বর্তমান সংখ্যার আলোচনা: ইহুদীদের মদদপুষ্ট হয়ে এবং সউদী ওহাবী শাসকগোষ্ঠীর অর্থে সাহায্যপ্রাপ্ত হয়ে সারা বিশ্বে একটি হিজরী ক্যালেন্ডার অনুসরণের অলিক স্বপ্ন নিয়ে একটি ভূঁইফোড় সংগঠন সারা দেশে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।
জবধষ ঐরুৎর ঈধষবহফধৎ ওসঢ়ষবসবহঃধঃরড়হ ঈড়ঁহপরষ ইধহমষধফবংয নামে এই সংগঠনটি সারা বিশ্বে একটি হিজরী ক্যালেন্ডার অনুসরণের পক্ষে নানা প্রচারণা চালাচ্ছে। সারা বিশ্বে একটি হিজরী ক্যালেন্ডার অনুসরণের পক্ষে (অর্থাৎ সারা বিশ্বে একদিনে ঈদ পালন করার পক্ষে) তারা ৯০টি খোঁড়া যুক্তি দাঁড় করিয়েছে। আমরা ধারাবাহিকভাবে তাদের বর্ণিত শরীয়তের খিলাফ এই মনগড়া যুক্তির শরীয়তসম্মত এবং সঠিক মতামত প্রকাশ করবো ইনশাআল্লাহ। যেন সাধারণ মুসলমানগণ চাঁদের তারিখ নিয়ে বিভ্রান্তিতে না পড়ে। তারা লিখেছে-
পূর্ব প্রকাশিতের পর
১৩। প্রায় সব মাযহাবই বলে, কোন দেশের সীমান্ত অথবা মাতলা নতুন চাঁদ দেখার জন্য কোন পূর্ব শর্ত নয়। কেননা মহান আল্লাহ পাক এবং উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এটাকে স্বীকৃতি দেননি।
১৪। পৃথিবী সূর্যের চারদিকে ঘুরছে এবং চাঁদ পৃথিবীর চারদিকে ঘুরছে। তারা (সূর্য, পৃথিবী ও চাঁদ) একইভাবে ঘুরেনা বা সরে যায় না। ফলে তাদের গতির গণনা সম্পূর্ণ ভিন্ন।
১৩নং প্রশ্নের জবাবে প্রথমেই বলতে হয়, সকল মাযহাব সৃষ্টি হয়েছে কুরআন শরীফ এবং হাদীছ শরীফ-এর আলোকে। কোন মনগড়া ব্যাখ্যা অনুযায়ী মাযহাব সৃষ্টি হয়নি। ফলে মাযহাব নিয়ে মিথ্যাচার করা প্রকারান্তরে কুরআন শরীফ এবং হাদীছ শরীফ নিয়ে মিথ্যাচার করার শামিল। বিষয়টি এখানে যেভাবে উল্লেখ করা হয়েছে কোন মাযহাবে এ বিষয়টিকে এভাবে ব্যাখ্যা করা হয়নি। এখানে বর্ণনার মাঝে স্পষ্ট ধরা পড়ে বর্ণনাকারীর চাঁদ ও তার উদয়স্থল (মাতলা) নিয়ে স্পষ্ট কোন ধারণা নেই। অথচ মাযহাবের বর্ণনা হয় স্পষ্ট, নিখুঁত, হিকমতপূর্ণ।
বর্ণনায় বলা হয়েছে, কোন দেশের সীমান্ত অথবা মাতলা নতুন চাঁদ দেখার জন্য কোন পূর্ব শর্ত নয়। প্রকৃতপক্ষে সীমান্ত এবং মাতলা দুটো ভিন্ন বিষয়। সীমান্তের সাথে চাঁদ দৃশ্যমান হওয়ার কোন সম্পর্ক নেই। কিন্তু মাতলার সাথে নতুন চাঁদ দেখার সম্পর্ক রয়েছে। আর অবশ্যই কোন মাতলা কোন ভৌগোলিক সীমারেখার মধ্যে আবদ্ধ নয়। উদাহরণ স্বরূপ বলা যেতে পারে