“ছবি তোলা হারাম”- মুজাদ্দিদে আ’যম-এর তাজদীদ অবশেষে দেওবন্দীরাও স্বীকার করলো। হাটহাজারীর ফতওয়া অনুযায়ীই ওদের মুহতামিম আহমক শাফি, শাইখুল হদছ, কমিনী, ইজহার, মাহিউদ্দীন সবাই চরম ফাসিক, গুমরাহ ও ভণ্ড প্রমাণিত হলো।

সংখ্যা: ১৭৯তম সংখ্যা | বিভাগ:

“রসূন কোয়া কোয়া; কিন্তু সব রসূনের গোড়া এক।” এ কথাটি দেওবন্দীদের ব্যাপারে খুব খাটে। তথাকথিত ইসলামী লেখালেখির ক্ষেত্রে মাহিউদ্দীনের ভুল, ‘আল বাইয়্যিনাতে’ ছাপা হলে সব দেওবন্দীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে- ‘মাহিউদ্দীনের বিরুদ্ধে লেখা হলো’।

ইসলামী রাজনীতির নাম দিয়ে মুফতে আমীনি, তথাকথিত শাইখুল হাদীছের হাক্বীক্বত, আল বাইয়্যিনাতে তুলে ধরা হলে দেওবন্দীরা কোরাস তুলে- ‘তাদের বিরুদ্ধে লেখা হলো’।

বাইতুল মোকাররমের খতীবের অজ্ঞতা ও আমলহীনতা তুলে ধরা হলেও দেওবন্দীরা ক্ষেপে উঠে।

এদিকে আহমক শফির গলদ ব্যক্ত করলেও দেওবন্দীরা এক সাথে হুক্কা হুয়া রব তুলে যে- ‘তাদের আকাবিরের বিরুদ্ধে বলা হলো’।

শুরু থেকেই দেওবন্দীদের বড় দেমাগ। কিতাবী ইলমে তাদের মত কেউ নেই। কিন্তু তারা যে কেবলই রেওয়ায়েতী ও ইবারতী আলেম নামধারী ‘তোতা পাখি’, ইলম ও সমঝ তাদের কিছুই নেই তা আল বাইয়্যিনাতের বহু লেখায় ইতোমধ্যে শক্তভাবে প্রমাণিত হয়েছে।

সেই সাথে তারা আজ আমলহীন তথা প্রকাশ্য গুমরাহ হয়ে ছবি তোলা থেকে নারী নেতৃত্বের মত হারাম কাজে মশগুল হয়েছে। অর্থাৎ দেওবন্দীরা ইলমেও যেমন মাকাল ফল আমলেও তেমনি চরম ফাসিকে পরিণত হয়েছে।

বিশেষ করে ছবি তোলার ক্ষেত্রে দেওবন্দীরা কিরূপ অন্ধ ও নির্লজ্জ হয়েছে নিম্নের ঘটনায় তার প্রমাণ পাওয়া যায়-  “গত ০৪/১০/২০০৩ ঈসায়ী তারিখে দৈনিক প্রথম আলোর ‘পোস্টারে আমিনীর ছবি নিয়ে মহাসচিবদের বৈঠকে বিত-া। চারদলের পোস্টার হচ্ছে না’ শিরোনামে নিজস্ব প্রতিবেদকের বরাতে বলা হয়েছে, চারদলীয় জোট সরকারের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আগামী ৮ অক্টোবর পল্টন ময়দানের জনসভা উপলক্ষে জোটের পক্ষ থেকে কোন পোস্টার করা হবে না। গতকাল শুক্রবার রাতে চার দলের মহাসচিবদের এক বৈঠকে পোস্টারে তথাকথিত মুফতি ফজলুল হক আমিনীর ছবি থাকা না থাকা নিয়ে তুমূল তর্ক হয়।

