‘সামাজিক গতিশীলতা’ এ শ্লোগানটি আশির দশকে মাধ্যমিক স্তরে পাঠ্যপুস্তকের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিলো।
আশ্চর্য হলেও সত্য, একই সাথে এরপর পরই আরো কয়েকটি আপ্তকথার প্রচারের প্লাবন বইয়ে গিয়েছিলো।
‘ছোট হয়ে আসছে পৃথিবী’।
‘বিশ্বায়নের যুগ’।
‘গ্লোবাল ভিলেজ’ বা ‘বিশ্বপল্লী’।
ঘুরে ফিরে সব কথার গতিপথ কিন্তু ঐ একই। আধুনিকতার নামে বোহেমিয়ান জীবন বা বল্গাহারা দর্শনে মেতে উঠা।
ইদানিংকালের পত্র-পত্রিকার তথা মিডিয়ার বিজ্ঞাপনের প্রচারণাগুলোও তাই প্রতিভাত করে।
মোবাইল ফোনের বিজ্ঞাপনের শ্লোগান অর্ধপৃষ্ঠা জুড়ে ছাপানো হচ্ছে
‘কখনো গানে
কখনো ছবিতে
জীবন মেতে উঠুক উচ্ছ্বাসে।’
এমনিতেই প্রবাদ রয়েছে, ‘আবেগ ভাল কিন্তু উচ্ছ্বাস নয়।’
বাস্তবে আবেগই যেখানে অনেক ক্ষেত্রে প্রশ্নবিদ্ধ ও মরীচিকা সদৃশ্য;
সেখানে আজ উচ্ছ্বাসের পথেই প্রচারণা চলছে অবাধে।
এসব প্রচারণার পিছনে একদিকে রয়েছে মুসলমানের থেকে ইসলামী অনুভূতি তুলে দেয়া। অপরদিকে পুঁজিবাদের দখলদারিত্ব। সেই সাথে সাম্রাজ্যবাদীদের আগ্রাসন।
প্রসঙ্গতঃ এক ইসলাম ও মুসলমান ছাড়া অপর সব ধর্মীয় ও সন্ত্রাসীদের সংস্কৃতির মধ্যে প্রায় পুরোটাই মিল রয়েছে।
ধর্মপ্রাণ মুসলমানই কেবল মদ খেতে উদ্যত হয় না। ব্যভিচারে ভয় পায়।
কিন্তু অন্য সব ধর্ম সম্প্রদায়ে মদ, ব্যভিচার সম্পর্কে কিন্তু এরূপ শক্ত নিষেধবানী নেই। পাশাপাশি নেই পরকালে জাহান্নামের আযাবের সতর্কতা এবং জান্নাতের যাওয়ার কথা, নহরের কথা, মেওয়ার কথা হুরের কথা।
সুতরাং মুসলমান যেমন পরকালের আযাবের কথা মনে করে হারাম থেকে বাঁচার প্রবণতা পায়, বেহেশতের আরামের কথা মনে করে ধৈর্য ধরার শক্তি পায় সে,
ওহীক চেতনা ও বিশ্বাস অন্য ধর্মাবলম্বী বা সম্প্রদায়ের মাঝে নেই।
স্বভাবতই বোহেমিয়ান জীবন, বল্গাহারা চেতনা, বেপর্দা, বেহায়ায় তারা খুব সহজেই মেতেছে এবং উত্তরোত্তর তা বেড়েই চলছে।
ফলশ্রুতিতে অবস্থা আজ এমন হয়েছে, সামাজিক ভারসাম্যতা এমনভাবে নষ্ট হয়েছে যে তা আজ খোলামেলাই উচ্চারিত হচ্ছে। তবে ইসলাম বৈরী মানসিকতার লোকেরা এক্ষেত্রে ইসলামিক টার্মটা স্বীকার করতে চান না।
‘হারাম থেকে ফিরে আসার আহ্বান বা হারামের কুফল’ ইত্যাদি কথা তারা উচ্চারণ করবেন না। ঘুরিয়ে বলবেন, মূল্যবোধের অবক্ষয়। এই মূল্যবোধের অবক্ষয় তথা অসতীপনা এবং তথাকথিত আধুনিকতা ইত্যাদির বিরুদ্ধে কিন্তু ঐসবের উৎসস্থল সেই ইংল্যান্ডেই ইংল্যান্ডের কবি-সাহিত্যিকরা লিখে গেছেন।
