মহান আল্লাহ্ পাক তাঁর কালাম পাকে ইরশাদ করেন,
ومن يقنت منكن لله ورسوله وتعمل صالحا نؤتها اجرها مرتين واعتدنا لها رزقا كريما.
অর্থঃ- “আপনাদের মধ্যে যে কেউ মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অনুগত হবে ও সৎকার্য করবে তাকে আমি পুরুস্কার দিব দুইবার এবং তারজন্য আমি প্রস্তুত রেখেছি সম্মানজনক রিযিক।” (সূরা আহ্যাব/৩১)
“তাফসীরে মাযহারী”-এর ৭ম খণ্ডের ৩৩৬ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে, “দ্বিগুণ পুরুস্কারের অর্থ হচ্ছে- প্রথমতঃ তাঁরা দ্বিগুণ পুরুস্কার লাভ করবেন আল্লাহ্ পাক ও তাঁর রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ইতায়াত বা আনুগত্যতার জন্য।
দ্বিতীয়তঃ হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সন্তুষ্টি, রেযামন্দী অর্জনের জন্য। অল্পে তুষ্ট হয়ে উত্তম জীবনযাপনের জন্য। হযরত মুক্বাতিল রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, তাদের প্রতিটি পূন্যের প্রতিদান দেয়া হবে দশগুণ করে।
“তাফসীরে মাযহারী”-এর ৭ম খণ্ডের ৩৩৬ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে,
اى جليل القدر وهو الجنة زيادة على اجرها قلت وذلك لانهن يرزقن بمتابعة النبى صلى الله عليه وسلم مايرزق النبى صلى الله عليه وسلم.
অর্থঃ- “তাঁদেরকে সম্মানজনক রিযিক প্রদান করা হবে। তা হচ্ছে জান্নাত। যা সবচেয়ে বড় প্রতিদান। আমি বলি, তাঁরা উত্তম রিযিক পাবেন হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সঙ্গীনি হওয়ার কারণেই। তাই নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর জন্য যে রিযিক তাঁদের জন্যও সে রিযিক ধার্য্য হবে।” (তাফসীরে ইবনে কাছীর, কুরতুবী, আহকামুল কুরআন খাযিন, বাগবী, মাদারিক ইত্যাদি তাফসীরেগুলোতে আরো বিশদভাবে আলোচনা রয়েছে।
কুরআন শরীফ, হাদীস শরীফ, তাফসীর ইত্যাদি কিতাবের উপরোক্ত আলোচনা থেকে স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হলো যে, (১) আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর স্ত্রী হওয়ার কারণেই উম্মুল মু’মিনীনগণের মর্যাদা অন্যান্য সকল নারীর উপরে। (২) তাঁরা যেমন ইহ্কালে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সঙ্গীনিরূপে ছিলেন বেহেশতে তাঁরাই সঙ্গীনি হিসেবে থাকবেন। (৩) উম্মুল মু’মিনীনগণ আহলে বাইতের অন্তর্ভুক্ত। (৪) অন্যান্য মানুষের থেকে তাঁদের আমলের প্রতিদান দ্বিগুন-বহুগুণে প্রদান করা হবে। (৫) পৃথিবী সৃষ্টির পূর্বে-পরে, যে কোন কালে যারাই অনেক মর্যাদাশালী হয়েছেন তারাই আখিরী রসূল হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কারণেই মর্যাদাময় হয়েছেন। তাঁর উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হযরত উম্মুল মু’মিনীন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুন্নাগণ। আল্লাহ্ পাক ও তাঁর রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সন্তুষ্টি, রেযামন্দী অর্জনের মূল মাধ্যম হচ্ছে ছোহ্বত। এজন্য ইমাম-মুজতাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণ ওলীআল্লাহ্গণের ছোহ্বত অর্জন করাকে ফরযে আইন ফতওয়া দিয়েছেন। তাই বর্তমান যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, আওলার্দু রসূল, গাউসুল আ’যম, হাবীবুল্লাহ্ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর হাক্বীক্বী ছোহ্বত অর্জনের মাধ্যমে আল্লাহ্ পাক আমাদের সকলকে তাঁর এবং তাঁর রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, উম্মুল মু’মিনীন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুন্না, আহলে বাইত এবং সমস্ত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণের প্রতি যথাযথ সম্মান-মর্যাদা, তাযীম-তাকরীম ও সু-ধারণা রাখার তাওফীক দান করুন। (আমীন)
-আল্লামা, মুফতী সাইয়্যিদ শিহাবুদ্দীন আহমদ