বৈঠকে অংশগ্রহণকারী একাধিক নেতার সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, ইসলামী ঐক্যজোটের (আমিনী) পক্ষ থেকে জনসভা উপলক্ষে চার দলের পোস্টারে তথাকথিত মুফতি ফজলুল হক আমিনীর ছবি রাখার প্রস্তাব করলে জামাত এর তীব্র বিরোধিতা করে। আমিনী অংশের মহাসচিব তথাকথিত মুফতি এজহারুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, জনাব আমিনীর ছবি পোস্টারে রাখতে হবে। তিনি আমাদের দলের শীর্ষ নেতা। তার ছবি কেন থাকবে না? এভাবে তুমুল তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে বিএনপি মহাসচিব পোস্টারে সবার ছবিই নিষেধ করে দেন। অতঃপর তারা সবাই ক্ষ্যান্ত হলো।”

মূলতঃ ছবি তোলার ক্ষেত্রে মুফতে আমিনী, শাইখুল হদছ, বাইতুল মোকারমের খতীব, মাহিউদ্দীন, মুফতে ইজহার এমনকি হাটহাজারীর আহমক শাফী সবাই এক। সবাই এখন ছবি তুলছে। সবারই ছবি আছে। এমনকি বিগত মহিলা প্রধানমন্ত্রীর সামনাসামনি হাটহাজারীর মুহতামিম আহমক শাফিসহ সবারই ছবি আছে।

এসব ছবি তোলাকে ওরা এতদিন দোষের বলে স্বীকার করতো না। কিন্তু এসব ছবি তোলাও যে দোষের এবং যারাই ছবি তুলছে তারাই যে ভুল করছে, তারাই যে চরম ফাসিক- মাসিক আল বাইয়্যিনাত-এর সে তাজদীদী ফতওয়া দেরিতে হলেও ওরা এখন স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে। তাতে করে ওরা একদিকে যেমন মাসিক আল বাইয়্যিনাত-এর তাজদীদের মুখাপেক্ষী এবং অপরদিকে চরম ফাসিক এবং গুমরাহ ও বিদয়াতী সেটাই প্রমাণিত হয়েছে।

পাঠকের জ্ঞাতার্থে এখানে দেওবন্দীদের মুখপত্র ‘মাসিক মুইনুল ইসলাম’-এর মে-২০০৮ ঈসায়ীর ‘শীর্ষ প্রতিবেদনঃ কথিত ছবি তোলার শরয়ী বিধান‘ শীর্ষক নিবন্ধটি তুলে ধরা হলো-

সমস্যাঃ  আমরা দীর্ঘ পঞ্চাশ বছর ধরে শুনে আসছি, মুফতী সাহেবগণ ও বিজ্ঞ উলামায়ে কেরাম ছবি তোলাকে নাজায়েয, হারাম ও কবীরা গুনাহ বলে আসছেন। … কিন্তু গত কয়েক বছর থেকে দেখা যাচ্ছে, বিভিন্ন মাদ্রাসার বার্ষিক সম্মেলনে, ওয়াজ মাহফিলে, জনসমাবেশে আলোচক ও শ্রোতামন্ডলীর ছবি তোলা হচ্ছে।

যেমন, গত ১৪২৬ হিজরী সনে এদেশের একটি নামকরা দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক সম্মেলনে পবিত্র জুমার দিনে আল্লাহ্র ঘর মসজিদে জুমার নামাজের উদ্দেশ্যে সমবেত মুসল্লিদের ভিডিও করা হয়। উপস্থিত সবাই দেখা সত্ত্বেও কেউ তাতে বাধা দেয়নি। তবে দ্বীনদার শ্রেণীর মধ্যে যারা ছবি তোলা জায়েয বলে থাকেন তারা ব্যতীত অন্যান্য উলামায়ে কেরাম পরবর্তীতে নিন্দা জানান। গত ১৪২৭ হিজরী সনে এদেশের এক প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শতবার্ষিকী মহাসম্মেলন ও দস্তারবন্দী মাহফিলে ছবি তোলা হয়। … এমনিভাবে গত কয়েক বছর আগে এদেশের একটি বড় মাদ্রাসায় বাংলা ও ইংরেজী বিভাগ কর্তৃক আয়োজিত সেমিনারে ছবি তোলা হয়। এতে উপস্থিত কোন কোন মুফতী ছাহেব নিজেদের ছবি তুলতে দেন। আর আকাবিরগণ এতে বাধা প্রদান করেন এবং যে ছাত্ররা এতে জড়িত ছিল তাদের কাছ থেকে তাওবানামা নেন এবং ভবিষ্যতে এমন কাজ না করার জন্য অঙ্গীকারাবদ্ধ করান। এছাড়া এ বছর অনুষ্ঠিত এদেশের এক বড় মাদ্রাসার অর্ধশত বার্ষিকী মহাসম্মেলন ও দস্তারবন্দী মাহফিলে ছবি তোলা হয় এবং ভিডিও করা হয়। কিন্তু দুঃখের বিষয় কেউই তাতে বাধা দেয়নি। এসব ঘটনাবলী দেখে আমাদের মনে কিছু প্রশ্ন জেগেছে, যার জবাব পেতে চাই।