“Way of the World” উপন্যাস এমন একটি উদাহরণ। এমনকি সেই ইংল্যান্ডের বাতাস যখন ভারতবর্ষেও এসেছিলো, যখন ডিরোজী মার্কা নব্য ঈঙ্গো-ইউরোপীয় সংস্কৃতির চর্চা চলছিলো তখন খ্রিস্টানী কালচারে কেতাদুরস্ত খোদ মধুসূদন পর্যন্ত সে নব্য সংস্কৃতিবাজদের সমালোচনা করে নাটক লিখেছিলেন, ‘একেই কী বলে সভ্যতা’, ‘বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রো’ ইত্যাদি ইত্যাদি।
আসলে শুধু বঙ্কিমই নয় বরং মধুসূদন থেকে খোদ রবীন্দ্রনাথ পর্যন্ত হিন্দুয়ানী রক্ষায় কিন্তু শতভাগ শঙ্কিত ও নিবেদিত ছিলো।
কিন্তু গান-বাজনা, পূজা-অর্চনায় মুসলমানের শামিল হওয়াকে তারা প্রভাব বলয়ের মাধ্যমে উদার সংস্কৃতি বলে একটা সেন্টিমেন্ট প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন।
এক্ষেত্রে হিন্দু, রাজনৈতিক, বুদ্ধিজীবী, সাহিত্যিক, আইনজীবী, জমিদার সবারই মেধা ও শ্রমের সমন্বয় হয়েছিলো।
সবারই ঐকমত্য ও তীব্র প্রচেষ্টা কাজ করেছিলো।
এমনকি সে প্রভাব বলয় থেকে কারো যদি সামান্য ইসলামী আচার প্রকাশ পেত তবেই তাদেরকে শুনতে হত, ‘তাহলে তো তোমরা শেষ পর্যন্ত ঐ মোসলমানই রয়ে গেলে।’
দুষ্ট বুদ্ধির প্রক্রিয়ায় বিধর্মীরা অনেক দূর সক্ষম হয়েছে, তারা ইসলাম বিরোধিতাকে ইসলামী অনুশাসন পালনের সমালোচনাকে-
একটা আর্ট,
একটা শিল্প
এবং সংস্কৃতির
আবহে দাঁড় করিয়েছে।
সুতরাং যে ইসলাম পালন করার বিরোধিতা করলো না সে সংস্কৃতিবান হতে পারলো না। সে উদার হতে পারলো না।
‘সওগাত’ সম্পাদক নাসির উদ্দিন থেকে আরম্ভ করে খোদ কাজী নজরুল ইসলামকেও এই ফাঁদে পড়তে হয়েছে। বাধ্য হতে হয়েছে ইসলাম বৈরী অনেক কথাই লিখতে।
সে অবস্থা যে আগের থেকে আদৌ ভাল হয়েছে তা তো নয়ই বরং উল্টো হাজার গুণ খারাপ হয়েছে; এর ব্যাপকতা এখন সাধারণ মানুষকে তাদের অজান্তেই গ্রাস করেছে- তা না বললেও চলে।
অবশ্য সাধারণ মানুষ যে তাতে ভাল নেই, আর দিন দিন আরো খারাপের পথে যাচ্ছে তা অস্বীকার করছে না কেউই।
বরং পত্র-পত্রিকার রিপোর্টেই কিন্তু বর্তমান অনৈসলামিক সংস্কৃতির করাল গ্রাসের বীভৎস ভয়াবহতা ব্যাপকভাবে প্রকাশ পাচ্ছে।
গত ২১.০৫.২০০৯ ঈসায়ী তারিখে “দৈনিক ইত্তেফাক” পত্রিকার প্রথম পৃষ্ঠার প্রথম কলামে বক্স আইটেমে হেডিং হয়: “মোবাইল ফোনের ফাঁদ থেকে তরুণীরা সাবধান!”
