বর্তমান যামানায় মহিলাদের দ্বীনী ইলম অর্জন করতে হলে, কামালিয়াত অর্জন করতে হলে ও ফায়েজে ইত্তেহাদী হাছিল করতে হলে যিনি ইমাম সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত যাওজাতুম মুকাররমাহ সাইয়্যিদাতুন নিসা, ফক্বীহাতুন নিসা, মালিকাতুল জান্নাহ, জামিয়াতুল ইলম, কায়মোকামে হযরত উম্মাহাতুল মু’মীনীন আলাইহিন্নাস সালাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার মুবারক ছোহবতে আসতে হবে এবং দ্বীনি তা’লীম-তালক্বীন গ্রহণ করতে হবে। তিনি সেই ১৪১৩ হিজরী থেকে মহিলাদেরকে দ্বীনি তা’লীম-তালক্বীন দিয়ে যাচ্ছেন। তিনি মহিলাদেরকে সঠিক দ্বীনি শিক্ষাদানের জন্য ১৪১৮ হিজরীর পবিত্র শাওয়াল শরীফ মাসে রাজধানী ঢাকার প্রাণকেন্দ্র রাজারবাগ শরীফে মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ বালিকা মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করেন। এই মাদরাসায় ইলমে ফিক্বাহ ও ইলমে তাসাউফ শিক্ষার সাথে সাথে অন্যান্য সাধারণ শিক্ষা যেমন: আরবী, বাংলা, গণিত, বিজ্ঞান, উর্দূ, ইংরেজি ইত্যাদি শিক্ষা দানের ব্যবস্থা করেন।
মূলতঃ উনার এই অক্লান্ত পরিশ্রমের পিছনে যে উদ্দেশ্য রয়েছে সে সুমহান উদ্দেশ্য মুবারক হলো, তিনি চান মুসলমানদের মধ্য হতে এমন দল তৈরি হোক যে দল দ্বীনের ফক্বীহ হবেন, নেক কাজের আদেশ দিবেন, মন্দ কাজ হতে সতর্ক করবেন।
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি ঐ পবিত্র আয়াত শরীফ উনার হুবহু মিছদাক্ব যে পবিত্র আয়াত শরীফ উনাতে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
فَـلَوْلَا نَـفَرَ مِنْ كُلِّ فِرْقَةٍ مِّنْـهُمْ طَـآئِفَةٌ لِّيَـتَـفَقَّهُوْا فِي الدِّيْنِ وَلِيُـنْذِرُوْا قَـوْمَهُمْ إِذَا رَجَعُوْا إِلَيْهِمْ لَعَلَّهُمْ يَحْذَرُوْنَ
অর্থ: তাদের প্রত্যেক দল থেকে এমন একটি দল কেন বের হয়না, যারা দ্বীনী ইলম অর্জন করেন এবং নিজ সম্প্রদায়কে সতর্ক করবেন এ আশায় যে, তারা সতর্ক হবে। (পবিত্র সূরা ত্বওবা শরীফ, পবিত্র আয়াত শরীফ-১২২)
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন,
وَلْتَكُنْ مِّنْكُمْ أُمَّةٌ يَّدْعُوْنَ إِلَى الْـخَيْرِ وَيَأْمُرُوْنَ بِالْمَعْرُوْفِ وَيَـنْهَوْنَ عَنِ الْمُنْكَرِ وَأُولٰئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُوْنَ
অর্থ: তোমাদের মধ্যে কেন এমন একটা দল বের হয়না, যারা কল্যাণের দিকে আহবান করে, সৎ কাজের আদেশ করে এবং অসৎ কাজ হতে নিষেধ করে? আর উনারাই সফলকাম। (পবিত্র সূরা আলে ইমরান শরীফ, পবিত্র আয়াত শরীফ ১০৪)
আর মহিলাদের মধ্যে সেই দল তৈরি করার জন্যই সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার এতো পরিশ্রম, যে দল দ্বীনের ফক্বীহ হবেন। তিনি চান প্রতিটি ঘরে ঘরেই সম্মানিত দ্বীন উনার ফক্বীহ গড়ে উঠুক।
কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
قَالَ الْـحَسَنُ رَحْـمَةُ الله عَلَيْهِ إِنَّـمَا الْفَقِيْهُ اَلزَّاهِدُ فِي الدُّنْـيَا، اَلرَّاغِبُ فِي الْاٰخِرَةِ، اَلْبَصِيْـرُ بِذَنْبِهٖ، اَلْمُدَاوِمُ عَلٰى عِبَادَةِ رَبِّهٖ، اَلْوَرِعُ اَلْكَافُّ عَنْ أَعْرَاضِ الْـمسْلِمِيْنَ، اَلْعَفِيْفُ عَنْ أَمْوَالِـهِمْ، اَلنَّاصِحُ لِـجَمَاعَتِهِمْ
অর্থ: হযরত হাসান বসরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, দ্বীনের ফক্বীহগণ দুনিয়া থেকে বিরাগ হবেন, আখিরাতের দিকে রুজু হবেন, গুণাহর প্রতি সতর্ক থাকবেন, দায়েমীভাবে মহান আল্লাহ পাক উনার ইবাদতে রুজু থাকবেন, চরম পরহেযগার হবেন, মুসলমানদের মান-সম্মান রক্ষা করবেন, মুসলমানদের মাল-সম্পদ হিফাযত করবেন এবং মুসলমানদেরকে নছীহত করবেন।
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি মুসলিম উম্মাহর মহিলাদেরকে হাক্বীক্বীভাবে ফক্বীহ হিসেবে গড়ে তুলতে প্রতিদিনই পবিত্র তা’লীম মুবারক দিচ্ছেন।
বর্তমানে দ্বীনী ইলম না থাকার কারণে মহিলারা দ্বীন ইসলাম উনার থেকে, হযরত উম্মাহাতুল মু’মীনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের আদর্শ মুবারক থেকে সরে গিয়ে বিধর্মীদের অনুসরণ করছে। তাদের পারিবারিক জীবন বিধর্মীদের ন্যায় পরিচালনা করছে। তাদের সন্তানদের বিধর্মীদের রীতিনীতি শিখাচ্ছে। নাউযূবিল্লাহ!