কেউ যদি তেঁতুলিয়ার সীমান্তে দাঁড়িয়ে চাঁদ দেখতে পায় তবে সে দেখা অনুযায়ী সারা বাংলাদেশে নতুন আরবী মাস শুরু হবে। কিন্তু সেই মাতলা বা দিগন্ত রেখা হয়তো বহুদূরে ভারতের কোন এলাকা। চাঁদ দেখার জন্য সীমান্তের বিষয়টি আসেনি, এসেছে মাতলার বিষয় আর সাধারণত মাতলা হচ্ছে দুই প্রকার। ১. ওয়াহদাতাল মাতলা (এক উদয়স্থল) ২. ইখতিলাফুল মাতলা (ভিন্ন উদয়স্থল।
হানাফী মাযহাব অনুযায়ী কোন স্থান থেকে চাঁদ দৃশ্যমান হলে তার চতুর্দিকে ৪৮০ মাইল ব্যাপী অঞ্চলের সকল অধিবাসীগণ সেই চাঁদ দেখার হুকুমের মধ্যে পড়বে এবং নতুন আরবী মাস শুরু করবে। এই ৫০০ মাইল একটি নির্দিষ্ট ভৌগোলিক সীমারেখার মধ্যে হতে পারে আবার তা ছাড়িয়েও যেতে পারে। খিলাফত ব্যবস্থা থাকলে এর সহজ সমাধান দেয়া যেতো।
১৪নং প্রশ্নের জবাব: অবশ্যই পৃথিবী, চাঁদ তার নিজস্ব কক্ষপথে ঘূর্ণায়মান। আর সূর্য তার নিজ অক্ষে সচল। চাঁদ দৃশ্যমান হবার জন্যে পৃথিবীর চতুর্দিকে চাঁদ কোথায় অবস্থান করে, পৃথিবীর কতটা কাছ দিয়ে বা দূর দিয়ে প্রদক্ষিণ করে এ বিষয়গুলো গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এখানে এই আলোচনা দ্বারা তথাকথিত ইঞ্জিনিয়ার কি বোঝাতে চেয়েছে তা স্পষ্ট নয়।
বিশ্বের জন্য ১৪৩১ হিজরীর পবিত্র রজব
মাসের চাঁদের রিপোর্ট
জিরো মুন (অমাবস্যা) সংঘটিত হবে ১২ই জুন, ২০১০, শনিবার, সকাল ১১টা ১৫ মিনিটে (আন্তর্জাতিক সময় অনুযায়ী)।
অমাবস্যার দিন সউদী আরবে পবিত্র রজব মাসের চাঁদ দেখা যাবার কোন সম্ভাবনা নেই।
বাংলাদেশের জন্য ১৪৩১ হিজরীর পবিত্র
রজব মাসের চাঁদের রিপোর্ট
বাংলাদেশের স্থানীয় সময় অনুযায়ী জিরো মুন (অমাবস্যা) সংঘটিত হবে ১২ই জুন, ২০১০, শনিবার বিকাল ৭টা ১৫ মিনিটে।
বাংলাদেশে পবিত্র রজব মাসের চাঁদ তালাশ করতে হবে ১৩ই জুন, ২০১০, রবিবার সন্ধ্যায়।
সেদিন ঢাকায় সূর্যাস্ত ৬টা ৪৬ মিনিটে এবং চন্দ্রাস্ত ৭টা ৪৬ মিনিটে। অর্থাৎ সূর্যাস্ত এবং চন্দ্রাস্তের সময়ের পার্থক্য ৬০ মিনিট। সূর্যাস্তের সময় চাঁদ দিগন্তরেখার প্রায় ১২ ডিগ্রি উপরে অবস্থান করবে এবং চাঁদ খুঁজতে হবে ২৯০ ডিগ্রি আজিমাতে। সেদিন চাঁদ দেখার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে।
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি ও ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা-৫০