“রাজধানী ও আশপাশের এলাকায় মোবাইল ফোনে প্রেমের ফাঁদে পড়ে প্রতারিত হচ্ছেন তরুণীরা। প্রেমের নামে এই তরুণীরা হচ্ছেন যৌন নিপীড়নের শিকার। এর ফলে প্রতারিত তরুণীরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে কিংবা ঐসব কষ্টের স্মৃতি ভুলতে আসক্ত হচ্ছে মাদকে। প্রতিমাসে এমন শতাধিক তরুণীকে চিকিৎসা ও পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎকরা। এমনকি মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে তরুণীদের কেউ কেউ আত্মহত্যার পথও বেছে নিচ্ছে। মানসিকভাবে বিপর্যস্ত তরুণীদের অভিভাবকরা মনোরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের কাছে নিয়ে যান। কোন কোন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক প্রতিমাসে মোবাইল ফোনে প্রেমের ফাঁদে পড়ে যৌন নিপীড়নের শিকার শতাধিক তরুণীকে চিকিৎসা দিয়ে থাকেন বলে জানা যায়। একশ্রেণীর তরুণ কিংবা যুবক তরুণীদের মোবাইল ফোনে কিভাবে ফাঁদে ফেলে দিনের পর দিন যৌন নিপীড়ন চালায় এর করুণ কাহিনী বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের কাছে তুলে ধরেন।
বিশিষ্ট মনোরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. এমএ মোহিত কামাল বলেন, মোবাইল ফোনে স্কুল-কলেজ পড়–য়া কিশোরী কিংবা তরুণী কন্যা ও তরুণ-যুবক পুত্র ঘণ্টার পর ঘণ্টা কার সঙ্গে কথা বলছে তা অভিভাবকরা দেখে না দেখার ভান করেন। আবার কোন কোন অভিভাবক বিষয়টি গুরুত্ব দেন না। কোন কোন পরিবারে ফোনে কথা বলা ফ্যাশন। লেখাপড়া বাদ দিয়ে তার সন্তান ঘণ্টার পর ঘণ্টা কার সাথে কথা বলছে তা অভিভাবকেরই যাচাই করা দায়িত্ব। তিনি বলেন, এই ধরনের যৌন নিপীড়নের ঘটনা সামাজিক অপরাধ। এক্ষেত্রে থানা পুলিশের কিছুই করার নেই, অভিভাবকদেরই মূল দায়িত্ব। তার কাছে প্রতিদিন এমন প্রতারণার শিকার ৩ থেকে ৫ জন তরুণী চিকিৎসার জন্য আসে বলে জানান। মনোরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে, রাজধানী ও আশপাশে মোবাইল ফোনের ফাঁদে পড়ে প্রতিমাসে শতাধিক কিশোরী-তরুণী যৌন নিপীড়নের শিকার হয়।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও ইংলিশ মিডিয়ামের ছাত্রীরা বেশি মোবাইল ফোনে প্রেমের ফাঁদে পড়ে। বখাটে তরুণ-যুবকরা ঐ সকল ছাত্রীর মোবাইল ফোন নম্বর বন্ধু-বান্ধব ও বিভিন্ন কায়দায় সংগ্রহ করে। ফ্ল্যাক্সিলোডের দোকান থেকেও এক শ্রেণীর তরুণ-যুবক তরুণীদের মোবাইল ফোন নম্বর সংগ্রহ করে।
এসব বখাটে তরুণ-যুবক মোবাইল ফোন নম্বর সংগ্রহ করা নিয়ে ব্যস্ত থাকে। মোবাইল নম্বর সংগ্রহ শেষে তারা প্রথমে কুশল বিনিময় করে। এরপর নানা ধরনের মিষ্টি কথা বলে উভয়ের মধ্যে কথা বলার সম্পর্ক গড়ে তোলে। এরপর নানা অভিনয়-কৌশলে পার্কে কিংবা রেস্টুরেন্টে এসে সাক্ষাৎ শুরু করে। এক পর্যায়ে তরুণী তরুণের প্রেমে পড়ে যায়। তাদের মধ্যে দৈহিক সম্পর্ক শুরু হয়। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী তরুণ কিংবা যুবক তরুণীর সঙ্গে দৈহিক মেলামেশার চিত্রটি ভিডিওতে ধারণ করে। কোন কোন তরুণী রাজী না হলে ভিডিও চিত্র তরুণীকে দেখায়। এরপর এক প্রকার বাধ্য করে দৈহিক মেলামেশা করতে। তরুণ দিনের পর দিন তরুণীর সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক চালিয়ে যায়। এই কায়দায় তরুণীরা মোবাইল ফোনে প্রেমের ফাঁদে পড়ে যৌন নিপীড়নের শিকার হচ্ছে।
মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কর্মকর্তারা এই ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিবি উত্তর জোন) মাইনুল হাসান বলেন, প্রায়ই এই ধরনের অভিযোগ তারা পেয়ে থাকেন। তদন্ত কাজে পরিবারের সামাজিক অবস্থানের কথা বিবেচনা করে অভিভাবকরা সহযোগিতা করেন না।”
দেখা যাচ্ছে, যে সামাজিক অবস্থানের কথা বলা হয়েছে সে সামাজিক অবস্থানটা আসলে ভাল নয়। সত্যিকার অর্থে তা অতি কুৎসিত হয়েছে অনেক আগেই। বর্তমানে তা ভীষণ ভয়ঙ্কর অবস্থা ধারণ করেছে।
সমাজে সবাই মুখোশ পড়ে আছে।
মুখে কুলুপ এঁটে রয়েছে।
দু/একটা ঘটনাই কেবল বিচ্ছিন্নভাবে প্রকাশ পাচ্ছে।
একই ‘ইত্তেফাক’ পত্রিকাসহ গত ২১.০৫.০৯ তারিখের সব পত্রিকায় আরো একটি চাঞ্চল্যকর খবর ছাপা হয়:
‘রাজধানীর খিলগাঁওয়ে দুই তরুণী হত্যায় মূল আসামি দ্বীন ইসলাম ওরফে রেজাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।’
“দ্বীন ইসলাম রেজা জানায়, তারা দুই-ভাই বোন। সে বড় আর শান্তা ছোট। অনেক বছর আগেই তাদের বাবা মারা গেছে। অনেক কষ্ট করে সে শান্তাকে লেখাপড়া শিখিয়েছে। মিলন নামে এক ছেলের সঙ্গে তাকে বিয়েও দেয় সে। কিন্তু উচ্ছৃঙ্খল স্বভাবের কারণে সংসার টেকেনি। বছর দুই আগে মিলন তাকে ছেড়ে দেয়। পরে সে ঢাকায় আসে। কয়েকদিন গার্মেন্টসে চাকরি করে। এক সময় গার্মেন্টসের চাকরি ছেড়ে মডেলিংয়ে যোগ দেয়। এ থেকেই জড়িয়ে পড়ে দেহ ব্যবসায়। এ খবর এলাকার অনেকেই তাকে এবং তার পরিবারের লোকদের বলেছে। এলাকার অনেকে শান্তাকে বিভিন্ন হোটেলে যাতায়াত করতে দেখেছে বলেও জানিয়েছে। এ ব্যাপারে শান্তাকে বহুবার নিষেধ করা হয়েছে। কিন্তু সে কোন কথা শোনেনি। এমনকি তার বাসার ঠিকানা পর্যন্ত আমাদের দিত না। বহু কষ্টে চাচাতো বোন হালিমার কাছ থেকে বাসার ঠিকানা সংগ্রহ করা হয়।
পুলিশ হেফাজতে দ্বীন ইসলাম ওরফে রেজা জানায়, ঘটনার দিন সন্ধ্যায় সে হালিমার সঙ্গে কথা বলে ডিআইটি রোড মালিবাগের লুমান গার্মেন্টসের সামনে থেকে সন্ধ্যা ৭টায় তাদের সিপাইবাগের বাসায় যায়। রাতে খাওয়া শেষে পাশের রুমে বৃষ্টিসহ সবাই রাত ১টা পর্যন্ত গল্প করে। রাতে সে শান্তা এবং চাচাতো বোন হালিমার কক্ষে ঘুমাতে যায়। পাশের রুমে ছিল বৃষ্টি নামের অপর একটি মেয়ে। রেজা জানায়, রাত ৩টায় শান্তা যখন গভীর ঘুমে তখন সে অন্ধকারে ছুরি দিয়ে শান্তাকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। এ সময় শান্তা চিৎকার দিলে জাপটে ধরে তার গলায় ছুরি চালিয়ে দেয়। পাশে ঘুমিয়ে থাকা হালিমা চিৎকার এবং ধস্তা-ধস্তির আওয়াজে জেগে উঠে চিৎকার দেয়। সে উঠে ঘরের লাইট জ্বালায়। রক্ত দেখে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। ওই অবস্থায় হালিমাকেও সে জবাই করে। পাশের কক্ষ থেকে বৃষ্টি এসে রক্ত দেখে চিৎকার শুরু করলে সে বৃষ্টিকেও ছুরিকাঘাত করে। ভোরে হাত-মুখ ধুয়ে পোশাক পরিবর্তন করে সে তার নয়াটোলার বাসায় চলে আসে।”
