গত ৪০ বছর ধরে যারা দেশ শাসন করে আসছে, তারা সাম্রাজ্যবাদী বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ’র স্বাথেই কাজ করেছে, যা দেশের জন্য বিপর্যয় বয়ে এনেছে । তারা পুঁজি বিনিয়োগ করে এদেশের গরীব মানুষদের শ্রম নিয়ে জোচ্চুরি খেলছে। তাদের বিনিয়োগ করা পুঁজি নিয়ে কোনও দেশই উন্নতি করতে পারছে না। প্রসঙ্গত এখন অনেক দেশই তা বুঝতে পেরেছে। এবং অনেক মুসলিম দেশেও বিশ্বব্যাংকের বিরুদ্ধে জেগে উঠেছে।
বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ’র সাহায্য
লাগবে না: মিশর
বিশ্বব্যাংক এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে কোনো অর্থ ধার করবে না মিশর। সম্প্রতি বাজেট পুনর্বিবেচনা ও প্রক্ষেপিত ঘাটতি বাদ দিয়ে দেশটি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যদিও প্রয়োজনীয় অর্থ সংগ্রহ করতে একটি ঋণ চুক্তিতে সম্মত হয়েছে সরকার। সম্প্রতি মিশরের অর্থমন্ত্রী সামির রাদোয়ান সাংবাদিকদের এ কথা জানিয়েছেন। মিশরে ২০১১-১২ অর্থ বছরের জন্য খসড়া বাজেটে জিডিপি ধরা হয়েছিল ১১ শতাংশ। পরে তা কমিয়ে ৮ দশমিক ৬ শতাংশ করা হয়।
এর কারণ হিসেবে অর্থমন্ত্রী জানান, বাজেট নিয়ে জাতীয় সংলাপে ও শাসক সেনাপরিষদ দেশে ঋণের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, এই মুহূর্তে আমাদের আর ওই ব্যাংক ও তহবিলের কাছে অর্থ সাহায্য চাওয়ার প্রয়োজন নেই। সেই সঙ্গে তিনি এও বলেন, ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট হুসনি মোবারক এর আগে আইএমএফ’র কাছ থেকে ঋণ নিয়েছিল। তবে এ সিদ্ধান্তের ফলে যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক এই দুই অর্থনৈতিক সংস্থার সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের কোনো অবনতি ঘটবে না।’
মিশরের মন্ত্রিসভা গত ১ জুন চলতি ২০১১-১২ অর্থ বছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেট অনুমোদন দিয়েছে। এ বাজেটের এক চতুর্থাংশ ব্যয় করা হবে গরীব মানুুষদের সহায়তা এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে।
তবে ৭ সেপ্টেম্বর ২০১১ ঈসায়ী তারিখে আবার এর সংশোধিত প্রস্তাব আনা হয়েছে। এতে আয়কর বৃদ্ধি ও জ্বালানিতে ভর্তুকি কমানোর দুটি প্রস্তাব যোগ করা হয়েছে।
ঘাটতি পূরণের জন্য আরব উপসাগরীয় দেশগুলো মিশরকে অর্থ সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী রাদোয়ান।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে কাতার মিশরকে ৫০ কোটি ডলার অর্থ কোনো শর্ত ছাড়াই এককালীন উপহার হিসেবে দিয়েছে।
এর আগে সৌদি আরবও একই পরিমাণ অর্থ দেয়ার কথা বলেছে বলে জানান মন্ত্রী।
“বিশ্বব্যাংক ও আই.এম.এফ এর বৈষম্যমূলক নীতির তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ইরান”
ইরানের অর্থমন্ত্রী শামসুদ্দিন হোসেইনি বিশেষ কিছু দেশের প্রতি বিশ্বব্যাংক ও আই.এম.এফ বৈষম্যমূলক নীতির কড়া সমালোচনা করেছেন।
