ফতওয়া বিভাগ : গবেষণা কেন্দ্র- মুহম্মদিয়া জামিয়া  শরীফ জানাযা নামাযের পর হাত তুলে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করার শরয়ী ফায়সালা ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া   

সংখ্যা: ১০৫তম সংখ্যা | বিভাগ:

[সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ্ রব্বুল আলামীনের জন্যে এবং অসংখ্য দরূদ ও সালাম আল্লাহ্ পাক-এর হাবীব, আখিরী রসূল, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর প্রতি। মহান আল্লাহ্ পাক-এর অশেষ রহ্মতে আমাদের গবেষণা কেন্দ্র, “মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ”-এর ফতওয়া বিভাগের তরফ থেকে, বহুল প্রচারিত, হক্বের অতন্দ্র প্রহরী, বাতিলের আতঙ্ক ও আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদায় বিশ্বাসী একমাত্র দলীল ভিত্তিক মুখপত্র “মাসিক আল বাইয়্যিনাত” পত্রিকায় যথাক্রমে টুপির ফতওয়া, অঙ্গুলী চুম্বনের বিধান, নিয়ত করে মাজার শরীফ যিয়ারত করা, ছবি ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় হারাম হওয়ার ফতওয়া, জুমুয়ার নামায ফরযে আইন ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ফতওয়া, মহিলাদের মসজিদে গিয়ে জামায়াতে নামায পড়া মাকরূহ্ তাহ্রীমী সম্পর্কে ফতওয়া, কদমবুছী ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া, তাহাজ্জুদ নামায জামায়াতে পড়া মাকরূহ্ তাহ্রীমী ও বিদ্য়াতে সাইয়্যিয়াহ্ এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া, ফরয নামাযের পর মুনাজাত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া, ইন্জেকশন নেয়া রোযা ভঙ্গের কারণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া, তারাবীহ্-এর নামাযে বা অন্যান্য সময় কুরআন শরীফ খতম করে উজরত বা পারিশ্রমিক গ্রহণ করা জায়িয ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া, তারাবীহ্ নামায বিশ রাকায়াত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া, দাড়ী ও গোঁফের শরয়ী আহ্কাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া, প্রচলিত তাবলীগ জামায়াত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া, আযান ও ছানী আযান মসজিদের ভিতরে দেয়ার আহ্কাম এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া, দোয়াল্লীন-যোয়াল্লীন-এর শরয়ী ফায়সালা এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া, খাছ সুন্নতী টুপি ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া, নূরে মুহম্মদী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া, ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারকের আহ্কাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কিত ফতওয়া এবং শরীয়তের দৃষ্টিতে আখিরী যোহ্র বা ইহ্তিয়াতুয্ যোহ্রের আহ্কাম এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া পেশ করার পর ২১তম ফতওয়া হিসেবে “জানাযা নামাযের পর হাত তুলে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করার শরয়ী ফায়সালা ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” পেশ করে আসতে পারায় মহান আল্লাহ্ পাক-এর দরবারে অসংখ্য শুকরিয়া।] জানাযা নামাযের পর হাত তুলে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করার শরয়ী ফায়সালা ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া দেয়ার কারণ    সুন্নতের পথিকৃত, হক্বের অতন্দ্র প্রহরী, দ্বীন ইসলামের নির্ভীক সৈনিক, সারা জাহান থেকে কুফরী, শিরিকী ও বিদ্য়াতের মূলোৎপাটনকারী, বাতিলের আতঙ্ক এবং আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদায় বিশ্বাসী একমাত্র দলীলভিত্তিক মুখপত্র- “মাসিক আল বাইয়্যিনাত” পত্রিকায় যত লিখা বা ফতওয়াই প্রকাশ বা পত্রস্থ হয়েছে তার প্রতিটিরই উদ্দেশ্য বা মাকছূদ এক ও অভিন্ন। অর্থাৎ “মাসিক আল বাইয়্যিনাতে” এমন সব লিখাই পত্রস্থ করা হয়, যা মানুষের আক্বীদা ও আমলসমূহ পরিশুদ্ধ করণে বিশেষ সহায়ক।     তদ্রুপ “মাসিক আল বাইয়্যিনাতে” “জানাযা নামাযের পর হাত তুলে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করার শরয়ী ফায়সালা ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া দেয়ার উদ্দেশ্য বা মাকছূদও ঠিক তাই। কেননা কিছু লোক “ক্বিল্লতে ইল্ম ও ক্বিল্লতে ফাহ্ম”- অর্থাৎ কম জ্ঞান ও কম বুঝের কারণে বলে থাকে যে, “জানাযার পর দোয়া করা বিদ্য়াত ও নাজায়িয।”    তাদের উক্ত বক্তব্য একদিক থেকে যেরূপ ঈমান বা আক্বীদার ক্ষেত্রে ক্ষতির কারণ, অপর দিক থেকে আমলের ক্ষেত্রেও ক্ষতির কারণ।  প্রথমতঃ ঈমানের ক্ষেত্রে ক্ষতির কারণ এ জন্য যে, আমাদের আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের ফতওয়া হলো কোন জায়িয আমলকে নাজায়িয বলা কুফরী। অর্থাৎ ঈমান বিনষ্ট হওয়ার কারণ। অথচ বান্দার ইবাদত-বন্দিগী বা নেক আমল কবুল হওয়ার জন্যে প্রধানতম শর্ত হচ্ছে- আক্বীদা শুদ্ধ থাকা অর্থাৎ আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদার ন্যায় আক্বীদা পোষণ করা। কারণ বিশুদ্ধ আক্বীদা আমল কবুল হওয়ার পূর্ব শর্ত।  দ্বিতীয়তঃ আমলের ক্ষেত্রে ক্ষতির কারণ এ জন্য যে, তাদের উক্ত অশুদ্ধ বক্তব্যের কারণে যেরূপ ‘মাইয়্যিত’ জীবিতদের দোয়া হতে বঞ্চিত হবে তদ্রুপ বঞ্চিত হবে হাদীস শরীফের উপর আমল করা থেকে। কারণ আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ্, আশেকে উম্মত, নূরে মুজাস্সাম, ফখরে দু’আলম, রহমতুল্লিল আলামীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ‘মাইয়্যিতের’ জন্য অধিক মাত্রায় এবং ইখলাছের সাথে দোয়া করতে বলেছেন বলে ছহীহ্ হাদীস শরীফে বর্ণিত রয়েছে। শুধু তাই নয় স্বয়ং আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যেরূপ জানাযার নামাযে মাইয়্যিতের জন্য দোয়া করেছেন অনুরূপ জানাযার বাইরেও মাইয়্যিতের জন্য দোয়া করেছেন। সুতরাং মাইয়্যিতের জন্য জানাযার নামাযে দোয়া করা যেরূপ সুন্নত, তদ্রুপ জানাযার বাইরেও সুন্নত। তা জানাযার আগেই হোক বা পরে হোক। সুতরাং বলার অপেক্ষাই রাখেনা যে, তাদের বক্তব্যের কারণে সাধারণ লোক একটি সুন্নত পালনের ফযীলত থেকে মাহরূম হবে নিঃসন্দেহে।

মূলকথা হলো, সকল মুসলমান যেন “জানাযার পর দোয়া ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয়” সম্পর্কে সঠিক আক্বীদা রাখতে পারে এবং সুন্নত মুতাবিক আমল করে মহান আল্লাহ্ পাক ও তাঁর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সন্তুষ্টি হাছিল করতে পারে এ মহান উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই বহুল প্রচারিত “মাসিক আল বাইয়্যিনাতে জানাযার পর দোয়া ও তাঁর প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” দেয়া হলো।

মহান আল্লাহ্ পাক রব্বুল আলামীন পবিত্র কালামে পাকে ইরশাদ করেন,

كل نفس ذائقة الموت

অর্থাৎ “প্রত্যেক প্রাণীকেই মৃত্যুর স্বাদ বরণ করতে হবে।” (সূরা আলে ইমরান/১৮৫)

কাজেই কোন মুসলমান মৃত্যুবরণ করার পর জীবিতদের প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্য হচ্ছে যথা শীঘ্র মৃত ব্যক্তির দাফনের ব্যবস্থা করা এবং দাফন কার্য্যে বিলম্ব না করা। কেননা আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ্, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,

 اذا مات احدكم فلا تحبسوه واسرعو ابه الى قبره.

অর্থঃ- “ তোমাদের মধ্যে যখন কেউ মৃত্যু বরণ করে তখন তাকে আবদ্ধ করে রেখে দিওনা বরং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাকে দাফন করতে কবরে নিয়ে যাও।” (তাবারানী)

অবশ্য দাফনের পূর্বে আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ ও জরুরী কাজ রয়েছে, যেমন প্রথমতঃ মাইয়্যিতকে গোসল করানো, দ্বিতীয়তঃ কাফনের কাপড় পরিধান করানো, তৃতীয়তঃ মাইয়্যিতের উপর জানাযা পড়া।

মূলতঃ মাইয়্যিতের উপর জানাযা পড়া শুধু ফযীলত লাভেরই কারণ নয় বরং মাইয়্যিতের উপর জানাযা পড়া স্বয়ং মহান আল্লাহ্ পাক রব্বুল আলামীন-এর নির্দেশ। যেমন তাঁর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে লক্ষ্য করে মহান আল্লাহ্ পাক রব্বুল আলামীন বলেন,

وصل عليهم ان صلا تك سكن لـهم.

অর্থঃ- “(হে নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আপনি তাদের (মু’মিনগণের) উদ্দেশ্যে নামাযে জানাযা পড়ুন। নিশ্চয়ই আপনার নামায তাদের জন্য শান্তির কারণ স্বরূপ।” (সূরা তাওবা/১০৩)

অত্র আয়াতে কারীমায় স্বয়ং আল্লাহ্ পাক রব্বুল আলামীন জানাযা নামাযের গুরুত্ব, ফাযায়েল-ফযীলত বর্ণনা করেছেন। আর তা মু’মিন-মুসলমানগণের জন্য রহমত, বরকত ও শান্তির কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

(পূর্ব প্রকাশিতের পর)

কুরআন শরীফের আলোকে দোয়া বা মুনাজাতের অকাট্য প্রমাণ

পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফের অসংখ্য আয়াত শরীফ দ্বারা অকাট্য ভাবেই প্রমাণিত হয় যে, যেকোন সময় যেকোন স্থানেই মহান আল্লাহ্ পাক-এর নিকট দোয়া বা মুনাজাত করা জায়িয। কেননা মহান আল্লাহ্ পাক আমভাবেই কুরআন শরীফে দোয়া বা মুনাজাত করার নির্দেশ দিয়েছেন। নিম্নে এ সম্পর্কিত কতিপয় আয়াত শরীফ উল্লেখ করা হলো-     যেমন এপ্রসঙ্গে আল্লাহ্ পাক রব্বুল আলামীন ইরশাদ করেন,

[৬৫৬]

 وقال ربكم ادعونى استجب لكم ان الذين يستكبرون عن عبادتى سيد خلون جهنم دخرين.

অর্থঃ- “তোমাদের রব বলেন, তোমরা আমাকে ডাক, আমি তোমাদের ডাকে (দোয়ায়) সাড়া দিব। নিশ্চয়ই যারা আমার ইবাদতে অহংকার করে, তারা অতি সত্ত্বর লাঞ্ছিত হয়ে জাহান্নামে দাখিল (প্রবেশ) হবে।” (সূরা মু’মিন/৬০)

[৬৫৭]

هنالك دعا زكريا ربه قال رب هب لى من لدنك درية طيبة انك سميع الدعاء،  فنادته الملئكة وهو فائم يصلى فى المحراب ان الله يبشرك بيحيى مصدقا بكلمة من الله وسيدا وحضورا ونبيا من الصلحين.

অর্থঃ- “(যখনই হযরত যাকারিয়া আলাইহিস্ সালাম হযরত মারইয়াম আলাইহাস্ সালাম-এর হুজরা শরীফে আসতেন ফল-মূল দেখতে পেতেন) সেখানেই হযরত যাকারিয়া আলাইহিস্ সালাম তাঁর পালনকর্তা (আল্লাহ্ পাক) এর নিকট দোয়া করলেন। তিনি বললেন, হে আমার রব! আপনার পক্ষ থেকে আমাকে পূত-পবিত্র সন্তান দান করুন। নিশ্চয়ই আপনি প্রার্থনা বা দোয়া শ্রবণকারী। যখন তিনি কামরার ভিতরে নামাযে দাঁড়িয়ে ছিলেন, তখন ফিরিশ্তাগণ তাঁকে ডেকে বললেন যে, আল্লাহ্ পাক আপনাকে সুসংবাদ দিচ্ছেন হযরত ইয়াহইয়া আলাইহিস্ সালাম (যিনি আপনার পুত্র হবেন) সম্পর্কে। যিনি, আল্লাহ্ পাক-এর নির্দেশের সত্যতা সম্পর্কে সাক্ষ্য দিবেন। যিনি সাইয়্যিদ (সরদার) হবেন এবং নারীদের সংস্পর্শে যাবেন না। তিনি অত্যন্ত ছলিহীন (সৎকর্মশীল) নবী হবেন।” (সূরা আল ইমরান/৩৮, ৩৯)   অত্র আয়াতে আল্লাহ্ পাক দোয়ার উপকারীতা বর্ণনা করে সকলকে দোয়ার দিকে উৎসাহিত করেছেন। হযরত যাকারিয়া আলাইহিস্ সালাম সৎ সন্তানের দোয়া করায় আল্লাহ্ পাক এমন সন্তান দান করলেন, যিনি নবী, সাইয়্যিদ এবং ছলিহীনগণের  অন্তর্ভুক্ত।

[৬৫৮]

فدعا ربه انى مغلوب فانتصر، ففتحنا ابواب السماء بماء منهمر وفجر نا الارض عيونا فالتقى الماء على امر قد قدر، وحملنه على ذات الواح ودسر، تجرى بايننا جزاء لمن كان كفر، ولقد تركنها اية فهل من مدكر.

অর্থঃ- “তিনি (হযরত নূহ আলাইহিস্ সালাম) তাঁর রবকে ডেকে বললেন (দোয়া করলেন), আমি মাগলুব, অতএব আমাকে সাহায্য করুন। তখন আমি আকাশের দরজা খুলে দিলাম, প্রবল বারিবর্ষণের মাধ্যমে এবং ভূমি থেকে প্রবাহিত করলাম প্রস্রবন। অতঃপর সব পানি মিলিত হলো এক পরিকল্পিত কাজে। আমি হযরত নূহ আলাইহিস্ সালামকে আরোহন করালাম এক কাষ্ঠ ও পেরেক নির্মিত নৌযানে। যা চলত আমার (কুদরতি) দৃষ্টির সামনে। এটা তার পক্ষ থেকে প্রতিশোধ ছিল, যাকে প্রত্যাখান করা হয়েছিল। আমি একে এক নিদর্শন রূপে রেখে দিয়েছি। অতএব কোন চিন্তাশীল আছে কি?” (সূরা ক্বমার/ ১০, ১১, ১২, ১৩, ১৪, ১৫)           এখানে দেখা যায় যে, হযরত নূহ আলাইহিস্ সালাম সাহায্যের দোয়া করেছেন। আল্লাহ্ পাক কবুল করে তাঁকে সাহায্য করেছেন এবং কাফিরদেরকে ধ্বংস করে দিয়েছেন। অর্থাৎ সুখে-দুঃখে সর্বাবস্থায়ই আল্লাহ্ পাক-এর কাছে দোয়া করতে হবে।

[৬৫৯]

 واذا سألك عبادى عنى فانى قريب اجيب دعوة الداع اذا دعان فليستجبوا لى وليؤمنوابى لعلهم يرشدون.

  অর্থঃ- “(হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার বান্দাগণ যখন আপনার কাছে জিজ্ঞাসা করে আমার ব্যাপারে, বস্তুতঃ আমি রয়েছি সন্নিকটে। যারা দোয়া করে, তাঁদের দোয়া কবুল করে নেই, যখনই আমার কাছে দোয়া করে। কাজেই আমার হুকুম মান্য করা এবং আমার প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস করা তাদের একান্ত দায়িত্ব-কর্তব্য। যাতে তারা সৎপথে আসতে পারে।” (সূরা বাক্বারা ১৮৬)

[৬৬০]

امن يجيب المضطر اذا دعاه ويكشف السوء ويجعلكم خلفاء الارض ء اله مع الله قليلا ما تذكرون.

অর্থঃ- “বল তো, কে নিঃসহায়ের ডাকে সাড়া দেন; যখন সে ডাকে (দোয়া করে) এবং কষ্ট দূরীভূত করেন এবং তোমাদেরকে পৃথিবীতে পূর্ববর্তীদর স্থলাভিষিক্ত করেন। সুতরাং আল্লাহ্ পাক-এর সাথে অন্য কোন উপাস্য আছে কি? তোমরা অতি সামান্যই, ফিকির কর।” (সূরা নমল/ ৬২)

[৬৬১]

قل ادعوا الله او ادعوا الرحمن اياما تدعوا فله الاسماء الحسنى.

অর্থঃ- “(হে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আপনি বলুনঃ তোমরা আল্লাহ্ বলে ডাক। অথবা রহমান বলে, যে নামেই আহবান কর না কেন, সব সুন্দর সুন্দর নাম তাঁরই।” (সূরা বণী ইসরাঈল/ ১১০)

[৬৬২]

ادعوا ربكم تضرعا وخفية انه لايحب المعتدين.

অর্থঃ- “তোমরা তোমাদের রবকে কাকুতি-মিনতি সহকারে এবং সংগোপনে ডাক। তিনি সীমা অতিক্রম কারীদেরকে পছন্দ করেন না।” (সূরা আ’রাফ/৫৫)

 [৬৬৩]

هو الذى يريكم ايته وينزل لكم من السماء رزقا وما يتذكر الا من ينيب، فادعوا الله مخلصين له اذين ولو كره الكفرون.

অর্থঃ- “তিনিই (আল্লাহ্ পাক) তোমাদেরকে তাঁর নিদর্শনাবলী দেখান এবং তোমাদের জন্য আকাশ থেকে নাযিল করেন রিযিক। যাঁরা আল্লাহ্ পাক-এর দিকে রুজু থাকেন, তাঁরাই চিন্তা-গবেষণা করেন। অতএব তোমরা আল্লাহ্ পাককে খাঁটি বিশ্বাসের সাথে ডাক। যদিও কাফিরেরা তা অপছন্দ করে।” (সূরা মু’মিন/১৩, ১৪)

[৬৬৪]

قل امر ربى بالقسط واقيموا وجوهكم عند كل مسجد وادعوه مخلصين له الدين كما بداكم تعودون.

অর্থঃ- “(হে নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আপনি বলে দিন, আমার প্রতিপালক সুবিচারের নির্দেশ দিয়েছেন এবং তোমরা প্রত্যেক সিজদার সময় স্বীয় মুখমন্ডল সোজা রাখ এবং তাঁকে খাঁটি আনুগত্যশীল হয়ে ডাক (দোয়াকর)। তোমাদেরকে প্রথমে যেমন সৃষ্টি করেছেন, পূর্ণবারও তেমনি সৃজিত হবে।” (সূরা আ’রাফ/২৯)

[৬৬৫]

ولا تفسدوا فى الارض بعد اصلاحها وادعوه خوفا وطمعا ان رحمت الله قريب من المحسنين.

অর্থঃ- “পৃথিবীকে কুসংস্কারমুক্ত ও ঠিক করার পর তাতে অনর্থ সৃষ্টি করো না। তাঁকে ডাক (দোয়া কর) ভয় ও আশা সহকারে। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ পাক-এর রহমত সৎকর্মশীলগণের প্রতি।” (সূরা আ’রাফ/ ৫৬)

[৬৬৬]

ولله الاسماء الحسنى فادعوه بها وذروا الذين يلحدون فى اسمائه سيجزون ما كانوا يعملون.

