সব প্রশংসা মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত দুরূদ ও সালাম।
অভিনব পন্থায় কোমল পানীয়ের বোতলের মধ্যে ফেনসিডিল তৈরির মাদক উপকরণ মিশিয়ে বাজারজাত করছে হালে গজিয়ে উঠা অনেক দুষ্টচক্র।
চক্রগুলি এনার্জি ড্রিংক ও বিভিন্ন আয়ুর্বেদিক শক্তি বর্ধক পানীয়ের মোড়কে নেশা উপকরণ মিশিয়ে বাজারজাত করছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে মাদকের বাজার ধরে রাখতে চক্রটি ফেনসিডিল ও এ ধরনের পানীয়ের মোড়কে বাজারজাত করছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, কোন প্রাতিষ্ঠানিক অনুমোদন ছাড়াই দেশের বিভিন্ন এলাকায় ভাড়া বাসায় কারখানা তৈরি করে মাদক মিশ্রিত এ সব পানীয় বোতলজাত করা হচ্ছে।
এভাবে কোমল পানীয়ের আড়ালে ভয়াবহ মাদকের বিস্তার ঘটছে সারা দেশে। জীবনী শক্তিবিনাশী এ মাদক শুধু সহজলভ্যই নয়, সস্তা দরে বিকোচ্ছে বিশেষ চক্র। ঠিকানাবিহীন কারখানায় চলছে অনুমোদনহীন ‘এনার্জি ড্রিংকস’ উৎপাদন। নানা উদ্দীপক নামের এ পানীয় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কথিত সাঁড়াশি অভিযানের মুখেও প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে। চিকিৎসক ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, হট ফিলিংস, ট্রিপল এক্স, ফাস্ট ফিলিংস, পাওয়ার, এনার্জি, হর্স পাওয়ার, হর্স ফিলিংস, সুপার পাওয়ার, ফাস্ট হর্স, ম্যান পাওয়ারসহ নানা নামের ‘এনার্জি ড্রিংকস‘ শরীরে ভয়াবহ ক্ষতির কারণ হতে পারে। আফিম থেকে উদ্ভূত উপাদানের মিশ্রণে তৈরি পানীয়গুলো দীর্ঘ মেয়াদে গ্রহণে স্নায়ুবিক দুর্বলতার পাশাপাশি চূড়ান্ত স্বাস্থ্যহানির আশঙ্কা রয়েছে।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, মুদি দোকান, জেনারেল স্টোরসহ বিভিন্ন স্থানে প্রচলিত অন্যান্য পানীয়র সঙ্গে থরে থরে সাজানো কথিত এসব এনার্জি ড্রিংকস।
মাত্র ৪৫ টাকা মূল্যের এনার্জি ড্রিংকস সেবনের পর শরীরে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। সাময়িক এ উত্তেজনার জন্যই পানীয়গুলো দেদার বিক্রি হচ্ছে বলে বিক্রেতাদের মত। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারি না থাকায় অলিগলিসহ অনেকটা প্রকাশ্যেই চলছে এ মাদক সেবন।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, এনার্জি ড্রিংকের নামে বাজারজাত করা পানীয়গুলোতে যে ‘অপিয়েটস‘ মিলছে, তা আফিম থেকে উদ্ভূত। অপিয়েটস হেরোইন, নেশার ইনজেকশনসহ বিভিন্ন ধরনের ভয়ংকর মাদকের মতোই ক্ষতিকর। আরেক উপাদান ‘সিলডেনাফিল সাইট্রেট‘ যৌন উত্তেজক হিসেবে কাজ করে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তরুণ প্রজন্মকে তাদের ব্র্যান্ডের এনার্জি ড্রিংকে আকৃষ্ট করতেই এসব ভয়ংকর মাদকের উপাদান ব্যবহার করা হচ্ছে। বাজার তৈরি করতেই প্রথম পর্যায়ে কম দামে তা বিক্রি করা হচ্ছে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ১৯৯০-এর ১৯/৩ ধারায় বলা হয়েছে, যদি কারো কাছে আফিম ও আফিম উদ্ভূত পণ্য পাওয়া যায় এবং তা যদি দুই কেজির বেশি হয় তবে তার শাস্তি হবে মৃত্যুদ- অথবা যাবজ্জীবন কারাদ-। আইনের এত কঠোর বিধান থাকার পরও অসৎ চক্রগুলি এনার্জি ড্রিংকের নামে আফিম মেশানো পণ্য উৎপাদন করছে।
মাদকের এ অভিনব ব্যবসার বিস্তার ঘটেছে মূলত গত বছরের গোড়ার দিকে। বিশেষ চক্র দেশের বিভিন্ন স্থানে কারখানা খুলে কথিত এনার্জি ড্রিংকস উৎপাদনের পাশাপাশি গ্রাম-গঞ্জে বাজারজাত করেছে।
এতে উঠতি বয়সের ছেলেরাসহ যুবকরাই বেশি আকৃষ্ট হচ্ছে। দেশে এভাবে একটা উপার্জনক্ষম কর্মশক্তি ধীরে ধীরে অচল হয়ে পড়ছে। জানা গেছে, পার্শ্ববর্তী একটি দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ নেশার দ্রব্য অবাধে প্রবেশ করিয়ে এদেশের উপার্জনক্ষম পুরুষ ও যুবশক্তিকে যড়যন্ত্রমূলকভাবে নষ্ট করে দেয়া হচ্ছে।
পর্যবেক্ষক মহল জানায়, ১৯৯০ সাল থেকে যদিও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর কাজ করছে, কিন্তু আইন প্রয়োগের অভাব এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের দুর্নীতিপরায়ণতার কারণে এদেশে মাদকের অপব্যবহার বাড়ছে। এক্ষেত্রে সরকারের ভূমিকা অন্ধ, বোবা আর বধিরের মতোই। উল্লেখ্য, সম্প্রতি একটি ফ্যাশনযুক্ত শ্লোগান উঠেছে, ‘মাদককে না বলো।’ অথচ কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ-এ মাদকের বিরুদ্ধে যা বলা আছে তার প্রচারে মুসলমানের অন্তরে এমনিতেই দাগ কাটার কথা।
মূলত মাদকের বিরুদ্ধে ইসলামী অনুভূতি ও প্রচার এক সময় জোরদার ছিল। কিন্তু ইদানীংকালে ধর্মব্যবসায়ীদের নিষ্ক্রিয়তা সে মূল্যবোধকে নিস্তেজ করে দিয়েছে। হালে মুজাদ্দিদে আ’যম হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার ক্বওল শরীফ ও উনার লেখনী সে অবলুপ্ত অনুভূতিতে জাগরণ তৈরি করছে। তবে এ ক্ষেত্রে বিশেষভাবে প্রণিধানযোগ্য যে, মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি শুধু তাত্ত্বিক ফতওয়াই দিচ্ছেন না; পাশাপাশি দিচ্ছেন মাদক থেকে বিরত হওয়ার বেমেছাল রূহানী কুওওয়াত। যা মাদকসেবীদের আনন্দের সাথেই মাদক থেকে বিরত রাখছে। মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সবাইকে মুজাদ্দিদে আ’যম হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার নেক ছায়াতলে কবুল করুন। (আমীন)
–মুহম্মদ তা’রীফুর রহমান
‘ইসলামের দৃষ্টিতে প্রাণীর ছবি তোলা, রাখা, আঁকা, দেখা হারাম’ মুজাদ্দিদে আ’যমের অনবদ্য তাজদীদ