চাঁদ দেখা ও নতুন চন্দ্রতারিখ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-২৭

সংখ্যা: ১৮৬তম সংখ্যা | বিভাগ:

-আল্লামা আবুল বাশার মুহম্মদ রুহুল হাসান

বর্তমান সংখ্যার আলোচনা: কেন অমাবস্যা অনুযায়ী নতুন আরবী মাস শুরু করা যায় না?

 আমরা দু’ভাবে বিষয়টিকে ব্যাখ্যা করতে পারি। প্রথমত শরীয়ত অনুযায়ী, দ্বিতীয়ত বৈজ্ঞানিক যুক্তির মাধ্যমে। মহান আল্লাহ পাক সূরা বাক্বারা-এর ১৮৯ নম্বর আয়াত শরীফ-এ ইরশাদ করেন, যারা আপনাকে (নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বাঁকা চাঁদ বা হিলাল সম্পর্কে প্রশ্ন করে, আপনি বলুন, এটি মানুষের জন্য সময় নির্ধারণ ও হজ্জের  সময় ঠিক করার মাধ্যম। এই আয়াত শরীফ-এ মহান আল্লাহ পাক স্পষ্ট বাঁকা চাঁদ বা হিলালকে সময় নির্ধারণের মাধ্যম বলেছেন, চাঁদের অন্য কোন অবস্থাকে নয়।

 হাদীছ শরীফ হচ্ছে কুরআন শরীফ-এর আয়াতে কারীমার ব্যাখ্যা। নবীদের নবী, রসূলদের রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাদীছ শরীফ-এ স্পষ্ট ইরশাদ করেন “তোমরা চাঁদ দেখে রোযা শুরু কর এবং চাঁদ দেখে ঈদ কর।” তাহলে কুরআন শরীফ এবং হাদীছ শরীফ-এ স্পষ্ট বাঁকা চাঁদ বা হিলালকে মাস গণনা বা সময় নিরূপন করার শর্ত করা হয়েছে। অথচ অমাবস্যা হচ্ছে চাঁদের এমন একটি অবস্থা যখন চাঁদ দৃশ্যমান হয় না। অমাবস্যায় চাঁদ পৃথিবীর আড়ালে থাকে এবং তা সম্পূর্ণ অন্ধকার বলে পৃথিবী থেকে দেখা যায় না। সুতরাং যে চাঁদ দৃশ্যমান নয় সে চাঁদ অনুযায়ী কখনো মাস গণনা শুরু হতে পারে না।

মূলতঃ নবীদের নবী, রসূলদের রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মদীনা শরীফ-এ হিযরতের পূর্বে মদীনা শরীফবাসী ইহুদীরা অমাবস্যা অনুযায়ী মাস গণনা করতো। কিন্তু ওহীর মাধ্যমে ফায়সালা হয়ে যাবার পর থেকে বাঁকা চাঁদ দেখেই মাস গণনা শুরু হয়ে যায় এবং যা কিয়ামত পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। প্রকৃতপক্ষে বাঁকা চাঁদ দেখে মাস গণনা শুরু নিয়ে মুসলমানদের মধ্যে কখনোই কোন মতভেদ ছিল না। সউদী আরবে ইহুদী বংশোদ্ভূত ওহাবী সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই মুসলমানদের মধ্যে অমাবস্যা অনুযায়ী মাস গণনার এক নতুন ফিৎনার অনুপ্রবেশ ঘটে।

এবার বৈজ্ঞানিক যুক্তির মাধ্যমে আমরা প্রমাণ করবো অমাবস্যা অনুযায়ী আরবী মাস শুরু করার বিষয়টি অবান্তর এবং অসম্ভব।