অর্থঃ- “আর আল্লাহ্ পাক-এর রয়েছে অনেক সুন্দর সুন্দর নাম। কাজেই সে নাম ধরেই তাঁকে ডাক। আর তাদেরকে বর্জন কর, যারা তাঁর নামের ব্যাপারে বাঁকা পথে চলে। তারা নিজেদের কৃতকর্মের ফল শীঘ্রই পাবে।” (সূরা আ’রাফ/১৮০)

[৬৬৭]

هو الحى لا اله الا هو فادعوه مخلصين له الذين، الحمد لله رب العلمين.

অর্থঃ- “তিনি চিরঞ্জীব, তিনি ব্যতীত কোন মা’বূদ নেই। অতএব, তাঁকে ডাক তাঁর খাঁটি ইবাদতের মাধ্যমে। সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ্ পাক রব্বুল আলামীন-এর জন্যই।” (সূরা মু’মিন/৬৫)

[৬৬৮]

الحمد لله الذى وهب لى على الكبر اسمعيل واسحق ان ربى لسميع الدعاء.

অর্থঃ- “সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ্ পাক-এর জন্যই, যিনি আমাকে এই বার্ধক্যে হযরত ইসমাঈল আলাইহিস্ সালাম ও হযরত ইসহাক আলাইহিস্ সালাম দ্বয়কে দান করেছেন। নিশ্চয়ই আমার রব দোয়া শ্রবণ (কবুল) করেন।” (সূরা ইব্রাহীম/৩৯)

[৬৬৯]

واخفض لهما جناح الذ من الرحمة وقل رب ارحمهما كما ربينى صغيرا.

অর্থঃ- “তাদের (পিতা-মাতার) সামনে ভালবাসার সাথে, নম্রভাবে মাথা নত করে দাও এবং বল অর্থাৎ দোয়া কর- আয় আল্লাহ্ পাক, তাঁদের উভয়ের প্রতি রহম করুন, যেমন তাঁরা আমাকে শৈশব কালে লালন-পালন করেছেন।” (সূরা বণী ইসরাঈল/২৪)

[৬৭০]

فتعلى الله الملك الحق ولا تعجل بالقران من قبل ان يقضى اليك وحيه وقل رب زدنى علما.

অর্থঃ- “সত্যিকার মালিক আল্লাহ্ পাক মহান। আপনার প্রতি আল্লাহ্ পাক-এর ওহী সম্পূর্ণ হওয়ার পূর্বে আপনি কুরআন শরীফ গ্রহণের ব্যাপারে তাড়াহুড়া করবেন না এবং বলুন অর্থাৎ দোয়া করুন- আয় আমার রব, আমার ইল্মকে বৃদ্ধি করে দিন।” (সূরা ত্বাহা/১১৪)

[৬৭১]

وقل رب انزلنى منزلا مبركا وانت خير المنزلين.

অর্থঃ- “(হে হযরত নূহ আলাইহিস্ সালাম) আপনি বলুন অর্থাৎ দোয়া করুন, আমার রব আমাকে কল্যাণের সাথে নামিয়ে দিন। আপনি শ্রেষ্ঠ অবতারণকারী।” (সূরা মু’মিনূন/২৯)

[৬৭২]

قل رب اما ترينى ما يوعدون، رب فلا تجعلنى فى القوم الظلمين، وانا على ان نريك ما نعد هم لقدرون.

অর্থঃ- “(হে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলুন অর্থাৎ দোয়া করুন- হে আমার রব! যে বিষয়ে তাদেরকে ওয়াদা দেয়া হয়েছে তা যদি আমাকে দেখান। হে আমার রব! আপনি আমাকে যালিম সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত করবেন না। আমি তাদেরকে যে বিষয়ের ওয়াদা দিয়েছি, তা আপনাকে দেখাতে অবশ্যই সক্ষম।” (সূরা মু’মিনূন/৯৩, ৯৪, ৯৫)

[৬৭৩]

وقل رب اعوذبك من همز الشيطين، واعوذبك رب ان يحضرون.

অর্থঃ- “(আল্লাহ্ পাক দোয়া শিক্ষা দিয়ে বলেন) বলুন, হে আমার রব! আমি শয়তানের প্ররোচনা থেকে আপনার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। হে আমার রব! আমার নিকট তাদের (শয়তানদের) উপস্থিতি থেকে আপনার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।” (সূরা মু’মিনূন/৯৭, ৯৮)

[৬৭৪]

وقل رب اغفر وارحم وانت خير الرحمين.

অর্থঃ- “(হে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলুন অর্থাৎ দোয়া করুন- ক্ষমা করুন (উম্মতগণকে) ও রহম করুন। আর আপনি সর্বশ্রেষ্ঠ রহমকারী।” (সূরাতুল্ মু’মিনূন/১১৮)

[৬৭৫]

قل يعبادى الذين اسرفوا على انفسهم لا تقنطوا من رحمة الله ان الله يغفر الذنوب جميعا انه هو الغفور الرحيم.

অর্থঃ- “(হে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলুন, হে আল্লাহ্র বান্দাগণ যারা নিজেদের নফ্সের উপর যুলুম করেছ, তোমরা আল্লাহ্ পাক-এর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। (বরং তাঁর কাছে কৃত অপরাধের জন্য দোয়া, ইস্তিগফার কর) নিশ্চয়ই আল্লাহ্ পাক সমস্ত গুণাহ্ মাফ করেন। তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।” (সূরা যুমার/ ৫৩)

[৬৭৬]

قل اعذ برب الفق، من شر ما خلق، ومن شر غاسق اذا وقب، ومن شر النفثت فى العقد، ومن شر حاسد اذا حسد.

অর্থঃ- “(হে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আপনি বলুন- আমি আশ্রয় গ্রহণ করছি প্রভাতের রবের কাছে, তিনি যা সৃষ্টি করেছেন তার অনিষ্ট থেকে, অন্ধকার রাতের অনিষ্ট থেকে যখন তা সমাগত হয়, গ্রন্থিতে ফুঁৎকার দিয়ে জাদু কারিনীদের অনিষ্ট থেকে এবং হিংসুকের অনিষ্ট থেকে যখন সে হিংসা করে।” (সূরা ফালাক্ব/১-৫)

[৬৭৭]

قل اعوذ ربرب الناس، ملك الناس، اله الناس، من شر الوسواس الخناس، الذى يوسوس فى صدور الناس، من الجنة والناس.

অর্থঃ- “বলুনঃ আমি আশ্রয় গ্রহণ করছি মানুষের রবের, মানুষের অধিপতির, মানুষের মা’বূদের কাছে, তার অনিষ্ট থেকে যে কুমন্ত্রনা দেয় ও আত্ম গোপন করে, যে কুমন্ত্রনা দেয় মানুষের অন্তরে, জ্বিনের মধ্য থেকে অথবা মানুষের মধ্য থেকে।” (সূরা নাস/ ১-৬)

[৬৭৮]

استغفر لهم او لا تستغفر لهم ان تستغفر لهم سبعين مرة فلن يغفر الله لهم ذلك بانهم كفروا بالله ورسوله والله لايهدى القوم الفسقين.

অর্থঃ- “(হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আপনি তাদের (মুনাফিকদের) জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করুন আর না করুন, যদি আপনি তাদের জন্য সত্তর বারও ক্ষমাপ্রার্থনা করেন, তবুও আল্লাহ্ পাক তাদেরকে ক্ষমা করবেন না। তা এজন্য যে, তারা আল্লাহ্ পাককে এবং তাঁর রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে অস্বীকার করেছে। বস্তুতঃ আল্লাহ্ পাক নাফরমানদেরকে পথ দেখান না।” (সূরা তাওবা/৮০)

অত্র আয়াতে কারীমায় মুনাফিক, কাফিরদের জন্য দোয়া করতে নিষেধ করা হয়েছে। কিন্তু মু’মিন, মুসলমান, সৎকর্মশীলগণের জন্য দোয়া করতে ইঙ্গিত প্রদান করা হয়েছে।

[৬৭৯]

وما ارسلنا من رسول الا ليطاع باذن الله ولو انهم اذطلموا انفسهم جائوك فاستغفروا الله واستغفرلهم الرسول لوجدوا الله توابا رحيما.

অর্থঃ- “আমি একমাত্র এ উদ্দেশ্যেই রসূল প্রেরণ করেছি, যাতে আল্লাহ্ পাক-এর নির্দেশানুযায়ী তাঁদের আদেশ-নিষেধ মান্য করা হয়। আর সে সব লোক যখন নিজেদের উপর যুলুম করেছিল, তখন যদি আপনার কাছে আসত অতঃপর আল্লাহ্ পাক-এর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করত এবং রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও যদি তাদেরকে ক্ষমা করিয়ে দিতেন। অবশ্যই তারা আল্লাহ্ পাককে ক্ষমাকারী, মেহেরবান রূপে পেত।” (সূরা নিসা/৬৪)

[৬৮০]

واستغفر الله ان الله كان غفورا رحيما.

অর্থঃ- “আল্লাহ্ পাক-এর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন। তিনি আল্লাহ্ পাক- ক্ষমাশীল, দয়ালু।” (সূরা নিসা/১০৬)

[৬৮১]

فاصبر ان وعد الله حق واستغفر لذنبك وسبح بحمد ربك بالعشى والابكار.

অর্থঃ- “অতএব, আপনি ছবর করুন। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ পাক-এর ওয়াদা সত্য। আপনি আপনার উম্মতের গুণাহের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করুন এবং সকাল-সন্ধ্যায় আপনার পালনকর্তার প্রশংসা সহ পবিত্রতা বর্ণনা করুন।” (সূরা মু’মিন/৫৫)

[৬৮২-৬৮৩]

واستغفروا الله ان الله غفور رحيم.

অর্থঃ- “তোমরা আল্লাহ্ পাক-এর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ পাক ক্ষমাকারী, করুণাময়।” (সূরা বাক্বারা/১৯৯, সূরা মুয্যামমিল/২০)

[৬৮৪]

وان استغفروا ربكم ثم توبوا اليه يمتعكم متاعا حسنا الى اجل مسمى وبؤت كل ذى فضل فضله وان تولوا فانى اخاف عليكم عذاب يوم كبير.

অর্থঃ- “তোমরা তোমাদের রবের সমীপে ক্ষমা প্রার্থনা কর। অনন্তর তাঁরই প্রতি মনোনিবেশ কর। তাহলে তিনি তোমাদেরকে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত উৎকৃষ্ট জীবনোপকরণ দান করবেন এবং অধিক আমলকারীকে আরো বেশী করে দিবেন। আর যদি তোমরা বিমুখ হতে থাক, তবে আমি তোমাদের উপর এক মহা দিবসের আযাবের আশংকা করছি।” (সূরা হুদ/৩)

[৬৮৫]

يا يها انبى اذا جاءك المؤمنت يبايعنك على ان ايشر كن بالله شيئا ولا يسرقن ولا يزنين ولايقتلن اولادهن ولا ياتين ببهتان يفترينه بين ايديهن وارحهن ولا يعصينك فى معروف فبايعهن واستغفرلهن الله ان الله غفور رحيم.

অর্থঃ- “হে নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ঈমানদার নারীরা যখন আপনার কাছে এসে আনুগত্যের শপথ করে যে, তারা আল্লাহ্ পাক-এর সাথে কাউকে শরীক করবেনা, চুরি করবেনা, ব্যভিচার করবেনা, তাদের সন্তানদেরকে হত্যা করবেনা, জারজ সন্তানকে স্বামীর ঔরস থেকে আপন গর্ভজাত সন্তান বলে মিথ্যা দাবী করবেনা এবং ভাল কাজে আপনার অবাধ্যতা করবেনা, তখন তাদের আনুগত্য গ্রহণ করুন এবং তাদের জন্য আল্লাহ্ পাক-এর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ পাক ক্ষমাশীল, অত্যন্ত দয়ালু।” (সূরা মুমতাহিনা/১২)

[৬৮৬]

رب اشرح لى صدرى ويسرلى امرى واحلل عقدة من لسانى يفقهوا قولى.

অর্থঃ- “হে আমার রব! আমার বক্ষ প্রশস্ত করেদিন, আমার কাজ সহজ করে দিন এবং আমার জিহবা থেকে জড়তা দূর করে দিন। যাতে তারা আমার কথা বুঝতে পারে।” (সূরা ত্বাহা/২৫-২৮)

[৬৮৭]

ربنا اتنا فى الدنيا حسنة وفى الاخرة حسنة وقنا عذاب النار.

অর্থঃ- “আয় পরওয়ারদিগার! আমাদেরকে দুনিয়াতেও কল্যাণ দান করুন এবং আখিরাতেও কল্যাণ দান করুন এবং আমাদেরকে দোযখের আযাব থেকে মুক্তি দান করুন।” (সূরা বাক্বারা/২০১)

[৬৮৮]

ربنا افرغ علينا صبرا وثبت اقدا منا وانصرنا على القوم الكفرين.

অর্থঃ- “আয় আল্লাহ্ পাক! আমাদের মনে ধৈর্য্য সৃষ্টি করে দিন এবং আমাদেরকে দৃঢ়পদ রাখুন। আর আমাদেরকে সাহায্য করুন সে কাফির জাতির বিরুদ্ধে।” (সূরা বাক্বারা/২৫০)

[৬৮৯]

رنا لاتؤا خذنا ان نسينا او اخطأنا ربنا ولاتحمل علينا اصرا كما حملته على الذين من قبلنا ربنا ولا تحملنا مالا طاقة لنا به واعف عنا واغفرلنا وارحمنا انت مولنا فانصرنا على القوم الكفرين.

অর্থঃ- “আয় আল্লাহ্ পাক! যদি আমরা ভূলে যাই কিংবা ভুল করি, তবে আমাদেরকে অপরাধী করবেন না। হে আমাদের রব! আমাদের উপর এমন দায়িত্ব অর্পন করবেন না, যেমন আমাদের পূর্ববর্তীদের উপর অর্পিত হয়েছিল। হে আমাদের রব! আমাদের দ্বারা ঐ বোঝা বহন করাবেন না, যা বহন করার শক্তি আমাদের নেই। আমাদের পাপ মোচন করুন। আমাদরকে ক্ষমা করুন এবং আমাদের প্রতি দয়া করুন। আপনিই আমাদের রব। সুতরাং কাফির সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদেরকে সাহায্য করুন।” (সূরা বাক্বারা/২৮৬)

[৬৯০]

رببنا لا تزغ قلوبنا بعد اذ هديتنا وهب لنا من لدنك رحمة انك انن تلزفتب.

অর্থঃ- “হে আমাদের রব! সরল পথ প্রদর্শনের পর আপনি আমাদের অন্তরকে সত্য লংঘনে প্রবৃত্ত করবেন না এবং আপনার নিকট থেকে আমাদিগকে অনুগ্রহ দান করুন। আপনিই সব কিছুর দাতা।” (সূরা আলি ইমরান/৮)

[৬৯১]

ربنا ظلمنا انفسنا وان لم تغفر لنا وتر حمنا لنكونن من الخسرين.

অর্থঃ- “হে আমাদের রব! আমরা আমাদের নিজের নফ্সের প্রতি যুলুম করেছি। যদি আপনি আমাদেরকে ক্ষমা না করেন এবং রহমত না করেন, তবে আমরা অবশ্যই ধ্বংস হয়ে যাব।” (সূরা আ’রাফ/২৩)

হাদীস শরীফের আলোকে দোয়া বা মুনাজাতের ফযীলত ও তা জায়িয  হওয়ার অকাট্য প্রমাণ           আল্লাহ্ পাক রব্বুল আলামীন যেমন কুরআন শরীফের অসংখ্য স্থানে দোয়া করার নির্দেশ দিয়েছেন। তেমনি আল্লাহ্ পাক-এর হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্ নাবিয়্যীন, রহমতুল্লিল আলামীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও হাদীস শরীফে দোয়া করার জন্য নির্দেশ প্রদান করেছেন এবং ফযীলত বর্ণনা করেছেন। নিম্নে এ সম্পর্কিত কতিপয় হাদীস শরীফ উল্লেখ করা হলো-

[৬৯২-৭০৯]

عن ابى هريرة رضى الله عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم لكل نبى دعوة مستجابة فتعجل كل نبى دعوته وانى اختبأت دعوتى شفاعة الامتى الى يوم القيمة فهى نائلة ان شاء الله من مات من امتى لايشرك با لله شيئا. مشكو شريف 194-مرقاة، اشعة اللمعات، اللمعات، شرح الطيبى، التعليق الصبيح، مظاهرحق، مرأة المناجيح، مسلم شريف، مسلم بشرح النووى، فتح الملهم، المفهم، بخارى شريف ج 2 ص 932، فتح البارى، عمدة القارى، ارشاد السارى، شرح الكرمانى، تيسير البارى)

অর্থঃ- “হযরত আবূ হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, প্রত্যেক নবী আলাইহিমুস্ সালামকে একটি বিশেষ দোয়ার অধিকার দেয়া হয়েছে যা কবুল করা হয়। প্রত্যেক নবী শীঘ্র শীঘ্র তাঁর দোয়া দুনিয়াতেই চেয়েছেন, আর আমি আমার দোয়া কিয়ামত পর্যন্ত মুলতবী রেখেছি। আমার উম্মতগণের শাফায়াতের জন্য। ইনশাআল্লাহ্ এটা আমার উম্মতের প্রত্যেক ব্যক্তির প্রতি পৌঁছবে, যে আল্লাহ্ পাক-এর সাথে কিছুকে শরীক না করে ইন্তিকাল করেছে।” (মিশকাত শরীফ ১৯৪ পৃষ্ঠা, মিরক্বাত, আশয়াতুল লুময়াত, লুময়াত, শরহুত্ ত্বীবী, আত্ তা’লীকুছ ছবীহ, মুযাহিরে হক্ব, মিরয়াতুল্ মানাজীহ, মুসলিম শরীফ, মুসলিম বিশরহিন্ নববী, ফতহুল্ মুলহিম, আল্ মুফহিম, বুখারী শরীফ ২য় জিঃ ৯৩২ পৃষ্ঠা, ফতহুল্ বারী, উমদাতুল ক্বারী, ইরশাদুস্ সারী, শরহুল্ কিরমানী, তাইসীরুল্ বারী)

[৭১০-৭২৭]

عن ابى هريرة رضى الله عنه ان رسول الله صلى الله عليه وسلم قال لايقولن احدكم اللهم اغفرلى ان شئت اللهم ارحمنى ان شئت ليعزم المسئلة فانه لامكرمله (بخارى شريف ج2 ص 938، فتح البارى، عمدة القارى، ارشاد السارى، شرح الكرمانى، تيسير البارى، مسلم شريف ج 2 ص 342، مسلم بشرح النووى، فتح الملهم، المفهم، المشكوة المصاببح ص 194، مرقاة، اشعة اللمعات، اللمعات، شرح الطيبى، التعليق الصبيح، مظاهرحق، مرأة المناجيح.

অর্থঃ- “হযরত আবূ হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, তোমাদের কেউ যেন কখনো এভাবে দোয়া না করে, “আয় আল্লাহ্ পাক, যদি আপনি চান, তবে আমাকে মাফ করুন এবং যদি আপনি চান, তবে আমাকে রহমত করুন।” বরং ইয়াক্বীন ও মনের দৃঢ়তা নিয়ে দোয়া করবে। কেননা আল্লাহ্ পাক-এর উপর যবরদস্তি করার কেউ নেই।” (বুখারী শরীফ ২য় জিঃ ৯৩৮ পৃষ্ঠা, ফতহুল বারী, উমদাতুল ক্বারী, ইরশাদুস্ সারী, শরহুল্ কিরমানী, তাইসীরুল বারী, মুসলিম শরীফ ২য় জিঃ ৩৪২ পৃষ্ঠা, মুসলিম বিশরহিন্ নববী, ফতহুল মুলহিম, আল্ মুফহিম, আল্ মিশকাতুল মাছাবীহ ১৯৪ পৃষ্ঠা, মিরক্বাত, আশয়াতুল লুময়াত, লুময়াত, শরহুত্ ত্বীবী, আত্ তা’লীকুছ ছবীহ, মুযাহিরে হক্ব, মিরয়াতুল মানাজীহ)

[৭২৮-৭৩৯]

عن صفوان وهوابن عبد الله بن صفوان وكانت تحته ام الدرداء قال قدمت الشمام فاتيت ابا الدرداء فى منزله فلم اجده ووجدت ام الدرداء فقالت اتريد الحج العام فقلت نعم قالت فادع الله لنا بخير فان النبى صلى الله عليه وسلم كان يقول دعوة المرء المسلم لاخيه بظهر الغيب مستجابة عند رأسه ملك مؤكل كلها دعا لاخيه بخير قال الملك المؤك به امين ولك بمثل قال فخرجت الى السوق فلقيت ابا الدرداء فقال لى مثل ذال يرويه عن النبى صلى الله عليه وسلم. (مسلم شريف ج 2 ص 253، مسلم بشرح النووى، فتح الملهم، المفهم، مشكوة شريف ص 194، مرقاة، اشعة اللمعات، اللمعات، شرح الطيبى، التعليق الصبيح، مظاهر حق، مراة المنا جيح.

