খলিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ উনার ২১ নং পবিত্র আয়াত শরীফে ইরশাদ মুবারক করেন,
لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِي رَسُوْلِ اللهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ
অবশ্যই তোমাদের জন্য নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মধ্যেই রয়েছেন সর্বোত্তম আদর্শ মুবারক।
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উম্মতের জন্য কী আদর্শ মুবারক নিয়ে এসেছেন বা তিনি উম্মতকে কি আদর্শ মুবারক শিক্ষা দিয়েছেন এ সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক তিনি সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আলে ইমরান শরীফ উনার ১৬৪ নং পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
لَقَدْ مَنَّ الله عَلَى الْمُؤْمِنِيْنَ اِذْ بَعَثَ فِيْهِمْ رَسُوْلًا مِّنْ اَنْـفُسِهِمْ يَـتْـلُوْ عَلَيْهِمْ اٰيَاتِهٖ وَيُـزَكِّيْهِمْ وَيُـعَلِّمُهُمُ الْكِتَابَ وَالْحِكْمَةَ وَاِنْ كَانُـوْا مِنْ قَـبْلُ لَفِىْ ضَلَالٍ مُّبِيْنٍ
নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি মু’মিনদের প্রতি ইহসান করেছেন যে, তিনি তাদের মাঝে একজন মহাসম্মানিত রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পাঠিয়েছেন, যিনি তাদেরকে মহান আল্লাহ পাক উনার পবিত্র আয়াত শরীফসমূহ তিলাওয়াত করে শুনান এবং তাদের অন্তর সমূহকে পরিশুদ্ধ করেন এবং তাদেরকে কিতাব ও হিকমত মুবারক শিক্ষা দেন। যদিও ইতিপূর্বে তারা স্পষ্ট গোমরাহীর মধ্যে ছিল অর্থাৎ হিদায়েতের উপর ছিল না।
অর্থাৎ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বান্দা-বান্দী উম্মতগণকে মহান আল্লাহ পাক উনার পবিত্র কালাম শরীফ তিলাওয়াত করে শুনিয়েছেন, তাদের অন্তর ইছলাহ বা পরিশুদ্ধ করেছেন এবং তাদেরকে কিতাব এবং হিকমত মুবারক শিক্ষা দিয়েছেন। তিনি এই আদর্শ মুবারক নিয়েই মহান আল্লাহ পাক উনার ইহসান স্বরূপ মু’মিনদের মাঝে প্রেরিত হয়েছেন। তিনি যা কিছু জানিয়েছেন, শিক্ষা দান করেছেন সে সমস্ত বিষয়ই হচ্ছে উনার আদর্শ মুবারক। উনার সমস্ত আদর্শ মুবারকের সম্মিলিত রূপই হচ্ছে পবিত্র দ্বীন ইসলাম।
আর সামগ্রিকভাবে এই আদর্শ মুবারক গ্রহণ করার জন্যই মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র সূরা হাশর শরীফ উনার ৭নং পবিত্র আয়াত শরীফে ইরশাদ মুবারক করেন,
وَمَاۤ اٰتَاكُمُ الرَّسُوْلُ فَخُذُوْهُ وَمَا نَـهَاكُمْ عَنْهُ فَانْـتَـهُوْا وَاتَّـقُوا اللهَ إِنَّ اللهَ شَدِيْدُ الْعِقَابِ
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যে আদর্শ মুবারক নিয়ে এসেছেন অর্থাৎ যে শরীয়ত বা বিধান নিয়ে এসেছেন তা আঁকড়িয়ে ধরো এবং যা নিষেধ করেছেন তা থেকে বিরত থাকো। তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনাকে ভয় করো। নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি কঠিন শাস্তিদাতা।
এই পবিত্র আয়াত শরীফে বলা হয়েছে উনার আদর্শ মুবারক গ্রহণ করার জন্য। অর্থাৎ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আনিত সব বিষয়গুলিই পালন করা ফরজ সাব্যস্ত হয়। তবে উম্মতের প্রতি ইহসান করার লক্ষ্যে ইমাম মুজতাহিদগণ আনিত বিষয়সমূহকে ফরয, ওয়াজিব, সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ, সুন্নতে যায়িদাহ, মুস্তাহাব হিসেবে বিভক্ত করেছেন। উপরোক্ত প্রত্যেকটি বিষয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আদর্শ মুবারক বা সুন্নাহ শরীফ। তিনি যে বিষয়কে যেভাবে শিক্ষা দিয়েছেন, সেভাবে গ্রহণ করা বা পালন করাই উম্মতের জন্য ফরয এবং সেভাবে পালন করলেই হাক্বীক্বীভাবে উনার আদর্শ মুবারক গ্রহণ করা হবে।
তবে ইমাম-মুজতাহিদগণ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আদর্শ মুবারকের মধ্য থেকে আমলের গুরুত্ব বুঝে কোনোটাকে ফরয, কোনোটাকে ওয়াজিব, কোনোটাকে সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ, কোনোটাকে সুন্নতে যায়িদাহ, কোনোটাকে মুস্তাহাব সাব্যস্ত করেছেন উম্মতের ইহসানের জন্য।
মহান আল্লাহ পাক তিনি যেন আমাদের সবাইকে দ্বীনের সহীহ-সমঝ দান করেন এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র সুন্নত মুবারক যথাসাধ্য অনুসরণ করে মহান আল্লাহ পাক উনার মুহাব্বত মুবারক অর্জন করার ও হক্কের উপর ইস্তেকামত থাকার তাওফীক্ব দান করেন। (আমীন)