চাঁদ দেখা ও নতুন চন্দ্রতারিখ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-২৪

সংখ্যা: ১৮৩তম স | বিভাগ:

-আল্লামা আবুল বাশার মুহম্মদ রুহুল হাসান

বর্তমান সংখ্যার আলোচনাঃ  বাঁকা চাঁদ (হিলাল) দেখা সংক্রান্ত কয়েকটি বিষয়ে অপব্যাখ্যা প্রসঙ্গে।

মহাকাশবিজ্ঞান এবং ধর্মীয় বিষয়ে স্বল্প জ্ঞানী অনেক মুসলমান কিছু অভিমত প্রকাশে অন্যদের বিভ্রান্ত করে এভাবে যে,

১. অমাবস্যা হচ্ছে “হিলাল বা বাঁকা চাঁদ।”

২. অমাবস্যাকে নতুন মাসের শুরু হিসেবে ধরা যেতে পারে।

৩. একই দিনে অমাবস্যার চাঁদ পৃথিবীর কোন না কোন  স্থানে বাঁকা চাঁদে পরিণত হয়।

কিন্তু আমরা আগেই বর্ণনা করেছি অমাবস্যা সম্পূর্ণ অন্ধকার এবং সেদিন চাঁদ কখনো দৃষ্টিগোচর হয় না। সুতরাং তাকে হিলাল বা বাঁকা চাঁদ হিসেবে ধরা সম্পূর্ণ অবান্তর এবং সেই অনুযায়ী নতুন  মাস শুরু করার প্রশ্নই উঠেনা। অমাবস্যাকে নতুন মাসের শুরু হিসেবে ধরার অর্থই হচ্ছে একদিন কখনও দুইদিন পূর্বে শরীয়তের মাস শুরু করা। নির্ধারিত দিনের পূর্বে মাস শুরু হলে শরীয়তের অনেক ফরয-ওয়াজিব আমল তরক হওয়ার দায়ে গুণাহগার হতে হবে। তাহলে মনে রাখতে হবে অমাবস্যা সংঘটিত হওয়ার দিনে পৃথিবীর কোথাও বাঁকা চাঁদে পরিণত হওয়া অসম্ভব।

সাক্ষীঃ প্রায়শই আরবী হাদীছ শরীফটির জোরালোভাবে উদ্ধৃতি দেয়া হয়, “প্রত্যেক মুসলমানের সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য।” এখানে সাক্ষ্য দেবার প্রেক্ষাপট এবং মুসলমানের যোগ্যতা ব্যাখ্যা সাপেক্ষ। তাছাড়া যখন চাঁদ দেখার দাবীর এবং বাস্তব অবস্থার সঙ্গে নিশ্চিত অসঙ্গতি ধরা পড়ে যেমন চাঁদটি যেখানে ছিল না সেখানে দেখেছে বলে সাক্ষী দাবী করছে, অথবা চাঁদটি সূর্যাস্তের পূর্বেই অস্ত গিয়েছিল কিংবা সূর্যাস্তের সময় আকাশের উজ্জলতার দরুন একই অঞ্চলের অসংখ্য মুসলমানের পক্ষে তা দেখতে পাওয়া সম্ভব হয়নি বা অন্য এলাকাতেও দেখা যায়নি। তখন সাক্ষী অবশ্যই বাতিলযোগ্য। তারা যা দেখেছে বলে দাবী করেছে মোটেও সেই স্থানে সেই সময় তা দেখা যায়নি। চাঁদ দেখার দাবী অবশ্যই উপেক্ষা করা হবে যদি না প্রথম দেখার স্থানের পশ্চিমের কোন স্থান থেকে দেখার দাবী প্রমাণিত না হয়। হযরত উমর ফারূক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, হযরত ইমাম আবূ ইউসুফ রহমতুল্লাহি আলাইহি এবং অনেক কাজী এবং বর্তমান কালের অনেক মুফতী ছাহেব অনেক সাক্ষীকে তাদের ত্রুটির জন্য বাতিল করেছেন । ভাল উদাহরণ হচ্ছে ১৯৯৭ সনের ফেব্রুয়ারী মাসের ৭ তারিখে শুক্রবার সউদী আরবের বহু শহরে ঈদের চাঁদ দেখার দাবীকে উপেক্ষা করে (যেহেতু সেদিন সেখানে চাঁদ দেখা যায়নি) মিশর রবিবার ৯ তারিখে ঈদ পালন করে।

