-আল্লামা আবুল বাশার মুহম্মদ রুহুল
বর্তমান সংখ্যার আলোচনা
ইহুদীদের মদদপুষ্ট হয়ে এবং সউদী ওহাবী শাসকগোষ্ঠীর অর্থে সাহায্যপ্রাপ্ত হয়ে সারাবিশ্বে একটি
হিজরী ক্যালেন্ডার অনুসরণের অলীক স্বপ্ন নিয়ে একটি ভুঁইফোঁড় সংগঠন সারা দেশে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।
‘জবধষ ঐরুৎর ঈধষবহফধৎ ওসঢ়ষবসবহঃধঃরড়হ ঈড়ঁহপরষ ইধহমষধফবংয’ নামে এই সংগঠনটি সারা বিশ্বে একটি হিজরী ক্যালেন্ডার অনুসরণের পক্ষে অর্থাৎ সারা বিশ্বে একদিনে ঈদ পালন করার পক্ষে নানা প্রচারণা চালাচ্ছে এবং এ সম্পর্কে ৯০টি খোঁড়া যুক্তি দাঁড় করিয়েছে। আমরা ধারাবাহিকভাবে তাদের বর্ণিত শরীয়তের খিলাফ এই মনগড়া যুক্তির শরীয়তসম্মত এবং সঠিক মতামত প্রকাশ করবো ইনশাআল্লাহ। যেন সাধারণ মুসলমানগণ চাঁদের তারিখ নিয়ে বিভ্রান্তিতে না পড়ে। তারা লিখেছে-
৪৫ নম্বর মত: কোন হাদীছ শরীফ উল্লেখ নেই যে রোযার হাদীছ শরীফ দ্বারা আরবী ১২ মাসের তারিখ গণনা করতে হবে। একইভাবে চাঁদের মাস নির্ধারণ করতে হবে জ্ঞানের মাধ্যমে নতুন চাঁদ দেখে।
৪৫ নম্বর মতের জাওয়াব: নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি চাঁদ দেখে রোযা রাখা এবং চাঁদ দেখে ঈদ পালন করার ব্যাপারে যে হাদীছ শরীফ বর্ণনা করেছেন এখানে সেই হাদীছ শরীফকেই ছওমের হাদীছ শরীফ বোঝানো হয়েছে। আমরা জানি পবিত্র কুরআন শরীফ-এ যে বিষয়গুলো হারাম তা স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে এবং যে বিষয়গুলো হালাল তাও স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে, সুতরাং যে বিষয়গুলো হারাম ও হালাল হিসেবে উল্লেখ নেই সেগুলোই মুবাহ-এর অন্তর্ভুক্ত। একইভাবে একটি হাদীছ শরীফ দ্বারা অনেক অর্থ বোঝানো হয়ে থাকে। ছওমের হাদীছ শরীফ দ্বারা অন্য মাস নির্ধারণ করা যাবে না সেরকম কোন হাদীছ শরীফ কি তারা দেখাতে পারবে? কস্মিনকালেও না। সুতরাং এই হাদীছ শরীফ শুধু রোযা বা ঈদ পালনের জন্য নয় বরং প্রতিটি আরবী মাসই চাঁদ দেখে শুরু করতে হবে তার স্পষ্ট নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। যেহেতু তথাকথিত ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক কোন মহান ওলীআল্লাহ উনার ছোহবত লাভে ধন্য হয়নি এবং ফায়েজ-তাওয়াজ্জুহ হাছিলেও ধন্য হয়নি তাই কুরআন শরীফ এবং হাদীছ শরীফ-এর সঠিক মর্মার্থ তার কাছে প্রকাশিত হয়নি। ফলশ্রুতিতে, এরকম পাগলের প্রলাপ বকে যাচ্ছে।