জনাব হোসেইনি মঙ্গলবার ইস্তাম্বুলে আই.এম.এফ ও বিশ্বব্যাংকের অর্ধবার্ষিক সম্মেলনের অবকাশে সাংবাদিকদের আরো বলেছেন, ইরানের মতো বিশেষ কিছু দেশের পরিকল্পিত প্রজেক্টগুলোতে অর্থায়নের ব্যাপারে ঐ দুই আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান বৈষম্যমূলক আচরণ করেছে। ইরানের অর্থমন্ত্রী বলেছেন, বিশ্বব্যাংক ও আই.এম.এফের কর্মকর্তারা কোন কোন দেশের অধিকার লংঘন করছে। এছাড়া ঐ দুই আর্থিক প্রতিষ্ঠান ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্য’ বাস্তবায়নের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে বলে জনাব হোসেইনি অভিযোগ করেন।
“মানুষের বিপন্নতাকে পুঁজি করে বিশ্বব্যাংক-আইএমএফ ব্যাবসার ফাদ পেতেছে ॥
তাদের পরামর্শেও বাংলাদেশের পাটকলগুলো বন্ধ হয়েছে
বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ’র পরামর্শ গ্রহণ না করার আহ্বান বক্তাদের”
ইউএনবি : কৃষি ও জলবায়ু তহবিলসহ যে কোনো নীতিনির্ধারণে বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ এর পরামর্শ গ্রহণ না করার আহবান জানিয়েছেন বাংলাদেশ যুব-তরুণ ও ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক-শ্রমিক নেতারা। সম্প্রতি জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘ইয়্যুথ ইন অ্যাকশন অন কাইমেট’ অয়োজিত মানববন্ধনে বক্তারা এ কথা বলেন।
বক্তারা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশের মানুষের বিপন্নতাকে পুঁজি করে বিশ্বব্যাংক পরামর্শের নামে নতুন ব্যবসার পরিকল্পনা করছে। তাই সরকারকে দেয়া বিশ্বব্যাংকের যে কোনো প্রস্তাব প্রত্যাখানের দাবি জানান তারা। বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ এর পরামর্শের কারণেই বাংলাদেশের পাটকলগুলো বন্ধ হয়ে গেছে বলে বক্তারা অভিযোগ করেন।
তারা আরও বলেন, বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ টাকা দিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতিবিদ ও পরামর্শকদের কিনতে চায়। কিন্তু এদেশের মানুষ তা কোনোদিনই গ্রহণ করবে না বা হতে দেবে না। এছাড়া বাংলাদেশ থেকে বিশ্বব্যাংকের সকল কার্যক্রম গুটিয়ে নেয়ারও দাবি জানান বক্তারা।
“বাংলাদেশকে ঘিরে বিশ্বব্যাংকের নতুন ষড়যন্ত্র ॥ বাংলাদেশের ব্যবসা পরিস্থিতি জরিপ করবে বিশ্বব্যাংক”
বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের ব্যবসা পরিস্থিতি জরিপ করবে। বেসরকারি খাতে ব্যবসায়িক কার্যক্রম মূল্যায়নের জন্য ‘বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজ সার্ভে ২০১১’ শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দেশের উৎপাদন ও থোক খাতের প্রায় ১ হাজার ২৫০টি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান থেকে তথ্য সংগ্রহ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১ হাজার তৈরি পোশাক শিল্পের উৎপাদন ও প্রতিযোগিতার পরিবেশ যাচাই করা হবে। বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের ব্যবসা পরিস্থিতি রিপোর্ট আগামী সেপ্টেম্বর নাগাদ প্রকাশ করতে পারে। (ইনশাআল্লাহ চলবে)
-মুহম্মদ ওয়ালীউর রহমান
প্রসঙ্গঃ আমেরিকায় ইহুদী প্রভাব ও নিয়ন্ত্রণ- ২
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা-৩৪
চাঁদ দেখা এবং নতুন চন্দ্রতারিখ শুরু নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা- ১