ক্বদরে বাবা নাদানী, গারতু বাবা নাশাবী অর্থাৎ- “তুমি পিতা-মাতার ক্বদর হাক্বীক্বীভাবে ততক্ষণ পর্যন্ত বুঝবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত পিতা-মাতা না হবে।”
এ প্রসঙ্গে একটা ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে, সেটা হলো, এক লোক- তার মা রয়েছেন বৃদ্ধা। তার সন্তানও রয়েছে। তার সন্তানটা বাচ্চা, ছোট, কোলের শিশু। গ্রামে তার বাড়ী। গ্রামের বাড়ীতে সাধারণতঃ বাড়ীর সামনে উঠান থাকে। সেখানে সে একটা কাজ করছিল অর্থাৎ সেই বৃদ্ধা মহিলার ছেলেটা সেই বাড়ীর উঠানে কাজ করছিল। খুব প্রখর রোদ্র। যে রোদ্র সহ্য করা সাধারণ মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়, খুব কঠিন রোদ্র। এই রোদ্রে মানুষ সাধারণত ঘর থেকে বের হলেও যাতে ছায়া পাওয়া যায় সে ব্যবস্থা করেই বের হয়। কিন্তু সে সন্তানটা প্রখর রোদ্রের মধ্যে কাজ করছিল। তার মা এসে বার বার বলছিল যে, “দেখ বাবা! তুমি রোদ্রের মধ্যে কাজ করনা, খুব কঠিন রোদ্র, খুব প্রখর রোদ্র, এতে তোমার স্বাস্থ্যের ক্ষতি হবে।” ছেলেটা বার বার জবাব দিচ্ছিল যে, “কাজ প্রায় শেষ হয়ে গেছে আমি এখনই চলে আসতেছি।” একবার, দু’বার, তিনবার মা বললো। ছেলেও একই জবাব দিল। মা দেখলো, ছেলেতো কাজ শেষ না করে আসবেনা। তাকে বললে সে বলে, “এই তো কাজ শেষ হয়ে যাচ্ছে আমি এখনই আসতেছি।” তখন তার মা তাকে ব্যাপারটা বুঝানোর জন্য তার যে বাচ্চা শিশুটা ছিল অর্থাৎ কোলের শিশু যে বিছানায় শোয়া ছিল। সেই শিশুটাকে নিয়ে রোদ্রের মধ্যে শুইয়ে দিল। যখন শিশুটাকে রোদ্রের মধ্যে শুইয়ে দিল। তখন বাচ্চার বাবা তথা বৃদ্ধা মহিলার ছেলে তার বৃদ্ধা মাকে বললো, “আপনি এটা কি করলেন, একটা বাচ্চা ছেলেকে রোদ্রে শোয়ালেন, সে কি বরদাস্ত করতে পারবে?” এ কথা বলে সে তাড়াতাড়ি তার সন্তানটাকে রোদ্র থেকে নিয়ে ছায়ার মধ্যে রাখলো। বাড়ীর বিছানার মধ্যে রাখলো। তখন সেই বৃদ্ধা মহিলা, তার মাতা বললো, “দেখ বাবা! এই সন্তানটা যেমন তোমার কাছে ছোট, ঠিক তুমি আমার কাছে তদ্রুপই ছোট। তার কষ্টটা যেমন তোমার কাছে কষ্ট লেগেছে। ঠিক তোমার কষ্টটাও আমার কাছে কষ্টই লাগে। তুমি কিন্তু ব্যাপারটা বুঝতে পারনি এতক্ষণ পর্যন্ত। এখন তুমি বুঝতে পেরেছ, যেহেতু তোমার ছেলেকে আমি রোদ্রে দিয়েছি। কিন্তু এর আগে তুমি বুঝতে পারনি আমার কথাটা।” হাক্বীক্বত ব্যাপারটা ঠিক। (ক্বদরে বাবা নাদানী, গারতু বাবা নাশাবী) (ক্বদরে মাদর নাদানী, গারতু মাদর নাশাবী অর্থাৎ- “তুমি পিতা-মাতার ক্বদর হাক্বীক্বীভাবে ততক্ষণ পর্যন্ত বুঝবে না যতক্ষণ পর্যন্ত পিতা-মাতা না হবে।”
কাজেই পিতা-মাতার যে হক্ব রয়েছে, যে দায়িত্ব রয়েছে সন্তানের প্রতি, সে হক্বটা প্রত্যেক সন্তানের উচিত যথাযথ আদায় করা। অবশ্যই ভুল-ত্রুটি মানুষ মাত্রই হবে। শুধরিয়ে নিবে, তওবা করবে, ইস্তেগ্ফার করবে এবং পিতা-মাতার জন্য দোয়া করবে ও দান খয়রাত করবে।
মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সবাইকে পিতা-মাতার হক্ব আদায় করার তাওফীক দান করুন। আমীন।
-আহমদ মাশুক মারজান
প্রচলিত হারাম রছম করুন বর্জন, পবিত্র দ্বীন পালনেই কামিয়াবী অর্জন
ঈমানদীপ্ত সম্মানিত মহিলা হযরত আসমা বিনতে ইয়াযীদ রদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহা