ওয়াজ শরীফ কুরআন  শরীফ ও সুন্নাহ্ শরীফের আলোকে- পর্দার গুরুত্ব-তাৎপর্য, ফাযায়িল-ফযীলত ও হুকুম-আহ্কাম

সংখ্যা: ১১২তম সংখ্যা | বিভাগ:

    (ধারাবাহিক)

আর যদি নিজস্ব ঘরে যারা গৃহের অধিবাসী তারা চলাচল করে তখন তাদের কি হুকুম?

           সে প্রসঙ্গে আল্লাহ্ পাক বলেন,

يايها الذين امنوا ليستاذنكم الذين ملكت ايمانك والذين لم يبلغوا الحلم منكم ثلث مرت من قبل صلوة الفجر وحين تضعون ثيابكم من الظهيرة ومن بعد صلوة العشاء ثلث عورت لكم ليس عليكم ولا عليهم جناح بعدهن طوفون عليكم بعضكم على بعض كذلك يبين الله لكم الايت والله عليم حكيم.

হে ঈমানদারগণ! তোমাদের অধীনস্থ যারা বান্দী-দাসী, খাদিম-খুদ্দাম রয়েছে,

والذين لم يبلغوا الحلم منكم.

তোমাদের মধ্যে তোমাদের আল আওলাদ ও ছেলে-মেয়ে, যারা নাবালিগ-নাবালিগা এদের সম্পর্কে আল্লাহ্ পাক ইরশাদ করেন- ليستأذنكم الذين. তারা যেন তোমাদের  কাছে অনুমতি নিয়ে, ثلت مرت “তিন সময় কমপক্ষে তারা যেন অনুমতি নিয়ে তোমাদের ঘরে প্রবেশ করে।” ‘কোন তিন সময়?’

আল্লাহ্ পাক ইরশাদ করেন, من قبل صلوة الفجر ফজরের নামাযের পূর্বের সময় وحين تضعون ثيابكم من الظهيرة. যখন যোহরের নামাযের পর তোমরা শুয়ে থাক, কাপড় ঢিলা করে; তার বাঁধনটা খুলে ومن بعد صلوة العشاء এবং ইশার নামাযের পর ثلث عورت لكم এ তিন সময় হচ্ছে মানুষের বিশ্রাম নেয়ার সময়। মানুষ কাপড়ের বাঁধনটা খুলে, ঢিলাঢালা করে শুয়ে থাকে, বিশ্রাম করে এবং এর সাথে যা কিছু সংশ্লিষ্ট আছে সে সময়, সে সমস্ত কাজেও তারা জড়িত থাকে।”

অর্থাৎ আল্লাহ্ পাক বলেছেন, এই তিন সময় তোমাদের ঘরে যারা রয়েছে, যারা বান্দী-দাসী। এখন তো সেই বান্দী-দাসী, গোলাম নেই। যারা খাদিম-খুদ্দাম থাকবে, কর্মচারী থাকবে তারা এবং যারা ছেলে-মেয়ে, সন্তান-সন্ততি, নাবালিগ-নাবালিগা তারা যেন অনুমতি নিয়ে তিন সময় প্রবেশ করে।

ليس عليكم ولا عليهم جناح بعدهن.

এছাড়া অন্য যে সময় তোমরা ঘরে থাক, সে সময় যদি তোমাদের খাদিম-খুদ্দাম, নাবালিগ-নাবালিগা ছেলে-মেয়েরা প্রবেশ করে তাতে তাদের ও তোমাদের কারো কোন গুণাহ্ হবেনা। طوفون عليكم بعضكم على بعض.

তোমরা যখন এক ঘরে থাক, নিশ্চয় পরস্পর পরস্পরের কাছে যাতায়াত করে থাক।”

          অর্থাৎ মানুষ যখন ঘর-বাড়িতে থাকে, ছেলে-মেয়ে, স্ত্রী-পুত্র তারা পরস্পর পরস্পরের কাছে চলাচল করে থাকে, যাতায়াত করে থাকে তাতে কোন দোষ হবেনা, সে তিন সময় ছাড়া, অনুমতি ব্যতীত।

كذلك يبين الله لكم الايت.

“এভাবেই আল্লাহ্ পাক হুকুম-আহ্কাম, নিদর্শন, আদেশ-নিষেধ বর্ণনা করে থাকেন।”

والله عليم حكيم.