প্রশ্নঃ মানুষের ছবি তোলা কি জায়েয? যদি জায়েয হয় তাহলে সর্বঐক্যমতো সবার স্বাক্ষরসহ জায়েয হওয়ার ফতোয়া চাই। আর যদি নাজায়েয বলে ফতোয়া দেয়া হয়, তাহলে জানতে চাই প্রকাশ্যে, জনসম্মুখে উলামায়ে কেরামের সামনে কেন নাজায়েয আমল হয়? বিশেষ করে মাদ্রাসা সমূহের মুফতীবৃন্দ ও মুহতামিম সাহেবদের অত্যাবশ্যকীয় কর্তব্য যে, তারা হয়তো এ মাসআলার স্পষ্ট ব্যাখ্যা দিবেন, তা না হলে এ মাসআলার উপর আমল করতে নিজেদের অপারগতা প্রকাশ করবেন। যেন দেশী-বিদেশী মুসলমানদের মধ্যে এ ভুল ধারণা না জন্মে যে, এদেশের উলামায়ে কেরাম ছবি তোলাকে জায়েয মনে করেন।

মুফতী সাহেবের নিকট বিনীত নিবেদন, উক্ত সমস্যার সমাধান দলীল সহকারে এবং দ্রুত জানালে কৃতজ্ঞ থাকব।

বিনীত চট্টগ্রাম শহরের কয়েকজন

ধর্মপ্রাণ মুসলমান

সমাধানঃ ছবি আঁকা, ছবি তোলা বা ফটোগ্রাফিতে যেহেতু আল্লাহ তাআলার সৃষ্টিগুণের সাদৃশ্য অবলম্বনের চেষ্টা ও ধৃষ্টতা প্রকাশ পায়, তাই ইসলামী শরীয়তে এগুলোকে নাজায়েয বলে ঘোষণা করা হয়েছে। এক্ষেত্রে ছবি হাতে আঁকা হোক বা ক্যামেরার মাধ্যমে তোলা হোক, তা শরীয়তে নিষিদ্ধ ‘তাছবীর’ বলেই গণ্য হবে। পদ্ধতির ভিন্নতা তার প্রকৃতি বা হুকুমের ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলবে না। তবে এখানে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছবির দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে, জীবের ছবি। সেটা মানুষেরই হোক বা অন্য কোনো প্রাণীর। অর্থাৎ পশু পাখি, জীব জানোয়ার, সব ধরণের প্রাণীর ছবিই নিষিদ্ধ ও হারাম। … প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ করতে হয়, কোনো কোনো মিসরী আলেম ক্যামেরায় তোলা ছবিকে জায়িয বলেছেন। আবার তাদের মধ্যে কেউ কেউ দেহের অর্ধাংশের ছবিকে জায়েয বলেছেন। কিন্তু সেখানকার অন্যান্য উলামায়ে কেরাম ও মুফতীবৃন্দ ছবি আঁকা ও ছবি তোলাকে নাজায়েয বলে দৃঢ় মত ব্যক্ত করেছেন। এবং প্রথম দু’পক্ষের মতকে অগ্রহণযোগ্য ও ভিত্তিহীন বলে প্রত্যাখান করেছেন। আর পাক ভারত উপমহাদেশের মুফতীবৃন্দ ও বিজ্ঞ উলামায়ে কেরাম ছবি আঁকা ও ছবি তোলা শরীয়তের দৃষ্টিতে নিষিদ্ধ ও হারাম বলে ফতওয়া দিয়েছেন।

