খলীফাতুল্লাহ,  খলীফাতু   রসূলিল্লাহ,  ইমামুশ  শরীয়ত  ওয়াত তরীক্বত, ইমামুল  আইম্মাহ, মুহ্ইস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদে আ’যম, হুজ্জাতুল ইসলাম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া, সুলত্বানুল ওয়ায়িজীন, গাউছূল আ’যম, ছাহিবু সুলত্বানিন নাছীর, হাবীবুল্লাহ, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর ওয়াজ শরীফ কুরআন  শরীফ ও সুন্নাহ্ শরীফের আলোকে-  পর্দার গুরুত্ব-তাৎপর্য, ফাযায়েল-ফযীলত ও হুকুম-আহ্কাম

সংখ্যা: ১০৬তম সংখ্যা | বিভাগ:

(ধারাবাহিক)

            হাদীস শরীফে বলা হয়েছে, যখন কেউ প্রবেশ করতে চায়, অনুমতি নিতে চায়, তাহলে তাকে স্পষ্ট করে তার বর্ণনা দিতে হবে, কে এসেছে?

عن جابر رضى الله تعالى عنه قال اتيت النبى صلى الله عليه وسلم فى دين كان على ابى قدققت التاب فقال من ذا فقلت انا فقال انا انا كانه كرهها.

“হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন, আমি একবার আখিরী রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর হুজরা শরীফে গেলাম। যাওয়ার কারণ ছিলো, আমার পিতার উপর ঋণ ছিল সে ঋণের ব্যাপারে আলোচনা করার জন্য। দরজা খটখটি দিলাম, আখিরী রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আওয়াজ করলেন, কে? আমি বললাম, “انا – আমি।” এটা শুনে আখিরী রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, “انا-انا আমি, আমি, বলতে তুমি কি বুঝাচ্ছো?”

 كانه كرهها হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বললেন, “আমার মনে হলো যে, এটা আল্লাহ্ পাক-এর রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অপছন্দ করলেন।” ‘আমি’, ‘আমি’ অর্থ কি? ‘আমি’ তো যে কেউ হতে পারে? তার স্পষ্ট নাম বলতে হবে। অথবা যে নামে সে পরিচিতি লাভ করেছে বা যে নাম বললে তাকে চেনা সহজ হবে, এমন নাম বলবে। এরপর অনুমতি দিলে সে প্রবেশ করবে। স্পষ্ট করে বলে, তারপর তাকে প্রবেশ করতে হবে। অস্পষ্ট কোন কথা যেন সে না বলে। স্পষ্ট পরিচয় দিবে। অনুমতি যদি দেয়া হয়, এরপর সে প্রবেশ করবে।     কাজেই অনুমতি নেয়া الا ان يؤذن لكم এটা আম এবং  খাছ   সকলের বাড়ীতে গেলেই অনুমতি নিয়ে প্রবেশ করতে হবে। আর বিশেষ করে আখিরী রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর হুজরা শরীফে প্রবেশ করার জন্য তো অবশ্যই খাছ অনুমতির দরকার রয়েছে।           এখানে পর্দার জন্য একটা বিষয় হচ্ছে অনুমতি নেয়া, অনুমতি নিলে পর্দা রক্ষা করা সহজ হয়। বিনা অনুমতিতে কেউ যদি ঘরে প্রবেশ করে যায়, বেপর্দা হওয়াটাই স্বাভাবিক। সেজন্য আল্লাহ্ পাক সেটা বলে দিলেন যে, তোমরা অনুমতি নিয়ে প্রবেশ করবে, তাহলে তোমাদের পর্দার সহায়ক হবে। তোমরা বেপর্দা হবে না।

এরপর বলা হয়েছে যে, তাকে খাদ্য খাওয়ার জন্য ডাকা হবে অর্থাৎ সময়ের পূর্বে যেন প্রবেশ না করে, সেখানে না যায়, অনুমতি প্রার্থনা না করে, ولكن اذا دعيتم فادخوا. “যখন শুধু ডাকা হবে অর্থাৎ অনুমতি দেয়া হবে তখনি প্রবেশ করবে। অর্থাৎ ডাকা হলে প্রবেশ করবে।” সেটাই আখিরী রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অন্য হাদীস শরীফে ইরশাদ করেছেন,

عن ابن عمر رضى الله تعاى عنه ان رسول الله صلى الله عليه وسلم قال اذا دعى احدكم الى الوليمة فليأتيها.

“যদি কোন অলীমাতে তোমাদেরকে দাওয়াত দেয়া হয়, তাহলে তোমরা সেখানে যেও, দাওয়াত কবুল করো।”    আরো বলেছেন,

عن جابر رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم اذا دعى احدكم الى طعام فليجب فان شاء طعم وان شاء ترك.

