আজকের তথাকথিত শীর্ষস্থানীয় উলামাদের আকাবিরদের দৃষ্টান্ত ও বক্তব্যানুযায়ীই তথাকথিত শীর্ষস্থানীয় উলামারা বেপর্দাকে জায়েয করে কুফরী করছে

সংখ্যা: ১৪২তম সংখ্যা | বিভাগ:

  শায়খ হযরত আবুল গয়স ইবনে জলীল রদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর নিকট একদল জাহিরী মাওলানা উপস্থিত হলে তিনি তাদেরকে সম্বোধন করে বললেন, “সাবাস! আমার গোলামরা।” তাঁর এ উক্তিতে জাহিরী মাওলানারা চটে উঠলেন। তারা সেই জামানার বিরাট ওলীআল্লাহ শায়খ হযরত ঈসমাইল হজরমী রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর নিকট নালিশ পেশ করলেন। তিনি তার উত্তরে বললেন, “তিনি তো ঠিকই বলেছেন। কারণ, আপনারা হচ্ছেন নফসের গোলাম এবং নফস হচ্ছে তাঁর গোলাম। অতএব, আপনারা হচ্ছেন তাঁর গোলামের গোলাম। (ফতাওয়া হাদীছিয়া ২৭১ পৃঃ) তাযকিরাতুল আউলিয়া পাঠ করলেও এরূপ বহু কাহিনী জানা যায়। জাহিরী মাওলানাদের ক্ষেত্রে দেখা যায় দুনিয়া লাভের জন্য বড় লোকের বাড়ীতে ধন্না দিতে। ধর্মের আবরণে দুনিয়া শিকার করতে। দুনিয়ার মান; সম্মান, ইজ্জ্বত ও প্রতিপত্তি লাভের জন্য হন্য হয়ে উঠতে। হক্ব মাসয়ালার বিপরীত ফতওয়া দিতে। একতাবদ্ধ সমাজকে শতধা বিচ্ছিন্ন করতে। লোভ-লালসার বশবর্তী হয়ে সমাজকে শোষণ করতে। দ্বীন ইসলামকে পুঁজি করে এমপি, মন্ত্রী তথা সরকারী আর্শীবাদ পাবার জন্য মরিয়া হয়ে উঠতে।  মুলতঃ হক্ব আলিমের যোগ্যতার তথা মাপকাঠির ছিটাফোটা এদের নেই। প্রখ্যাত ওলীআল্লাহ হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মুবারক রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, “আলিম হবার শর্ত এইযে, তার হৃদয়ে যেন দুনিয়ার কোন মুহব্বত স্থান না পায়” (তাবাকাত ১ম জেলদ ৫১পৃঃ)  তিনি আরো বলেন, “দ্বীন ইসলামকে যদি কেউ পরিবর্তন করে থাকে তবে এরা হচ্ছে কতকগুলি শাসক, দুষ্ট আলিম এবং বৈরাগীর দল।” তিনি আরো বলেন, “যে খাওফে ইলাহী (খোদার ভয়) এবং জোহ্দ্ (দুনিয়ার স্বল্পতা) কম রাখে সে কেমন করে নিজেকে বড় আলিম বলে দাবী করে?” অথচ আজকে যারা প্রকাশ্যে খোদাতায়ালার কালাম তথা কুরআন শরীফের আয়াত অস্বীকার করছে এবং দুনিয়া হাছিল তথা এমপি, মন্ত্রী হওয়ার অথবা শাসকদলের নেক নজর কামাবার জন্য চরম উদগ্রীব হচ্ছে তারাই জোর গলায় নিজেদের শীর্ষ আলিম বলে দাবী করছে। মজার কথা হলো, বর্তমানের দাবীকৃত এই শীর্ষস্থানীয় আলিমরা যে কিরূপ শীর্ষস্থানীয় তা তাদের