হিলাল বা বাঁকা চাঁদ দেখে মাস নির্ধারণের কথা কুরআন শরীফ-এও স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে। আর ছওমের হাদীছ শরীফ ছাড়াও আরো অনেক হাদীছ শরীফ রয়েছে মাস গণনার উপর। সুতরাং জ্ঞানের চোখে চাঁদ দেখে মাস শুরুর কথা বলার অর্থ হচ্ছে নতুন শরীয়ত জারী করা। নাঊযুবিল্লাহ। আর এই দলটাই আজ সারা পৃথিবীতে হাদীছ শরীফ-এ বর্ণিত নিয়মে মাস গণনা না করে বানানো পদ্ধতিতে মাস শুরু করে সারা পৃথিবীতে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে যাচ্ছে। সউদী ওহাবী সরকারের অর্থায়নে এবং সরাসরি মদদে এবং নেপথ্যে ইহুদীদের প্ররোচনায় এই মত পথের সৃষ্টি হয়েছে।
৪৬ নম্বর মত: এই বিশ্বে কোন কিছুই স্থির নয়। সবকিছুই মহান আল্লাহ পাক প্রদত্ত একটি নির্দিষ্ট নিয়মে ঘূর্ণায়মান।
৪৬ নম্বর মতের জাওয়াব: এই বিশ্বের সকল কিছুই ঘূর্ণায়মান এটা তথাকথিত ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হকের কথায় আমাদের বিশ্বাস করার প্রয়োজন নেই বরং আমরা এ কারণেই বিশ্বাস করি, যেহেতু মহান আল্লাহ পাক তিনি তা কুরআন শরীফ-এ উল্লেখ করেছেন। কিন্তু শুধু এতটুকু বুঝলেই আবার যথার্থ নয়। পৃথিবী এবং চাঁদ গোলাকার পথে ঘুরছে না উপবৃত্তাকার পথে ঘুরছে, এই ঘূর্ণনের গতি সম না অসম, পৃথিবী থেকে চাঁদের দূরত্ব কম-বেশি হওয়া, সূর্য থেকে পৃথিবী ও চাঁদের দূরত্ব কম-বেশি হওয়া এসব বিষয়গুলোও চাঁদ দেখার সাথে সম্পর্কিত। যদি পৃথিবী এবং চাঁদ গোলাকার পথে ঘুরতো তাহলে প্রতি মাসে একটি নির্দিষ্ট স্থানে প্রথম চাঁদ দেখা যেতো কিন্তু যেহেতু এই ঘূর্ণায়মান উপবৃত্তাকার পথে আবার কিছুটা বাঁকাভাবে তাই এটা নিশ্চিত নয় কখন কোথায় প্রথম চাঁদ দৃশ্যমান হবে।
বিশ্বের জন্য ১৪৩৩ হিজরীর পবিত্র রবীউছ
ছানী মাসের চাঁদের রিপোর্ট
জিরো মুন (অমাবস্যা) সংঘটিত হবে ২১ ফেব্রুয়ারি-২০১২, মঙ্গলবার, রাত ১০টা ৩৫ মিনিটে। {আত-তাক্বউইমুশ শামসি ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, ২৩, তাসি’, ১৩৭৯, ছুলাছায়ি} (আন্তর্জাতিক সময় অনুযায়ী)।
অমাবস্যার দিন অর্থাৎ ২১ ফেব্রুয়ারী ২০১২, মঙ্গলবার, সউদী আরবে পবিত্র রবীউছ ছানী মাসের চাঁদ দেখা যাবার কোন সম্ভাবনা নেই।
বাংলাদেশের জন্য ১৪৩৩ হিজরীর পবিত্র রবীউছ
ছানী মাসের চাঁদের রিপোর্ট
বাংলাদেশের স্থানীয় সময় অনুযায়ী জিরো মুন (অমাবস্যা) সংঘটিত হবে ২২ ফেব্রুয়ারি-২০১২, বুধবার, ভোর ৪টা ৩৫ মিনিটে।
বাংলাদেশে পবিত্র রবীউছ ছানী মাসের চাঁদ তালাশ করতে হবে ২২শে ফেব্রুয়ারি-২০১২, বুধবার (২৪শে তাসি’-১৩৭৯, আরবিয়ায়ি) সন্ধ্যায়।
সেদিন ঢাকায় সূর্যাস্ত ৫টা ৫৮ মিনিটে এবং চন্দ্রাস্ত ৬টা ২৪ মিনিটে। অর্থাৎ সূর্যাস্ত এবং চন্দ্রাস্তের সময়ের পার্থক্য ২৬ মিনিট। সূর্যাস্তের সময় চাঁদ দিগন্তরেখার প্রায় ৫.৪৮ ডিগ্রী উপরে অবস্থান করবে এবং সূর্য থাকবে ২৫৯ ডিগ্রি আজিমাতে। আর চাঁদ খুঁজতে হবে ২৬৪ ডিগ্রি আজিমাতে। সেদিন চাঁদ দেখার সম্ভাবনা নেই।
বিৃটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে বিৃটিশ ভূমিকা-১৯