৩০ দিনে চন্দ্রমাসঃ ৩০ দিনে চন্দ্রমাস হওয়ার যুক্তিটি রমাদ্বান অথবা দুই ঈদ নির্ধারণের জন্য ব্যবহার করা হয়। প্রকৃতপক্ষে মাস ৩০ দিনে পূর্ণ হলে বাঁকা চাঁদ অবশ্যই সন্ধ্যায় দেখা যাবে। যদি তা না দেখা যায় তবে সেই দিন ৩০তম দিন নয় অর্থাৎ বিগত মাসের শুরুতেই ভুল ছিল। সেক্ষেত্রে শা’বানের ৩০ দিন ধরে রমাদ্বান শুরু করার যুক্তিটি বৈধ নয়। তবে যদি নিশ্চিত জানা যায় মাস ৩০ দিনেই শেষ হয়েছে কিন্তু আবহাওয়াজনিত কারণে চাঁদ দেখা যায়নি তবে আলাদা কথা। বর্তমানে চাঁদ দেখা সম্পর্কে মানুষের জ্ঞান এতদূর বিস্তৃত হয়েছে যে, আমরা সহজেই জানতে পারি-

ক. অমাবস্যাকে নতুন চাঁদ হিসেবে ধরা অবান্তর কেননা সেদিন চাঁদ দেখা যায়না।

খ. পৃথিবীর কোথায় প্রথম চাঁদ দৃশ্যমান হতে পারে এবং

গ. সহজেই নিশ্চিত হতে পারি সাক্ষিরা সত্য কিনা ইত্যাদি।

১৪৩০ হিজরীর পবিত্র মুহররম মাসের

চাঁদের আন্তর্জাতিক রিপোর্ট

অমাবস্যা সংঘটিত হবে ২৭শে ডিসেম্বর, ২০০৮, শনিবার, দুপুর ১২টা ২২ মিনিটে (আন্তর্জাতিক সময় অনুযায়ী)। সেদিন পৃথিবীর কোথাও চাঁদ দৃশ্যমান হবে না। চাঁদ প্রথম দেখার সম্ভাবনা রয়েছে আফ্রিকা, দক্ষিণ আমেরিকা, উত্তর আমেরিকাতে। তবে অস্ট্রেলিয়া, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, বাংলাদেশ, ভারত, সউদী আরব, মধ্যপ্রাচ্যে চাঁদ দেখা যেতেও পারে।

সউদী আরবের সময় অনুযায়ী ২৭শে ডিসেম্বর, শনিবার, দুপুর ৩টা ২২ মিনিটে অমাবস্যা সংঘটিত হবে। অমাবস্যার  দিন সউদী আরবে চাঁদ দেখা সম্ভব নয়। ২৮শে ডিসেম্বর, রবিবার যদি উপযুক্ত পরিবেশ বজায় থাকে তবে সউদী আরবে চাঁদ দেখা যেতেও পারে।

১৪৩০ হিজরীর পবিত্র মুহররমুল হারাম মাসের

চাঁদের বাংলাদেশের স্থানীয় রিপোর্ট

২৮শে ডিসেম্বর, রবিবার, বাংলাদেশে মুহররমুল হারাম মাসের চাঁদ তালাশ করতে হবে। সেদিন দিগন্তরেখার প্রায় ৮ ডিগ্রী উপরে চাঁদ অবস্থান করবে এবং কৌণিক দূরত্ব হবে ১০ ডিগ্রীর বেশি। সূর্য অস্ত যাবার প্রায় ৪১ মিনিট পর চাঁদ অস্ত যেতে পারে। চাঁদের বয়স হবে প্রায় ২৩ ঘণ্টা। চাঁদের মূল শর্তগুলো মোটামুটিভাবে পূরণ হওয়াতে বলা যেতে পারে সেদিন চাঁদ দেখা যেতেও পারে। তবে চাঁদ দেখার জন্য অত্যন্ত সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। সেদিন চাঁদ দেখা গেলে ১০ই মুহররমুল হারাম অর্থাৎ পবিত্র আশুরা হবে ৭ই জানুয়ারী, বুধবার। আর চাঁদ দেখা না গেলে ৮ই জানুয়ারী, বৃহস্পতিবার হবে পবিত্র আশুরা।

ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি ও ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা-৫০

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-১৩ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৫১

‘থার্টিফাস্ট নাইট, ভালেন্টাইন ডে আর পহেলা বৈশাখের’ নামে হুজ্জোতির জন্য ধর্মব্যবসায়ীদের কৌশলগত নিষ্ক্রীয়তা, স্বার্থবাদী মৌসুমী রাজনৈতিক তৎপরতা এবং সংস্কৃতি বিপননকারীদের দূরভিসন্ধিতা ও মধ্যবিত্তের  তত্ত্ব-তালাশহীন প্রবণতা তথা হুজুগে মাতা প্রবৃত্তিই দায়ী

অবশেষে জামাতীরা স্বীকার করিল যে, মুক্তি পাইতে চাহিলে মুরীদ হইতে হয়। আল্লাহ পাক-এর ওলী বা দরবেশ হইতে পারিলে মুক্তি পাওয়া যায়। কিন্তু জামাতীরা তাহা নয় বলিয়াই আখিরাত তো দূরের কথা দুনিয়াতেই তাহারা দুর্নীতির দায়ে গ্রেফতার। আর মইত্যা রাজাকারের ফতওয়া অনুযায়ী তো- তাহাকেই কতল করা ওয়াজিব।