“যখন তোমাদেরকে দাওয়াত দেয়া হবে তখন তোমরা দাওয়াত কবুল করো, তবে খাওয়া বা না খাওয়া তোমার ইখতিয়ার রয়েছে।”   এখানে অবশ্য অনেক লম্বা কথা আছে, আমরা সামনে বিস্তারিত আলোচনা করব।     কাউকে যদি দাওয়াত দেয়া হয় অলীমার জন্য, সে দাওয়াত কবুল করে সেখানে যাবে; ইচ্ছা করলে সে খাবে অথবা খাবেনা। অর্থাৎ যদি কাউকে দাওয়াত দেয়া হয় সেটা তার জন্য কবুল করা ওয়াজিব নয়। ক্ষেত্র বিশেষে ওয়াজিব হবে। ক্ষেত্র বিশেষে সেটা সুন্নত হবে। ক্ষেত্র বিশেষে সেটা হারাম হবে।       যেখানে দাওয়াতে গেলে হারাম কোন কাজ করার সম্ভাবনা রয়েছে, হারাম কোন পরিস্থিতিতে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে, সেখানে দাওয়াত গ্রহণ করা নাজায়িয, হারাম। আর যে দাওয়াত বরকতের কারণ সেখানে যাওয়াটা ওয়াজিব। আর যে দাওয়াতে স্বাভাবিক রয়েছে সেটা হচ্ছে সুন্নত-মুস্তাহাব।

ولكن اذا دعيتم فادخلوا.

“যখন ডাকবে তখনি প্রবেশ করবে। না ডাকলে তোমরা প্রবেশ করোনা।”  কারণ বিনা দাওয়াতে যদি কেউ কারো বাড়ীতে যায়- এক নম্বর; ডাকলে অনুমতি নিয়ে প্রবেশ করলে পর্দার জন্য সহায়ক হবে। আর দুই নম্বর হলো অনুমতি না নিয়ে প্রবেশ করলে পর্দার খিলাফ হবে।         আবার বিনা দাওয়াতে যদি কেউ কারো বাড়ীতে যায় সেটাও নিষেধ করা হয়েছে। আখিরী রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিষেধ করেছেন,

عن ابن عمر رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى اله عليه وسلم من دخل على غير دعوة دخل سارقا وخرج مغيرا.

আখিরী রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন যে, “কোন ব্যক্তি যদি দাওয়াত ব্যতীত কোথাও খেতে যায় বা কোন খাদ্য খেতে যায় তাহলে সে চোর হয়ে প্রবেশ করবে, যখন খেয়ে বের হয়ে আসবে, তখন সে লুক্তনকারী, ডাকাত হিসেবে বের হয়ে আসবে।’ যেহেতু তার জন্য খাদ্যটা হালাল হয়নি। তাকে দাওয়াত দেয়া হয়নি। বিনা দাওয়াতে সে খেতে গিয়েছে। সেটা সে চোর হিসেবে প্রবেশ করবে এবং খাওয়া যখন খেয়ে ফিরে আসবে তখন সে ডাকাত হিসেবে লুক্তনকারী, ছিনতাইকারী হিসেবে বের হয়ে আসবে।

সেজন্য নিষেধ করা হয়েছে, বিনা দাওয়াতে কোথাও যেন কেউ খেতে না যায়। যার দাওয়াত থাকবে, সেই শুধু খেতে আসবে। তার জন্য সেটা জায়িয রয়েছে। বিনা অনুমতিতে জায়িয নেই এবং শুধু এতটুকুই নয়। অন্য এক হাদীস শরীফে রয়েছে যে, আখিরী রসুল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যেহেতু

لقد كان لكم فى رسول الله اسوة حسنة.

“তোমাদের জন্য তোমাদের রসূলের মধ্যে উত্তম আদর্শ রয়েছে।”

আখিরী রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রত্যেকটা আয়াত শরীফ এবং হাদীস শরীফ আমল করে দেখিয়েছেন। আরেকটা হাদীস শরীফ রয়েছে,

عن ابى عبد الله الانصارى رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم يا ابا شعيب ان رجلاتبعنا فان شئت اذنت له وان شئت تركته قال لا بل اذنت له.