সাইয়্যিদাতুন নিসা, ফক্বীহাতুন নিসা, মালিকাতুল জান্নাহ, জামিয়াতুল ইলম, কায়মোকামে উম্মাহাতুল মু’মীনীন আলাইহিন্নাস সালাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি এসব অজ্ঞ মহিলাদের দ্বীনি শিক্ষায় শিক্ষিত করে, হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম এবং হযরত আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মুবারক আদর্শে উজ্জীবিত করছেন। গোমরাহী থেকে বের করে এনে হেদায়েতের আলোর দিকে আনছেন। প্রতিটি ঘরে ঘরে ইলম উনার প্রদীপ জ্বালাচ্ছেন।
সাইয়্যিদাতুন নিসা, ফক্বীহাতুন নিসা, মালিকাতুল জান্নাহ, জামিয়াতুল ইলম, কায়মোকামে উম্মাহাতুল মু’মীনীন আলাইহিন্নাস সালাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি ঐ পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার পরিপূর্ণ মিছদাক, যে পবিত্র হাদীছ শরীফে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
عَنْ اَبِىْ هُرَيْـرَةَ رَضِىَ اللهُ تَـعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَثَلِيْ كَمَثَلِ رَجُلٍ اسْتَـوْقَدَ نَارًا فَـلَمَّا أَضَاءَتْ مَا حَوْلَـهَا جَعَلَ الْفَرَاشُ وَهٰذِهِ الدَّوَابُّ الَّتِي فِي النَّارِ يَـقَعْنَ فِيْـهَا وَجَعَلَ يَـحْجُزُهُنَّ وَيَغْلِبْـنَهٗ فَـيَـتَـقَحَّمْنَ فِيْـهَا قَالَ فَذٰلِكُمْ مَثَلِيْ وَمَثَـلُكُمْ أَنَا اٰخِذٌ بِـحُجَزِكُمْ عَنِ النَّارِ هَلُمَّ عَنِ النَّارِ هَلُمَّ عَنِ النَّارِ فَـتَـغْلِبُـوْنِي تَـقَحَّمُوْنَ فِيْـهَا
অর্থ: হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “আমার মিছাল ঐ ব্যক্তির ন্যায় যে আগুন প্রজ্জলিত করল। অতপর যখন তার চারপাশ আলোকিত হল তখন যেসব পোঁকা-মাকড় আগুনে ঝাপিয়ে পড়ে; সে সব পোকা-মাকড়গুলো আগুনে ঝাঁপিয়ে পড়তে লাগল। ঐ ব্যক্তি (আগুন প্রজ্জলনকারী) তাদেরকে বাধা দিতে লাগলেন। কিন্তু সেই পোকা মাকড়গুলো বাধা না মেনে আগুনে ঝাঁপিয়ে পড়ল। অনুরূপ তোমাদেরকে তোমাদের কোমর ধরে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করছি। তারপরও তোমরা সেখানেই (আগুনে) ঝাঁপিয়ে পড়ছো। (বুখারী শরীফ)
মূলত, মহিলারা ছিল জাহান্নামের কিনারে অর্থাৎ মহিলা জাতী কুফরী শিরকী বিদয়াতী কাজ করে জাহান্নামের কিনারে চলে গিয়েছিলো। আর তখনই সাইয়্যিদাতুন নিসা, ফক্বীহাতুন নিসা, মালিকাতুল জান্নাহ, জামিয়াতুল ইলম, কায়মোকামে উম্মাহাতুল মু’মীনীন আলাইহিন্নাস সালাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি জাহান্নামের কিনারা থেকে কোমর ধরে টেনে নিয়ে আসছেন। তিনি মহিলা জাতিকে কুফরী, শিরক, বিদয়াত, গোমরাহী থেকে ইলম ও হেদায়েতের নূর দ্বারা সরিয়ে নিয়ে আসছেন এবং দ্বীন ইসলাম উনার আলোকে পুনরুজ্জীবিত করছেন।
আর এ পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার পরিপূর্ণ মিছদাক হওয়ার কারণে আমরা দেখতে পাই সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি বছরের পর বছর ধরে মহিলাদেরকে উনার নূরানী ছোহবত ও নছীহত মুবারক হাদিয়া করে যাচ্ছেন।সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি উনার নিয়মিত নছীহত মুবারকে দেশ, জাতি ও সম-সাময়িক বিষয় থেকে শুরু করে মানুষের বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ সমস্ত বিষয়েই আলোকপাত করে থাকেন। সময়ের প্রেক্ষাপটে এক এক করে তিনি সবই আলোচনা মুবারক করে যাচ্ছেন। উনার সে সমস্ত মহামূল্যবান নছীহত মুবারক সবটুকুই সমস্ত কায়েনাতের ইহকালের জন্য সঠিক দিক নির্দেশনা ও পরকালের পাথেয় হয়ে থাকবে। ইনশাআল্লাহ।
তাই, প্রত্যেক নারীর উচিত সাইয়্যিদাতুন নিসা, ফক্বীহাতুন নিসা, মালিকাতুল জান্নাহ, জামিয়াতুল ইলম, কায়মোকামে উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার মহামুল্যবান নসীহত মুবারক শুনা, জানা ও আমলে বাস্তবায়ন করা। ( চলবে)