আমরা জানি শরীয়তে দিন শুরু হয় সন্ধ্যার পর থেকে। পৃথিবীর কোথাও প্রথম চাঁদ দৃশ্যমান হবার পর থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পৃথিবীর অধিকাংশ অঞ্চলে (উচু অক্ষাংশের কিছু দেশ ছাড়া) চাঁদ দৃশ্যমান হয়। যে দেশেই চাঁদ দৃশ্যমান হোক না কেন তা কিন্তু সে দেশের সন্ধ্যার পরেই দৃশ্যমান হয়। ফলে চাঁদ দেখা যাক বা না যাক দিনটি পরিবর্তিত হয় সন্ধ্যার পর থেকে। কিন্তু অমাবস্যা ২৪ ঘণ্টার যে কোন সময়ে সংঘটিত হতে পারে। অমাবস্যা সংঘটিত হবার সময় পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন সময় হয়ে থাকে ফলে দিনটি পরিবর্তনের নির্দিষ্ট কোন সময় পাওয়া যায় না। তবে কেউ যদি দাবি করে যে মক্কা শরীফ-এ অমাবস্যা সংঘটিত হওয়ার সময় অনুযায়ী দিন পরিবর্তিত হবে তাও অবান্তর এবং হাস্যকর। একটি উদাহরণ দিলে বিষয়টি স্পষ্ট হবে।

ধরে নেই মক্কা শরীফ-এর সময় অনুযায়ী কোন এক সোমবার দিবসে রাত ১টায় অমাবস্যা সংঘটিত হলো। সেই সময় আমেরিকার হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জে রবিবার দুপুুর ২টা। মক্কা শরীফ-এ যদি সন্ধ্যা হয় ৬টায় তাহলে কি ১৭ ঘণ্টা পর সউদী আরবে মঙ্গলবার নতুন তারিখ শুরু হবে। আর ৪-৫ ঘণ্টা পর হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জে সোমবার নতুন দিন শুরু হবে। একটি দিনতো এত স্বল্প সময়ের জন্য হয় না এবং এত স্বল্প সময় পর দিন পরিবর্তিতও হয় না।

এছাড়াও কোন নির্দিষ্ট দেশ বা মক্কা শরীফ-এ অমাবস্যা সংঘটিত হবার সময় অনুযায়ী মাস শুরু করার বিষয়টি সম্পূর্ণ মনগড়া, বানোয়াট, অবান্তর। শরীয়তে এর কোন ভিত্তি নেই। আর ইসলামে মনগড়া কোন নিয়ম নীতি কেউ কখনো অনুসরণ করতে পারবে না। ইসলাম হচ্ছে এমনি একটি জীবন বিধান যা ওহীর মাধ্যমে ফায়সালাকৃত। সুতরাং শরীয়ত এবং বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যার মাধ্যমে আমরা অনুধাবন করতে পারলাম অমাবস্যা অনুযায়ী কখনো নতুন আরবী মাস শুরু করা সম্ভব নয়। বরং যারা চেষ্টা করে তারা প্রকৃতপক্ষে মুসলমান নয় তারা ইহুদী-মুশরিকদের দলভুক্ত।

বিশ্বের জন্য ১৪৩০ হিজরীর জুমাদাল

উলা মাসের চাঁদের রিপোর্ট:

জিরো মুন (অমাবস্যা) সংঘটিত হবে ২৫ এপ্রিল, ২০০৯ শনিবার, ৩টা ২৩ মিনিটে (আন্তর্জাতিক সময় অনুযায়ী) সউদী আরবে ২৬ এপ্রিল, রবিবার চাঁদ দেখার সম্ভাবনা রয়েছে। এই তারিখের পূর্বে সউদী আরবে চাঁদ দৃশ্যমান হবার সম্ভাবনা নেই।

বাংলাদেশের জন্য ১৪৩০ হিজরীর জুমাদাল

উলা মাসের চাঁদের রিপোর্ট:

বাংলাদেশের স্থানীয় সময় অনুযায়ী জিরো মুন (অমাবস্যা) সংঘটিত হবে শনিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০০৯ সকাল ৯টা ২৩ মিনিটে।