“আল্লাহ্ পাক হচ্ছেন জ্ঞানী এবং সব জাননেওয়ালা।”

এখানে বলা হয়েছে, খাদিম-খুদ্দাম এবং বিশেষ করে যারা নাবালিগ সন্তান-সন্ততি তাদের কথা।

এরপর আল্লাহ্ পাক ইরশাদ করেন,

اذا بلغ الاطفال منكم الحلم.

“তোমাদের ছেলে-মেয়ের মধ্যে যারা বালিগ-বালিগা হয়েছে।”

فليستأذنوا كما استأذن الذين من قبلهم.

তারা যখন প্রবেশ করবে তারা যেন অবশ্যই অনুমতি নিয়ে প্রবেশ করে। যেমন পূর্ববর্তীরা অনুমতি নিয়ে প্রবেশ করেছেন। আল্লাহ্ পাক সেটা স্পষ্ট করে এখানে বলে দিয়েছেন, كذلك يبين الله لكم ايته.

এ আয়াত শরীফের পর আল্লাহ্ পাক একই কথা উল্লেখ করলেন, যে এভাবেই আল্লাহ্ পাক হুকুম-আহ্কাম, আদেশ-নির্দেশ, নিদর্শন বর্ণনা করে থাকেন এবং والله عليم حكيم.

“নিশ্চয়ই আল্লাহ্ পাক জ্ঞানী এবং সবকিছু জাননেওয়ালা, সর্বজ্ঞাত।”

এ আয়াত শরীফের মধ্যে আল্লাহ্ পাক বলে দিলেন, তোমরা যারা প্রবেশ করবে ঘরে, গৃহবাসী যারা রয়েছেন তাদের হুকুম-আহ্কাম এখানে স্পষ্ট করে বলে দেয়া হলো। এ জন্য হাদীস শরীফে ইরশাদ করা হয়েছে যে, “সালাম যে মানুষ দিবে ও দিয়ে প্রবেশ করবে। সালামের মধ্যে কি বিষয় রয়েছে?”

          এর ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে যে, সালামের মধ্যে কয়েকটা বিষয় রয়েছে। এক নম্বর হচ্ছে, একটা লোককে সালাম দেয়ার অর্থ হলো, আমার তরফ থেকে তোমাকে সালাম, শান্তি, নিরাপত্তা দেয়া হলো, দোয়া করা হলো, অনুমতি দেয়া হলো। দ্বিতীয় নম্বর হচ্ছে, আল্লাহ্ পাক-এর যিকির বা স্মরণও রয়েছে, দোয়া রয়েছে। সেটা হাদীস শরীফে উল্লেখ করা হয়েছে।

আখিরী রসূল, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন যে,

عن ابى هريرة رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم لاتدخلون الجنة حتى تؤمنوا ولا تؤمنوا حتى تحابوا او لاادلكم على شيئ اذا فعلتموه تحاببتم افشوا السلام بينكم.

“হযরত আবু হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন যে, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন যে, তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবেনা ততক্ষণ পর্যন্ত যতক্ষণ পর্যন্ত ঈমান না আনবে। আর ঈমানদার খালিছ হতে পারবে না ততক্ষণ পর্যন্ত যতক্ষণ পর্যন্ত তোমরা পরস্পর পরস্পরকে মুহব্বত না করবে। যতক্ষণ পর্যন্ত পরস্পর পরস্পরকে মুহব্বত না করবে ততক্ষণ পর্যন্ত ঈমান পরিপূর্ণ হবেনা।”

          এরপর ইরশাদ করেন, “আমি কি বলে দিব এমন একটা কাজের কথা, যেটা করলে তোমাদের ঈমান, পরস্পর মুহব্বত বৃদ্ধি হবে। যেই মুহব্বত বৃদ্ধি হলে তোমাদের ঈমানও বৃদ্ধি হবে।”

এরপর বললেন,

افشوا السلام بينكم.

“পরস্পর পরস্পরের প্রতি সালাম দিও।” সালামের কারণে তোমাদের মধ্যে মুহব্বত পয়দা হবে। মুহব্বতের কারণে ঈমানের মজবুতী আসবে এবং তোমাদের জন্য না’জাত পাওয়া সহজ হবে। জান্নাতে যাওয়া সহজ হবে। (সুবহানাল্লাহ্)

সেজন্য বলা হয়েছে যে,

المسلم من سلم المسلمون من لسانه ويده.