… কিন্তু মাদ্রাসার বার্ষিক সম্মেলন ও তাফসীর মাহফিলে আলোচক ও শ্রোতাদের এবং মসজিদের মুসল্লিদের ছবি তোলা শরয়ী প্রয়োজনের আওতায় পড়ে না।

এমনভিাবে বিভিন্ন মাদ্রাসার হেফজখানা ও এতিমখানার ছাত্র-শিক্ষকদের যে ছবি তোলা হয় এবং ভিডিও করা হয় সে ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। কারণ, এসব ক্ষেত্রে ছবি তোলা হয় বা ভিডিও করা হয় কোনো শরয়ী প্রয়োজন ছাড়াই, হয়তো ফ্যাশনের জন্য, নয়তো চাঁদা আদায়ের লক্ষ্যে, তাই তা নাজায়েয ও হারাম। যে সকল উলামায়ে কেরামের সামনে ছবি তোলা হয় বা ভিডিও করা হয় তাদের মধ্যে অধিকাংশ আলেমই এর বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিবাদ ও তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করে থাকেন। এরা তো তাদের ঈমানী দায়িত্ব পালন করে দায়মুক্ত হয়ে যান। এমনকি তাদের অজ্ঞসারে কিংবা অসম্মতি সত্ত্বেও যদি ছবি তোলা হয়ে থাকে তাহলে তারা গুনাহগার হবে না। বরং যে ব্যক্তি ক্যামেরা দিয়ে ছবি তুলছে বা যারা নিজেদের ছবি তোলার কারণে খুশি হয়েছে কিংবা তাতে সম্মতি প্রকাশ করেছে তারা গুনাগার হবে।

আর যে সকল উলামায়ে কেরামের সামনে ছবি তোলা সত্ত্বেও তারা এর বিরোধিতা করেন না, তারা মোটামুটি তিন শ্রেণীর। (১) যারা কাজটিকে ভাল মনে করেন না, জায়েযও মনে করেন না। কিন্তু অন্যায়কে অন্যায় বলার সৎ সাহসটুকু না থাকায় তারা অনিচ্ছা সত্ত্বেও এ নাজায়েয কাজটিকে নীরবে মেনে নিচ্ছেন। এ শ্রেণীর উলামায়ে কেরামের দায়িত্ব হচ্ছে, সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজে বাধা প্রদানের অত্যাবশ্যকীয় দায়িত্বটি পালন করা।

মুসলিম শরীফের ঈমান অধ্যায়ে আছে, হযরত রাসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি কোনো অন্যায় কাজ হতে দেখে, সে যেন তাতে হাতের দ্বারা বাধা প্রদান করে। যদি তাতে সক্ষম না হয়, তাহলে যেন যবান দ্বারা বাধা দেয়। আর যদি তাও না পারে তাহলে সে যেন অন্তত সেই কাজকে ঘৃণা করে। আর এটাই হচ্ছে ঈমানের সর্বনিম্ন স্তর। এ হাদীছের ব্যাখ্যায় মুসলিম শরীফের ভাষ্যকার আল্লামা নববী (রাহ.) বলেছেন, কেউ যদি অন্যায় কাজ হতে দেখার পরও এ ধারণা করে তাতে বাধা না দেয় যে, বাধা দিয়ে লাভ নেই, অন্যায়কারী তার অন্যায় কাজ চালিয়েই যাবে, তারপরও সে সৎকাজের আদেশ ও অসৎ কাজে বাধা প্রদানের অত্যাবশ্যকীয় দায়িত্ব থেকে দায়মুক্ত হতে পারবে না। বরং এক্ষেত্রে তার কর্তব্য হচ্ছে, অন্যায় কাজে বাধা প্রদান করা, অন্যায়কারী তার অন্যায় কাজ থেকে ফিরে আসুক বা না আসুক। (মুসলিম শরীফ- ১/৬৯)

