ছহিবুল ওহী ওয়াল কুরআন, ছহিবুল ফুরক্বান, ছহিবুল আয়াত হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অবতীর্ণ ওহী ও ওহী অবতীর্ণের আটটি পদ্ধতি বা স্তর বিন্যাস

সংখ্যা: ১১৭তম সংখ্যা | বিভাগ:

وما ينطق عن الهوى ان هو الا وحى يوحى.

‘আর তিনি (হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ওহী ব্যতীত নিজ থেকে (মনগড়া) কোন কথা বলেন না।” (সূরা নজম/৩,৪)

যুগে যুগে আল্লাহ্ পাক মানুষ ও জীন জাতির প্রতি যে আদেশ-নির্দেশ ও হুকুম-আহকাম বা শরীয়ত জারি করেছেন তা সম-সাময়িক নবী-রসূল আলাইহিমুস্ সালামগণের প্রতি প্রত্যাদেশ বা ওহীর মাধ্যমেই সুসম্পন্ন হয়েছে। আর এ ওহী আনার ক্ষেত্রে যিনি আঞ্জাম দিয়েছেন তিনি হযরত জিবরাঈল আলাইহিস্ সালাম। এককভাবে তিনি একমাত্র আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট মহান আল্লাহ্ পাক-এর বিধি-বিধান সম্বলিত ওহী বা প্রত্যাদেশ নিয়ে তেইশ বছরের ওহ্যিক জীবন মুবারকে চব্বিশ হাজার বার আগমন করেছেন। যা অন্যকোন নবী এবং রসূল আলাইহিমুস্ সালাম-এর ক্ষেত্রে ঘটেনি। অন্যান্য নবী-রসূল আলাইহিমুস্ সালাম-এর ক্ষেত্রে হযরত জিব্রাইল আলাইহিস্ সালাম একবারে অথবা একাধিকবারে প্রত্যাদেশ নিয়ে এসেছেন। কিন্তু হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখনই কোন সমস্যা অনুভব করেছেন বা কোন বিষয় জানার বা ফায়সালার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন তখনই ওহী বা প্রত্যাদেশ হয়েছে।

