-হযরত মাওলানা মুফতী সাইয়্যিদ মুহম্মদ আব্দুল হালীম
ক্ষমতার লোলুপ দৃষ্টি তাদের এখন এমন প্রকট যে, শরীয়তের বিধি-নিষেধের প্রতি কোন লক্ষ্য নেই। তাদের কুতৎপরতায় নিষ্পেসিত হয়ে মুসলমানগণ ইসলাম ও ইসলামী মূল্যবোধ হারাতে বসেছে। দুনিয়ালোভী উলামায়ে “ছূ” (দুনিয়াদার আলিমরা) কুরআন-সুন্নাহ্র আদেশ-নিষেধের প্রতি কোন তোয়াক্কা না করে অর্থ লোভে হন্যে হয়ে ইহুদী-নাছারাদের সেবা দাসে পরিণত হয়েছে। সেই যুগ সন্ধিক্ষণে যামানার মহান মুজাদ্দিদ তাঁর তাজদীদী হাতিয়ার কোষমুক্ত করেছেন। উলামায়ে “ছূ”দের সেসব কুকর্মের মর্মমূলে কুঠারাঘাত করেছেন। তাদের অনুসৃত ইহুদী-নাছারাদের আদর্শ, ধর্মীয় রীতি-নীতি পরিত্যাগ করে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্ নাবিয়্যীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সুন্নতে সমুজ্জ্বল হওয়ার জন্য তথা তাঁর আদর্শে জীবন গড়ার আহবান জানিয়ে তার পথও রচনা করে দিয়েছেন। নামধারী আলিমদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছেন তাদের বদ আমলের ফিরিস্তি। সারা দুনিয়া হতে সমস্ত বিদ্য়াত, গোমরাহীকে সমূলে উৎখাত করার জন্য তিনি বদ্ধপরিকর। সঠিক, ছহীহ্ ইল্ম প্রচার-প্রসারের মহান দায়িত্বে তিনি সর্বদা নিয়োজিত। উল্লেখ্য যে, তাজদীদ বা সংস্কার কাজে ছহীহ্ ইল্ম, ছহীহ্ সমঝের সমৃদ্ধি ঘটানো একান্ত আবশ্যক। কেননা, ছহীহ্ সমঝ ব্যতীত যেমন ইল্ম অনুযায়ী আমল করা যায় না তেমনি আল্লাহ্ পাক ও তাঁর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মারিফাত-মুহব্বত হাছিল করার কল্পনাও করা যায় না। তাই তিনি ছহীহ্ সমঝ ও ইল্ম দ্বারা পৃথিবীর উপরিভাগকে পরিপূর্ণ করার জন্য সর্বদাই সচেষ্ট। তাঁর ইল্ম প্রচার-প্রসারের যতগুলো মাধ্যম আছে তন্মধ্যে মাসিক আল বাইয়্যিনাত অন্যতম। এটা ৬৪ পৃষ্ঠার একটি মাসিক পত্রিকা বটে। সে মাসিক আল বাইয়্যিনাতই একটি মাসয়ালার সমাধানের ক্ষেত্রে প্রায় পনের’শ দলিল পেশ করে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে যমীনের বুকে। পৃথিবীর ইতিহাসে কেউ কখনও দেখেনি যে, মাত্র ৬৪ পৃষ্ঠার একটি কিতাবে এতো অধিক দলিল সম্বলিত ফতওয়া। মাসিক আল বাইয়্যিনাত-এর নির্ভরযোগ্যতার প্রতি লক্ষ্য করে বিরুদ্ধবাদীরাও অকাতরে স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে যে, “মাসিক আল বাইয়্যিনাত ইল্মের যে খিদমত করছে তা নজীরবিহীন। সুতরাং তা প্রশংসার পূর্ণ হক্বদার।” আর হক্কানী-রব্বানী আলিমগণ তো তাকে পত্রিকা বলেননা বরং তারা বলেন বিশ্ববিখ্যাত কিতাব “বাইয়্যিনাত শরীফ।” যা ঈমান-আক্বীদা ছহীহ্ ও শুদ্ধ করার একমাত্র মাধ্যম। বাতিল ধ্বংস ও গোমরাহী উৎখাত করার নির্ভিক সিপাহ্সালার। বর্তমান ফিৎনা-ফাসাদের যামানায়ও আল বাইয়্যিনাত-এর ইল্ম এবং বিলায়েতের আলো এত স্বল্প সময়ে সারা পৃথিবী বিস্তার করছে যে, তা ভাবতেও অবাক লাগে। আল বাইয়্যিনাত-এর প্রসারিত ইল্মের দাপটে সারাবিশ্বের সমস্ত উলামায়ে “ছূ” অর্থাৎ দুনিয়াদার আলিমরা তটস্থ। আল বাইয়্যিনাত-এর নূরে নূরান্বিত হয়ে হক্কানী-রব্বানী আলিমগণের দেহে প্রাণ সঞ্চার হচ্ছে। বাতিলপন্থীদের সাথে মোকাবিলা করার সীমাহীন শক্তি ও সাহস ফিরে পাচ্ছেন তাঁরা। মুনাফিক ও উলামায়ে ‘ছূ’ এবং বাতিল আক্বীদায় বিশ্বাসীদেরকে নিমিষের মধ্যে পরাজিত করে সঠিক ও ছহীহ্ দ্বীন প্রচার-প্রসার করে বিদ্য়াত ও গোমরাহীর মর্মমূলে আঘাত হানছে। অর্থাৎ “মাসিক আল বাইয়্যিনাত” এমন এক যুগান্তকারী কিতাব যা পাঠে ইল্মে শরীয়ত ও ইল্মে তাছাউফ উভয় ইলমের শুন্যতা পূর্ণ হয়। এটা আল্লাহ্ পাক ও তাঁর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মদদপুষ্ট। সেখানে শুধু কবুলযোগ্য বিষয়গুলোই পত্রস্থ হয়। তা পাঠে পাঠক পৃথিবীর এক প্রান্তে বসেও মুজাদ্দিদুয্ যামান-এর খাছ ফয়েজ-তাওয়াজ্জুহ্ দ্বারা নিজেকে সরফরাজ করতে পারেন।
কাজেই দ্বীন ইসলামকে বুঝা ও তার যাবতীয় খুটি-নাটি বিষয় অবগত হওয়ার প্রকৃত মাধ্যম হচ্ছে ‘আল বাইয়্যিনাত।’ সুতরাং আল্লাহ্ পাক যার হিদায়েত চান তার অন্তরে আল বাইয়্যিনাতের মুহব্বত ও পাঠের প্রতি আগ্রহ পয়দা করে দেন। আল্লাহ্ পাক বলেন,
فمن يرد الله ان يهديه يشرح صدره للاسلام.
অর্থঃ- “আল্লাহ্ পাক যাকে হিদায়েত দানের ইচ্ছা করেন তার অন্তরকে ইসলামের জন্য উন্মুক্ত করে দেন।” (সূরা আনয়াম/১২৫)