অর্থঃ- “হযরত ছাফওয়ান রহমতুল্লাহি আলাইহি থেকে বর্ণিত। আর তিনি উম্মু দারদা-এর স্বামী ছাফওয়ান ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে ছাফওয়ান ছিলেন। তিনি বলেন, আমি সিরিয়াতে হযরত আবূ দারদা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর ঘরে গেলাম। আমি তাঁকে ঘরে পেলাম না বরং সেখানে উম্মু দারদাকে পেলাম। তিনি বললেন, আপনি কি এ বছর হজ্ব পালন করবেন? আমি বললাম জি হ্যাঁ। তিনি বললেন, আল্লাহ্ পাক-এর কাছে আমাদের কল্যাণের জন্য দোয়া করবেন। কেননা, হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলতেন, একজন মুসলমান বান্দা তার ভাইয়ের অনুপস্থিতিতে তার জন্য দোয়া করলে তা কবুল হয়। তাঁর মাথায় একজন ফিরিশতা নিয়োজিত থাকেন, যখন সে তার ভাইয়ের জন্য দোয়া করে তখন নিয়োজিত ফিরিশ্তা বলে থাকে “আমীন এবং তোমার জন্যও অনুরূপ।” তিনি বলেন, এরপর আমি বাজারের দিকে বের হলাম। আর হযরত আবূ দারদা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর দেখা পেলাম। তখন তিনি আমাকে হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে তাঁর অনুরূপ বর্ণনা করলেন।” (মুসলিম শরীফ ২য় জিঃ ৩৫২ পৃষ্ঠা, মুসলিম বিশরহিন্ নববী, ফতহুল্ মুলহিম, আল্ মুফহিম, মিশকাত শরীফ ১৯৪ পৃষ্ঠা, মিরক্বাত, আশয়াতুল্ লুময়াত, লুময়াত, শরহুত্ ত্বীবী, আত্ তা’লীকুছ ছবীহ, মুযাহিরে হক্ব, মিরয়াতুল্ মানাজীহ)

[৭৪০-৭৬১]

عن النعمان بن بشير رضى الله عنه عن النبى صلى الله عليه وسلم قال الدعاء هو العبادة ثم فرأ وقال ربكم ادعونى استجب لكم ان الذين يستكبرون عن عبادتى سيدخلون جهنم داخرين، (ترمذى شريف ج 2 ص 173، تحفة الاحوذى، عارضة الاحوذى، عرف الشاذى، معارف الشنن، مسند احمد بن حنبل، ابو داؤد شريف، بذل المجهود، عون المعبود، شرح ابى داؤد لبدر الدين العينى، نسائى شريف، سنن الكبرى للنسائى، حاشية السيوطى، ابن ماجة، مشكوشريف ص 194، مرقاة، اشعة اللمعات، اللمعات، شرح الطيبى، التعليق الصبيح، مظاهرحق، مرأة المناجيح.

অর্থঃ- “হযরত নু’মান ইবনে বশীর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন। তিনি (হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, দোয়া হলো ইবাদত সদৃশ। অতঃপর তিনি এই আয়াত শরীফ পড়লেন, “তোমাদের রব বলেছেন, আমার নিকট দোয়া কর, আমি তোমাদের দোয়া কবুল করব। নিশ্চয়ই যারা আমার ইবাদতে অহংকার করে, তারা অতি সত্ত্বর লাঞ্ছিত হয়ে জাহান্নামে দাখিল হবে।” (তিরমিযী শরীফ ২য় জিঃ ১৭৩ পৃষ্ঠা, তুহফাতুল্ আহওয়াযী, আরিদ্বাতুল আহওয়াযী, উরফুশ্ শাযী, মায়ারিফুস্ সুনান, মুসনাদু আহমদ ইবনে হাম্বল, আবূ দাউদ শরীফ, বযলুল মাজহুদ, আউনুল মা’বূদ, শরহু আবী দাউদ লি বদরিদ্দীন আইনী, নাসায়ী শরীফ, সুনানুল কুবরা লিন নাসায়ী, হাশিয়াতুস্ সুয়ূত্বী, ইবনু মাজাহ, মিশকাত শরীফ ১৯৪ পৃষ্ঠা, মিরকাত, আশয়াতুল লুময়াত, লুময়াত, শরহুত ত্বীবী, আত্ তা’লীকুছ ছবীহ, মুযাহিরে হক্ব, মিরয়াতুল মানাজীহ)

[৭৬২-৭৭৫]

عن انس بن مالك رضى الله عنه عن النبى صلى الله عليه وسلم قال الدعاء مخ العبادة. (ترمذى شريف ج 2 ص 173، تحفة الاحوذى، عارضة الاحوذى، عرف الشاذى، معارف السنن، درس ترمذى، مشكوة شريف ص 194، مرقاة، اشعة اللمعات، اللمعات، شرح الطيبى، التعليق الصبيح، مظاهرحق، مرأة المنا جيح)

অর্থঃ- “হযরত আনাস ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, দোয়া হলো ইবাদতের মগজ বা মূল।” (তিরমিযী শরীফ ২য় জিঃ ১৭৩ পৃষ্ঠা, তুহফাতুল্ আহওয়াযী, আরিদ্বাতুল আহওয়াযী, উরফুশ্ শাযী, মায়ারিফুস্ সুনান, দরসে তিরমিযী, মিশকাত শরীফ ১৯৪ পৃষ্ঠা, মিরক্বাত, আশয়াতুল্ লুময়াত, লুময়াত, শরহুত্ ত্বীবী, আত্ তা’লীকুছ্ ছবীহ, মুযাহিরে হক্ব, মিয়াতুল্ মানাজীহ্)

[৭৭৬-৭৯০]

عن ابى هريرة رضى الله عنه عن النبى صلى الله عليه وسلم قال ليس شيئ اكرم على الله من الدعاء. (ترمذى شريف ج 2 ص 173، تحفة الاحوذى، عارضة الاحوذى، معارف السنن، ابن ماجة شريف، مشكوة شريف ص 194 مرقاة، اشعة اللمعات، اللمعات، شرح الطيبى، التعليق الصبيح، مظاهر حق، مرأة المناجيح، درس مشكوة)

অর্থঃ- “হযরত আবূ হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হযরত নবী করীম ছল্লৗাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ্ পাক-এর নিকট দোয়া অপেক্ষা কোন জিনিষই অধিক মর্যাদাশীল, সম্মানিত নয়।” (তিরমিযী শরীফ ২য় জিঃ ১৭৩ পৃষ্ঠা, তুহফাতুল আহওয়াযী, আরিদ্বাতুল আহওয়াযী, উরফুশ্ শাযী, মায়ারিফুস্ সুনান, ইবনু মাজাহ শরীফ, মিশকাত শরীফ ১৯৪ পৃষ্ঠা, মিরক্বাত, আশয়াতুল্ লুময়াত, লুময়াত, শরহুত্ ত্বীবী, আত্ তা’লীকুছ ছবীহ, মুযাহিরে হক্ব, মিরয়াতুল্ মানাজীহ, দরসে মিশকাত)

[৭৯১-৮০৪]

عن سلمان الفارسى رضى الله عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم لايرد القضاء الا الدعاء ولايزيد فى العمر الا البر. (مشكوة شريف ص 195، مرقاة، اشعة اللمعات، اللمعات، شرح الطيبى، التعليق الصبيح، مظاهرحق، مرأة المناجيح، ترمذى شريف، تحفة الاحوذى، عارضة الاحوذى، عرف  الشاذى، معارف السنن، درس ترمذى)

অর্থঃ- “হযরত সালমান ফারসী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, দোয়া ছাড়া অপর কিছু তকদীরকে পরিবর্তন করতে পারেনা। আর নেকী ছাড়া অপর কিছু বয়স বাড়াতে পারে না।” (মিশকাত শরীফ ১৯৫ পৃষ্ঠা, মিরক্বাত, আশয়াতুল লুময়াত, লুময়াত, শরহুত্ ত্বীবী, আত্ তা’লীকুছ ছবীহ, মুযাহিরে হক্ব, মিরয়াতুল মানাজীহ, তিরমিযী শরীফ, তুহফাতুল আহওয়াযী, আরিদ্বাতুল আহওয়াযী, উরফুশ্ শাযী, মায়ারিফুস্ সুনান, দরসে তিরমিযী)

[৮০৫-৮১৮]

عن ابن عمر رضى الله عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم ان الدعاء ينفع مما نزل ومما لم ينزل فعليكم عباد الله بالدعاء. (مشكوة شريف ص 195، مرقاة، اشعة اللمعات، اللمعات، شرح الطيبى، التعليق الصبيح، مظاهر حق، مراة المنا جيح، ترمذى شريف، تحفة الاحوذى، عارضة الاحوذى، عرف الشاذى، معارف السنن، مسندا حمدبن حنبل)

অর্থঃ- “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হযরত রসূলুল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, দোয়া উপকার করে যে বিপদ নাযিল হয়েছে সে সম্পর্কে এবং যা নাযিল হয়নি সে সম্পর্কে। সুতরাং আল্লাহ্ পাক-এর বান্দাগণ! তোমাদের উপর দোয়া করা অপরিহার্য।” (মিশকাত শরীফ ১৯৫ পৃষ্ঠা, মিরক্বাত, আশয়াতুল্ লুময়াত, লুময়াত, শরহুত্ ত্বীবী, আত্ তা’লীকুছ ছবীহ, মুযাহিরে হক্ব, মিরয়াতুল্ মানাজীহ, তিরমিযী শরীফ, তুহফাতুল্ আহওয়াযী, আরিদ্বাতুল আহওয়াযী, উরফুশ্ শাযী, মায়ারিফুস্ সুনান, মুসনাদু আহমদ ইবন হাম্বল)

[৮১৯-৮৩১]

عن جارر رضى الله عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم مامن احد يدعو بدعاء الا اتاه الله ماسال او كف عنه من السوء مثله مالم يدع باثم او قطيعة رحم، (مشكوة شريف ج 195، مرقاة، اشعة اللمعات، اللمعات، شرح الطيبى، التعليق الصبيح، مظاهرحق، مرأة المناجيح، ترمذى شريف، تحفة الاحوذى، عارضة الاحوذى، عرف الشاذى، معارف السنن)

অর্থঃ- “হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি কোন দোয়া করে, নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তায়ালা তাকে সে যা চায় তা দেন অথবা এর অনুরূপ কোন বিপদকে তা হতে দূর করে রাখেন; যাবৎ না সে দোয়া করে কোন গুণাহের কাজের অথবা আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করার।” (মিশকাত শরীফ ১৯৫ পৃষ্ঠা, মিরক্বাত, আশয়াতুল্ লুময়াত, লুময়াত, শরহুত্ ত্বীবী, আত্ তা’লীকুছ ছবীহ, মুযাহিরে হক, মিরয়াতুল মানাজীহ, তিরমিযী শরীফ, তুহফাতুল আহওয়াযী, আরিদ্বাতুল্ আহওয়ায়ী, উরফুশ্ শাযী, মায়ারিফুস্ সুনান)

[৮৩২-৮৪৪]

عن ابن مسعود رضى الله عنه قا قال رسول الله صلى الله عليه وسلم سلوا الله من فضله فان الله يحب ان يسال وافضل العبادة انتظار الفرج. (مشوة شريف ص 195، مرقاة، اشعة اللمعات، اللمعات، شرح الطيبى، التعليق الصبيح، مظاهر حق، مرأة المنا جيح، ترمذى شريف، تحفة الاحوذى، عارضة الاحوذى، عرف الشاذى، معارف السني،

অর্থঃ- “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমরা আল্লাহ্ পাক-এর নিকট তাঁর অনুগ্রহ চাও। কেননা, তিনি ভালবাসেন তাঁর নিকট কিছু চাওয়াকে। আর বিপদ থেকে মুক্তির অপেক্ষা করা শ্রেষ্ঠ ইবাদত।” (মিশকাত শরীফ ১৯৫ পৃষ্ঠা, মিরকাত, আশয়াতুল লুময়াত, লুময়াত, শরহুত্ ত্বীবী, আত্ তা’লীকুছ ছবীহ, মুযাহিরে হক্ব, মিরয়াতুল্ মানাজীহ, তিরমিযী শরীফ, তুহফাতুল আহওয়াযী, আরিদ্বাতুল আহওয়াযী, উরফুশ্ শাযী, মায়ারিফুস্ সুনান)

[৮৪৫-৮৫৭]

عن ابى هريرة رضى الله عنه قال قال رسول الله صلى اله عليه وسلم انه من لم يسأل الله يغضب عليه. (ترمذى شريف ج 2 ص 173، تحفة الاحوذى، عارضة الاحوذى، عرف الشاذى، معارف السنن، مشكوة شريف ص 195، مرقاة، اشعة اللمعات، اللمعات، شرح الطيبى، التعليق الصبيح، مظاهر حق، مرأة المناجيح.)

অর্থঃ- “হযরত আবূ হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে আল্লাহ্ পাক-এর নিকট কিছু চায় না (দোয়া করেনা) আল্লাহ্ পাক তার উপর রাগ করেন।” (তিরমিযী শরীফ ২য় জিঃ ১৭৩ পৃষ্ঠা, তুহফাতুল আহওয়াযী, আরিদ্বাতুল আহওয়াযী, উরফুশ্ শাযী, মা’য়ারিফুস্ সুনান, মিশকাত শরীফ ১৯৫ পৃষ্ঠা, মিরকাত, আশয়াতুল্ লুময়াত, লুময়াত, শরহুত্ ত্বীবী, আত্ তা’লীকুছ্ ছবীহ , মুযাহিরে হক্ব, মিরয়াতুল্ মানাজীহ)

[৮৫৮-৮৭০]

عن ابن عمر رضى الله عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم من فتح له منكم باب الدعاء فتحت له ابواب الرحمة وما سئل الله شيئا يعنى احب اليه من ان يسأل العافية. (مشكوة شريف ص 195، مرقاة، اشعة اللمعات، اللمعات، شرح الطيبى، التعليق الصبيح، مظاهر حق، مرأة المناجيح، ترمذى شريف، تحفة الاحوذى، عارضة الاحوذى، عرف الشاذى، معارف السنن)

অর্থঃ- “হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, হযরত রসূলুল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যার জন্য দোয়ার দরজা খোলা, তার জন্য রহমতের দরজাই খোলা হয়েছে। আল্লাহ্ পাক-এর নিকট কুশল বা নিরাপত্তা অপেক্ষা প্রিয়তর কোন জিনিসই চাওয়া হয় না।” (মিশকাত শরীফ ১৯৫ পৃষ্ঠা, মিরক্বাত, আশয়াতুল লুময়াত, লুময়াত, শরহুত্ ত্বীবী, আত্ তা’লীকুছ ছবীহ, মুযাহিরে হক্ব, মিরয়াতূল্ মানাজীহ, তিরমিযী শরীফ, তুহফাতুল আহওয়াযী, আরিদ্বাতুল আহওয়াযী, উরফুশ্ শাযী, মায়ারিফুস্ সুনান)

[৮৭১-৮৮৩]

عن ابى نريرة رضى الله عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم من شره ان يستجيب الله له عند الضدائد فليكثر الدعاء فى الرخاء. (مشكوة شريف ص 190، مرقاة، اشعة اللمعات، اللمعات، شرح الطيبى، التعليق الصبيح، مظاهرحق، مرأة المناجيح، ترمذى شريف، تحفة الاحوذى، عارضة الاحوذى، عرف الشاذى، معارف السنن)

অর্থঃ- “হযরত আবূ হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি মনে করে বা ভালবাসে যে, দুঃখের সময় আল্লাহ্ পাক তার দোয়া শুনবেন বা কবুল করবেন, সে যেন সুঃখের সময় অধিক হারে দোয়া করে।” (মিশকাত শরীফ ১৯৫ পৃষ্ঠা, মিরক্বাত, আশয়াতুল লুময়াত, লুময়াত, শরহুত্ ত্বীবী, আত্ তা’লীকুছ্ ছবীহ, মুযাহিরে হক্ব, মিরয়াতুল মানাজীহ, তিরমিযী শরীফ, তুহফাতুল আহওয়াযী, আরিদ্বাতুল আহওয়াযী, উরফুশ শাযী, মায়ারিফুস্ সুনান) [৮৮৪-৮৯৬]

عن ابى هريرة رضى الله عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم ادعوا الله وانتم موقنون بالاجابة واعلموا ان الله لا يستجيب دعاء من قلب غافل لاه. (مشكوة شريف ص 195، مرقاة، اشعة اللمعات، اللمعات، شرح الطيبى، التعليق الصبيح، مظاهر حق، مرأة المناجيح، ترمذى شريف، تحفة الاحوذى، عارضة الاحوذى، عرف الشاذى، معارف السنن)

অর্থঃ- “হযরত আবু হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমরা কবূল হওয়ার বিশ্বাসের সাথে দোয়া কর। আর যেনে রাখ যে, আল্লাহ্ পাক কবুল করেননা আমনোযোগী, অবহেলাকারী অন্তরের দোয়া।” (মিশকাত শরীফ ১৯৫ পৃষ্ঠা, মিরক্বাত, আশয়াতুল লুময়াত, লুময়াত, শরহুত্ ত্বীবী, আত্ তা’লীকুছ্ ছবীহ, মুযাহিরে হক্ব, মিরয়াতুল্ মানাজীহ, তিরমিযী শরীফ, তুহফাতুল্ আহওয়াযী, আরিদ্বাতুল আহওয়াযী, উরফুশ্ শাযী, মায়ারিফুস্ সুনান)

[৮৯৭-৯১৪]

عن سلمان رضى الله عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم ان ربكم حى كريم يستحيى من عبده اذا رفع يديه ان يردهما صفرا. (مشكوة شريف ص 195، مرقاة، اشعة اللمعات، اللمعات، شرح الطيبى، التعليق الصبيح، مظاهرحق، مرأة المناجيح، ترمذى شريف، تحفة الاحوذى، عارضة الاحوذى، عرف الشاذى، معارف السنن، ابوداؤد شريف، بذل المجهود، عون المعبود، شرح ابى داؤد لبدر الدين العينى، بيهقى فى الدعوات المكبير.

অর্থঃ- “হযরত সালমান ফারসী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমাদের রব লজ্জাশীল ও দাতা। তিনি লজ্জা বোধ করেন তাঁর কোন বান্দা তাঁর নিকট দু’হাত উঠালে তা খালি  ফিরিয়ে দিতে।” (মিশকাত শরীফ ১৯৫ পৃষ্ঠা, মিরক্বাত, আশয়াতুল্ লুময়াত, লুময়াত, শরহুত্ ত্বীবী, আত্ তা’লীকুছ্ ছবীহ, মুযাহিরে হক্ব, মিরয়াতুল মানাজীহ, তিরমিযী শরীফ, তুহফাতুল্ আহওয়াযী, আরিদ্বাতুল আহওয়াযী, উরফুশ শাযী, মায়ারিফুস্ সুনান, আবূ দাউদ শরীফ, বযলুল মাজহুদ, আউনুল মা’বূদ, শরহু আবী দাউদ লি বদরিদ্দীন আইনী, বাইহাক্বী ফীদ দা’ওয়াতিল্ কবীর)

[৯১৫-৯২৬]

عن عائشة رضى اله عنها قالت كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يستحب الجوامع من الدعاء ويدع ويدع ماسوى ذلك.

