-আল্লামা আবুল বাশার মুহম্মদ রুহুল হাসান
বর্তমান সংখ্যার আলোচনাঃ সারা পৃথিবীতে বেশীর ভাগ জায়গায় চাঁদ দেখার পার্থক্য ২৪ ঘন্টার বেশী হতে পারে না।
Crescent moon বা বাঁকা চাঁদ পৃথিবী থেকে দেখার মত ন্যূনতম আকৃতি ধারণ করার মুহূর্তে যে স্থানে সূর্যাস্ত হবে সে স্থানে চাঁদ প্রথমে দেখা যাবে এবং ক্রমাগত আকৃতি বৃদ্ধি পেতে থাকে। বাঁকা চাঁদ প্রথম দেখার স্থান থেকে তার পশ্চিমের দেশগুলোতে ক্রমান্বয়ে সূর্য অস্ত যেতে থাকবে এবং চাঁদের আকৃতিও খুব ধীর গতিতে বৃদ্ধি পেতে থাকবে। ফলে সে দেশের পশ্চিমের দেশগুলোর সকলের নিজ নিজ সন্ধ্যায় Crescent moonবা বাঁকা চাঁদ দেখতে পাবে। এভাবে Crescent moon বা বাঁকা চাঁদ প্রথম দেখার সময় থেকে পরবর্তী ২৪ ঘন্টায় যেহেতু পৃথিবী তার নিজ অক্ষের চারিদিকে একবার প্রদক্ষিণ করে, সেহেতু পৃথিবীর প্রায় সমস্ত দেশেই (অতি উচ্চ অক্ষাংশের কিছু দেশ ছাড়া) ঐ ২৪ ঘন্টার মধ্যে একবার করে সন্ধ্যা আসবে। কাজেই বেশীর ভাগ দেশই ঐ ২৪ ঘন্টার মধ্যেই Crescent moon বা বাঁকা চাঁদ দেখার মত আকৃতিতে আকাশে উদয় হবে। তবে অনেক সময় আবহাওয়াজনিত কারণে যেমন- মেঘ, বৃষ্টি, কুয়াশা ও তুষারপাত ইত্যাদির কারণে দেখা নাও যেতে পারে।
যদিও Crescent moon বা বাঁকা চাঁদ প্রথম দেখার ২৪ ঘন্টার মধ্যে পৃথিবীর বেশীর ভাগ দেশেই (অতি উচ্চ অক্ষাংশের কিছু দেশ ছাড়া) দেখা যাবে কিন্তু আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা নির্ধারণ করার ফলে পৃথিবীর সমস্ত দেশে কোন চন্দ্রমাস একই ইংরেজী তারিখে বা দিনে শুরু হবে না। নিউজিল্যান্ড বা রাশিয়ায় যদি বাঁকা চাঁদ প্রথম দেখা যায় এবং পরবর্তী ২৪ ঘন্টার যদি সমস্ত পৃথিবী থেকে চাঁদ দেখা যায়, কেবলমাত্র তখনই একই ইংরেজী তারিখে বা একই দিনে সমস্ত পৃথিবীতে চন্দ্রমাস শুরু হবে। এ ছাড়া অন্য কোন দেশ থেকে যদি বাঁকা চাঁদ প্রথমে দেখা যায় তবে ইংরেজী তারিখ অনুযায়ী পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মধ্যে চন্দ্র মাসের পার্থক্য একদিন হয়ে যাবে। সুতরাং এক্ষেত্রে বলা যেতে পারে কোন একটি দেশ প্রথমে ঈদ বা রোযা শুরু করলে তার দু’দিন পর অন্য একটি দেশের চাঁদ দেখে ঈদ বা রোযা পালন করা বাস্তবিকভাবেই অসম্ভব। তবে তখনই সম্ভব যদি প্রথম দেশটি চাঁদ না দেখেই ঈদ বা রোযা শুরু করে থাকে।
আরো সহজ করে বলা যেতে পারে, সউদী আরবে রমাদ্বান শরীফ শুরু হলে বা ঈদ পালন করলে তার দু’দিন পর আমাদের দেশে রমাদ্বান শরীফ শুরু করা বা ঈদ পালন করা স্বাভাবিকভাবে সম্ভব নয়। সউদী আরবে আমাদের দেশের পূর্বে চাঁদ দেখা গেলে পার্থক্য হতে পারে মাত্র একদিন। কিন্তু যখন দু’দিন পর আমাদের দেশে চাঁদ দেখে রোযা বা ঈদ পালিত হয় এর অর্থ সউদী আরব চাঁদ না দেখেই রোযা বা ঈদ পালন শুরু করেছিলো। চাঁদ না দেখে আরবী মাস শুরু করা শরীয়তসম্মত নয়। যদিও সউদী আরব বহুযুগ ধরে তাই করে আসছে।
বিশ্বের জন্য ১৪৩০ হিজরীর ছফর
মাসের চাঁদের রিপোর্টঃ
জিরো মুন (অমাবস্যা) সংঘটিত হবে সোমবার, ২৬শে জানুয়ারী/২০০৯, ৭টা ৫৫ মিনিটে (আন্তর্জাতিক সময় অনুযায়ী)। এইদিন পৃথিবীর কোথাও চাঁদ দৃশ্যমান হবে না। চাঁদ প্রথম দেখা যেতে পারে দক্ষিণ গোলার্ধে অস্ট্রেলিয়াতে এবং উত্তর গোলার্ধে জাপান ও মঙ্গোলিয়াতে মঙ্গলবার, ২৭শে জানুয়ারি। তবে ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ব্রুনাই, বাংলাদেশে এভাবে পশ্চিমে চাঁদ দেখা যাবার সম্ভাবনা যথেষ্ট বেশি।
সউদী আরবে মঙ্গলবার, ২৭শে জানুয়ারি, চাঁদ দেখতে পাবার সম্ভাবনা রয়েছে। এই তারিখের পূর্বে সউদী আরবে চাঁদ দৃশ্যমান হবে না।
বাংলাদেশের জন্য ১৪৩০ হিজরীর
ছফর মাসের চাঁদের রিপোর্টঃ
বাংলাদেশের স্থানীয় সময় অনুযায়ী জিরো মুন (অমাবস্যা) সংঘটিত হবে সোমবার, ২৬শে জানুয়ারি/ ২০০৯, দুপুর ১টা ৫৫ মিনিটে।
বাংলাদেশে ছফর মাসের চাঁদ খুঁজতে হবে মঙ্গলবার, ২৭শে জানুয়ারি সন্ধ্যায়। এই দিন ঢাকায় সুর্যাস্ত ৫টা ৪২ মিনিটে এবং চন্দ্রাস্ত ৬টা ৩৮ মিনিটে। সুর্যাস্তের সময় চাঁদ দিগন্ত রেখার প্রায় ১২ ডিগ্রী উপরে অবস্থান করবে। আকাশ মেঘলা না থাকলে চাঁদ দেখতে পাবার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। মঙ্গলবার, ২৭শে জানুয়ারি, চাঁদ দেখতে পেলে বুধবার, ২৮শে জানুয়ারি হবে ছফর মাসের পহেলা তারিখ।
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি ও ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা-৫০