উল্লেখ্য যে, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হচ্ছেন সমস্ত কায়িনাতবাসীর জন্য বেমিছাল রহমত ও মহান নিয়ামত। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেন-
وماارسلناك الا رحمة للعالـمين
অর্থ: æহে হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি আপনাকে সমস্ত কায়িনাতের জন্য রহমত হিসেবে পাঠিয়েছি।” (সূরা আম্বিয়া : আয়াত শরীফ ১০৭)
কাজেই কুল-কায়িনাতবাসীর জন্য মহান নিয়ামত ও বেমেছাল রহমত হচ্ছেন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। সে মহান রহমত পেয়ে কুল-মাখলুকাতের কি পরিমাণ খুশি প্রকাশ করা উচিত তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত মহান আল্লাহ পাক তিনি রেখেছেন যা নিম্নোক্ত হাদীছ শরীফ দ্বারা প্রমাণিত।
যেমন এ প্রসঙ্গে বিশ্ব সমাদৃত, সর্বজন স্বীকৃত ও সুপ্রসিদ্ধ মীলাদ শরীফ-এর কিতাব আন নি’য়ামাতুল কুবরা আলাল আলাম ফী মাওলিদি সাইয়্যিদি উলদি আদম” নামক কিতাবে বর্ণিত রয়েছে, হযরত মা আমিনা আলাইহাস সালাম তিনি বলেন-
চারজন মহীয়সী এমন উজ্জ্বল ছিলেন যেনো উনারা চন্দ্র সাদৃশ্য। উনাদের চারদিকে আলো আর আলো। আবদে মানাফ বংশের সাথে সাদৃশ্য রাখেন উনারা।
অতঃপর উনাদের প্রথমজন তিনি এগিয়ে এলেন এবং তিনি বললেন, হে হযরত আমিনা আলাইহাস সালাম! আপনার মতো কে আছে? আপনি যে রবীয়া ও মুদ্বার গোত্রের সাইয়্যিদ উনাকে রেহেম শরীফ-এ ধারণ করেছেন। অতঃপর তিনি আমার ডান দিকে বসলেন। তখন আমি উনাকে জিজ্ঞেস করলাম, আপনি কে? তিনি বললেন, ‘আমি হযরত হাওয়া আলাইহাস সালাম। মানবজাতির মাতা।’
অতঃপর দ্বিতীয়জন এগিয়ে এলেন। তিনি বললেন, হে হযরত আমিনা আলাইহাস সালাম! আপনার মতো কে আছেন? আপনি তো রেহেম শরীফ-এ ধারণ করেছেন পূতপবিত্র জ্ঞান-ভাণ্ডারের রহস্যকে, রতœরাজির সাগরকে, নূরের ঝলককে, সুস্পষ্ট তত্ত্বজ্ঞানী উনাকে। অতঃপর তিনি বাম দিকে উপবেশন করলেন। তখন আমি উনাকে বললাম, আপনি কে? তিনি বললেন, ‘আমি হযরত সারাহ আলাইহাস সালাম। হযরত ইবরাহীম খলীল আলাইহিস সালাম উনার আহলিয়া।’
অতঃপর তৃতীয়জন এগিয়ে এলেন এবং তিনি বললেন, হে হযরত আমিনা আলাইহাস সালাম! আপনার তো কোনো তুলনাই হয় না। আপনি যে চির প্রত্যাশার হাবীবে খোদা উনাকে রেহেম শরীফ-এ ধারণ করেছেন। যিনি প্রশংসা ও ছানা-ছিফতের লক্ষ্যস্থল। অতঃপর তিনি আমার পিঠের দিকে বসলেন। আমি বললাম, আপনি কে? তিনি বললেন, ‘আমি হযরত আছিয়া বিনতে মুসাহিম আলাইহাস সালাম।’
এরপর চতুর্থজন এগিয়ে এলেন। তিনি অন্যদের তুলনায় বেশি উজ্জ্বলতার অধিকারিণী ছিলেন। তিনি বললেন, হে হযরত আমিনা আলাইহাস সালাম! আপনার সমকক্ষ কেউই নেই। আপনি রেহেম শরীফ-এ ধারণ করেছেন অকাট্য দলীলের অধিকারী ব্যক্তিত্বকে, যিনি মু’জিযা, আয়াত ও দালায়িলের অধিকারী। যিনি যমীন ও আসমানবাসীদের সাইয়্যিদ। উনার উপর আল্লাহ পাক উনার সর্বোত্তম ছলাত এবং পরিপূর্ণ সালাম। তারপর তিনি আমার নিকটে বসলেন আর আমাকে তিনি বললেন, হে হযরত আমিনা আলাইহাস সালাম! আপনি আমার উপর হেলান দিন। আমার উপর পূর্ণ আস্থা রাখুন। আমি উনাকে জিজ্ঞেস করলাম। আপনি কে? তিনি বললেন, ‘আমি হযরত মারইয়াম বিনতে ইমরান আলাইহাস সালাম। আমরা আপনার সেবিকা এবং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে গ্রহণকারিণী।’ সুবহানাল্লাহ!
এই যে আসমান-যমীন, বেহেশতে সর্বত্রই চলছে বিলাদত শরীফ উপলক্ষে খুশির বন্যা তা অনন্তকাল পর্যন্ত চলবে ইনশাআল্লাহ!
-মাওলানা মুহম্মদ নিছারুদ্দীন