(مشكوة شريف ص 195، مرقاة، اشعة اللمعات، اللمعات، شرح الطيبى، التعليق الصبيح، مظاهر حق، مرأة المنا جيح، ابو داؤد شريف، بذل المجهود، عون المعبود، شرح ابى داؤد لبدر الدين العينى)

অর্থঃ- “হযরত আয়েশা ছিদ্দীকা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অল্প কথায় বেশী অর্থবোধক দোয়াকে পছন্দ করতেন এবং তা ছাড়া অপর দোয়া ছেড়ে দিতেন।” (মিশকাত শরীফ ১৯৫ পৃষ্ঠা, মিরক্বাত, আশয়াতুল্ লুময়াত, লুময়াত, শরহুত্ ত্বীবী, আত্ তা’লীকুছ্ ছবীহ, মুযাহিরে হক্ব, মিরয়াতুল্ মানাজীহ, আবূ দাউদ শরীফ, বযলুল মাজহুদ, আউনুল মা’বূদ, শরহু আবী দাউদ লিবদরিদ্দীন আইনী)

[৯২৭-৯৪৩]

عن عبد الله بن عمرو رضى الله عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم ان اسرع الدعاء اجابة دعوة غائب لغائب. (مشكوة شريف ص 190، مرقاة، اشعة اللمعات، اللمعات، شرح الطيبى، التعليق الصبيح، مظاهرحق، مرأة المناجيح، ترمذى شريف، تحفة الاحوذى، عارضة الاحوذى، عرف الشاذى، معارف السنن، ابو داؤدد شريف، بذل المجهود، عون المعبود، شرح ابى داؤد لبدر الدين العينى)

অর্থঃ- “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, অনুপস্থিত ব্যক্তির জন্য অনুপস্থিত ব্যক্তির (অর্থাৎ পরের জন্য পরের) দোয়া সত্বর কবুল হয়।” (মিশকাত শরীফ ১৯৫ পৃষ্ঠা, মিরক্বাত, আশয়াতুল লুময়াত, লুময়াত, শরহুত্ ত্বীবী, আত্ তা’লীকুছ্ ছবীহ, মুযাহিরে হক্ব, মিরয়াতুল্ মানাজীহ, তিরমিযী শরীফ, তুহফাতুল আহওয়াযী, আরিদ্বাতুল আহওয়াযী, উরফুশ্ শাযী, মায়ারিফুস্ সুনান, আবূ দাউদ শরীফ, বযলুল্ মাজহুদ, আউনুল মা’বূদ, শরহু আবী দাউদ লিবদরিদ্দীন আইনী)

[৯৪৪-৯৫৬]

عن ابى هريرة رضى الله عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم ثلثة لاترد دعوتهم الصائم حين يفطر والامام العادل ودعوة المظلوم يرفعها الله فوق الغمام وتفتح لها ابواب السماء ويقول الرب وعزتى لانصرنك ولوبعد حين.

(كشطزو شريف ص 195، كرقتو شريف، اشعة اللمعات، اللمعات، شرح الطيبى، التعليق الصبيح، مظاهرحق، مراة المنا جيح، ترمذى شريف، تحفة الاحوذى، عارضة الاحوذى، عرف الشاذى، معارف السنن)

অর্থঃ- “হযরত আবু হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তিন ব্যক্তির দোয়া ফিরিয়ে দেয়া হয়না। (১) রোযাদারের দোয়া, যখন সে ইফতার করে, (২) ন্যায় বিচারক ইমামের দোয়া এবং (৩) মাযলুম (অত্যাচারিতের) ব্যক্তির দোয়া। তার দোয়াকে আল্লাহ্ পাক মেঘের উপর উঠিয়ে নেন এবং এর জন্য আসমানের দরজা খুলে দেয়া হয় এবং আল্লাহ্ পাক বলেন, আমার ইজ্জত-সম্মানের কসম, আমি নিশ্চয়ই তোমাকে সাহায্য করব, যদিও কিছু সময় পরে হয় না কেন।” (মিশকাত শরীফ ১৯৫ পৃষ্ঠা, মিরক্বাত শরীফ, আশয়াতুল লুময়াত, লুময়াত, শরহুত্ ত্বীবী, আত্ তালীকুছ্ ছবীহ, মুযাহিরে হক্ব, মিরয়াতুল্ মানাজীহ, তিরমিযী শরীফ, তুহফাতুল আহওয়াযী, আরিদ্বাতুল আহওয়াযী, উরফুশ্ শাযী, মারারিফুস্ সুনান)

[৯৫৭-৯৭৩]

عن ابى هريرة رضى الله عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم ثلث دعوات مستجابات لا شك فيهن دعوة الوالد ودعوة المسافر ودعوة المظلوم. (مشكوة شريف ص 195، مرقاة، اشعة اللمعات، اللمعات، شرح الطيبى، التعليق الصبيح، مظاهرحق، مرأة المناجيح، ترمذى شريف، تحفة الاحوذى، عارضة الاحوذى، عرف الشاذى، معارف السنن، ابو داؤد شريف، بذل المجهود، عون المعبود، شرح ابى داؤد ليدر الدين العينى، ابن ماجة شريف)

অর্থঃ- “হযরত আবূ হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তিনটি দোয়া কবুল হয়, তাতে কোন সন্দেহ নাই। (১) পিতা-মাতার দোয়া, (২) মুসাফিরের দোয়া ও (৩) মাযলূম ব্যক্তির দোয়া।” (মিশকাত শরীফ ১৯৫ পৃষ্ঠা, মিরকাত, আশয়াতুল লুময়াত, লুময়াত, শরহুত্ ত্বীবী, আত্ তা’লীকুছ্ ছবীহ, মুযাহিরে হক্ব, মিরয়াতুল্ মানাজীহ, তিরমিযী শরীফ, তুহফাতুল্ আহওয়াযী, আরিদ্বাতুল আহওয়াযী, উরফুশ্ শাযী, মায়ারিফুস্ সুনান, আবূ দাউদ শরীফ, বযলুল্ মাজহুদ, আউনুল মা’বূদ, শরহু আবী দাউদ লি বদরিদ্দীন আইনী)

[৯৭৪-৯৮৬]

عن ابى بن كعب رضى الله عنه قال كان رسول الله صلى اله عليه وسلم اذا ذكر احدا فدعاله بدأ بنغسه. (مشكوة شريف ص 196، مرقاة، اشعة اللمعات، اللمعات، شرح الطيبى، التعليق الصبيح، مظاهر حق، مراة المناجيح، ترمذى شريف، تحفة الاحوذى، عارضة الاحوذى، عرف الشاذى، معارف السنن)

অর্থঃ- “হযরত উবাই ইবনে কা’ব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন কাউকে উল্লেখ করে দোয়া করতেন, প্রথমে নিজের জন্য দোয়া করতেন।” (মিশকাত শরীফ ১৯৬ পৃষ্ঠা, মিরক্বাত, আশয়াতুল্ লুময়াত, লুময়াত, শরহুত্ ত্বীবী, আত্ তা’লীকুছ ছবীহ, মুযাহিরে হক্ব, মিরয়াতুল্ মানাজীহ, তিরমিযী শরীফ, তুহফাতুল্ আহওয়াযী, আরিদ্বাতুল আহওয়াযী, উরফুশ্ শাযী, মায়ারিফুস্ সুনান)     উল্লিখিত আয়াত শরীফ ও হাদীস শরীফসমূহ দ্বারা যে বিষয়গুলো প্রমাণিত হলো তা হলো-

(১) দোয়া বা মুনাজাত কুরআন শরীফের আয়াত শরীফ দ্বারাই অকাট্য ভাবে প্রমাণিত।

(২) দোয়া বা মুনাজাত করতে স্বয়ং অল্লাহ্ পাক ও তাঁর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামই বান্দাকে নির্দেশ দিয়েছেন।

(৩) মহান আল্লাহ্ পাক-এর নিকট দোয়া বা মুনাজাত করা শুধু জায়িযই নয় বরং আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামসহ অন্যান্য নবী-রসূল আলাইহিমুস্ সালামগণেরও সুন্নত। কেননা তাঁরা সকলেই মহান আল্লাহ্ পাক-এর নিকট দোয়া বা মুনাজাত করেছেন বলে উক্ত আয়াত শরীফ সমূহ দ্বারা প্রমাণিত হয়। (৪) শরীয়তে নিষিদ্ধ স্থান ও সময় ব্যতীত যে কোন স্থানে ও সময়েই দোয়া বা মুনাজাত করা জায়িয। কেননা উল্লিখিত আয়াত শরীফ ও হাদীস শরীফ সমূহে আমভাবেই দোয়া বা মুনাজাতের কথা উল্লেখ আছে।

উভয় হাত তুলে ইজ্তিমায়ী  বা সম্মিলিতভাবে দোয়া-মুনাজাত করা জায়িয ও সুন্নত

উপরোক্ত আলোচনা দ্বারা অকাট্যভাবেই প্রমাণিত হয়েছে যে, দোয়া বা মুনাজাত করা কুরআন শরীফ ও হাদীস শরীফসম্মত। শুধু তাই নয়, মহান আল্লাহ্ পাক এবং তাঁর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মুবারক নির্দেশ হচ্ছে উম্মত যেন অধিক মাত্রায় মহান আল্লাহ্ পাক-এর নিকট দোয়া বা মুনাজাত করে। এখন প্রশ্ন হলো মহান আল্লাহ্ পাক-এর নিকট উভয় হাত তুলে এবং ইজ্তিমায়ী বা সম্মিলিতভাবে দোয়া-মুনাজাত করা জায়িয তথা কুরআন-সুন্নাহ সম্মত কিনা? কেউ কেউ এটাকে নাজায়িয ও বিদয়াত বলে থাকে।          মূলতঃ যারা এটাকে নাজায়িয বলে থাকে তাদের উক্ত বক্তব্য শুধু অশুদ্ধই নয়, বরং সম্পূর্ণ কুরআন-সুন্নাহ বিরোধী। কেননা, দোয়া-মুনাজাতে উভয় হাত তোলা এবং ইজ্তিমায়ী বা সম্মিলিতভাবে দোয়া করার স্বপক্ষে একটি দুটি নয় বরং অসংখ্য হাদীস শরীফ বিদ্যমান রয়েছে। শুধু তাই নয়, স্বয়ং আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম  নিজেই উভয় হাত তুলে এবং হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণকে নিয়ে ইজ্তিমায়ী বা সম্মিলিতভাবে দোয়া-মুনাজাত করেছেন। কাজেই উভয় হাত তুলে এবং ইজ্তিমায়ী বা সম্মিলিতভাবে দোয়া-মুনাজাত করা জায়িয তো অবশ্যই বরং সুন্নতে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর অন্তর্ভুক্ত। এটাকে নাজায়িয ও বিদয়াত বলা গোমরাহী  বৈ কিছুই নয়। নিম্নে পর্যায়ক্রমে উভয় হাত তুলে মুনাজাত করার এবং ইজ্তিমায়ী বা সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করা জায়িয ও সুন্নত হওয়ার দলীল-আদিল্লাসমূহ উল্লেখ করা হলো- “দোয়া-মুনাজাতে উভয় হাত উঠানো জায়িয ও সুন্নত হওয়ার অকাট্য প্রমাণ”

[৯৮৭]

عن انس بن مالك رضى الله عنه ان النبى صلى الله عليه وسلم قال مامن عبد يبسط كفيه فى دبر كل صلوة يقول اللهم الهى … الا كان حقا على الله ان لايرد يديه خائبتين. (العمل اليوم واليل لابن السنى)

অর্থঃ- “হযরত আনাস ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যখন কোন বান্দা প্রত্যেক নামাযের পর উভয় হাত উঠিয়ে বলবে- আয় আল্লাহ্ পাক! …………… তখন আল্লাহ্ পাক-এর দায়িত্ব হয়ে যায়, তাকে খালি হাতে না ফিরানো।” (আল আমালুল্ ইয়াওম ওয়াল্ লাইল্ লিইবনিস সিন্নী)

[৯৮৮]

حدثنا محمد بن يحيى الاسلامى قال رأيت عبد الله بن زبير رضى الله عنه وراى رجلا رافعا يديه يدعو قبل ان يفرغ من صلوته فلما فرغ منها قال له ان رسول الله صلى الله عليه وسلم لم يكنن ير فع يديه  حتى يفرغ من صلوةته، (فض الوعاء للسيوطى)

অর্থঃ- “হযরত মুহম্মদ ইবনে ইয়াহইয়া আসলামী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু কোন এক ব্যক্তিকে নামায শেষ না করেই হাত উঠিয়ে মুনাজাত করতে দেখলেন। সে ব্যক্তি নামায শেষ ‘করার পর তিনি তাকে বললেন, নিশ্চয়ই রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নামায শেষ করে উভয় হাত মুবারক উঠিয়ে মুনাজাত করতেন।” (ফাদ্দুল ওয়া লিস্ সূয়ূত্বী)

[৯৮৯-৯৯৬]

عن الفضل بن عباس رضى الله عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم اصلوة مثنى مثنى تشهد فى كل ركعتين وتخشع وتضرع وتسكن ثم تقنع يديك يقول تر فعهما الى ربك …………… من لم يفعل ذلك فهى كذا وكذا. (ترمذى شرريف، تحفة الاحوذى، عارضة الاحوذى، عرف الشاذى، سنن النسائى، سنن الكبرى للنسائى، حاشية السيوطى للنسائى، اعلاء السنن)

অর্থঃ- “হযরত ফযল ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, নামায দুই দুই রাকায়াত করে। প্রত্যেক দুই রাকায়াতের মধ্যে তাশাহহুদ পড়বে এবং খুশু-খুযূ, বিনয় ও সুকূনাতের সাথে নামায পড়বে। অতঃপর উভয় হাত আল্লাহ্ পাক-এর নিকট উঠিয়ে বলবে, হে আমার রব ………..। আর যে ব্যক্তি এরূপ করবে না, তার নামায অপূর্ণ থাকবে।” (তিরমিযী শরীফ, তুহফাতুল আহওয়াযী, আরিদ্বাতুল আহওয়াযী, উরফুশ্ শাযী, সুনানুন্ নাসায়ী, সুনানুল্ কুবরা লিন নাসায়ী, হাশিয়াতুস্ সুয়ূত্বী লিন নাসায়ী, ই’লাউস্ সুনান)

[৯৯৭]

عن الاسود العامرى عن ابيه قال صليت مع رسول الله صلى الله عليه وسلم الفجر فلما سلم انصرف ورفع يديه ودعا. (مصنف ابن ابى شيبة)

অর্থঃ- “হযরত আসওয়াদ আমিরী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তাঁর পিতা হতে বর্ণনা করেন। তাঁর পিতা বলেন, আমি হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সাথে ফজর নামায পড়লাম। যখন তিনি সালাম ফিরালেন, তখন উভয় হাত মুবারক উঠিয়ে দোয়া করলেন।” (মুছান্নাফু ইবনে আবী শাইবাহ্)

[৯৯৮]

ھاتہ اٹھاکر دعا کا جو حکم دیا گیا ھے یہ نما ز کے بعد کیلئے ھے. کیونکہ نماز مین ھا تہ اٹھا کر دعا  کرنا ثا بت نھین. بعض غیر مقلد حضرت نماز کے بعد ھ ٹہ اٹھا کر دعا کرنے سے منع کر تے ھین. نجدیون نے اسکو بالکل چھور دیا ھے اور بدعت سمجہ کر بعض دوسری علماء نے بھی یھی کیا ھے مگر یہ بات درست نھین. کیونکہ اس حدیث سے بعد صلوۃ ھاتہ اٹھاکر دعا مانگنا ثابت ھوتی ھے. اسکے علاوہ اور احا دیث بھی اسکی تائید مین موجود ھین. (معارف مدنیہ شرح تر مذی ج 7 ص 23)

অর্থঃ- “দোয়া-মুনাজাতে হাত উঠানোর যে আদেশ দেয়া হয়েছে, তা নামায শেষের (মুনাজাতের) জন্যই দেয়া হয়েছে। কেননা, নামাযের মধ্যে হাত উঠিয়ে মুনাজাত করা প্রমাণিত নেই। কোন কোন মাযহাব অস্বীকারকারী ব্যক্তিবর্গ নামাযের পর হাত উঠিয়ে মুনাজাত করতে নিষেধ করে থাকে। নজদীরা (ওহাবীরা) এটাকে একেবারেই ছেড়ে দিয়েছে। আর কিছু কিছু আলিম এটাকে বিদ্য়াত মনে করে তাদের পন্থাই গ্রহণ করেছে। কিন্তু তাদের উক্ত বক্তব্য সঠিক নয়। কেননা, উক্ত হাদীস শরীফ দ্বারা নামাযের পর হাত উঠিয়ে মুনাজাত করা স্পষ্টরূপে প্রমাণিত হয়। এছাড়া আরো বহু হাদীস শরীফ এ ব্যাপারে মওজুদ রয়েছে।” (মায়ারিফে মাদানিয়া শরহে তিরমিযী ৭ম জিঃ ২৩ পৃষ্ঠা)

[৯৯৯-১০০৪]

صاحب التعلیق نے منتخب سے نقل کیا کہ مطلقا  دعا کے اندر رفع الیدین احادیث متواتر سے ثابت ھے. لیکن رفع الیدین فی الدعا ء بعد الصلوۃ  المکتوبۃ کے صاحب المنتخب نے کھاکہ ایک صحیح حد یث ھے اور انس رضی اللہ عنہ سے مرفوعا  منقول ھے. “ما من عبد مؤمن یبسط کفیہ  فی دبر کل صلوۃ ثم یقول اللھم الھی ….. الاکان حقا علی اللہ ان لا یرد یدیہ خائبتین. رواہ ابن السنی والدیلمی وابن الخعفر کما فی التعلیق الصبیح ج 3  ص 53_  واشعۃ اللمعات ج 2 ص 176. (تنظیم الاشتات ج 2 ص 145)

অর্থঃ- “ছাহিবুত্ তা’লীক্ব’ ‘মুন্তাখাব’ হতে বর্ণনা করেন যে, সাধারণভাবে সকল দোয়াতে হাত উঠানো ছহীহ্ হাদীস শরীফ দ্বারা প্রমাণিত রয়েছে। কিন্তু ‘ছাহিবুল মুন্তাখাব’ বলেন যে, ফরয নামাযের পর হাত উঠিয়ে মুনাজাত করা প্রসঙ্গে একটি ছহীহ্ হাদীস শরীফ বর্ণিত রয়েছে। সেটাই হযরত আনাস ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে মারফূ’ হিসাবে বর্ণিত হয়েছে, “যে মু’মিন বান্দা প্রত্যেক ফরয নামাযের পর নিজের উভয় হাত উঠিয়ে বলবে, আয় আল্লাহ্ পাক! ………। তখন তাকে খালি হাতে না ফিরানো আল্লাহ্ পাক-এর দায়িত্ব-কর্তব্য হয়ে যায়।” এটা ইবনুস্ সিন্নী, দাইলামী, ও জু’ফার বর্ণনা করেন। অনুরূপ ‘তা’লীকুছ্ ছবীহ, আশয়াতুল্ লুময়াতে উল্লেখ আছে।” (তানযীমুল্ আশতাত ৩য় জিঃ ১৪৫ পৃষ্ঠা, আত্ তা’লীকুছ্ ছবীহ ৩য় জিঃ ৫৩ পৃষ্ঠা, আশয়াতুল্ লুময়াত ২য় জিঃ ১৭৬ পৃষ্ঠা, আল্ আমালুল ইয়াওম ওয়াল্ লাইল্ লিস্ সিন্নী, দাইলামী শরীফ, মুন্তাখাব)

[১০০৫-১০০৮]

ثم بعد الفراغ عن الصلوة يدعو الامام لنفسه وللمسلمين رافعى ايديهم حذو مالعدور وبطونها مما يلى الوجه. (نور الايضاح، امداد الفتاح وكذا فى تحفة المرغوية والسعايه)