স্বীকৃত শীর্ষে যারা রয়েছেন অর্থাৎ তাদের যারা মুরুব্বী বা আকাবির রয়েছেন তাদের আমল বা বিবৃতির প্রেক্ষিতেই প্রতিভাত হয়। (ক) প্রসঙ্গতঃ তথাকথিত শীর্ষস্থানীয় আলিম ও তথাকথিত শাইখুল হাদীছ তার আল কুরআনের দৃষ্টিতে মহিলাদের পর্দা’ শীর্ষক বইয়ে ৮১-৮২ পৃষ্ঠায় এ ধরনের একটি বিবরণ রয়েছে,  “হক্ব পন্থী পীর মুর্শিদগণ সবৃদা আল্লাহ পাক-এর ভয় এবং আখিরাতের চিন্তায় নিমগ্ন থাকেন, কোন মহিলা মুরীদের সাথে মুছাফাহ করা বা তার শরীর স্পর্শ করা বা নিজের শরীর স্পর্শ করতে দেয়া তো দূরের কথা, নিজের সামনেও তাদেরকে আসতে দেন না। বরং পর্দার আড়াল থেকে তা’লীম, তালক্বীন দিয়ে থাকেন। আমাদের সিলসিলার প্রসিদ্ধ বুযূর্গ হযরত মাওলানা খলীল আহমদ ছাহেব মহাজেরে মদনী রহমতুল্লাহি আলাইহি যখন মহিলাদের বাইয়াত করতেন তখন মাঝে পর্দা থাকা সত্ত্বেও মহিলাদের দিকে পিছ দিয়ে বসতেন। এবং তালীম-তালক্বীন করতেন। একদা এভাবেই কোন এক এলাকাতে মহিলাদেরকে বাইয়াত করছিলেন তখন জনৈকা মহিলা আরয করে যে, মাঝে যখন পর্দা রয়েছে তারপরেও অন্যদিকে ফিরে বসার প্রয়োজন কি? জবাবে তিনি বললেন, তোমরা কি করে বুঝলে আমার মুখ কোন দিকে রয়েছে। বোঝা যায় যে, পর্দার আড়াল থেকেও উঁকি দিয়ে তোমরা আমাকে দেখ ফেল। এজন্যই আমি পর্দার দিকে পিঠ ফিরিয়ে বসে থাকি।  আমাদের আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত সিলসিলার আরেক বুযূর্গ সম্পর্কে বর্ণিত আছে যে, একবার জনৈকা বয়স্কা নারী তার অল্প বয়স্কা পুত্রকে নিয়ে কোন প্রয়োজনে তাঁর খিদমতে হাজির হওয়ার প্রার্থনা করলেন। স্ত্রী লোকটি পূর্ব থেকেই তাঁর মুরীদ ছিলেন। কিন্তু তিনি তাকে খিদমতে হাজির হওয়ার অনুমতি না দিয়ে বলে পাঠালেন যে, বালেগ মুহরিম সাথে নিয়ে এসো, তারপর তোমার বক্তব্য শুনবো। এটাই হলো হক্বপন্থীদের আদর্শ এবং পর্দার প্রতি যতœ নেয়ার নিদর্শণ। (আল কুরআনের দৃষ্টিতে মহিলাদের পর্দা, রচনা- শাইখুল হাদীছ আজিজুল হক, পৃষ্ঠা ৮১) (খ) এরপর উদাহরণটি সিলেটের। আজকের শীর্ষস্থানীয় আলিমদের তথাকথিত আগিলা দিনের আকাবিরদের ঘটনাটি উল্লেখ করেছেন অধ্যক্ষ দেওয়ান মুহম্মদ আজরফ। তিনি তার আত্মজীবনীতে উল্লেখ করেন, “নজরুল ইসলামের আগমন উপলক্ষে সিলেটের মুসলিম মহিলাদের মধ্যে দু’জন অসম্ভব সাহসের পরিচয় দিয়ে দিনে-দুপুরে প্রকাশ্য জনসভায় যোগদান করেন। এদের মধ্যে একজন হচ্ছে মরহুম বেগম সিরাজ-উন নিসা (ভূতপূর্ব এম, এল, এ পাকিস্তান) ও