-হযরত মাওলানা মুফতী সাইয়্যিদ শোয়াইব আহমদ
যেসব কাজ করলে গুণাহ্ হয়, ছওয়াব কমে যায়, অবশ্য নামায নষ্ট হয়না, সেসব কাজ পরিহার করা উচিত। অন্যথায় নামায মাকরূহের সাথে আদায় হবে। নামাযের মাকরূহগুলো দু’প্রকার, তাহ্রীমী ও তানযীহী। নামাযে মাকরূহ তাহ্রীমী কাজ সংঘটিত হলে নামায দোহ্রিয়ে পড়া ওয়াজিব আর মাকরূহ তানযীহী কাজ সংঘটিত হলে নামায দোহরিয়ে পড়া মুস্তাহাব। নিম্নে মাকরূহ্ তানযীহীসমূহ উল্লেখ করা হলো-
(ধারাবাহিক)
(১) নামাযের মধ্যে শরীর বা পরিধানের কাপড় নিয়ে খেলা করা।
(২) সিজদা যাওয়াকালে সম্মুখের বা পিছনের দিক হতে কাপড় গুটিয়ে নেয়া।
(৩) সিজদার সময় কঙ্কর সরিয়ে দেয়া; কিন্তু সুন্নত অনুসারে সিজদা আদায় না হলে, একবার তা সরানো জায়িয হবে।
(৪) দাঁড়ি খিলাল করা।
(৫) ধূলা-বালি মিশ্রিত হওয়ার ভয়ে কাপড়কে টেনে রাখা।
(৬) বিনা ওজরে সজোরে শ্লেষ্মা বের করা।
(৭) স্বেচ্ছায় ঢেকুর তোলা।
(৮) কুরআন শরীফের সূরার যে তরতীব আছে তার বিপরীত পড়া।
(৯) ক্বিয়াম ব্যতীত অন্যস্থানে সূরা-ক্বিরায়াত পাঠ করা।
(১০) ক্বিরায়াত পড়তে পড়তে রুকুতে যাওয়া।
(১১) প্রথম রাক্য়াতে যে সূরা পড়া হয় দ্বিতীয় রাক্য়াতে তার উপরের সূরা পড়া।
(১২) নামাযের নিয়ম ব্যতীত আঙ্গুলসমূহ ক্বিবলার বিপরীত দিকে ফিরিয়ে রাখা।
(১৩) চক্ষু বন্ধ করে নামায পড়া মাকরূহ্ তানযীহ্; কিন্তু যদি চক্ষু বন্ধ করলে মন আল্লাহ্ পাক-এর দিকে রুজু হয় তাহলে মাকরূহ্ তানযীহ্ হবেনা।
(১৪) পরিস্কার কাপড় থাকা সত্ত্বেও ময়লা কাপড় পরিধান করে নামায পড়া।
(১৫) ক্ষুধায় কাতর হলে উপস্থিত খানা রেখে নামায পড়া।
(১৬) হাতের কড়ায় রাক্য়াত, তাসবীহ্ গণনা করা।
(১৭) রুকু-সিজদার নির্দিষ্ট তাসবীহ্ না পড়া অথবা তিন বারের কম তাসবীহ্ পড়া।
(১৮) বিনা কারণে এক পায়ের উপর ভর করে দাঁড়ানো।
(১৯) ছোলা অপেক্ষা আকারে ছোট কোন বস্তু গিলে ফেলা।
(২০) বিনা ওজরে সিজদায় যাওয়ার সময় প্রথমে হাত রাখা এবং সিজদা হতে উঠার সময় হাটু উঠানো।
(২১) রুকুর মধ্যে উপরের দিকে বা নিচের দিকে মাথা বাঁকা করে রাখা।
(২২) রুকু-সিজদার তাকবীর রুকুতে ও সিজদায় গিয়ে বলা।
(২৩) নামাযের মধ্যে যে সমস্ত সুন্নতে যায়িদা ও মুস্তাহাব রয়েছে তা তরক করা।
(২৪) নামাযের মধ্যে ইচ্ছা পূর্বক সুঘ্রাণ নেয়া।
(২৫) রুকুতে, তাশাহুদের সময় ও দু’সিজদার মাঝে বৈঠকের সময় হাতলি হাঁটুর উপর না রাখা।
(২৬) নামাযের মধ্যে আমলে কালীল অর্থাৎ সামান্য কাজ করা। যেমন ছারপোকা, মশামাছি, উকুন ইত্যাদি না কামড়াতেই মারা।
(২৭) যে দ্রব্য মুখে রাখলে ক্বিরয়াত পড়তে বাধার সৃষ্টি হয়না তা মুখে রাখা।
(২৮) ওয়াক্ত ও জামায়াত তরকের আশংকা না হলে শরয়ী দিরহামের কম নাপাকসহ নামায পড়া।
(২৯) ঘুমন্ত ব্যক্তিকে সামনে রেখে নামায পড়া।
(৩০) মসজিদের কোন স্থান নির্দিষ্ট করে তথায় নামায পড়া। নির্দিষ্ট স্থান ছেড়ে অন্য স্থানে নামায পড়লে যদি নির্দিষ্ট স্থানের জন্য মনে আর্কষণ সৃষ্টি না হয় তবে মাকরূহ তানযীহ্ হবেনা।
(৩১) কানে উলার সময় হাত স্কন্ধের নীচে বা কানের উপরে উঠানো।
(৩২) এক সালাম না ফিরিয়ে সিজদায়ে সাহু দেয়া।
(৩৩) সিজদার সময় ইচ্ছাপূর্বক কাপড় দ্বারা পা ঢাকা বা অনাবৃত করা।
(অসমাপ্ত)
ফিক্বহুল হাদীস ওয়াল আছার পীর ছাহেব ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে (৫৩)
ফিক্বহুস সুনান নামায ভঙ্গকারী বিষয়সমূহের বয়ান
ফিক্বহুস্ সুনান: নামায ভঙ্গকারী বিষয় সমূহের বয়ান