বাংলাদেশে জুমাদাল উলা মাসের চাঁদ খুঁজতে হবে রবিবার, ২৬ এপ্রিল সন্ধ্যায়। এই দিন ঢাকায় সূর্যাস্ত সন্ধ্যা ৬টা ২৫ মিনিটে এবং চন্দ্রাস্ত ৭টা ৫২ মিনিটে। সূর্যাস্তের সময় চাঁদ দিগন্তরেখার প্রায় ১৮ ডিগ্রী উপরে অবস্থান করবে। আকাশ মেঘলা না থাকলে চাঁদ দেখতে পাবার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। রবিবার, ২৬ এপ্রিল চাঁদ দেখতে পেলে, সোমবার, ২৭ এপ্রিল হবে জুমাদাল উলা মাসের পহেলা তারিখ।

বিশ্বের জন্য ১৪৩০ হিজরীর জুমাদাল

উখ্রা মাসের চাঁদের রিপোর্ট:

জিরো মুন (অমাবস্যা) সংঘটিত হবে ২৪ মে, ২০০৯, রবিবার, ১২টা ১১ মিনিটে (আন্তর্জাতিক সময় অনুযায়ী)।

সউদী আরবে সোমবার, ২৫ মে, চাঁদ দেখতে পাবার সম্ভাবনা রয়েছে। এই তারিখের পূর্বে সউদী আরবে চাঁদ দেখতে পাবার কোন সম্ভাবনা নেই।

বাংলাদেশের জন্য ১৪৩০ হিজরীর

জুমাদাল উখ্রা মাসের রিপোর্ট:

বাংলাদেশের স্থানীয় সময় অনুযায়ী জিরো মুন (অমাবস্যা) সংঘটিত হবে রবিবার, ২৪মে, ২০০৯, বিকাল ৬টা ১১ মিনিটে। বাংলাদেশে জুমাদাল উখরা মাসের চাঁদ খুঁজতে হবে ২৫ মে, ২০০৯, সোমবার সন্ধ্যায়। সেদিন ঢাকায় সূর্যাস্ত ৬টা ৩৮ মিনিটে এবং চন্দ্রাস্ত ৭টা ৪৭ মিনিটে। সূর্যাস্তের সময় চাঁদ দিগন্ত রেখার প্রায় ১৩ ডিগ্রীর উপরে অবস্থান করবে। আকাশ মেঘলা না থাকলে চাঁদ দেখতে পাবার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। সোমবার, ২৫ মে, চাঁদ দেখতে পেলে মঙ্গলবার, ২৬, মে হবে জুমাদাল উখ্রা মাসের পহেলা তারিখ।

ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি ও ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা-৫০

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-১৩ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৫১

‘থার্টিফাস্ট নাইট, ভালেন্টাইন ডে আর পহেলা বৈশাখের’ নামে হুজ্জোতির জন্য ধর্মব্যবসায়ীদের কৌশলগত নিষ্ক্রীয়তা, স্বার্থবাদী মৌসুমী রাজনৈতিক তৎপরতা এবং সংস্কৃতি বিপননকারীদের দূরভিসন্ধিতা ও মধ্যবিত্তের  তত্ত্ব-তালাশহীন প্রবণতা তথা হুজুগে মাতা প্রবৃত্তিই দায়ী

অবশেষে জামাতীরা স্বীকার করিল যে, মুক্তি পাইতে চাহিলে মুরীদ হইতে হয়। আল্লাহ পাক-এর ওলী বা দরবেশ হইতে পারিলে মুক্তি পাওয়া যায়। কিন্তু জামাতীরা তাহা নয় বলিয়াই আখিরাত তো দূরের কথা দুনিয়াতেই তাহারা দুর্নীতির দায়ে গ্রেফতার। আর মইত্যা রাজাকারের ফতওয়া অনুযায়ী তো- তাহাকেই কতল করা ওয়াজিব।