অর্থঃ- “অতঃপর নামায শেষ করে ইমাম নিজের জন্য ও সকল মুসলমানগণের জন্য উভয় হাত সিনা পর্যন্ত উঠিয়ে মুনাজাত করবে।” (নূরুল্ ঈযাহ, ইমদাদুল্ ফাত্তাহ্, অনুরূপ তুহফাতুল্ মারগুবাহ ও সায়াইয়াহ্ কিতাবেও উল্লেখ আছে)

[১০৯-১০১১]

ان الدعاء بعد صلوة المكتوبة مسنون وكذا رفع اليدين ومسح الوجه بعد الفراغ. (منههج العمال والعقائد السنية، وكذا فى تحفة المرغوبة، كفاية المفتى ج 3 ص 297)

অর্থঃ- “নিশ্চয়ই ফরয নামাযের পর মুনাজাত করা সুন্নত। অনুরূপ মুনাজাতে উভয় হাত উঠানো ও মুনাজাত শেষে উভয় হাত দ্বারা মুখ মাসেহ্ করাও সুন্নত।” (মিনহাজুল উম্মাল ওয়াল্ আক্বাইদুস্ সুন্নীয়া, অনুরূপ তুহফাতুল্ মারগুবা ও ‘কিফায়াতুল্ মুফতীতে উল্লেখ আছে)

[১০১২]

دعاء بعد الغرائض مین رفع یدین بھی ثابت ھے. اگرچہ اس سے متعلق بعض روایات مین ضعیف ھے مگر فضا ئل مین عمل بالضعیف بھی جائز ھے. (احسن الفتاوی ج 3 ص 66)

অর্থঃ- “ফরয নামাযের পর হাত উঠিয়ে মুনাজাত করাও প্রমাণিত রয়েছে। যদিও এ সম্পর্কে কোনটি যঈফ। কিন্তু ফযীলত অর্জনের লক্ষ্যে যঈফ হাদীস শরীফের উপরও আমল করা জায়িয।” (আহসানুল ফাতাওয়া ৩য় জিঃ ৬৬ পৃষ্ঠা)

[১০১৩-১০১৯]

فرضون کے بعد ھاتہ اٹھا کر دعا کرتا اور بعد دعاکے منہ پر ھاتہ پھیرنا احادیث صحیحہ سے ثابت ھے منکر اسکا جاھل اور بے خبر ھے سنت سےاور تارک سنت ھوکر مورد ملامت وطعن ھے ترمذی شریف مین مروی ھے “عن ابی امامۃ رضی اللہ عنہ قال قیل یا رسول اللہ صلی اللہ علیہ وسلم ای الدعاء اسمع قال جوف اللیل الاخر ودبر  الصلوۃ” اور حصن حصین مین بروایت ترمذی وحاکم نقل کیاھے “وبسط الیدین” اور صحاح ستہ کی روایت سے نقل کیا ھے “ورفعھما” پس مجموعۃ ان احادیث صحیحہ سے ھر ایک نماز کے بعد  ھا تہ اٹھا کر دعا ما نگنا اور اسکا سنت ھونا ثا بت ھوا. (عزیز الفتاوی ۃ ج 1 ص 149-  ترمذی شریف. تحفۃ الاحوذی. عارضۃ الاحوذی. عرف الشاذی. حصن حصین، مستدر ک حاکم)

অর্থঃ- “ফরয নামায সমূহের পর হাত উঠিয়ে মুনাজাত করা এবং মুনাজাত শেষে হাত দ্বারা মুখ মাসেহ করা ছহীহ্ হাদীস শরীফ সমূহ দ্বারা প্রমাণিত রয়েছে। এটা অস্বীকারকারী জাহিল (মুর্খ) এবং সুন্নত সম্পর্কে নেহায়েত অজ্ঞ। আর সুন্নত পরিত্যাগকারী হয়ে শাস্তি ও তিরস্কারের পাত্র হয়েছে। তিরমিযী শরীফে বর্ণিত রয়েছে, ‘হযরত আবূ উমামা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে প্রশ্ন করা হলো, কোন্ দোয়া কবুল যোগ্য? হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, শেষ রাতের এবং ফরয নামাযের পরের দোয়া।’ অতি সত্ত্বর হিছনে হাছীনে’ তিরমিযী ও হাকিম হতে বর্ণনা করা হয়েছে ‘(মুনাজাতে) উভয়হাত বিছিয়ে দিবে।’ আর সিহাহ্ সিত্তায় বর্ণিত রয়েছে, “উভয় হাত উঠাবে।” সুতরাং উপরোক্ত ছহীহ্ হাদীস শরীফ সমূহের সমষ্টি হলো- প্রত্যেক নামাযের পর হাত উঠিয়ে মুনাজাত করা সুন্নত প্রমাণিত হয়।” (আযীযুল ফাতাওয়া ১ম জিঃ ১৪৯ পৃষ্ঠা, তিরমিযী শরীফ, তুহফাতুল্ আহওয়াযী, আরিদ্বাতুল্ আহওয়াযী, উরফুশ্ শাযী, হিছনে হাছীন, মুসতাদরিকে হাকিম)

[১০২০]

بعد نما ز ختم  کر چکنے کے دونو ھاتہ سینہ تک اٹھا کر پھیلائے اور اللہ تعالی سے اپنے لئے دعا مانگے. (اشر فیہ بھشتی زیور ج 11 ص 32)

অর্থঃ- “নামায শেষ করার পর উভয় হাত সিনা পর্যন্ত উঠাবে এবং নিজের জন্য আল্লাহ্ পাক-এর নিকট মুনাজাত করবে।” (আশরাফী বেহেশ্তী জিওর ১১ জিঃ ৩২ পৃষ্ঠা)

[১০২১-১০২২]

جویندہ ھر فرض نماذ کے بعد ھا تہ پھیلا کر أللھم الھی الخ. یرھے تو اللہ تعالی پرحق ھو جاتا ھے کہ اسکو خالی ھا تہ نہ لوپائے، کذا فی عمل الیوم  واللیل. (قتاوئے محمودیہ ج 2 ص 123)

অর্থঃ- “যে বান্দা প্রত্যেক ফরয নামাযের পর হাত উঠিয়ে বলবে, হে আল্লাহ্ পাক …….। তখন আল্লাহ্ পাক-এর দায়িত্ব-কর্তব্য হয়ে যায়, তাকে খালি হাতে না ফিরানো।” অনুরূপ ‘আমালুল ইয়াওম ওয়াল লাইল’ কিতাবে উল্লেখ আছে।” (ফতওয়ায়ে মাহ্মূদিয়া ২য় জিঃ ১২৩ পৃষ্ঠা, আমালুল্ ইয়াওম ওয়াল্ লাইল)

[১০২৩-১০২৪]

سوال: یعد نماز پجگا نہ دعاء کے واسطے ھا تہ اٹھانا سنت ھے یا بدعت؟ زید نے دعا اس غرض سے ترک کر دی کہ اس بارہ مین کوئی حدیث وارد  نھین. یہ فعل کیسا ھے؟

الجواب: نماز پنجگانہ کے بعد ھاتہ اٹھا کر دعا مانگنا سنت بنویہ صلی اللہ علیہ وسلم ھے.

حصن حصین جو معبتر کتاب حدیث کی ھے اس مین احادیث مرفوعہ دعا مین ھاتہ اپھانے اور بعد  دعاکے منہ پر ھاتہ پھرنے کی موجود ھین انکو دیکہ لیا جاوے، نما زون کے بعد دعاکا مسنون هونا بھی اس مین مذکور ھین. پس زید کا یہ فعل ترک دعا بعد الصلوات خلاف سنت ھے. (فتاوئے دیوبند ج 2 ص 199- حصن حصین)

অর্থঃ- সুওয়ালঃ পাঁচ ওয়াক্ত (ফরয) নামাযের পর হাত উঠিয়ে মুনাজাত করা সুন্নত না বিদ্য়াত? যায়েদ একারণে উক্ত মুনাজাত করা পরিত্যাগ করেছে যে, এ ব্যাপারে কোন হাদীস শরীফ বর্ণিত নেই। এটা কিরূপ কাজ?           জাওয়াবঃ পাঁচ ওয়াক্ত (ফরয) নামাযের পর হাত উঠিয়ে মুনাজাত করা সুন্নতে নববী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর অন্তর্ভুক্ত। হাদীস শরীফের নির্ভরযোগ্য কিতাব হিছনে হাছীনের মধ্যে মুনাজাতে হাত উঠানো ও মুনাজাত শেষে মুখ মাসেহ করা প্রসঙ্গে বহু ‘মারফু’ হাদীস শরীফ বর্ণিত রয়েছে। তা দেখে নেয়া যেতে পারে। নামাযের পর মুনাজাত করা সুন্নত হওয়াও তাতে উল্লেখ আছে। সুতরাং নামাযের পর যায়েদের মুনাজাত পরিত্যাগ করা সুন্নতের খিলাফ (বিপরীত)।” (ফতওয়ায়ে দেওবন্দ ২য় জিঃ ১৯৯ পৃষ্ঠা, হিছনে হাছীন)

[১০২৫-১০২৭]

سوال: زید کھتا ھے کہ بعد صلوات مکتوبات کے ھاتہ اٹھا کر دعا مانگنا رسول اللہ صلی اللہ علیہ وسلم سے ثابت نھین. لھذا بدعت سیئہ ھے ذید  کاقول کیسا ھے؟ دعا کا ثبوت ھے تو تحریر فرما وین. الجواب: ھاں صحا ح ستہ کی روایت مین اسکا صرا حۃ ذکر نھین. مگر ابن ابی شیبۃ رحمۃ اللہعلیہ کے مصنف مین ایک روایت موخود ھے جن مین نماز کے بعد ھا تہ اٹا کر دعاء کرنا مذکوز ھے. اعلاء السنن مین یہ حد یث مذکور ھے. (امداد الاحکام ج 1  ص 246, مصنف ابن ابی شیبۃ, اعلاء السنن)

অর্থঃ- সুওয়ালঃ যায়েদ বলে যে, ফরয নামায সমূহের পর হাত উঠিয়ে মুনাজাত করা হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে প্রমাণিত নেই। তাই, এটা বিদ্য়াতে সাইয়্যিয়াহ্। যায়েদের এ কথাটি কিরূপ? মুনাজাতের প্রমাণ থাকলে হাদীস শরীফ পেশ করবেন।  জাওয়াবঃ হ্যাঁ ‘সিহাহ্ সিত্তার বর্ণনায় এটা স্পষ্টভাবে উল্লেখ নেই। কিন্তু ‘মুছান্নাফু ইবনে আবী শাইবাহ’-এ একটি বর্ণনা রয়েছে, যার মধ্যে ফরয নামাযের পর হাত উঠিয়ে মুনাজাত করার কথা উল্লেখ আছে। এ হাদীস শরীফ ‘ই’লাউস্ সুনান’ কিতাবেও উল্লেখ আছে।” (ইমদাদুল আহকাম ১ম জিঃ ২৪৬ পৃষ্ঠা, মুছান্নাফু ইবনে আবী শাইবাহ্, ই’লাউস্ সুনান)

[১০২৮]

وجهه عموم الدليل للر فع للدعاء ويجاب بانه مخصوص فى اللصلوة للرفع للدعاء ويجاب بانه مخصوص بما ليس فى الصلوة للاجماع على ان لارفع فى الدعاء التشهد. (فتح القدير)

অর্থঃ- “দোয়া  হাত উঠিতে হবে তার প্রমাণ এই যে, যে দলীল দ্বারা দোয়ায় হাত উঠানো প্রমাণ হয়, তাতে সকল দোয়াতেই হাত উঠাবার প্রমাণ আছে। কাজেই এখানে এরূপ প্রশ্ন হতে পারে যে, যখন হাত উঠানোর জন্য কোনও দোয়া নির্দিষ্ট নেই, তখন নামাযের মধ্যের দোয়ায় হাত না তোলার কারণ কি? এর জাওয়াব এই যে, মাত্র নামাযের বাইরের দোয়ার জন্যই হাত উঠানো নির্দিষ্ট। যেহেতু, ইজ্মা সিদ্ধান্ত মত এই যে, নামাযের মধ্যে তাশাহহুদে হাত উঠানো বিধান নয়।” (ফতহুল্ ক্বদীর)

[১০২৯]

كما يرفع هما بمطلق الدعاء فى سائر الامكنة والازمنة على طبق ماودت به السنة. (فتاوى شامى)

অর্থঃ- “হাদীস শরীফ অনুযায়ী যাবতীয় দোয়ায় (চাই যে কোন নামাযের আগে বা পরে হোক অথবা অন্য যে কোন সময় হোক) সর্বস্থানে এবং সর্বসময় হাত উঠানো বিধেয়।” (ফতওয়ায়ে শামী)

[১০৩০]

اذا فرغت منها (من الصلوة) تسلم ثم ارفع يديك سائلا جاجتك. (ترمذى شريف)

অর্থঃ- “নামাযের শেষে সালাম ফিরিয়ে হাত উত্তোলন পূর্বক তোমার অভাব-অভিযোগের জন্য প্রার্থনা কর।” (তিরমিযী শরীফ)

[১০৩১]

هذا يثبت الدعاء بعد الصلوة برفع اليدين كما هوالمعمول- وانكار الجهلة مردود. (كوكب الدر شرح ترمذى ليحيى كندلوى)

অর্থঃ- “উল্লিখিত হাদীস শরীফের মর্মে নামাযের শেষে প্রচলিত নিয়ম অনুসারে হাত উঠিয়ে দোয়া করা প্রমাণিত হচ্ছে। এর বিপরীত মত কোন ভাবেই গ্রাহ্য হওয়ার উপযুক্ত নয়। অর্থাৎ মুনাজাতে হাত উঠাতে কোনও মুর্খ বিরুদ্ধাচরণ করলে তা সম্পূর্ণ অগ্রাহ্য হবে।” (কাওকাবুদ্দুর শরহে তিরমিযী লিইয়াহইয়া কান্দলবী)

[১০৩২]

ايتفيد من هذا الحديث والذى قبلة انه يسن رفع اليدين الى السماء فى كل دعاء وصحت به الاحاديث الكثيرة عنه عليه الصلوة والسلام من غير حضر- قال النووى ومن ادعى حضرها فقد غلط علطا فاحشا. (مرقاة شرح مشكوة)

অর্থঃ- “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণিত হাদীস ও অন্যান্য হাদীস শরীফ দ্বারা বুঝা যাচ্ছে যে, যাবতীয় দোয়ায় হাত উঠানো সুন্নত। সকল দোয়ার জন্য হাত উঠানো বৈধ, এরূপ বহু হাদীস শরীফ দ্বারা প্রমাণিত আছে। আল্লামা নববী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেছেন যে, যদি কেউ বলে যে, কোন বিশেষ দোয়ার জন্য হাত উঠানো বিধান। নিশ্চয়ই তার দাবী চরম ভ্রান্তিমূলক।” (মিরক্বাত শরহে মিশকাত)

 [১০৩৩-১০৪১]

كان النبى صلى الله عليه وسلم لايرفع يديه فى شيئ من دعائه الا فى الاستسقاء وانه يرفع حتى يرى بياض ابطيه. (بحترة شريف، فتح البارى، عمدة القارى، ارشاد السارى، تيسر البارى، مسلم شريف- مسلم بشرح النووى، فتح الملهم، المفهم)

অর্থঃ- “হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একমাত্র ইস্তিস্কায় ব্যতীত অন্য কোন দোয়ায় হাত উঠান নাই। তিনি এতে এতদূর উপরে হাত উঠাতেন, যাতে তাঁর বগলের শুভ্রতা দৃষ্টিগোচর হতো।” (বুখারী শরীফ, ফতহুল্ বারী, উমদাতুল্ কারী, ইরশাদুস্ সারী, তাইসীরুল্ বারী, মুসলিম শরীফ, মুসলিম বিশরহিন নববী, ফতহুল্ মুলহিম, আল্ মুফহিম)

এ হাদীস শরীফ দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইস্তিস্কার দোয়া ব্যতীত অন্য কোন দোয়ায় হাত উঠাননি। অথচ অন্যান্য বহু হাদীস শরীফ দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, তিনি ইস্তিস্কা ব্যতীত অন্যান্য দোয়াতেও হাত মুবারক উঠিয়েছেন। তাহলে এর সঠিক ফায়ছালা কি?

মূলতঃ উক্ত হাদীস শরীফের সঠিক অর্থ ও ব্যাখ্যা হলো হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইস্তিস্কার দোয়ায় হাত যতটুকু উপরে উঠাতেন অন্যান্য দোয়ায় ততটুকু উপরে উঠাতেন না বরং সিনা মুবারক বরাবর উঠাতেন। যেমন এর ব্যাখ্যায় কিতাবে উল্লেখ আছে,

[১০৪২-১০৪৩]

قد ثبت رفع يديه فى الدعاء فى مواطن غير الاستقاء وهى اكثر من ان تحصى فيتاول هذا الحديث على انه لم يرفع رفع البليغ بحيث يرى بياض ابطيه الافى الاستسقاء او ان المراد لم اراه يرفع وقد راه غيره فتقدم ما رواه المثبتون. (عمدة القارى شرح بخارى)

অর্থঃ- “ইস্তিস্কা ব্যতীত অন্যান্য দোয়াতেও হাত উঠানো অসংখ্য হাদীস শরীফ দ্বারা প্রমাণিত আছে। সুতরাং বুখারী শরীফের হাদীসের মর্ম এই যে, ইস্তিস্কা ব্যতীত অন্য কোন দোয়ায় হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাত এতদূর উপরে তুলেননি যাতে বগলের নিম্নস্থ শুভ্রতা পরিদৃষ্ট হয়। ……….সুতরাং দোয়ায় হাত উঠানো যারা প্রমাণিত করেছেন তাদের কওলই  অগ্রগণ্য। অনুরূপ মিরক্বাত শরীফেও আছে।” (উমদাতুল্ ক্বারী শরহে বুখারী, মিরক্বাত শরীফ)

[১০৪৪-১০৪৫]

هذا الحديث يوهم طاهره انه لم يرفع صلى الله عليه وسلم الافى الاستسقاء وليس الامر كذالك بل قد ثبت رفع يديه صلى الله عليه وسلم فى الدعاء فى مواطن غير الاستسقاء وهى اكثر من ان تحصر جمعت منها نحوا من ثلاثين حديثا من الصحيحين او احدهما وذكرتها فى اواخر صفة الصلوة من شرح المهذب ويتاول هذا الحديث لم يرفع الرفع البليغ بحيث يرى بياض ابطيه الا فى الاستسقاء فيقدم المثبتون. (شرح النووى، المهذب)

অর্থঃ- “এই হাদীস শরীফের মর্ম বাহ্যতঃ এরূপ মনে হয় যে, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একমাত্র ইস্তিস্কা ব্যতীত অন্য কোন দোয়ায় হাত উপরে তুলেননি, কিন্তু প্রকৃত তাৎপর্য এরূপ নয়। কেননা, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে ইস্তিস্কা ব্যতীত অন্যান্য দোয়ায়ও হাত উপরে তুলতেন, তা অসংখ্য স্থানে স্পষ্ট প্রমাণিত হয়েছে। বরং তিনি যে ইস্তিস্কা ব্যতীত অন্যান্য দোয়ায় হাত উঠাতেন তার প্রমাণ স্বরূপ আমি বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ হতে কিংবা এর যে কোন একটি হতে আমার লিখিত প্রায় ত্রিশটি হাদীস শরীফ সংগ্রহ করেছি। এই সমস্ত প্রামান্য হাদীস আমার লিখিত ‘শরহে মুহাযযাব’ নামক কিতাবের নামাযের অধ্যায়ের শেষ ভাগে উল্লেখ করেছি। বরং উক্ত বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফের হাদীসের ব্যাখ্যা আল্লামা ইমাম নববী রহমতুল্লাহি আলাইহি এরূপভাবে গ্রহণ করেছেন যে, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইস্তিস্কা ব্যতীত অন্যান্য দোয়ায় হাত এতদূর পর্যন্ত উপরে উঠান নাই, যাতে তাঁর বগলের শুভ্রতা দেখা যেত। …………. সুতরাং এ স্থানে মুনাজাতকালে হাত উঠানোর পক্ষে যারা রায় দিয়েছেন তাদের কওলই গ্রহণযোগ্য।” (শরহে নববী, আল্ মুহায্যাব) উল্লিখিত বিশ্দ আলোচনা থেকে প্রমাণিত হলো যে, সর্বপ্রকার নামাযের পর হাত উঠিয়ে দোয়া করা জায়িয ও সুন্নত। বিশেষভাবে ফরয নামাযের পর হাত তুলে দোয়া করা সুন্নতে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। আর জানাযা নামাযও ফরযে ক্বিফায়াহ মূলক নামায। তাই এর পরও হাত তুলে মুনাজাত করা সুন্নত হবে।