মুসলমান তো ঐ ব্যক্তি যার যবান এবং হাত থেকে মানুষ নিরাপদ থাকে। যার যবান থেকে এবং হাত থেকে মানুষ নিরাপদ, সে হচ্ছে প্রকৃত মুসলমান। যার যবান এবং হাত থেকে মুসলমান নিরাপদ নয়, সে প্রকৃত মুসলমান নয়।

          সেটাই বলা হয়েছে, সালাম দিয়ে প্রবেশ করার অনুমতি নিবে। এটা অপরের বাড়িতে প্রবেশ করার সময় এক হুকুম, আবার নিজের বাড়িতে যখন চলাচল করবে তখন ঠিক তিন সময় অবশ্যই অনুমতি নিবে। অন্যান্য সময় সেটা বলা হয়নি। এখন বালিগ-বালিগা, নাবালিগ-নাবালিগা, খাদিম-খুদ্দাম, অধীনস্ত, মাতাহাত যারা রয়েছে তাদের প্রত্যেকের জন্যই এই হুকুম জারী করা হয়েছে। (অসমাপ্ত)

ইমামুল আ’ইম্মা, মুহ্ইস্ সুন্নাহ্, ক্বাইয়্যুমুয্ যামান, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদুয্ যামান, সুলতানুল ওয়ায়েজীন, গাউসুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া, আফযালুল আউলিয়া, সুলতানুন্ নাছির, গরীবে নেওয়াজ, হাবীবুল্লাহ্, আওলার্দু রসূল, রাজারবাগ শরীফের হযরত পীর ছাহেব ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর ওয়াজ শরীফ কুরআন  শরীফ ও সুন্নাহ্ শরীফের আলোকে- পর্দার গুরুত্ব-তাৎপর্য, ফাযায়িল-ফযীলত ও হুকুম-আহ্কাম

`ইমামুল আ’ইম্মা, মুহ্ইস্ সুন্নাহ্, ক্বাইয়্যুমুয্ যামান, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদুয্ যামান, সুলতানুল ওয়ায়েজীন, গাউসুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া, আফযালুল আউলিয়া, সুলতানুন্ নাছির, গরীবে নেওয়াজ, হাবীবুল্লাহ্, আওলার্দু রসূল, রাজারবাগ শরীফের হযরত পীর ছাহেব ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর ওয়াজ শরীফ কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ্ শরীফের আলোকে- পর্দার গুরুত্ব-তাৎপর্য, ফাযায়িল-ফযীলত ও হুকুম-আহ্কাম -১৯

ইমামুল আ’ইম্মা, মুহ্ইস্ সুন্নাহ্, ক্বাইয়্যুমুয্ যামান, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদুয্ যামান, সুলতানুল ওয়ায়েজীন, গাউসুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া, আফযালুল আউলিয়া, সুলতানুন্ নাছির, গরীবে নেওয়াজ, হাবীবুল্লাহ্, আওলার্দু রসূল, রাজারবাগ শরীফের হযরত পীর ছাহেব ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর ওয়াজ শরীফ কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ্ শরীফের আলোকে- পর্দার গুরুত্ব-তাৎপর্য, ফাযায়িল-ফযীলত ও হুকুম-আহ্কাম -২০

    ইমামুল আ’ইম্মা, মুহ্ইস্ সুন্নাহ্, ক্বাইয়্যুমুয্ যামান, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদুয্ যামান, সুলতানুল ওয়ায়েজীন, গাউসুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া, আফযালুল আউলিয়া, সুলতানুন্ নাছির, গরীবে নেওয়াজ, হাবীবুল্লাহ্, আওলার্দু রসূল, রাজারবাগ শরীফের হযরত পীর ছাহেব ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর ওয়াজ শরীফ কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ্ শরীফের আলোকে- পর্দার গুরুত্ব-তাৎপর্য, ফাযায়িল-ফযীলত ও হুকুম-আহ্কাম – ২১

ইমামুল আ’ইম্মা, মুহ্ইস্ সুন্নাহ্, ক্বাইয়্যুমুয্ যামান, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদুয্ যামান, সুলতানুল ওয়ায়েজীন, গাউসুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া, আফযালুল আউলিয়া, সুলতানুন্ নাছির, গরীবে নেওয়াজ,  হাবীবুল্লাহ্, আওলার্দু রসূল, রাজারবাগ শরীফের হযরত পীর ছাহেব ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর  ওয়াজ শরীফ কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ্ শরীফের আলোকে- পর্দার গুরুত্ব-তাৎপর্য, ফাযায়িল-ফযীলত ও হুকুম-আহ্কাম – ২২