(২) এ শ্রেণীর উলামায়ে কেরামের মতে সাংবাদিকদের ছবি তুলতে দিলে কিংবা টিভি সাংবাদিকদের ছবি তুলতে দিলে কিংবা টিভি সাংবাদিকদের ভিডিও করতে দিলে দ্বীনি সভা সম্মেলন ও ওয়াজ মাহফিল ব্যাপক প্রচারণা পাবে। এতে দ্বীনের দাওয়াতের কাজটি ব্যাপকভাবে গতিশীল হবে। তাই ছবি তোলা নাজায়েয ও হারাম হলেও দ্বীনি জরুরতের খাতিরে এসব ক্ষেত্রে জায়েয বলে গণ্য হবে।

এ বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় এ শ্রেণীর আলেমগণ হয়তো দ্বীনের মৌলিক নীতিমালা সম্পর্কে অজ্ঞ। নয়তো তাদের এ কর্মকা- দ্বীনের প্রতি শৈথিল্য প্রদর্শনের নামান্তর। ছবি তোলার মাসআলার ক্ষেত্রে তাদের কথা বা কাজ দলীল হতে পারে না। তাদের কর্তব্য হচ্ছে, ভালভাবে উসূলে ফেক্বহ দেখা, নয়তো ফেক্বাহ ও উসূলে ফেক্বাহ শাস্ত্রের বিজ্ঞ ফক্বীহগণের কাছ থেকে মাসআলা বুঝে নেয়া। অন্যথায় তারা গুনাহ থেকে বাঁচতে পারবেন না।

(৩) আরেক শ্রেণীর উলামায়ে কেরাম বেপরোয়াভাবে ছবি তোলাকে জায়েয বলেন। তাদের যুক্তি হচ্ছে, রাসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর যুগে ক্যামেরা ছিল না। আর তিনি ক্যামেরার ছবিকে নিষিদ্ধও করেননি। তাই দ্বীনি সভা-সম্মেলন ও ওয়াজ-মাহফিলে ছবি তোলা ও ভিডিও করা নাজায়িয নয়।

এ শ্রেণীর উলামায়ে কেরামের প্রতি অনুরোধ রইল, তারা যেন নিজেদের মন ও প্রবৃত্তিকে মুফতী না বানিয়ে সমকালীন বিজ্ঞ ফক্বীহ ও মুফতীগণের কাছ থেকে মাসআলা ভালভাবে বুঝে নিয়ে আমল করেন। আর যেন আল্লাহ পাককে ভয় করেন। জনগণের মাঝে বিভ্রান্তিমূলক কথা বলে নিজেও গোমরাহ না হন, অন্যদেরকেও গোমরাহ করার চেষ্টা না করেন। নয় তো হাদীছ শরীফে ‘তারা নিজেরাও পথভ্রষ্ট হয়েছে, অন্যদেরকেও পথভ্রষ্ট করেছে’ বলে যে হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করা হয়েছে, তার শিকার হবেন।

মোটকথা, কুরআন-হাদীছের আলোকে সাহাবায়ে কেরাম,তাবেঈন, তাবে তাবেঈন, চার মাজহাবের ইমামগণ ও হক্কানী উলামায়ে কেরাম ছবি তোলাকে নাজায়েয, হারাম ও কবীরাহ গুনাহ বলেছেন। বিশেষ করে হানাফী মাযহাবের উলামায়ে কেরাম এ ব্যাপারে কঠোর মনোভাব পোষণ করেন। উপমহাদেশের বড় বড় মাদ্রাসা ও ফতোয়া বিভাগের মুফতীবৃন্দ ছবি তোলাকে নাজায়েয বলেই ফতেয়া দিয়েছেন। আমাদের আকাবিরগণের মতও এটাই। তাই আমরাও এ মাসআলার একই সমাধান দিচ্ছি।” (সূত্রঃ মাসিক মুহীনুল ইসলাম, মে/২০০৮)

পাঠক! মাসিক মহীনুল ইসলামের উপরোক্ত নিবন্ধে সমস্যা ও সমাধান দু’টো পর্ব রয়েছে। সমস্যা থেকে স্পষ্টভাবে প্রতিভাত হয়েছে, দেওবন্দীরা তথাকথিত ইসলামী রাজনীতি সমাবেশ, মাহফিল ইত্যাদির নামে যেসব ছবি তুলেছে তা আদৌ জরুরতের পর্যায়ে পড়ে না।