 “হযরত আবূ আব্দুল্লাহ্ আনছারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করতেছেন যে, তিনি একদিন আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্ নাবিয়্যীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে দাওয়াত দেয়ার জন্য চিন্তা ভাবনা করে পাঁচ জনকে দাওয়াত দেয়ায় পাঁচ জনের ব্যবস্থা করলেন। তিনি বলেন, আমি পাঁচ জনকে দাওয়াত দিব। অর্থাৎ আখিরী রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সাথে আরো চারজন। এটা সিদ্ধান্ত করে তিনি পাকশাক করলেন। পাকশাক করে দাওয়াত দিলেন। দাওয়াত খাওয়ার জন্য যখন আখিরী রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আসতেছিলেন, তখন আরেকজন ছাহাবী আখিরী রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে কোথাও যেতে দেখে সাথে শামিল হলেন। কথা বলতে বলতে উনি সেই দাওয়াতকারীর বাড়ী পর্যন্ত এসে পৌঁছলেন। যখন পৌঁছলেন তখন আখিরী রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, “দেখ এখানে তো পাঁচ জনের দাওয়াত দেয়া হয়েছে। সেই ব্যক্তি যিনি বাড়ীওয়ালা, উনাকে আবূ শোয়াইব বলে মানুষ চিনত। তাঁকে সম্বোধন করে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন যে,

يا ابا شعيب ان رجلا تبعنا.

 হে আবু শোয়াইব! একজন লোক আমাদের সাথে চলে এসেছে, فان شئت اذنت له যদি তুমি চাও তাকে   অনুমতি  দিতে পার وان شئت تركته আর যদি ইচ্ছা  কর  তাহলে তাকে তুমি মানাও করে দিতে পার। যেহেতু তাকে আগে দাওয়াত দেয়া হয়নি।”  قال لابل اذنت له. সে ছাহাবী বললেন, “ইয়া   রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনার সাথে এসেছেন উনি। অবশ্যই আমি উনাকে অনুমতি দিব। উনাকে তো ফিরিয়ে দেয়া যায়না।”  (অসমাপ্ত)

ওয়াজ শরীফ কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ উনার আলোকে পদার গুরুত্ব-তাৎপয, ফাযায়লে-ফযীলত ও হুকুম-আহকাম

ইমামুল আ’ইম্মা, মুহ্ইস্ সুন্নাহ্, ক্বাইয়্যুমুযযামান, কুতুবুল আলম,  মুজাদ্দিদুয্ যামান, সুলতানুল ওয়ায়েজীন, গাউসুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া, আফযালুল আউলিয়া, সুলতানুন্ নাছির, গরীবে নেওয়াজ,  হাবীবুল্লাহ্, আওলার্দু রসূল, রাজারবাগ শরীফের হযরত পীর ছাহেব ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর ওয়াজ শরীফ: কুরআন  শরীফ ও সুন্নাহ্ শরীফের আলোকে- পর্দার গুরুত্ব-তাৎপর্য, ফাযায়িল-ফযীলত ও হুকুম-আহ্কাম       

ইমামুল আ’ইম্মা, মুহ্ইস্ সুন্নাহ্, ক্বাইয়্যুমুয ্যামান, কুতুবুল আলম,  মুজাদ্দিদুয্ যামান, সুলতানুল ওয়ায়েজীন, গাউসুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া, আফযালুল আউলিয়া, সুলতানুন্ নাছির, গরীবে নেওয়াজ,  হাবীবুল্লাহ্, আওলার্দু রসূল, রাজারবাগ শরীফের হযরত পীর ছাহেব ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর ওয়াজ শরীফ কুরআন  শরীফ ও সুন্নাহ্ শরীফের আলোকে- পর্দার গুরুত্ব-তাৎপর্য, ফাযায়িল-ফযীলত ও হুকুম-আহ্কাম (ধারাবাহিক)

ইমামুল আ’ইম্মা, মুহ্ইস্ সুন্নাহ্, ক্বাইয়্যুমুয যামান, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদুয্ যামান, সুলতানুল ওয়ায়েজীন, গাউসুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া, আফযালুল আউলিয়া, সুলতানুন্ নাছির, গরীবে নেওয়াজ,  হাবীবুল্লাহ্, আওলাদুর রসূল, রাজারবাগ শরীফের হযরত পীর ছাহেব ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর ওয়াজ শরীফ কুরআন  শরীফ ও সুন্নাহ্ শরীফের আলোকে- পর্দার গুরুত্ব-তাৎপর্য, ফাযায়িল-ফযীলত ও হুকুম-আহকাম

ইমামুল আ’ইম্মা, মুহইস সুন্নাহ, ক্বাইয়্যুমুয যামান, কুতুবুল আলম,  মুজাদ্দিদুয যামান, সুলতানুল ওয়ায়েজীন, গাউসুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া, আফযালুল আউলিয়া, সুলতানুন নাছির, গরীবে নেওয়াজ,  হাবীবুল্লাহ, আওলাদুর রসূল, রাজারবাগ শরীফের হযরত পীর ছাহেব ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর   ওয়াজ শরীফ কুরআন  শরীফ ও সুন্নাহ শরীফের আলোকে- পর্দার গুরুত্ব-তাৎপর্য, ফাযায়িল-ফযীলত ও হুকুম-আহকাম