ইজ্তিমায়ী বা সম্মিলিতভাবে দোয়া-মুনাজাত করা জায়িয ও সুন্নত হওয়ার প্রমাণ     

দোয়া বা মুনাজাতে হাত উঠানো যেরূপ জায়িয ও সুন্নত তদ্রুপ ইজ্তিমায়ী অর্থাৎ সকলে একত্রে বা সম্মিলিতভাবে দোয়া-মুনাজাত করাও জায়িয ও সুন্নত। কেননা স্বয়ং হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজেই হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণকে নিয়ে ইস্তিস্কা নামায, ফরয নামায বা অন্যান্য সময়ে একত্রে বা সম্মিলিতভাবে দোয়া-মুনাজাত করেছেন বলে হাদীস শরীফে স্পষ্ট উল্লেখ আছে। নিম্নে এ সম্পর্কে হাদীস শরীফ ও ফিক্বাহের কিতাবের বর্ণনা সমূহ তুলে ধরা হলো-

[১০৪৬-১০৪৯]

عن ثوبان رضى اله عنه قال قال النبى صلى الله عليه وسلم لايؤم قوما فيخص نفسه بدعوة دونهم فان فعل خانهم. (ترمذى شريف ج 2 ص 47- تحفة الاحوذى، عارضة الاحوذى، عرف الشاذى)

অর্থঃ- “হযরত ছাওবান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, কোন ইমাম ছাহেব মুক্তাদীগণকে বাদ দিয়ে শুধু নিজের জন্য মুনাজাত-দোয়া করবেনা। যদি সে তা করে, তবে সে মুক্তাদীগণের প্রতি খিয়ানতকারী হবে।” (তিরমিযী শরীফ ২য় জিঃ ৪৭ পৃষ্ঠা, তুহফাতুল্ আহওয়াযী, আরিদ্বাতুল্ আহওয়াযী, উরফুশ্ শাযী)        উল্লিখিত হাদীস শরীফ খানা ফরয নামাযের পর সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করার প্রতি ইঙ্গিত দেয়। কেননা, এ হাদীস শরীফে সরাসরি ইমাম ও মুক্তাদীর কথা উল্লেখ রয়েছে।

[১০৫০]

لايجتمع ملاء فيدعو بعضهم ويؤمن بعضهم الا اجابهم. (معارف السنن)

অর্থঃ- “সম্মিলিত মুনাজাতে কিছু লোক মুনাজাত করলো, আর কিছু লোক ‘আমীন’ বললো, আল্লাহ্ পাক অবশ্যই তাদের এ মুনাজাত কবূল করবেন।” (মা’য়ারিফুস্ সুনান)

উল্লিখিত হাদীস শরীফে ফরয, নফল বা কোন সময়ের নির্ধারণ ছাড়াই সম্মিলিত মুনাজাত কবুল হয়ার কথা বলা হয়েছে।

তাছাড়া হযরত আসওয়াদ আমিরী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর বর্ণিত হাদীস শরীফ দ্বারাও (ইজতিমায়ী) সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করা সুন্নত প্রমাণিত হয়। যেমন হাদীস শরীফে উল্লেখ রয়েছে,

[১০৫১]

عن الاسود العامرى رضى الله عنه عن ابيه قال صلي مع رسول الله صلى الله عليه وسلم الفجر فلما سلم انصرف ورفع يديه ودعا. (مصنف ابن ابى شيبة)

অর্থঃ- “হযরত আসওয়াদ আমিরী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি তাঁর পিতা থেকে বর্ণনা করেন। তাঁর পিতা বলেন, আমি হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সাথে ফজর নামায পড়লাম। যখন তিনি সালাম ফিরালেন, ঘুরে বসলেন এবং উভয় হাত মুবারক উঠিয়ে দোয়া-মুনাজাত করলেন।” (মুছান্নাফু ইবনে আবী শাইবাহ) তাশরীহ্ (ব্যাখ্যা)ঃ উক্ত হাদীস শরীফে যে সমস্ত বিষয় রয়েছে, তাহলো হযরত আসওয়াদ আমিরী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর পিতা বলেছেন, صليت.. الفجر” ” অর্থাৎ ‘আমি ফজর নামায পড়েছি।’ এর দ্বারা ফরয নামায ছাবিত হলো।

দ্বিতীয়তঃ انصرف বলা হয়েছে। এটা হতে বুঝা গেল, হাদীস শরীফ বর্ণনাকরী হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সাথে একা ছিলেন না। কেননা, মাসয়ালা হলো ইমামের সাথে মুক্তাদী যদি একজন হয়, তাহলে মুক্তাদী ইমামের সাথে দাঁড়াবে। আর সাথে দাঁড়ালে তো انصرف হওয়ার অর্থাৎ ঘুরে বসার কোন প্রয়োজন নেই। সুতরাং انصرف শব্দ দ্বারা বুঝা গেল, জামায়াতে একাধিক মুক্তাদী ছিল, তাই তিনি মুক্তাদীগণের দিকে মুখ মুবারক ফিরিয়ে বসেছেন।

এক্ষেত্রে মুনাজাত বিরোধীরা বলে থাকে যে, হযরত আসওয়াদ আমিরী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত হাদীস শরীফ দ্বারা সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করা প্রমাণিত হয় না। কারণ, হাদীস শরীফের শব্দগুলো واحد বা এক বচনে ব্যবহৃত হয়েছে। কাজেই এর দ্বারা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সাথে ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণের মুনাজাত করা বুঝায় না। আর ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ সর্বক্ষেত্রে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে অনুসরণ করতেন না, অনুরূপ এখানেও করেননি। যদি অনুসরণ করতেন, তবে তা হাদীস শরীফে উল্লেখ থাকতো।  মুনাজাত বিরোধীদের উক্ত বক্তব্যের জাওয়াব হচ্ছে- হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ অনেক ক্ষেত্রে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর অনুসরণ করেননি একথা সম্পূর্ণ অজ্ঞতাপ্রসূত। কারণ, সর্বক্ষেত্রেই হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর অনুসরণ করেছেন। তবে যেক্ষেত্রে আল্লাহ্ পাক ও তাঁর রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পক্ষ হতে কোন বিষয়ে অনুসরণ না করার নির্দেশ রয়েছে, তা ব্যতীত সকলক্ষেত্রেই অনুসরণ করতেন। তবে নিষেধকৃত বিষয় আমল না করাটাও অনুসরণ-অনুকরণের অন্তর্ভুক্ত।

এ প্রসঙ্গে হাদীস শরীফে বর্ণিত রয়েছে, একদিন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জুতা মুবারকসহ মসজিদে নামায পড়ছিলেন, এমন সময় হযরত জিব্রাঈল আলাইহিস্ সালাম বললেন, “ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ! আপনার জুতা মুবারকে নাপাকী রয়েছে।” তখন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জুতা মুবারক খুলে ফেললেন। সাথে সাথে উপস্থিত সকল ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণও জুতা খুলে ফেললেন। তখন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, “এ হুকুম তোমাদের জন্য নয়, এটা আমার জন্য খাছ।”  এখানে আরো উল্লেখ্য যে, রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে যা করতে দেখতেন, ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণও তাই করতেন। তিনি যা বর্জন করতেন, তাঁরা তাই বর্জন করতেন, কখনো কি ও কেন প্রশ্ন করতেন না। যেমন, “হযরত ইমাম বুখারী রহমতুল্লাহি আলাইহি হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একটি স্বর্ণের আংটি ব্যবহার করতেন, ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণও স্বর্ণের আংটি বানিয়ে ব্যবহার করা শুরু করলেন। কিন্তু যখন স্বর্ণ ব্যবহার পুরুষের জন্য সম্পূূর্ণ হারাম হয়ে যায়, তখন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আংটিটি খুলে ছুঁড়ে ফেলে দিলেন এবং বললেন, “আমি আর কখনো এটা ব্যবহার করব না।” তখন হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ সকলেই তাঁদের আংটিগুলো খুলে ছুঁড়ে ফেলে দিলেন।” এটা ছিল হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণের হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে অনুসরণের নমুনা।       এরকম হাজারো লাখো ঘটনার দ্বারা প্রমাণ করা সম্ভব যে, হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ সব ব্যাপারে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে অনুসরণ-অনুকরণ করেছেন। কেবলমাত্র যেসব বিষয়ে নিষেধ করা হয়েছে, ঐ নিষেধ মানাও অনুসরণ -অনুকরণের অন্তর্ভুক্ত। কাজেই মুনাজাত বিরোধীরা কি এরকম একটি ঘটানাও দেখাতে পারবে, যেখানে নিষেধাজ্ঞা ব্যতীত হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর অনুসরণ-অনুকরণ করেননি বা মুনাজাতে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সাথে হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণকে হাত উঠাতে নিষেধ করেছেন?  হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণকে হুকুম না দেয়া সত্ত্বেও হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর অনুসরণের লক্ষ্যে সকলেই জুতা ও আংটি মুবারক খুলে ফেললেন। এটাই যদি হতে পারে, তবে যে ফরয নামাযের পর দোয়া কবূল হওয়ার সুসংবাদ দেয়া হয়েছে এবং সম্মিলিতভাবে দোয়া কবুল হয় বলে ছহীহ্ ক্বওলী হাদীস শরীফ রয়েছে এবং যেখানে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্বয়ং হাত মুবারক উঠালেন, সেখানে উপস্থিত হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ হাত উঠাননি এরূপ ধারণা তারাই করতে পারে যাদের, ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ  হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে যে কতটুকু অনুসরণ-অনুকরণ করতেন, এসম্পর্কে মোটেই ইল্ম নেই এবং হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণের মান-মর্যাদা সম্পর্কে নেহায়েত অজ্ঞ ও মূর্খ। কাজেই হাদীস শরীফের ইবারত দ্বারা হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণের হাত না উঠানো যতটুকু প্রমাণিত হয়, তার চেয়ে বেশী প্রমাণিত হয় হাত উঠানোর। কারণ হাদীস শরীফে স্পষ্ট বলা  হয়নি যে, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাত মুবারক উঠালেন কিন্তু আমরা উঠাইনি। এখন মুনাজাত বিরোধীদের প্রতি আমাদের জিজ্ঞাসা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সাথে হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ হাত উঠাননি, এরূপ স্পষ্ট বর্ণনা আপনারা একটিও দেখাতে পারবেন কি? কখনো নয়। তবে কিসের ভিত্তিতে বলেন, হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ হাত উঠাননি?

অতএব, উক্ত হাদীস শরীফ দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমকে নিয়ে ফরয নামাযের পর সম্মিলিত বা ইজ্তিমায়ীভাবে মুনাজাত করেছেন।

[১০৫২-১০৫৪]

اما الدعاء اجتماعا فهو ايضا ثابث بحديث رواه الحاكم وقال على شرط مسلم مرفوعا قال النبى صلى الله عليه وسلم لايجتمع ملاء فيدعو بعضهم ويأمن بعضهم الا استجاب الله دعائهم. (المريد الى المراد وكذا فى سباحة الفكر، وكتاب الاذكار، مستدرك حاكم)

অর্থঃ- “মূলতঃ সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করাও হাদীস শরীফ দ্বারা প্রমাণিত রয়েছে। যেটা হাকিম বর্ণনা করেছেন এবং তিনি বলেছেন, এ হাদীস শরীফ খানা ইমাম মুসলিম রহমতুল্লাহি আলাইহি -এর শর্তানুসারে মারফু হিসেবে সাব্যস্ত। (হাদীস শরীফ খানা হলো) হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, সম্মিলিত মুনাজাতে কিছু লোক মুনাজাত করলো, আর কিছু লোক আমীন বললো, আল্লাহ্ পাক অবশ্যই তাদের এ মুনাজাত কবুল করবেন।” (আল্ মুরীদ ইলাল মুরাদ, অনুরূপ সাবাহাতুল্ ফিক্র, ও কিতাবুল আযকার এ আছে, মুস্তাদ্রিকে হাকীম)

[১০৫৬]

كان فى زمن النبى صلى الله عليه وسلم رجل يقال له ابو دجانة فاذا صلى الصبح خرج من المسجد سريعا ولم يحضر فى الدعاء فساله النبى صلى الله عليه وسلم من ذالك فقال ان جارى ه نخلة يسقط رطبها فى دارى ليلامن الهواء فاسبق اولادى قبل ان يستيقظوا فاطرحه فى داره فقال النبى صلى الله عليه وسلم لصاحبها يعنى نخلتك بعشر نخلات فى الجنة عروقها من ذهب احمر وزبرجد اخضر واغصانها من اللؤلؤ الابيض فقال لا ابيع حاصر الغائب فقال ابو بكرن صدين رضى الله عنه قد اشتريتها منه بعشر نخلات فى مكا كذا…………. الخ. (نزهة المجالس لعبد الحق محدث دهلوى رحمة الله عليه)

অর্থঃ- “সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্ নাবিয়্যীন হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সময় আবূ দাজানা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু নামক এক (ছাহাবী) ছিলেন। তিনি একদিন ফযরের নামায (জামায়াতে) আদায় করে, মুনাজাতে শরীক না হয়ে দ্রুতবেগে মসজিদ হতে বের হয়ে গেলেন। পরবর্তীতে হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আবূ দাজানাকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা  করেন যে, (তুমি কেন মুনাজাতে হাযির না থেকে তাড়াতাড়ি চলে গেলে?) হযরত আবূ দাজানা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উত্তর দিলেন, আমার প্রতিবেশীর একটি খেজুর গাছ রয়েছে, রাত্রি বেলায় ঝড়ে উক্ত গাছের খেজুর আমার সীমানায় পড়ে। আমার সন্তানগণ ঘুম থেকে উঠার পূর্বেই আমি সেখানে পৌঁছে যাই এবং উক্ত খেজুরগুলো কুড়িয়ে তার সীমানায় পৌঁছে দেই। (যেন আমার সন্তানগণ উক্ত খেজুর খেয়ে পরের হক্ব নষ্ট না করে)           অতঃপর হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আবূ দাজানার উত্তর শুনে, উক্ত খেজুর গাছের মালিককে বললেন, তোমার খেজুর গাছটি বেহেশ্তী লাল্, সোনালী ও সবুজ, হলুদ শিকড় ও সাদা মুতি-জহরতের ডালা বিশিষ্ট দশটি খেজুর গাছের বিনিময়ে আমার নিকট বিক্রি করে দাও। সে ব্যক্তি বললো, আমার বিদ্যমান গাছটিকে অদৃশ্য গাছের বিনিময়ে বিক্রি করব না। তখন হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক রদ্বিয়াল্লাহ তায়ালা আনহু বললেন, তাহলে আমি আমার অমুক স্থানে দশটি খেজুর গাছের বিনিময়ে, এই খেজুর গাছটি (আবূ দাজানার জন্যে) কিনে নিলাম ……।” (সুবহানাল্লাহ) (নুযহাতুল্ মাজালিস্ লি আবদিল্ হক্ব মুহাদ্দিস দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি)

উক্ত ঘটনার মধ্যে বিশেষভাবে লক্ষ্যণীয় বিষয় হলো- বলা হয়েছে ولم يحضر فى الدعاء অর্থাৎ হযরত আবূ দাজানা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু মুনাজাতে উপস্থিত না হয়ে দ্রুত বেগে চলে গেলেন। একথা বলা হয়নি যে,  ولم يدع অর্থাৎ মুনাজাত করেননি।     কাজেই উক্ত ঘটনা দ্বারাও ফরয নামাযের পর সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করা সুন্নত  প্রমাণিত হলো।

[১০৫৭]

بعد الفراغ عن اصلوة يدعو الامام لنفسه وللمسلمين رافعى ايديهم. (امداد الفتاوى)

অর্থঃ- “নামায শেষ করে ইমাম ছাহেব নিজের জন্যে এবং সকল মুসলমানের জন্যে (ইমাম ও মুক্তাদী) সকলে হাত উঠিয়ে মুনাজাত করবে।” (ইমদাদুল ফাতাওয়া)

উক্ত ইবারত দ্বারাও সম্মিলিতভাবে মুনাজাত জায়িয প্রমাণিত হয়। কারণ, رافعى ايديهم এর মধ্যে ضمير (সর্বনাম) جمع বা বহুবচন আনা হয়েছে। অর্থাৎ সকলেই হাত উঠিয়ে মুনাজাত করবে।

[১০৫৮]

دعا وتسبیحات امام ومقتدی سب کیلئے بعد نماز مستحب ھے اگر سب ھی اس مین مشغول ھو نگے تویہ ایک اقتران اتفاقی ھوگا. نہ کے اجتماعی مستقل اسلئے ان افعال کوفی نفسھا مستحب کھا جائیگا اور اجتماعی کونہ ضروری سمجھا جائے اور نہ بدعت غیر مشروع کھا جائے اسلئے عامۃسلف سے اس اجتما ع پر نکیر منقول نھین. اورعلامۃ شاطبی ںے کتاب الاعتصام مین جواسکو بدعت فرمایاھے. اسکا حاصل بھی احقرنے یھی سمجھا ھے کہ اجتماع للدعاء کومقصود اصلی مثل دیگر عبادات کے  سمجھنا بدعت ھے. (امداد المفتین  ج 2 ص 742)

অর্থঃ- “এ সকল কাজ অর্থাৎ মুনাজাত, তাসবীহ-তাহলীল ইত্যাদি নামাযের পর ইমাম ও মুক্তাদী সকলের জন্যই মুস্তাহাব। যদি সকলেই তাতে মশগুল হয়ে যায়, তবে এটা হবে হঠাৎ একত্র হওয়া, পৃথক একত্র হওয়া নয়। এজন্য এগুলোকে মুস্তাহাব বলা হয় এবং সম্মিলিত মুনাজাতকে (ফরয, ওয়াজিবের ন্যায়) জরুরী মনে করা যাবেনা। আর বিদ্য়াত ও শরীয়ত পরিপন্থীও বলা যাবেনা। এ জন্যেই সলফে সালিহীনগণ হতে ফরয নামাযের পর সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করার বিপক্ষে কোন বক্তব্য বর্ণিত নেই। আর আল্লামা শাতবী ছাহেব তার ‘কিতাবুল্ ই’তিছামে’ এটাকে বিদ্য়াত বলেছেন। তার মূল অর্থ আমি নগণ্য এটাই বুঝেছি যে, সম্মিলিত মুনাজাতকে ‘আছল মাকছূদ’ অর্থাৎ অন্যান্য ইবাদতের ন্যায় মনে করা বিদয়াত।” (অতএব, মুস্তাহাব মনে করে সম্মিলিত মুনাজাত করলে সেটা কখনো বিদয়াত হতে পারে না, যা অত্র ইবারত দ্বারা স্পষ্ট প্রমাণিত হলো) (ইমদাদুল্ মুফতীন ২য় জিঃ ৭৪২ পৃষ্ঠা)

[১০৫৯]

بعد نماز ختم کر چکنے کے دونو ھاتہ سینہ تک اطھا کرچھیلائے اور اللہ تعالی سے اپنے دعا مانگے اور امام ھو تو تمام مقتدیونہ کے اڈے بھی اور بعد دعا مانگ چکنے کے دونون ھاتہ منہ پر پھیرے مقعتدی خواہ اپنی دعا مانگے یا امام کی دعا سنائی دے تو خواہ سب امین امین کھتے رھین.  (اشر فیہ بھشتی زیور ج 11 ص 32)