উপরে বর্ণিত প্রথম ঘটনার বিশ্লেষণে বলতে হয়, মোবাইল ফোনের ফাঁদে পড়া তরুণীরা মুসলমান হলেও তাদেরকে যদি বলা হত-
“ইসলামে পর-পুরুষের সাথে কথা বলা হারাম।”
“পর-পুরুষকে চেহারা দেখানো হারাম।”
বলাবাহুল্য, তারা সব একযোগে নাক সিঁটকাত এবং তারা তাদের সংস্কৃতির নামে,
প্রগতির নামে
ঐসব ইসলামের কথা উচ্চারণকারীদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করত,
তাদেরকে-
নারীদের ক্ষমতায়ন বিরোধী
নারীকে বন্দি রাখার ব্রতী বলে
তীব্র ক্ষোভে ফেটে পড়তো।
পর্দা পালনের বিপরীতে তারা বেছে নিয়েছিলো-
বেপর্দা, বেহায়াপনা,
লেট নাইট পার্টি,
গেট টুগেদার,
এক সাথে বারোটা প্রেম,
নীল বাতির রেস্টুরেন্ট, কনসার্ট, নৃত্যানুষ্ঠান মডেলিং, সুন্দরী প্রতিযোগিতা, হাজারো অশ্লীল টিভি চ্যানেল ইত্যাদি।
কিন্তু উপরোক্ত অনৈসলামিক কাজের কুফলে আজ গোটা সমাজ ক্ষত-বিক্ষত। উগ্র সংস্কৃতিবাদী মহল ছাড়া আজ মিডিয়া তথা সাহিত্যেও এসব সমস্যা-সঙ্কট নিয়ে বেশ খোলামেলাই আলোচনা হচ্ছে।
কিন্তু সবচেয়ে দুঃখজনক ব্যাপার হলো যে, কেউ চলতে চাইছেন না। সমাধানের পথে এমনকি যিনি চরম সমস্যায় ও গভীর সঙ্কটে নিপতিত তিনি সমাধানের পথটাও জানতে চাইছেন না।
এক্ষেত্রে সমস্যাগুলোকেই ফলাও করে প্রচার করে সেটাকেই জিইয়ে রাখার ক্ষেত্রে
যেমনি আগ্রহী মিডিয়া
তেমনি সাহিত্য
তেমনি পুঁজিবাদ।
তারা একদিকে মূল্যবোধের অবক্ষয় তৈরিও করবেন,
সেটা নিয়ে আলোচনাও করবেন
কিন্তু কার্যতঃ তারা সেটাকেই আঁকড়ে ধরে রাখতে চাইবেন এবং এর সমাধানের পথ ইসলামের কথা বললে তুমুল হৈচৈ এবং চরম বিরোধিতা করবেন।
কাজেই চক্রবৃদ্ধি হারে সুদের নির্মমতার কথা শুনে আমরা আর্দ্র হই কিন্তু নিজেরাই মিডিয়ার,
সংস্কৃতিবাদীদের বললে যে পুঁজিবাদীদের
চক্রবৃদ্ধিহারে প্রতারণার যে নির্মম শিকার হচ্ছি
এবং এ ব্যাপারে প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর উচ্চারণও এখন দুষ্কর
সে অনুভূতিটুকু এখন পর্যন্ত আমাদের মাঝে জাগ্রত হচ্ছে না।
ইসলাম পালন করলেই যে সামাজিক নিরাপত্তা একশ’ ভাগ হাছিল হয় সে কথাটা কোনো ফোরামে জোরদারভাবে আলোচিত হচ্ছে না।
আল্লাহ পাক তাই ইরশাদ করেন, “তোমরা যা ভাল মনে কর সেটাই মূলতঃ খারাপ এবং তোমরা যেটাকে খারাপ মনে কর সেটাই মূলতঃ ভাল।”
বলাবাহুল্য, মানুষ যখন ভাল পথ ছেড়ে খারাপ পথেই ধাবিত হয় তখন তার মাঝে আর মনুষ্যত্ব থাকে না। মানুষের পশুস্বভাব উসকে দেয়ার পথকে গ্রহণ করা যায় না।
(২২ মে/২০০৯ তারিখে দৈনিক আল ইহসান পত্রিকায় প্রকাশিত)
-মুহম্মদ তারীফুর রহমান
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি ও ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা-৫০