়ে ধর তবে পথভ্রষ্ট হবে না। প্রথমতঃ আল্লাহ্ পাক-এর কিতাব ও দ্বিতীয়তঃ আমার বংশধর বা আওলাদগণ।” (তিরমিযী শরীফ, মিশকাত শরীফ/৫৬৯)

আহলে বাইত তথা আওলাদে রসূলগণের ফযীলত সম্পর্কে হাদীস শরীফে আরো ইরশাদ হয়েছে, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,

النجوم امان لاهل السماء واهل بيتى امان لاهل الارض فاذا ذهب اهل بيتى ذهب اهل الارض.

অর্থঃ- “তারকারাজী আসমানের নিরাপত্তা দানকারী আর আমার বংশধর বা আওলাদগণ জমীনের নিরাপত্তা দানকারী। সুতরাং যখন আমার আহলে বাইত বা আওলাদগণ (দুনিয়া থেকে) চলে যাবেন তখন দুনিয়াবাসী সকলেই নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।” (আহমদ, মিরকাত, হাশিয়ায়ে মিশকাত/৫৭৩)      উপরোক্ত হাদীস শরীফে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্ নাবিয়্যীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর আওলাদ বা বংশধরগণকে বিশ্ববাসীর জন্য নিরাপত্তা দানকারী ও হিফাযতকারী বলে উল্লেখ করা হয়েছে।           অন্য হাদীস শরীফে উল্লেখ করা হয়েছে, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,

احيوا الله تعاى لما يغدوكم من نعمة واحبونى لحب الله واحبوا اهل بيتى لحبى.

 অর্থঃ- “মহান আল্লাহ্ পাক তোমাদেরকে যে নিয়ামত দান করেছেন তার জন্য আল্লাহ্ পাককে মুহব্বত করো। আর আমাকে মুহব্বত করো আল্লাহ্ পাক-এর সন্তুষ্টি লাভ করার জন্য। আর আমার আহ্লে বাইতগণকে মুহব্বত করো আমার সন্তুষ্টি লাভের জন্য।”   উপরোক্ত হাদীস শরীফে আল্লাহ্ পাক ও হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মুহব্বত হাছিল করতে হলে আহ্লে বাইত তথা আওলাদে রসূলগণকে মুহব্বত করার কথা বলা হয়েছে। সেজন্যই অতীতের সকল ইমাম-মুজতাহিদ ও ওলী আল্লাহ্গণ আওলাদে রসূলগণকে প্রাণ উজাড় করে মুহব্বত করেছেন।

আওলাদে রসূলগণের ফয়ীলত সংক্রান্ত উপরোক্ত হাদীস শরীফের ব্যাখ্যায় কিতাবে উল্লেখ করা হয়েছে,

المراد بالاخذ بهم التمسك لمحبتهم ومحافظة حرمتهم والعمل بروايتهم والاعتماد على مقالتهم.

অর্থঃ- “আল্লাহ্ পাক-এর রসূলের বংশধরগণকে আঁকড়ে ধরার দ্বারা উদ্দেশ্য হলো, মজবুতভাবে তাঁদেরকে মুহব্বত করা, তাঁদের যথাযথ সম্মান রক্ষা করা, তাঁদের রিওয়ায়েত (কথা) অনুযায়ী আমল করা ও তাঁদের কথার প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস স্থাপন করা।” (মিরকাত, হাশিয়ায়ে মিশকাত/৫৬৯)         সেজন্যই ইমাম-মুজতাহিদগণ ফতওয়া দিয়েছেন যে, কোন লোক যদি একটি চুল হাতে নিয়ে ঘোষণা করে যে, “এ চুল মোবারক স্বয়ং হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর। অথবা কেউ যদি বলে যে, আমি স্বয়ং আখিরী নবী হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর আওলাদ বা বংশধর।” তাহলে শ্রবণকারী সকলকে সেটা বিনা চূ-চেরায় মেনে নিতে হবে এবং উক্ত চুল মুবারক ও উক্ত আওলাদে রসূলকে তা’যীম-তাকরীম করতে হবে তথা এটা করা তার জন্য ফরয-ওয়াজিবের অন্তর্ভুক্ত। এমনকি যদি কোন আওলাদে রসূল-এর আমলে ত্রুটি থাকে তথাপিও তাঁকে তা’যীম-তাকরীম করতে হবে ও তাঁর সাথে আদব রক্ষা করতে হবে। কারণ তিনি স্বয়ং হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সাথে সংশ্লিষ্ট তথা তাঁর আওলাদ।

তবে যদি কেউ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ব্যাপারে মিথ্যারোপ করে তবে নিঃসন্দেহে সে জাহান্নামী হবে।

সাইয়্যিদুল জিননি ওয়াল ইনস, ইমামুল আউয়ালীন ওয়াল আখিরীন, খতীবুল আম্বিয়া হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হায়াতুন নবী

ইমামুল মুরসালীন, রহমতুল্লিল আলামীন, খাতামুন নাবিয়্যীন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মযদা-মতবা, শান-মান সকল নবী-রসূল আলাইহিমুস সালামগণের চেয়ে অনেক উর্দ্ধে

সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ছাহিবু মাক্বামি মাহমূদ, শাফউল উমাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহ ওয়া সাল্লাম উনার শ্রেষ্ঠত্ব

সাইয়্যিদুল কাওনাইন, শাফিউল মুজনিবীন, ইমামুন নাবিয়্যীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আহলে বাইতগণের ফযীলত

সাইয়্যিদু উলদে আদম, আছলুল ক্বায়িনাত, ফখরে মওজুদাত হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পূব পুরুষগণের মাহাত্ম বণনা