অপরজন হচ্ছেন ঢাকা বিশ্ব-বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত কলেজের ইন্সপেক্টর মরহুম আব্দুল মুনায়েম চৌধুরী ছাহেবের বিবি। বেগম সিরাজ-উন-নিসা তাঁর স্বামী মরহুম আব্দুর রশীদ চৌধরীর নির্দেশ মত মেয়েদের জন্য নির্দিষ্ট চিকে-ঘেরা বারান্দায় আসন গ্রহণ করেন। অপরদিকে আব্দুল মোনায়েম সাহেবের বিবি একবারে সামনের সারিতে পুরুষের পাশে আসন গ্রহণ করেন। তাঁর পাশেই ছিলেন তাঁর আব্বা মরহুম খান বাহাদুর  শরাফাত আলী সাহেব। তিনি পরিচয় করিয়ে দেবার আগে কেউ বুঝতে পারেননি যে, প্রথম সারিতে উপবিষ্ট মহিলা জাতিতে মুসলিম। সভা শেষে শরাফত আলী সাহেব দাঁড়িয়ে বলেন, “এই যে প্রথম সারিতে বসেছিলেন এটি কার মেয়ে? এটি আমার থার্ড ডটার,  আজকে সিলেটের বুকে এই সর্ব প্রথম মুসলমান মেয়ে পর্দার কারাগার থেকে বেরিয়ে এলো” তাঁর এ উক্তির পরেই শহরে সাড়া পড়ে যায়। কানাঘুষা চলতে থাকে। পরের দিন এ বেহায়াপনার জন্য প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয়। আজকের তথাকথিত শীর্ষ উলামাদের এক বিখ্যাত মুরুব্বীর সভাপতিত্বে সভার আয়োজন হবে বলে ঘোষণা করা হয়। ইস্কুল ও কলেজের ছেলেরা জেদ ধরে কিছুতেই এ প্রগতি বিরোধী সভার আয়োজন হতে দেবে না। নানা বাক-বিতণ্ডার পরে সাব্যস্থ হয় সভার আয়োজন হোক, বক্তৃতাও দেওয়া হোক, তবে কোন নিন্দা সূচক প্রস্তাব গৃহীত হতে দেওয়া হবে না। সভার আয়োজন হ’ল রতন মনি লোকনাথ টাউন হলে। দলে দলে মৌলবী সাহেবেরা মাথায় নানা রঙের পাগড়ি পরে উপস্থিত হন।  প্রত্যেক বক্তা পর্দা তথা হিজাবের মাহাত্ম্য বর্ণনা করে, মেয়েদের যথাতথা বেহায়ার মত ঘোরাফেরার তীব্র নিন্দা করেন। অবশেষে সভাপতি তার ভাষণে তার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে পর্দা প্রথা রহিত করার বিরুদ্ধে অপূর্ব যুক্তি পেশ করেন। তিনি অশ্রুরুদ্ধ কণ্ঠে বলেন, “আমার দু’জন বিবি ছিলেন। আমি আমার বাড়ির সামনে একটা মস্ত বড় তালাব কাটাই। জৈষ্ঠ-আষাঢ় মাসে সে তালাবের পাড় পানিতে ভর্তি হলে গভীর রাত্রে আমি বিবিগণকে নিয়ে বের হয়ে তাদের পুকুরের চার পাশে ঘুরে আসতে আদেশ করি। তারা ঘুরে আমার কাছে ফিরে এলে, দেখা গেলো একজনের শাড়িতে অসংখ্য চোরকাঁটা রয়েছে। অপর জনের শাড়িতে একটা চোরকাঁটাও নেই। তাতে বুঝতে পারলাম, যে বিবির শাড়িতে একটা চোরকাঁটা আশ্রয় পায়নি পুকুরের চতুর্দিকে প্রদক্ষিণের সময় তিনি আলগোছে শাড়িখানা হাঁটু পর্যন্ত তুলে