ইদানিংকালে ইহুদীরা মুসলমানদের মধ্যে ‘ঈদ সার্বজনীন উৎসব’- এ শ্লোগানের জোর প্রচারণা চালাচ্ছে। এর অর্থ হল কথিত ঈদ আনন্দ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, ইহুদী সবাই এক সাথে উপভোগ করবে। আর তারা যখন একসাথে এ আনন্দ উপভোগ করবে তখন আর কোনো শরীয়তী লাগাম থাকবে না। তারা নাচ-গান, সিনেমা, অশ্লীলতা, শরাব আর বেলেল্লাপনার উদ্যমতা নিয়েই তথাকথিত ঈদ আনন্দ উপভোগ করতে চাচ্ছে।
এর দ্বারা মূলতঃ মুসলমানদের পবিত্র ঈদ আনন্দের মধ্যে সার্বজনীনতার নামে, বিধর্মীদের শরীক রাখার নামে ঈদের মধ্যেও তাদের বিজাতীয় সংস্কৃতি ও অশ্লীলতা ঢুকিয়ে মুসলমানদের মধ্যে থেকে প্রকৃত ঈদের চেতনা উঠিয়ে দেয়ার গভীর ষড়যন্ত্রের বিস্তার করা হচ্ছে।
আজকাল তথাকথিত ফ্যাশন হাউজগুলো যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে, বিজাতীয় প্রায় বিবস্ত্র কায়দায় পোশাক বাজারজাত করছে। পত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা যায় যে, তারা ঢালিউড, বলিউড, হলিউড ইত্যাদির অনুকরণে সংক্ষিপ্ত ও পাতলা পোশাক বাজারজাত করছে। অথচ এটা হচ্ছে কিয়ামতের আলামত। কারণ হাদীছ শরীফ-এর ইরশাদ হয়েছে, “কিয়ামতের পূর্বে মেয়েরা এমন পোশাক পড়বে যে তাদের সবকিছুই দেখা যাবে।”
সংবাদ পাওয়া গেছে, ভারতের কুখ্যাত ইসলাম বিরোধী মহিলা ‘সানিয়া মির্জা’র নামেও বাজারে পাতলা ও সংক্ষিপ্ত পোশাক বিক্রি হচ্ছে। (নাঊযুবিল্লাহ)
অথচ ভারতেই মুম্বাইতে চিয়ার লিডার্সদের নামতে দেয়া হয়নি। তাদের পোশাক ও আচরণ ভারতীয় সংস্কৃতির বিরুদ্ধ বলে তাদেরকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
যদি তাই হয়ে থাকে, তাহলে মুসলমানদের জন্য কুরআন শরীফ-এ আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, “তোমরা জাহিলিয়াতের ন্যায় তোমাদের সৌন্দর্যকে প্রদর্শন করে চলো না।”
কুরআন শরীফ-এ আল্লাহ পাক আরো ইরশাদ করেন, “হে নবী! আপনি আপনার আহলিয়া ও কন্যাগণকে এবং মু’মিনদের স্ত্রীগণকে বলুন, তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দংশ নিজের উপর টেনে নেয়। এতে তাদের পর্দানশীন হিসেবে চেনা সহজ হবে। ফলে তাদের উত্যক্ত করা হবে না।” (সূরা আহযাব/৫৯)
উপরোক্ত আয়াত শরীফ-এর প্রেক্ষিতে বোঝা যায় মেয়েদের দৈহিক সৌন্দর্য প্রদর্শন করা সম্পূর্ণ হারাম ও কাট্টা কবীরাহ গুনাহ। আর মেয়েদের যদি বের হতে তাহলে তাদের দেহের পোশাক প্রদর্শন চলবে না। বরং দেহের পোশাকের উপরে আলাদা বড় চাদর জড়িয়ে বা বোরকা পড়ে বেরোতে হবে।
সেক্ষেত্রে এদেশের ফ্যাশন হাউজগুলো কথিত ফ্যাশনের নামে যেসব বিজাতীয় ও বেপর্দা পোশাক বাজারজাত করছে তা মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতির খিলাফ ।
সম্প্রতি বিবিসি পরিবেশিত এক খবরে বলা হয়েছে যে, উগান্ডায় মিনিস্কার্ট পড়া নিষিদ্ধ হচ্ছে। কারণ মিনিস্কার্ট পড়া মেয়েলোক দেখলে পুরুষরা উত্তেজিত হয়ে গাড়ি চালনা ভুল করে দুর্ঘটনা ঘটায়।
উগান্ডা কর্তৃপক্ষ দুনিয়াবী দৃষ্টিতে শুধু এটাই দেখেছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে মেয়েরা বেপর্দা পোশাকে চললে শয়তান পুরুষের দৃষ্টিতে তাকে লোভনীয় করে দেখায় এবং সে মেয়ের দ্বারা প্রতি মুর্হূতে লক্ষ কোটি ব্যাভিচারের গুনাহ করিয়ে দেয়। আর তাতে করে পুরো দেশ-জাতির মধ্যে নেমে আসে লা’নত।
উল্লেখ্য, দেশে হারাম সিনেমা সেন্সর করার জন্য একটা তথাকথিত সেন্সর বোর্ড রয়েছে। কিন্তু সিনেমা হয় ৩ ঘন্টার জন্য এবং তাতে সীমিত সংখ্যক লোক থাকে। তাদের পোশাক-আশাক চলাফেরা সেন্সর করার জন্যই যদি সেন্সর বোর্ড থাকে তাহলে বাকি ২৪ ঘণ্টা লক্ষ কোটি মেয়েলোক যে সংক্ষিপ্ত পোশাকে বেহায়ার মত চলাফেরা করছে তাদের পোশাক ও চলাফেলাও সেন্সর করার জন্যতো তাদের দুনিয়াবী দৃষ্টিতেই কথিত সেন্সর বোর্ড থাকা প্রয়োজন।
মূলতঃ এদেশে ফ্যাশন হাউজগুলো যে কায়দায়, যে ঢং-এ পোশাক বাজারজাত করছে এটা শতকরা ৯৫% মুসলমানের এদেশে কোনোমতেই মেনে নেয়া যায় না। এসব পোশাকের প্রচলন মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে তীব্র আঘাত স্বরূপ এবং মুসলমানদের ধর্ম অবমাননা করার শামিল।
বলাবাহুল্য, বর্তমান বেপর্দা বেহায়ার জন্য মূলতঃ ধর্মব্যবসায়ী উলামায়ে ‘ছূ’রাই দায়ী। কারণ কুরআন শরীফ-এ পর্দা ফরয হওয়ার পরও তারাই নারী নেত্রীদের সাথে হরদম দেখা-সাক্ষাত করছে, পাশাপাশি বসে মিটিং করছে এমনকি এক সাথে বসে হারাম ছবিও তুলছে। (নাঊযুবিল্লাহ)
এসব ধর্মব্যবসায়ীরা বর্তমানে ফ্যাশন হাউজগুলোর বেপর্দা-বেহায়ার বিরুদ্ধে কিছুই বলছে না। তারা সম্পূর্ণই নীরব ভূমিকা পালন করছে। হাদীছ শরীফ-এর ভাষায় তারা হলো বোবা শয়তান ও যমীনের উপর নিকৃষ্ট প্রাণী।
-মুহম্মদ ওয়ালীউর রহমান
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি ও ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা-৫০