সব প্রশংসা মুবারক খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য। যিনি সবকিছু ফায়সালার মালিক। সব ছলাত মুবারক ও সালাম মুবারক সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি। যিনি সবকিছুরই বণ্টনকারী।
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন, “তোমরা কাফির-মুশরিক তথা ইহুদী-নাছারা ও মুশরিকদেরকে অনুসরণ অনুকরণ করো না।”
খ্রিস্টান দুশ্চরিত্র ধর্মযাজক পোপ গ্রেগরির নামে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার হয়েছে, যা মুসলমানগণের জন্য অনুসরণ করা হারাম এবং এর ব্যবহার পরিত্যাজ্য।
উল্লেখ্য, গ্রেগরিয়ান বর্ষপঞ্জির মাধ্যমে অজান্তেই প্রতিদিন অনেক দেব-দেবীর নাম স্মরণ হয়। এই বর্ষপঞ্জির ৬টি মাসের নামকরণ করা হয়েছে দেব-দেবীর নামে (জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি, মার্চ, এপ্রিল, মে, জুন); ৪টি মাসের নামকরণ হয়েছে রোমান শব্দ থেকে (সেপ্টেম্বর, অক্টোবর, নভেম্বর, ডিসেম্বর); আর ২টি মাসের নামকরণ করা হয়েছে দুই কথিত রোমান সম্্রাটের স্মরণে (জুলাই, আগস্ট)। পাশাপাশি গ্রেগরিয়ান বর্ষপঞ্জিকার নাম দ্বারা দেব-দেবীর নাম এবং বিজাতীয় শব্দের ও বিধর্মী ব্যক্তিত্বের স্মরণ করা হয়। নাঊযুবিল্লাহ!
সোজা ভাষায়- গ্রেগরিকে মনে রাখার জন্যই তার নামে এই গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার। কিন্তু মনে রাখবো কেন? সে কি এই ক্যালেন্ডারের রচয়িতা? মোটেও না। সে কি জুলিয়ান ক্যালেন্ডারের সংশোধনকারী? না, তাও না। সে কি মহাকাশ বা ভূগোলবিদ? না, তাও না। তাহলে? আসলে সে ছিল সেই সময়কার কেবলমাত্র একজন দুশ্চরিত্র ধর্মযাজক।
অধিকাংশ মানুষই এই গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের নেপথ্য ইতিহাস জানে না। গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের প্রথম রচয়িতা হচ্ছে এলয়সিয়াস লুলিয়াস; যে লুইজি লিলিও নামেও পরিচিত। সে ছিল একজন ইটালিয়ান ডাক্তার ও এস্ট্রোনমার। লুইজি লিলিও’র ভাই এন্থোনিও প্রথম তার ক্যালেন্ডারের সংশোধিত ম্যানুস্ক্রিপ্টটি পোপ গ্রেগরির কাছে হস্তান্তর করে ১৫৭৫ সালে। লুইজি লিলিও মারা যায় ১৫৭৬ সালে এবং তার মারা যাওয়ার ৬ বছর পর ১৫৮২ সালে এই ক্যালেন্ডার গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার নামে আত্মপ্রকাশ করে। বোঝাই যাচ্ছে, কেবল ক্ষমতার কারণেই গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের মূল রচয়িতা ইতিহাস থেকে হারিয়ে গেছে। অথচ এই পোপ গ্রেগরিকে স্মরণের মধ্যে মুসলমান উনাদের কোনো কল্যাণ নেই, রহমত নেই, বরকত নেই, মর্যাদা নেই।
কিন্তু আত-তাকউইমুশ্ শামসী রচনাই করা হয়েছে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে স্মরণে রেখে দিন-মাসসহ বছরের হিসাব গণনা করার জন্য। সুবহানাল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ১১তম হিজরী সনের পবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ মাস উনার ১২ই শরীফ তারিখে পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। আর সে বছরের সেই পবিত্র মাসের প্রথম তারিখ হচ্ছে আত-তাকউইমুশ শামসী সনের শূন্য বছর, প্রথম মাস ও প্রথম তারিখ। আর এই স্মরণের মধ্যে রয়েছে রহমত, বরকত ও কল্যাণ যার দলীল রয়েছে পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ এবং পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মাঝে।
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মাঝে ইরশাদ মুবারক হয়েছে- “যেখানে মহান আল্লাহ পাক উনার ওলীগণ উনাদের আলোচনা হয়, সেখানে মহান আল্লাহ পাক উনার রহমত বর্ষিত হয়।”
তাহলে এই আত-তাকউইমুশ শামসী সনের যিনি রচয়িতা তিনি হচ্ছেন- মহান আল্লাহ পাক উনার খালিছ ওলী, খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, খলীফাতুল উমাম সাইয়্যিদুনা হযরত শাহযাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম। তাহলে এই শামসী সন যিনি রচনা করেছেন, উনাকে নিয়ে আলোচনার এবং যিনি সকল শান- মান, রহমত-বরকত উনার মালিক- নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার স্মরণের মাধ্যমে রহমত, বরকত ও সাকীনা হাছিলের উপজীব্য রয়েছে এই আত-তাকউইমুশ শামসী সনের মধ্যে। তাহলে কেন মুসলমানগণ রহমত হাছিলের পথ ছেড়ে জহমত হাছিলের পথ ধরবে? অর্থাৎ কেন শামসী সন বাদ দিয়ে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসরণ করবে? নিদেনপক্ষে যখন জানা ছিল না, তখন ভিন্ন কথা। কিন্তু জানার পরেও কেন থাকবে আমাদের অবহেলা আর উদাসীনতা?
মহান আল্লাহ পাক তিনি যেন আমাদের এই আত-তাকউইমুশ শামসী সন অনুসরণ করার এবং কাফিরদের রচিত এবং কাফিরদের নামে রচিত গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার পরিহার করার সর্বোচ্চ তওফীক দান করেন। কারণ আত-তাকউইমুশ্ শামসী সন অনুসরণের মধ্যেই রয়েছে রহমত, বরকত ও সাকীনা। আমীন।
-আল হিলাল
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি ও ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা-৫০