অর্থঃ- “নামায শেষ করার পর উভয়হাত সিনা পর্যন্ত উঠাবে এবং আল্লাহ্ পাক-এর নিকট নিজের জন্য মুনাজাত করবে। আর ইমাম হলে সকলের জন্য মুনাজাত করবে, মুনাজাত শেষে উভয়হাত দ্বারা মুখ মাসেহ করবে। মুক্তাদীগণ নিজ নিজ দোয়া চাবে অথবা ইমাম ছাহেবের মুনাজাতের আওয়াজ শুনা গেলে তার সাথে সকলে আমীন আমীন বলবে।” (আশ্রাফী বেহেশ্তী জিওর ১১তম জিঃ ৩২ পৃষ্ঠা)

[১০৬০-১০৬২]

ثم يدعون لانفسهم وللمسلمين بالادعية الماثورة الجامعة رافعى ايديهم. (مراقى الفلاح ص 184، وكذا فى مجمع الزوائد ص 201، نور الايضاح ص 60)

অর্থঃ- “অতঃপর (ফরয নামায শেষ করে) সকলে নিজের জন্য ও সকল মুসলমানের জন্য হাত উঠিয়ে দোয়ায়ে মাছূরা পড়ে মুনাজাত করবে।” (মারাকিউল ফালাহ্ ১৮৪-১৮৫ পৃষ্ঠা, মাজমাউয্ যাওয়াইদ ২০১ পৃষ্ঠা, নূরুল ঈযাহ ৬০ পৃষ্ঠা) [১০৬৩]

مسنون یہ ھے کہ جس طرح فرض نماز جماعت  سے پر ھی ھے دعا بھی جما عت کے ساتہ کی جائے یعنی امام اور مقتدی سب مل کر دعا مانگین…. ان حضرت صلی اللہ علیہ وسلم، صحابہ کرام اور سلف صالحین رضی اللہ عنھم کا طریقہ یہ تھا کہ فرض نماز جما عت سے ادافرماکر دعا  بھی جماعت کے ساتہ (امام اور مقتدی سب ملکر) مانگنا گرتے تھے. (فتل وئے رحیمیہ ج 1 ص 210 – 216)

অর্থঃ- “নামায যেভাবে জামায়াতের (সম্মিলিতভাবে) সাথে আদায় করা হয়, মুনাজাতও তদ্রুপ সম্মিলিতভাবে করা সুন্নত। অর্থাৎ ইমাম ও মুক্তাদী সকলে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করবে ………। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ ও সলফে সালিহীনগণের সুন্নত ত্বরীকা এটাই ছিল যে, উনারা ফরয নামায জামায়াতে আদায় করার পর সম্মিলিতভাবে (ইমাম ও মুক্তাদী সকলেই) মুনাজাত করতেন।” (ফতওয়ায়ে রহীমিয়া ১ম জিঃ ২১৫-২১৬ পৃষ্ঠা)

[১০৬৪]

فرض نما زون کے بعد امام اور مقتدی کے ملکر  دعا مانگنے کی بری فضیلت ھے اور اسکا مسنون  اور افضل طریقہ یہ ھے کہ اما م اور مقتدی دونون اھستہ اھستہ دعا مانگین. (فتاوئے رحیمیہ ج 4 ص 226)

অর্থঃ- “ফরয নামাযের পর ইমাম ও মুক্তাদী সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করার মধ্যে বহু ফযীলত রয়েছে। আর এটার সুন্নত পদ্ধতি হলো, ইমাম ও মুক্তাদী অল্প আওয়াজে মুনাজাত করবে।” (ফতওয়ায়ে রহীমিয়া ৪র্থ জিঃ ২২৬ পৃষ্ঠা)

[১০৬৫-১০৬৬]

شریعت کا حکم یہ ھے کہ جوعبادت اجتماعی طورپر ادا کی گئی ھے اس کے بعد تو دعاء اجتماعی طور پرکی جائے. (اختلاف امت اور صراط مستقیم ص  120. وکذا فی فتاوئے محمودیہ ج 2 ص 362)

অর্থঃ- “শরীয়তের নির্দেশ হলো, যে সকল ইবাদত সম্মিলিতভাবে করা হয়, এর পর মুনাজাতও সম্মিলিতভাবে করবে।” (ইখতিলাফে উম্মত আওর ছিরাতে মুস্তাকীম ১২০ পৃষ্ঠা, অনুরূপ ফতওয়ায়ে মাহ্মূদিয়ার ২য় জিঃ ৩৬২ পৃষ্ঠা)

[১০৬৭-১০৬৮]

انفرادا دعا مانگنا امام اور مقتدی ھر ایک کیلئےسنتون اور نفلون کے بعد بھی جائز ھے. اور  اجتماعی بھی بشرطیکہ التزام واعتقاد سنیت نہھو اور اجتماعی دعا کا افضل طریقہ یہ ھے کہ بعد فر ائض اور قبل سنن ونوافل ھو. (کفایۃ المفتی ج 3 ص 273 – وکذا فی النفا ئس المر غویۃ)

অর্থঃ- “সুন্নত এবং নফল নামাযের পরও একাকী বা সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করা সকলের জন্য জায়িয। তবে শর্ত হলো, জরুরী মনে করা ও খাছ সুন্নতে মুয়াক্কাদা মনে করা যাবে না। আর সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করার উত্তম পদ্ধতি হলো, ফরয নামাযের পর সুন্নত ও নফল নামাযের পূর্বে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করা।” (কিফায়াতুল্ মুফতী ৩য় জিঃ ২৭৩ পৃষ্ঠা, অনুরূপ ‘নাফাইসুল মারগুবাহ্’ কিতাবে আছে)

[১০৬৯]

اما جس وقت نماز سے فارغ ھو مع مقتدیون کے سب اکھطی دعا مانگین. فتا وئے دیوبند ج 4 ص 130)

অর্থঃ- “ইমাম ছাহেব যখন নামায শেষ করবেন, তখন মুক্তাদীগণকে নিয়ে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করবেন।” (ফতওয়ায়ে দেওবন্দ ৪র্থ জিঃ ১৩০ পৃষ্ঠা)

[১০৭০-১০৭২]

اذا دعا بالدعاء الماثو رة جهرا وجهر معه القوم ايضا لتعلموا الدعاء لاباس به. (فتاو ….. بزازيه وكذا فى السعايه، نفائس المرغوية)

অর্থঃ- “দোয়া শিক্ষা দেয়ার উদ্দেশ্যে ইমাম ছাহেব ও মুক্তাদীগণ আওয়ায করে মুনাজাত করাতে কোন ক্ষতি নেই।” (ফতওয়ায়ে বায্যাযিয়া, অনুরূপ সায়াইয়াহ, নাফাইসুল্ মারগুবাহ, কিতাবেও আছে) [১০৭৩]

والظاهر انهم لايكر هون الجهر بالدعاء لقصد التعليم والتامين. (امداد الفتاوى ج 1 ص 806)

অর্থঃ- “ইমাম ছাহেবের দোয়া শুনে মুক্তাদীগণ দোয়া শিক্ষা লাভ করা ও আমীন বলার উদ্দেশ্যে আওয়াজ করে মুনাজাত করাকে আলিমগণ মাকরূহ বলেন না। (বরং জায়িয।” (ইমদাদুল ফতওয়া ১ম জিঃ ৮০৬ পৃষ্ঠা)

[১০৭৪-১০৭৫]

اھستہ اور پست اواز سے دعا مانگنا افضل ھے مصلی دعا یاد کرلین یادعا یہء جملۃ ختم ھونے پر امین کھہ سکے اس غرض سے ذرا اواز سےدعا مانگی جائے تو کوئی حرج نھین وہ بھی اس  شرط سے کہ نماز یون کا حرج نہ ھو. کذا  فی الروح المعانی ج 8 ض 162، (فتاوئے رحیمیہ ج ا  ص 170)

অর্থঃ- “অল্প আওয়াজে মুনাজাত করাই উত্তম। তবে মুছল্লীগণের দোয়া মুখস্ত করা বা দোয়া শেষে যেন আমীন বলতে পারে, এ উদ্দেশ্যে মুনাজাত কিছুটা উচ্চ আওয়াজে করাতে কোন প্রকার ক্ষতি নাই। তবে শর্ত হলো, মুছল্লী বা নামাযীগণের যেন কোন ক্ষতি না হয়। অনুরূপ রুহুল্ মায়ানীতে উল্লেখ আছে।” (ফতওয়ায়ে রহীমিয়া ১ম জিঃ ১৭০ পৃষ্ঠা, রুহুল্ মায়ানী)

[১০৭৬]

بعد فرض نماز کے دعا جھر سے کرنا جائز ھے. اگر کویء مانع عارض نہ ھو. (فتاوئے رشیدیہ ص 218)

অর্থঃ- “ফরয নামাযের পর আওয়াজ করে মুনাজাত করা জায়িয। যদি কোন প্রকার বাধা-বিঘœ সৃষ্টি না হয়।” (ফতওয়ায়ে রশীদিয়া ২১৮ পৃষ্ঠা)

[১০৭৭]

دعا اھستہ مانگنا افضلھے. اگر دعا کی تعلیم مقصود ھو تو بلند اواز سے بھی مضا ئقہ نھین. (فتاوئے محمودیہ ج 2 ص 173)

অর্থঃ- “মুনাজাত অল্প আওয়াজে করাই উত্তম। যদি দোয়া শিক্ষা দেয়া উদ্দেশ্য হয়, তবে উচ্চ আওয়াজে মুনাজাত করাতেও কোন প্রকার ক্ষতি নেই।” (ফতওয়ায়ে মাহমূদিয়া ২য় জিঃ ১৭৩ পৃষ্ঠা)         উল্লিখিত আলোচনা দ্বারা অকাট্যভাবেই প্রমাণিত হয় যে, দোয়া বা মুনাজাতে উভয় হাত উঠানো যেরূপ সুন্নত ততদ্রƒপ ইজ্তিমায়ী বা সম্মিলিতভাবে দোয়া-মুনাজাত করাও সুন্নত, জায়িয তো অবশ্যই। এটাকে বিদয়াত ও নাজায়িয বলা গোমরাহী ও কুফরী বৈ কিছুই নয়।

কুরআন-সুন্নাহর আলোকে মাইয়্যিত  তথা মৃত ব্যক্তির জন্য ইছালে ছওয়াব  বা দোয়া করার বিধান

কুরআন-সুন্নাহর আলোকে অকাট্যভাবে প্রমাণিত যে, মাইয়্যিতের জন্য দোয়া-ইস্তিগফার করা বা ইছালে ছওয়াব করা জায়িয, আদব ও মুস্তাহাব সুন্নত। অর্থাৎ ইন্তিকালের পর জানাযার পূর্বেও জানাযার মধ্যে, জানাযার পরে, দাফনের পূর্বে, দাফনের পরে সর্বাবস্থায়ই মৃত ব্যক্তির রূহের মাগফিরাতের জন্য কুরআন খতম, তাসবীহ-তাহলীল, দান-ছদকা, ইস্তিগফার- দোয়া ইত্যাদি করা জায়িয ও মুস্তাহাব সুন্নত। কেননা, স্বয়ং আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজেই মৃত ব্যক্তির জন্যে দোয়া ইস্তিগফার তথা ঈছালে ছাওয়াব করেছেন এবং উম্মতদেরকেও মৃত ব্যক্তির জন্যে দোয়া-ইস্তিগফার বা ঈছালে ছাওয়াব করার নির্দেশ দিয়েছেন। এ সম্পর্কিত দলীল-আদিল্লাহ সমূহ নিম্নে উল্লেখ করা হলো- ঈছালে ছওয়াব করা মুস্তাহাব, সুন্নত। এটা আল্লাহ্ পাক-এর বাণী থেকে প্রমাণিত হয়। যেমন, আল্লাহ্ পাক রব্বুল আলামীন বলেন,

[১০৭৮]

والذين جاءو من بعدهم يقولون ربنا اغفر لنا ولا خواننا الذين سبعونا بالايمان ولا تجعل فى قلوبنا غلا للذين امنوا ربنا انك رءوف رحيم.

অর্থঃ- “আর এই সম্পদ তাদের জন্য, যারা তাদের পরে এসেছে। তারা বলেন, আমাদের রব! আমাদেরকে এবং আমাদের (পূর্বে) ঈমানে অগ্রগামী ভাইগণকে ক্ষমা করুন। আর ঈমানদারগণের বিরুদ্ধে আমাদের অন্তরে কোন প্রকার বিদ্বেষ রাখবেন না। হে আমাদের রব! আপনি অসীম দয়ালু, পরম করুণাময়।” (সূরা হাশ্র/১০)

[১০৭৯]

استغفر لهم او لا تستغفر لهم ان تستغفر لهم سبعين مرة فلن يغفر الله لهم ذالك بانهم كفروا با لله ورسوله والله لايهدى القوم الفسقين.

অর্থঃ- “(হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আপনি তাদের (মুনাফিকদের) জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করুন আর না করুন, যদি আপনি তাদের জন্য সত্তর বারও ক্ষমা প্রার্থনা করেন, তবুও আল্লাহ্ পাক তাদেরকে ক্ষমা করবেন না। তা এজন্য যে, তারা আল্লাহ্ পাককে এবং তাঁর রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে অস্বীকার করেছে। বস্তুতঃ আল্লাহ্ পাক নাফরমানদেরকে পথ দেখান না।” (সূরা তাওবা/৮০)

অত্র আয়াতে কারীমায় জীবিত অথবা মৃত মুনাফিক, মুশরিক ও কাফিরদের জন্য দোয়া করতে কঠোরভাবে নিষেধা করা হয়েছে। এটা থেকে বুঝা যায়, মুসলমান মু’মিন কেউ ইন্তিকাল করলে তাঁর জন্য দোয়া করার ও ঈসালে ছওয়াব করার নির্দেশ এই আয়াতে বিদ্যমান।       অত্র আয়াতদ্বয় এবং অন্যান্য আয়াতের ব্যাখ্যায় হযরত মুফাস্সিরীন রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণ জীবিত ও মৃত ব্যক্তিগণের জন্য ঈছালে ছওয়াব করা জায়িয প্রমাণ করেছেন।

নিম্ন বর্ণিত হাদীস শরীফেও হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মৃত ব্যক্তির উদ্দেশ্যে দোয়া-ইস্তিগফার তথা ইছালে ছওয়াব করার নির্দেশ করেছেন এবং নিজেও তা করেছেন। যেমন, হাদীস শরীফের কিতাবসমূহে উল্লেখ আছে,

[১০৮০-১০৮৪]

عن ام سلمة رضى الله عنها قالت قال رسول الله صلى الله عليه وسلم اذا حضرتم المريض او اميت فقولوا خيرا فان الملائكة يؤمنون على ماتقولون قالت فلما مات ابو سلمت اتيت النبى صلى الله عليه وسلم فقلت يارسول الله صلى الله عليه وسلم ان ابا سلمة قد مات قال فقولى اللهم اغفرلى وله واعقبنى منه عقبى حسنة قالت فقلت فاعقبنى الله منه وخيرلى منه محمدا صلى اله عليه وسلم. (مسلم شريف ج 1، مسلم بشرح النووى، فتح اللمهم، المفهم، مصنف عبد الرزاق ج 3 ص 393- 439- 440)

অর্থঃ- “হযরত উম্মে সালমা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমরা যখন কোন রোগী অথবা মৃত ব্যক্তির নিকট উপস্থিত হও, তখন তার সম্পর্কে ভাল বল। কেননা, ফেরেশ্তা আলাইহিমুস্ সালামগণ তোমাদের কথার উপর আমীন বলে থাকেন। হযরত উম্মে সালমা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা বলেন, যখন হযরত আবূ সালমা (তাঁর স্বামী)-এর ইন্তিকাল হলো, তখন আমি হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!-এর নিকট এসে বললাম, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত আবূ সালমা (আমার স্বামী) ইন্তিকাল বরণ করেছেন। তিনি (হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তুমি এ দোয়া পড়-

اللهم اغفرلى وله واعقبنى منه عقبى حسنه.

অর্থঃ- “আয় আল্লাহ্ পাক! আমাকে এবং তাঁকে ক্ষমা করে দিন এবং আমাকে তার পর উত্তম প্রতিদান দিন।” তিনি বলেন, আমি এই দোয়া পাঠ করলাম। আল্লাহ্ পাক আমাকে তাঁর চেয়ে উত্তম হযরত মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে দান করলেন।” (মুসলিম শরীফ ১ম জিঃ, মুসলিম বিশ্রহিন্ নববী, ফতহুল্ মুলহিম, আল্ মুফহিম, মুছান্নিফে আব্দুর রায্যাক ৩য় জিঃ ৩৯৩, ৪৩৯, ৪৪০ পৃষ্ঠা)

[১০৮৫-১০৮৭]

عن عبد الله بن ابى بكر قال: لما التقى الناس بمؤنه، جلس رسول الله صلى الله عليه وسلم على المنبر، وكشف له ما بينه وبين الشام، فهو ينظر الى معركتهم، فقال عليه السلام: اخذ الراية زيد بن حارثة، فمضى حتى استشهد، وصلى عليه ودعاله، وقال استغفروا له، وقد دخل الجنة، وهو يسعى، ثم اخذ الراية جعفر بن ابى طالب، فمضى حتى استشهد، فصلى عليه رسول الله صلى الله عليه وسلم ودعاله، وقال: استغفرو اله، وقد دخل الجنة، فهو يطير فيها بجنا حين حيث شاء. (نصب الراية لاحاديث الهداية ج 2 ص 274- هداية مع الدراية فتح القدير)

অর্থঃ- “হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে আবূ বকর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ ‘মাঊনা’ নামক স্থানে মিলিত হলেন, হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মিম্বরে উঠে বসলেন। তখন তার কাছে শাম দেশের (মুতার যুদ্ধের) অবস্থা স্পষ্ট প্রকাশিত হচ্ছিল। তিনি হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণের যুদ্ধের অবস্থা দেখতে ছিলেন। অতঃপর হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, (যুদ্ধে) হযরত যায়েদ ইবনে হারিস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু পতাকা ধরলেন, অতঃপর তিনি শহীদ হয়ে গেলেন। তাই তিনি তাঁর উপর জানাযা নামায পড়লেন এবং তাঁর জন্য দোয়া করলেন এবং বললেন, তোমরাও তাঁর জন্য ইস্তিগফার কর। তিনি জান্নাতে চলে গেছেন, আর তা খুবই দ্রুত। হযরত জা’ফর ইবনে আবূ তালিব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু পতাকা ধরলেন অতঃপর তিনিও শহীদ হয়ে গেলেন। তাই, হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর উপর জানাযা নামায পড়লেন এবং তাঁর জন্য দোয়া করলেন। এবং বললেন, তোমরাও তাঁর জন্য ইস্তিগফারের দোয়া কর। তিনি তাড়াতাড়ি জান্নাতে চলে গেছেন এবং সেখানে দুটি ডানা নিয়ে যেখানে ইচ্ছা সেখানে উড়ে বেড়াবেন।” (নাছর্বু রাইয়াহ্ লি আহাদীসিল হিদায়াহ্ ২য় জিঃ ২৮৪ পৃষ্ঠা, হিদায়াহ মায়াদ দিরায়াহ, ফতহুল ক্বদীর)

উল্লিখিত আয়াত শরীফ এবং হাদীস শরীফের আলোচনার মাধ্যমে এটাই প্রমাণিত হয় যে, জীবিত ব্যক্তির জন্য এবং মৃত ব্যক্তির জন্য ঈছালে ছওয়াব করা জায়িয। শুধু জায়িযই নয়, এটা সুন্নতে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর অন্তর্ভুক্ত। চাই মৃত ব্যক্তির জন্য নামাযের আগে বা পরে অথবা দাফনের পরেই ঈছালে ছওয়াব করা হোকনা কেন। সর্বাবস্থায়ই জায়িয হবে।      হাদীস শরীফে উল্লেখ আছে,

[১০৮৮-১০৯৯]

عن ابى هريرة رضى الله عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم اذا مات الانسان انقطع عنه عمله الا من ثلثة الامن صدقة جارية او علم ينتفع به او ولد صالح يدعوله. (مشكوة ص 32، مرقاة اشعة اللمعات، اللمعات، شرح الطيبى، التعليق الصبيح، مظاهرحق، مرأة المناجيح، مسلم شريف، مسلم يشرح النووى، فتح اللمهم، المفهم)

অর্থঃ- “হযরত আবূ হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন। যখন মানুষ মরে যায়, তখন তার আমল বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু তিনটি আমল জারি থাকে যথাঃ (১) ছদকায়ে জারিয়া, (২) ইল্ম, যার দ্বারা উপকার সাধিত হয় এবং (৩) সুসন্তান, যে তার জন্য দোয়া করে।” (মিশকাত শরীফ ৩২ পৃষ্ঠা, মিরক্বাত, আশয়াতুল্ লুময়াত, লুময়াত, শরহুত্ ত্বীবী, আত্ তা’লীকুছ ছবীহ, মুযাহিরে হক্ব, মিরয়াতুল মানাজীহ, মুসলিম শরীফ, মুসলিম বিশরহিন নববী, ফতহুল্ মুলহিম, আল্ মুফহিম)         অত্র হাদীস শরীফ দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, মৃত ব্যক্তির জন্য ছদকা করা হলে তা তার কাছে ছওয়াব হিসাবে পৌঁছে। অথবা, ইল্মের সিলসিলা রেখে গেলে তাও তার জন্য ছওয়াব লাভ করার কারণ। আর এমন সন্তান রেখে যাওয়া যে তার জন্য দোয়া বা ঈছালে ছওয়াব করে।      সুতরাং এ হাদীস শরীফে দোয়া বা ঈছালে ছওয়াব করার বৈধতা প্রমাণিত হয়।

তাই ফিক্বাহের কিতাব সমূহেও মাইয়্যিতের জন্য ঈসালে ছওয়াব তথা দোয়া-ইস্তিগফা  করা জায়িয ও মুস্তাহাব বলা হয়েছে।

[১১০০]

دعاء الاحياء للاموات وصدقتهم عنهم نفع لهم- (عقائد نسفى)

অর্থঃ- “মৃতের উদ্দেশ্যে জীবিত ব্যক্তিগণের দোয়া তাদের জন্য ছদকা স্বরূপ। যাতে মৃতদের উপকার হবে।” (আক্বাইদে নসফী)

[১১০১]

صدقہ ودعائے احیاء برائے موتی بمنزلہ ھدایای زند گان است برائے مردگان پس اگر کسی بر ائے میت صد قہ دھد یادر حق او دعا کند حق تعالی عوض ان طبق از نور سوئے ان میت فر ستا دو او از ان  خوش شود ودر حق متصدق دعا کند. (زاد الاخرۃ)

অর্থঃ- “মৃত লোকের জন্য দোয়া খয়রাত বখশিশ করলে, তা জীবিত ব্যক্তিদের পক্ষ থেকে হাদিয়া ও তোহফা প্রেরণের তুল্য হবে। যদি কোন লোক মৃতের রূহের উদ্দেশ্যে খয়রাত অর্পন করে, তবে আল্লাহ্ পাক এর বিনিময়ে মৃত ব্যক্তির কবরে নূরের খাঞ্চা পাঠান। মৃত ব্যক্তি নূরের খাঞ্চা দেখে সন্তুষ্ট-খুশী হয়ে প্রেরক ব্যক্তির জন্য দোয়া করতে থাকে।” (যাদুল আখিরাত)

[১১০২]

اگر بنیت اصابت ثواب باموات قران خوانند وصدقہ دھند ودعا نما یند ثواب ان عمل  چنانچہ برائے میت میر سد برائے عمل کنند  گان ھم باقی میمانند ازاجر ایشان چیزے  نقصان نمی پذیرد. زاد الا خرۃ)

অর্থঃ- “যদি মৃত ব্যক্তির উদ্দেশ্যে ছওয়াব পাঠানোর নিয়তে কুরআন শরীফ পাঠ করে, ছদকা বা দোয়া করে, তবে এর ছওয়াব যেরূপ মৃত ব্যক্তির কাছে পৌঁছবে তদ্রƒপ দানকারীরও ছওয়াব লাভ হবে। এতে কোন অংশে ছওয়াব কম হবেনা।” (যাদুল আখিরাত)

[১১০৩]

باجما ع اھل سنت وجماعت ثابت ومتحقق است کہ صدقہ ودعائے زندگان باعث تخفیف ذنوب ودفع عذاب وموجب رفع درجہ وثواب است برائے مردگان (زاد الاخرۃ)

অর্থঃ- “আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের মুহাক্কিক ও মুদাক্কিক আলিমগণের মতে এটা প্রমাণিত ও স্থিরীকৃত হয়েছে যে, জীবিত লোকদের দান-খয়রাত ও দোয়া-দরূদ, গুণাহ্গার লোকদের গুণাহ্কে হালকা করে এবং কবরের আযাব বন্ধ করে। কিন্তু পূণ্যবান লোকদের সম্মান-মর্যাদা আরো অধিক পরিমাণে বৃদ্ধি করে।” (যাদুল আখিরাত)

[১১০৪-১১০৫]

يصح ان يجعل ثواب عبادته النافة لغيره صوما او صلوة او قراة القر ان او صدقة او الاذكار وغيره من نواع البر هكذا المضمون فى زاد ااخرة. (منحة الخالق ج 3، زاد الاخرة)

অর্থঃ- “নফল নামায, রোযা, কুরআন শরীফ তিলাওয়াত, যিকির-আযকার, দান-খয়রাত প্রভৃতির ছওয়াব মৃতের রূহের উদ্দেশ্যে দান করা জায়িয।” (মিনহাতুল্ খালিক ৩য় জিঃ, যাদুল আখিরাত) [১১০৬]

الاصل فيه ان الانسان له ان يجعل ثواب عمله لغيره صلوة او صوما او صدقة او قراة القران او ذكرا او طوفا او حجا اوعمرة او غير ذالك عند اصحابنا. (البحر الرائق شرح كنز الدقائق ج3)

অর্থঃ- “মূল কথা হলো, কোন ব্যক্তি তার নিজের নামায, রোযা, দান, তিলাওয়াতে কুরআন, যিকির-আযকার, তাওয়াফ, হজ্ব ও ওমরা ইত্যাদির ছওয়াব অন্যকে দান করলে, তা আমাদের আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াত সম্প্রদায়ের মতে জায়িয আছে।” (আল্  বাহরুর রাইক্ব শরহে কানযুদ্ দাক্বাইক্ব ৩য় জিঃ)

[১১০৭-১১০৯]

فان من صام وصلى وجعل ثوابه غير من الاموات والاحياء جاز ويصل ثوابها اليهم عند اهل السنة والجماعة كذا فى البدائع بهذا علم انه فرق بين ان يكون المجعول له ميتا اوحيا والظاهر انه لافرق بين ان ينوىبه عند الفعل للغير او يفعله لنفسه ثم بعد ذالك يجعل ثوابه لغيره لا طلاق كلامه هكذا فى الشامى والعا لمكيرى. البحرالرائق، البدائع الصنائع، شامى، عالمكيرى)

অর্থঃ- “যদি কোন ব্যক্তি নামায পড়ে ও রোযা রেখে তা কোন মৃত বা জীবিত ব্যক্তিকে দান করে, তবে তা জায়িয হবে। আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের মতে এর ছওয়াব উক্ত ব্যক্তির (দানকৃত ব্যক্তির) কাছে পৌছবে। অনুরূপ ‘আল বাদাইউছ্ ছানাই’ নামক কিতাবে আছে। এর থেকে বুঝা যাচ্ছে যে, উক্ত ছওয়াবের উদ্দিষ্ট ব্যক্তি মৃত হোক বা জীবিত হোক, এতে কোন ইখতিলাফ নেই। মূল কথা এই যে, চাই কেউ অপরের জন্য নিয়তে নেকী করে অথবা নিজের জন্য নেকী করে পরে অন্যের উদ্দেশ্যে দান করুক, কোন পার্থক্য নেই। এরূপ শামী ও আলমগীরীতে আছে।” (আল্ বাহর্রু রাইক্ব, আল্ বাদাইউছ্ ছানাই, শামী ২য় জিঃ ২৪৩ পৃষ্ঠা, আলমগীরী)

[১১১০-১১১২]

وظاهر اطلاقهم يقتضى انه لافرق بين الفرض والنفل فاذا صلى فريضة وجعل ثوابها لغيره فانه يصح هكذا المضموم فى الشامى وسر الاسرار. (البحر الرائق، شامى، سرالاسرار)

অর্থঃ- “উল্লিখিত মর্ম থেকে স্পষ্টভাবে বুঝা যাচ্ছে যে, যখন ইবাদত বা উদ্দিষ্ট ব্যক্তির কোনটি নির্দিষ্ট করে বা কোন শর্তযুক্ত করে বুঝায়নি। তখন ইবাদত ফরয বা নফল হোক অথবা উদ্দিষ্ট ব্যক্তি জীবিত বা মৃত হোক কোনই দোষ নেই। ফরয অথবা নফল যেকোন প্রকারের ইবাদতের ছওয়াব জীবিত অথবা মৃত যে কোন ব্যক্তির উদ্দেশ্যে দান করার বিধান আছে। অনুরূপ ‘শামী’ ও ‘সিররুল আসরার’ কিতাবদ্বয়ে আছে।” (আল বাহরুর বাইক্ব, শামী, সিররুল আসরার)

[১১১৩]

لكن لايعود الفرض فى ذمته لان عدم الثواب لايستلزم عدم السقوط عن ذمته. (البحر الرائق شرح كنز الدقائق)

অর্থঃ- “যে ব্যক্তি ফরয ইবাদতের ছওয়াব অন্যকে দান করলো তার উপর পুনরায় ঐ ফরয বর্তাবেনা। যেহেতু ছওয়াব দান করলে তার ফরয অনাদায় থাকবে না।” (আল বাহরুর রাইক শরহে কানযুদ্ দাক্বাইক্ব)

[১১১৪]

ایصال ثواب قرات وطعام بھی جائز اور  تعین تاریخ بمصلحت بھی جائزست ملاکے  بھی جائز. (کلیۃ امدادیۃ(

অর্থঃ- “কুরআন শরীফ পাঠ করে ও আহারাদি করিয়ে এর ছওয়াব বখশিশ করা এবং উক্ত কাজের সুবিধার জন্য কোন তারিখ নির্ধারণ করতঃ ঈছালে ছওয়াব করা জায়িয। এতদুভয় কার্য ভিন্ন ভিন্ন করলেও জায়িয এবং একত্রে করলেও জায়িয হবে।” (কুল্লিয়াতে ইমদাদিয়া)

[১১১৫]

وفى الحديث من قرأ الاخلاص احدعشر مرة ثم وهب اجرها للاموات اعطى من الاجر بعدد الاموات. (الدر المختارج 2 ص 242-243)

অর্থঃ- “হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে, যে ব্যক্তি এগারবার সূরা ইখলাছ পাঠ করে এর ছওয়াব মৃতদের উদ্দেশ্যে দান করে দেয়, এর ছওয়াব সকল মৃত ব্যক্তিগণ পাবে।” (আদ্ দুররুল মুখতার ২য় জিঃ ২৪২, ২৪৩ পৃষ্ঠা)

[১১১৬-১১১৭]

وفى شرح اللباب ويقرأ من القران ما تيسر له من الفاتحة واول البقرة الى المفلحون وأية الكرسى- وامن الرسول- وسورة يس وتبارك الملك وسورة التكاثر والاخلاص اثنى عشر مرة او احدى عشر او سبعا او ثلاثا، ثم يقول: اللهم اوصل ثواب ماقرأناه الى فلان او اليهم. (شامى ج 2 ص 243، شرح اللباب)

অর্থঃ- “‘শরহুল্ লুবাব’ নামক কিতাবে আছে- কুরআন শরীফ থেকে যা সহজ মনে হয় পাঠ করবেন। সূরা ফাতিহা, সূরা বাক্বারার প্রথম থেকে হৃল্পম্নৈèশু পর্যন্ত আয়াত, আয়াতুল্ কুরসী, আমানার রসূল, সূরা ইয়াসীন, তাবারাকাল্ মূলক, সূরা তাকাছুর ও সূরা ইখলাছ বার বার অথবা এগারবার কিংবা সাতবার নতুবা তিনবার পাঠ করবেন। অতঃপর বলবেন, আয় আল্লাহ্ পাক! আমি যা কিছু তিলাওয়াত করলাম এর ছওয়াব অমুককে বা অমুক লোকদের মাঝে পৌঁছে দিন।” (শামী ২য় জিঃ ২৪৩ পৃষ্ঠা, শরহুল্ লুবাব)

[১১১৮]

طعا ميكه ثواب ان نياز حضرت امامين نمايند برار قل وفاتحه ودرود خواندن متبرك مى شود وخوردن بسيار خوب است. (فتاوى عزيزيه ص 75)

অর্থঃ- “যে খাদ্য দ্রব্য ইমামদ্বয় তথা হযরত ইমাম হাসান এবং হযরত ইমাম হুসাইন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা-এর নামে উৎসর্গ করার নিয়ত করা হয়, তাতে সূরা ইখলাছ, সূরা ফাতিহা ও দরূদ শরীফ পাঠ করা বরকতের কারণ। আর এটা খাওয়া খুবই উত্তম।” (ফতওয়ায়ে আযীযিয়্যা ৭৫ পৃষ্ঠা) [১১১৯]

اگر مالیدہ وشیر بر ائے فاتحہ بزرگے بقصد ایصال ٹواب بروح ایشاں پختہ بخور اند جائزاست مضائقہ نیست. (فتاوی عزیزیۃ ص 41)

অর্থঃ- “যদি কোন বুযুর্গ আল্লাহ্ ওয়ালা’র ফাতিহার উদ্দেশ্যে ঈছালে ছওয়াবের নিয়তে দুগ্ধজাত কোন কিছু তৈরী করে পরিবেশন করা হয়, তা জায়িয আছে। আর এতে কোন প্রকার ক্ষতি নেই।” (ফতওয়ায়ে আযীযিয়্যা ৪১ পৃষ্ঠা)

[১১২০]

روز سوم كثرت هجوم مردم ان قرد بود كه بيرون راحسان است هشناد ويك كلام الله به شمار أمده وزيادهم شده باشد وكلمه راحفر نيست. (ملفوظة حضرت عبد العزيز رحمة الله عليه ص 80)

অর্থঃ- “(হযরত শাহ ওয়ালীউল্লাহ্ মুহাদ্দিস দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর কুলখানি হয়েছিল) তৃতীয় দিন মানুষের এতই সমাগম হয়েছিল যে, যা গণনার বাইরে ছিল। একাশি (৮১) বার কুরআন শরীফ খতম হিসাব করা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবিক এর থেকে আরো বেশী হতে পারে। আর কালিমা তাইয়্যিবা পাঠের তো কোন হিসাবই নেই।” (মালাফূযাতে হযরত আব্দুল আযীয রহমতুল্লাহি আলাইহি ৮০ পৃষ্ঠা)

[১১২১]

پس دہ مرتبہ درود خوانند ختم تمام کنند وبر قدرے شھبر نی فاتحہ بنام خواجگان چشت عموما  بخوند وحاجت اذ خدا سوال نمایند. (الانتباہ فی سلاسل اولیاء اللہ للولی اللہ دھلوی رح)

অর্থঃ- “অতঃপর দশ বার দরূদ শরীফ পাঠ করবেন এবং সম্পূর্ণ কুরআন শরীফ খতম করবেন। তারপর কিছু শিরণীতে সকল আউলিয়া-ই-কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণের নামে ফাতিহা দিবেন। আর আল্লাহ্ পাক-এর কাছে দোয়া করবেন।” (আল ইনতিবাহু ফী সালাসিলি আউলিয়াইল্লাহ লিল ওয়ালিউল্লাহ্ দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি) [১১২২]

وشیر بربخ تنا بر فاتحہ بزرگے بقصد ایصال ثواب  بروح ایشاں پزند وبخور ند مضائقہ نیست واگر فاتحہ بنام بزرگے دادہ شود اغنیارا ھم خوردن  جاعزاست. (زبدۃ النصائح للولی اللہ دھلوی رحمۃ اللہ علیہ ص 132)

অর্থঃ- “ঈছালে ছওয়াবের নিয়তে দুধ ও চাউলের দ্বারা কোন নেককার বান্দার নামে ফাতিহা দিলে তা পাক করতে ও খেতে পারেন। যদি কোন বুযূর্গ ওলী আল্লাহ্-এর নামে ফাতিহা দেয়া হয়, তা হলে তা ধনী ব্যক্তিদেরও খাওয়া জায়িয আছে।” (যুবদাতুন্ নাছাইহ্ লিল্ ওয়ালীউল্লাহ্ দেহলবী রহমতুল্লাহি আলাইহি ১৩২ পৃষ্ঠা)

[১১২৩]

وان اتخذ طعا ما للفقراء كان حسنا. (شامى ج 2 ص 241)

অর্থঃ- “মৃত ব্যক্তির ওয়ারিছ যদি ফকীরদের (গরীবদের) জন্য খাবারের ব্যবস্থা করে, তাহলে খুবই উত্তম। (এতে ফাতিহা করার বৈধতা প্রমাণিত হলো)।” (ফতওয়ায়ে শামী ২য় জিঃ ২৪১ পৃষ্ঠা)    উল্লেখ্য, হাদীস শরীফে ইরশাদ হয়েছে, المسيت كالغريق অর্থাৎ মৃত ব্যক্তি হচ্ছে ডুবন্ত ব্যক্তির ন্যায়।” অর্থাৎ সমুদ্রে ডুবন্ত ব্যক্তি বাঁচার জন্য যেরূপ আপ্রাণ চেষ্টা করে তদ্রুপ মৃত ব্যক্তিরাও কবরে শান্তির জন্যে তার আত্মীয়-স্বজনের দিকে তাকিয়ে থাকে। তাদের দোয়া, ছদকা খয়রাত ইত্যাদির আশায় থাকে।    “তাবারাণী শরীফের” হাদীসে এসেছে যখন কেউ মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া বা ঈছালে ছওয়াব করে তখন ফেরেশ্তাগণ উক্ত দোয়াগুলোকে বেহেশ্তের রুমালে করে মৃত ব্যক্তির নিকট পৌঁছে দেন এবং বলেন, তোমার অমুক আত্মীয় তোমার জন্য এ দোয়া বা নেকীগুলো পাঠিয়েছেন। তখন মৃত ব্যক্তি খুব খুশি হয়।  উপরোক্ত আলোচনা থেকে প্রমাণিত হয় যে, মৃত ব্যক্তির জন্য ঈছালে ছওয়াব, ফাতিহা বা কুলখানি করা জায়িয।   তাই সকলের উচিত মৃত আত্মীয়-স্বজনের জন্যে অধিক মাত্রায় দোয়া বা ছওয়াব রেছানী করা। আর বিশেষ করে যে সময়গুলোতে দোয়া কুবল হয় সে সময় বেশী বেশী মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া করা। যেমন যে কোন ফরয নামাযের পর বিশেষভাবে দোয়া কবুল হয়ে থাকে। (অসমাপ্ত)

পরবর্তী সংখ্যার অপেক্ষায় থাকুন

গবেষণা কেন্দ্র- মুহম্মদিয়া জামিয়া  শরীফ জানাযা নামাযের পর হাত তুলে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করার শরয়ী ফায়সালা ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া

জানাযা নামাযের পর হাত তুলে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করার শরয়ী ফায়সালা ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয়

জানাযা নামাযের পর হাত তুলে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করার শরয়ী ফায়সালা ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া গবেষণা কেন্দ্র- মুহম্মদিয়া জামিয়া  শরীফ

ফতওয়া বিভাগ- গবেষণা কেন্দ্র মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ জানাযা নামাযের পর হাত তুলে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করার শরয়ী ফায়সালা ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া

ফতওয়া বিভাগ- গবেষণা কেন্দ্র মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ জানাযা নামাযের পর হাত তুলে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করার শরয়ী ফায়সালা ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া প্রকাশিত ফতওয়াসমূহ