নিয়েছেন। তাকে এ সম্বন্ধে প্রশ্ন করলেও তিনি তা স্বীকার করেন। কাজেই আমার পক্ষে এমন বেহায়া ও বেশরম আওরত রাখা সম্ভবপর হলনা। পরের দিন তার বাপ-ভাই, আত্মীয়-স্বজনদের ডেকে এনে মোহরানার টাকা আদায় করে সাফ তিন তালাক বাইন দিয়ে দিলাম। অতঃপর উপস্থিত মৌলবী সাহেবের মধ্যে শোরগোল উঠে। সকলেই ‘মারহাবা মারহাবা’ বলে চিৎকার করেন। এর পরেই তাদের প্রস্তাব গ্রহণের পালা। একজন দাঁড়িয়ে বলেন, “এই সভা প্রস্তাব করিতেছে, যে সব মুসলমান নারী গতকাল প্রকাশ্য সভায় যোগদান করিয়াছে তাদের হুঁশিয়ার করে দেয়া হউক।” (অতীত জীবনের স্মৃতি- দেওয়ান মুহম্মদ আজরফ, পৃষ্ঠা ৬২-৬৩) পাঠক! এক্ষণে এই হুশিয়ারী ঘটনাটি যদি উল্টিয়ে দেখা যায় তখন তা কি রকম বজ্রনিনাদে উচ্চারিত হতে পারে? অর্থাৎ যে সব মুসলমান নারী গতকাল প্রকাশ্য সভায় যোগদান করেছেন এর পরিবর্তে যেসব পুরুষ গতকাল নারীর সভায় যোগদান করেছেন এই যদি হয় ঘটনা, তাহলে উক্ত হুশিয়ারী কিরূপ ভয়ঙ্করভাবে উচ্চারিত হবে তা বলাই বাহুল্য। আর শুধু  নারী নেতৃত্বের সভায় যোগদান? নারী নেত্রীর পায়ের কাছে দাড়ী-পাগড়ীসহ উপবেশন। রীতিমততার নারী নেতৃত্ব গ্রহণ, তার সাথেই চলাফেরা, বসা-আলাপ করা তথা সহবস্থান করা।  অতএব, এই খবর যদি আজকের তথাকথিত শীর্ষস্থানীয় আলিমদের আকাবিরদের কাছে পৌঁছত তবে তারাই ভীষণ ক্ষোভে ক্ষুব্ধ হয়ে আজকের তথাকথিত শীর্ষস্থানীয় উলামাদের তাৎক্ষণিকভাবে মুরতাদ ফতওয়া দিতেন, তাদের বউ তালাক হয়ে গেছে বলতেন। তাদের তিনদিন সময় দিতেন। অতঃপর তাদের জন্য প্রকাশ্য মৃত্যুদ- ঘোষণা করতেন। (তওবার জন্য সময় দিতেন।) তা বলার অপেক্ষা রাখেনা।

-মুহম্মদ তারীফুর রহমান, ঢাকা।

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব।  খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-১১         

বৃটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে বৃটিশ ভূমিকা-১১

 রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর হাক্বীক্বী নায়িব ও ওয়ারিছ। তাঁর বিরোধীতাকারীরা মুনাফিক, কাফির ও শয়তানের অনুসারী -১১     

 “হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নিয়ে সিনেমা”  নিশ্চুপ উলামায়ে ‘ছূ’রা ॥ সর্বাঙ্গে দায়ী তারা 

অবশেষে তথাকথিত ইসলামী জামাতের আমীর নিজামী ও বায়তুল মোকাররামের তথাকথিত খতীব উবায়দুল হক, এরপর এবার মুফতে আমিনীও রাজারবাগ শরীফের তাজদীদ মানতে বাধ্য হলেন