শুধু তাই নয়, দেওবন্দীরা এখন মসজিদে, ওদের শতবার্ষিকী মাহফিলেরও ভিডিও করছে ও ছবি তুলছে।

আর ওদের সমাধান তথা হাটহাজারীর ফতওয়া অনুযায়ীই দেখা যাচ্ছে যে, হাটহাজারীর আহমক শাফী, শাইখুল হদছ, মুফতে কমিনী, বাইতুল মোকাররমের খতীব, মাহিউদ্দীন, মুফতে ইজহার- এরা সবাই চরম ফাসিক, গুমরাহ, বিদ্য়াতী ও ভ-।

এদের ফতওয়া অনুযায়ীই এরা ভণ্ড ও উলামায়ে ‘ছূ’ প্রমাণিত। হাদীছ শরীফ-এ যাদেরকে সৃষ্টির নিকৃষ্ট ও দাজ্জালে কাজ্জাব বলা হয়েছে।

হুজ্জাতুল ইসলাম, হযরত ইমাম গাজ্জালী রহমতুল্লাহি আলাইহি ‘যাদের দোষত্রুটি তুলে ধরা ষাট বছর বে-রিয়া নফল ইবাদতের চেয়ে শ্রেষ্ঠ’ বলেছেন এবং মহান আল্লাহ পাক-এর অশেষ রহমতে যামানার তাজদীদী মুখপত্র মাসিক আল বাইয়্যিনাত সে শ্রেষ্ঠ কাজটিই করেছে ইনশাআল্লাহ।

পাঠক! একটি বিশেষ বিষয় এখানে প্রণিধানযোগ্য তাহলো, বিবৃত সমস্যায় প্রতিভাত হয়েছে যে, দীর্ঘদিন ধরে দেওবন্দীরা ছবি তুললেও ভেতরে ভেতরে তারা ঠিকই আল বাইয়্যিনাত-এর অকাট্য তাজদীদ ‘ছবি তোলা হারাম’ এর তাছিরে ক্ষত-বিক্ষত হচ্ছিলো।

বিশেষতঃ আল বাইয়্যিনাত-এর শত শত দলীলের প্রেক্ষিতে তাদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছিলো। তারা বুঝে উঠতে পারছিলো না তারা কি করবে। বিবৃত সমস্যায় সেসব দিকই খোলামেলাভাবে প্রকাশ পেয়েছে আর সমাধানেও অবশেষে ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় মুজাদ্দিদে আ’যম-এর তাজদীদকেই তাদের স্বীকার করতে হলো। এবং এটাই ইতিহাসের পরিণতি। কুরআন শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, “সত্য এসেছে মিথ্যা দূরীভূত হয়েছে। নিশ্চয়ই নিশ্চয়ই মিথ্যা দূরিভূত হওয়ারই যোগ্য।”

মুহম্মদ তারীফুর রহমান

ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি ও ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা-৫০

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-১৩ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৫১

‘থার্টিফাস্ট নাইট, ভালেন্টাইন ডে আর পহেলা বৈশাখের’ নামে হুজ্জোতির জন্য ধর্মব্যবসায়ীদের কৌশলগত নিষ্ক্রীয়তা, স্বার্থবাদী মৌসুমী রাজনৈতিক তৎপরতা এবং সংস্কৃতি বিপননকারীদের দূরভিসন্ধিতা ও মধ্যবিত্তের  তত্ত্ব-তালাশহীন প্রবণতা তথা হুজুগে মাতা প্রবৃত্তিই দায়ী

অবশেষে জামাতীরা স্বীকার করিল যে, মুক্তি পাইতে চাহিলে মুরীদ হইতে হয়। আল্লাহ পাক-এর ওলী বা দরবেশ হইতে পারিলে মুক্তি পাওয়া যায়। কিন্তু জামাতীরা তাহা নয় বলিয়াই আখিরাত তো দূরের কথা দুনিয়াতেই তাহারা দুর্নীতির দায়ে গ্রেফতার। আর মইত্যা রাজাকারের ফতওয়া অনুযায়ী তো- তাহাকেই কতল করা ওয়াজিব।