এ ক্ষেত্রে আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বিশেষ বৈশিষ্ট্য এই ছিল যে, তাঁর প্রতি গতানুগতিক ধারার ব্যতিক্রম পন্থায়ও ওহী নাযিল হত। আর হক্কানী-রব্বানী উলামা-ই-কিরাম তা মোটামুটি আটটি পদ্ধতি বা স্তরে বিন্যস্ত করেছেন যা নিম্নরূপ- প্রথম পদ্ধতিঃ- সাইয়্যিদা হযরত আয়িশা ছিদ্দীকা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা বর্ণনা করেন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মাঝে প্রাথমিকভাবে সত্য স্বপ্নের বিকাশ ঘটত। এক বর্ণনায় রয়েছে-সে সময় আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে স্বপ্ন দেখতেন তাই দিবালোকের ন্যায় স্পষ্টরূপে সত্যে পরিণত হত। তাঁর প্রতি ওহীর এ ধারা ছয়মাস পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। দ্বিতীয় পদ্ধতিঃ- হযরত জিবরাঈল আলাইহিস্ সালাম কখনো হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ক্বলব মুবারকে ইলকা (আত্মিক প্রক্ষেপন) করতেন। এ সময় হযরত জিবরাঈল আলাইহিস্ সালাম দৃষ্টির অগোচরে থাকতেন। আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, আমার অন্তরের মধ্যে রূহুলকুদুস (হযরত জিবরাঈল আলাইহিস্ সালাম) ফেরেশতা এ মর্মে ইলকা ও ইলহাম করেছেন যে, কোন ব্যক্তি ততক্ষণ পর্যন্ত ইন্তিকাল করবেনা, যতক্ষণনা সে তার রিযিক পূর্ণ (শেষ) করে। (হাকীম) তৃতীয় পদ্ধতিঃ আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট হযরত জিবরাঈল আইহিস্ সালাম মানবাকৃতিতে বিশেষতঃ হযরত দাহিয়াতুল ক্বলবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর ছূরতে এসে ওহী পৌঁছে দিতেন। চতুর্থ পদ্ধতিঃ- এ পদ্ধতিটা হল সালসালাতুল জারাস, অর্থাৎ ঘণ্ট ধ্বনির ন্যায়। এ আওয়াজ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ব্যতীত অন্য কেউ শুনতে পেতেননা। এ পদ্ধতির ওহী নাযিল ছিল সর্বাধিক কষ্টদায়ক। এ অবস্থায় প্রচণ্ড শীতের মধ্যেও তাঁর মুবারক ললাটদেশ থেকে মুবারক ঘামবিন্দু নির্গত হত। উটে আরোহণরত অবস্থায় এ পন্থায় ওহী নাযিল হলে ওহীর গুরুভারে উট মাটিতে বসে পড়ত। পঞ্চম পদ্ধতিঃ- কখনো কখনো হযরত জিবরাঈল আলাইহিস্ সালাম তাঁর সমস্ত ডানাসহ(ছয় শত থেকে ছয় হাজার ডানা বিশিষ্ট) নিজস্ব আকৃতিতে ওহী নিয়ে আসতেন।  ষষ্ঠ পদ্ধতিঃ- হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মি’রাজ রজনীতে উপরে থাকা অবস্থায় আল্লাহ্ পাক তাঁর প্রতি ওহী প্রত্যাদেশ করেছেন। যেমন মি’রাজ রজনীতে নামাযের ব্যাপারে ওহী প্রাপ্ত হওয়া এ পদ্ধতির অন্তর্ভুক্ত।  সপ্তম পদ্ধতিঃ- আল্লাহ্ জাল্লা জালালুহু ও হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মাঝে সরাসরি কথোপকথন।  অষ্টম পদ্ধতিঃ- অন্তরাল বিহীন আলাপন।   মাওয়াহেব রচয়িতা হালীমীর বরাতে উল্লেখ করেন, আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, তাঁর নিকট ৪৬ প্রকারের ওহী প্রেরণ করা হয়েছে। আর তার সবগুলোই তিনি বর্ণনা করেছেন। ফতহুল বারীতে বর্ণিত হয়েছে, এ ৪৬ প্রকার ওহী মূলত উক্ত ৮ প্রকারেরই অন্তর্ভুক্ত।  মূলকথা হলো নবী-রসূল আলাইহিমুস্ সালামগণ সকলেই সম্পূর্ণ রূপে ওহীর দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। তাঁরা ওহী ব্যতীত কোন কথা বলেননি এবং কোন কাজও কস্মিনকালে করেননি। তারই ধারাবাহিকতায় যারা নায়িবে নবী, ওয়ারাছাতুল আম্বিয়া তথা হক্কানী-রব্বানী খালিছ ওলী আল্লাহ্ তাঁরাও আল্লাহ্ পাক এবং তাঁর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নির্দেশ ব্যতীত মনগড়া কোন কথা বলেন না এবং কোন কাজও করেন না।

-আল্লামা মুহম্মদ মাছূমুর রহমান

সাইয়্যিদুল জিননি ওয়াল ইনস, ইমামুল আউয়ালীন ওয়াল আখিরীন, খতীবুল আম্বিয়া হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হায়াতুন নবী

ইমামুল মুরসালীন, রহমতুল্লিল আলামীন, খাতামুন নাবিয়্যীন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মযদা-মতবা, শান-মান সকল নবী-রসূল আলাইহিমুস সালামগণের চেয়ে অনেক উর্দ্ধে

সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ছাহিবু মাক্বামি মাহমূদ, শাফউল উমাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহ ওয়া সাল্লাম উনার শ্রেষ্ঠত্ব

সাইয়্যিদুল কাওনাইন, শাফিউল মুজনিবীন, ইমামুন নাবিয়্যীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আহলে বাইতগণের ফযীলত

সাইয়্যিদুল বাররি ওয়াল বাহর, ইমামুস সাক্বালাইন, তাজেদারে মদীনা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আওলাদগণের ফযীলত