-আল্লামা আবুল বাশার মুহম্মদ রুহুল
বর্তমান সংখ্যার আলোচনা
‘Real Hizri Calendar Implementation Council Bangladesh’ নামে এই সংগঠনটি সারা বিশ্বে একটি হিজরী ক্যালেন্ডার অনুসরণের পক্ষে অর্থাৎ সারা বিশ্বে একদিনে ঈদ পালন করার পক্ষে নানা প্রচারণা চালাচ্ছে এবং এ সম্পর্কে ৯০টি খোঁড়া যুক্তি দাঁড় করিয়েছে। আমরা ধারাবাহিকভাবে তাদের বর্ণিত শরীয়তের খিলাফ এই মনগড়া যুক্তির শরীয়তসম্মত এবং সঠিক মতামত প্রকাশ করবো ইনশাআল্লাহ। যেন সাধারণ মুসলমানগণ চাঁদের তারিখ নিয়ে বিভ্রান্তিতে না পড়ে। তারা লিখেছে-
(পূর্ব প্রকাশিতের পর)
৩৯ নম্বর মতামত: কুরআন শরীফ বাদ দিয়ে সিয়াম (রোযা) সংক্রান্ত হাদীছ শরীফ দিয়ে ১২ মাস গণনা করা হচ্ছে শরীয়তকে অমান্য করা।
৩৯ নম্বর মতামতের জবাব: হাদীছ শরীফ হচ্ছে পবিত্র কুরআন শরীফ-এর ব্যাখ্যা। হাদীছ শরীফও ওহীর অন্তর্ভুক্ত। কুরআন শরীফ হচ্ছে ওহীয়ে মতলু এবং হাদীছ শরীফ হচ্ছে ওহীয়ে গায়রে মতলু। হাদীছ শরীফ-এর অনুসরণ হচ্ছে কুরআন শরীফ-এর অনুসরণ। কুরআন শরীফ-এ এমন অনেক বিষয় রয়েছে স্পষ্ট তারপরেও বিস্তারিত ব্যাখ্যা হিসেবে হাদীছ শরীফ রয়েছে আবার অনেক বিষয় রয়েছে হিকমতপূর্ণ তারও ব্যাখ্যা হিসেবে হাদীছ শরীফ রয়েছে। চাঁদ অনুযায়ী মাস গণনার বিষয়ে কুরআন শরীফ-এ যা রয়েছে তার ব্যাখ্যা মানুষের জন্য জটিল হতে পারে বলে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উম্মতকে দয়া এবং ইহসান করে চাঁদ দেখে মাস শুরুর বিষয়ে হাদীছ শরীফ বর্ণনা করেছেন। হাদীছ শরীফ বর্ণিত হয়েছে মূলত কুরআন শরীফ-এর সঠিক অনুসরণের জন্য। সিয়াম সংক্রান্ত হাদীছ শরীফ মূলত উম্মতের জন্য এক বিরাট ইহসান।
অথচ এই তথাকথিত ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক অত্যন্ত বেয়াদব, বেআক্কেল জাহিল। কারণ তার মন্তব্য বিশ্লেষণ করলে পাওয়া যায় যে, হাদীছ শরীফ-এ কুরআন শরীফ-এর বিপরীত মত প্রকাশ করা হয়েছে। নাঊযুবিল্লাহ! তা না হলে সে কী করে বলে সিয়াম সংক্রান্ত হাদীছ শরীফ অনুসরণ করে ১২ মাস গণনা করলে তা কুরআন শরীফ-এর অনুসরণ হবে না? অথচ সঠিক উত্তর হচ্ছে সিয়ামের হাদীছ শরীফ-এর মধ্যে আরবী মাস শুরু করার, শেষ করার, মাসের মোট দিন গণনা করার সকল উত্তর সন্নিবেশিত আছে। সুবহানাল্লাহ!
৪০ নম্বর মতামত: যিনি আমাদের সৃষ্টি করেছেন তিনিই শুধু আমাদের আদেশ দিবেন এবং (আল্লাহ পাক) তিনি একমাত্র আইন প্রণয়নকারী।
৪০ নম্বর মতামতের জবাব: প্রকৃতপক্ষে এই মতের মধ্যেই এই তথাকথিত ইঞ্জিনিয়াসহ পুরো গোষ্ঠীর হাক্বীক্বত প্রকাশ পেয়েছে। এরা শুধু আল্লাহ পাক উনাকেই অনুসরণ করার পক্ষে, তারা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অনুসরণের পক্ষে নয়।
অথচ মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, “সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তোমাদের নিকট যা নিয়ে এসেছেন বা যা আদেশ করেন তা তোমরা গ্রহণ করো বা পালন করো এবং তোমাদেরকে যা থেকে বিরত থাকতে বলেন বা নিষেধ করেন তা থেকে তোমরা বিরত থাক। এক্ষেত্রে আল্লাহ পাক উনাকে ভয় কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক তিনি কঠিন শাস্তিদাতা। (সূরা হাশর: আয়াত শরীফ ৭)
হাদীছ শরীফ-এ বর্ণিত রয়েছে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, “মহান আল্লাহ পাক তিনি হচ্ছেন দাতা, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হচ্ছেন বণ্টনকারী।”
শুধু তাই নয়, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজেই শরীয়ত প্রণেতা। তাহলে যারা বলবে শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনিই আদেশ দিবেন আর তিনিই শুধু আইন প্রণয়নকারী এর অর্থ পরিপূর্ণভাবে রিসালতকে অস্বীকার করা। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অস্বীকার করা। আর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অস্বীকারকারীরা চরম পর্যায়ের কাফির এবং ক্ষতিগ্রস্ত।
জিরো মুন (অমাবস্যা) সংঘটিত হবে ২৭ অক্টোবর, ২০১১, বৃহস্পতিবার, সন্ধ্যা ৭টা ৫৬ মিনিটে (আন্তর্জাতিক সময় অনুযায়ী)।
অমাবস্যার দিন অর্থাৎ ২৭ অক্টোবর, ২০১১, বৃহস্পতিবার সউদী আরবে পবিত্র যিলহজ্জ মাসের চাঁদ দেখা যাবার কোন সম্ভাবনা নেই।
বাংলাদেশের স্থানীয় সময় অনুযায়ী জিরো মুন (অমাবস্যা) সংঘটিত হবে ২৮ অক্টোবর, ২০১১, শুক্রবার রাত ১টা ৫৬ মিনিটে।
বাংলাদেশে পবিত্র যিলহজ্জ মাসের চাঁদ তালাশ করতে হবে ২৮ অক্টোবর, ২০১১, শুক্রবার সন্ধ্যায়।
সেদিন ঢাকায় সূর্যাস্ত ৫টা ২৩ মিনিটে এবং চন্দ্রাস্ত ৬টা ৩৬ মিনিটে। অর্থাৎ সূর্যাস্ত এবং চন্দ্রাস্তের সময়ের পার্থক্য ১ ঘণ্টা ১৪ মিনিট। সূর্যাস্তের সময় চাঁদ দিগন্তরেখার প্রায় ১৪.৫ ডিগ্রী উপরে অবস্থান করবে এবং চাঁদ খুঁজতে হবে ২৩৮ ডিগ্রী আজিমাতে। সেদিন চাঁদ দেখার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে।
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি ও ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা-৫০