(মুক্বদ্দিমা)
সমস্ত প্রশংসা একমাত্র খলিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য। অসংখ্য ছলাত ও সালাম যিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, শাফিউল মুজনিবীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি ও উনার মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রতি ও হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহুম উনাদের প্রতি।
মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন তিনি বান্দাদের সৃষ্টি করেছেন একমাত্র উনার ও উনার প্রিয়তম রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের ইবাদত বন্দেগী এবং মারিফত-মুহাব্বত হাছিল করার জন্য। এ প্রসঙ্গে মহান রব্বুল আলামীন তিনি পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন,
وَمَا خَلَقْتُ الْـجِنَّ وَالْإِنْسَ إِلَّا لِيَـعْبُدُوْنِ
অর্থ: আমি মানুষ ও জ্বিন জাতিকে সৃষ্টি করেছি একমাত্র আমার ইবাদত-বন্দেগী করার জন্য। (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা যারিয়াত শরীফ: সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৬)
তাই প্রত্যেক বান্দা-বান্দীদের মূল লক্ষ্যই হচ্ছে মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার প্রিয়তম রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদেরকে নিজ আমল- আখলাক্ব, ছীরত-ছূরত, মুয়ামালাত-মুয়াশারাত অর্থাৎ সব দিক থেকে সন্তুষ্ট করার কোশেশ করা এবং বিশুদ্ধ আক্বীদার সাথে মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার প্রিয়তম রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের নির্দেশিত ও দেখানো পথে জীবনকে পরিচালনা করা।
এ প্রসঙ্গে একখানা পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ أَبِـيْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تَـرَكْتُ فِيْكُمْ اَمْرَيْنِ لَنْ تَضِلُّوْا مَا تَـمَسَّكْتُمْ بِـهِمَا كِتَابَ اللهِ وَ سُنَّتِيْ
অর্থ: হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমি তোমাদের মাঝে দু’টি নিয়ামত মুবারক অর্থাৎ আদেশ মুবারক রেখে যাচ্ছি, যতক্ষণ পর্যন্ত সে নিয়ামত মুবারক অর্থাৎ আদেশ মুবারকগুলোকে আঁকড়ে ধরে রাখবে ততক্ষণ পর্যন্ত পথভ্রষ্ট হবে না। (এক) মহান আল্লাহ পাক উনার কিতাব মুবারক পবিত্র কুরআন শরীফ। (দুই) মহাসম্মানিত সুন্নাহ শরীফ তথা পবিত্র হাদীছ শরীফ। (মুয়াত্তা ইমাম মালিক রহমাতুল্লাহি আলাইহি)
উপরোক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার উপর আমল করতে হলে পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করা আবশ্যক। পবিত্র হাদিছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِىَ اللهُ تَـعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ طَلَبُ الْعِلْمِ فَرِيْضَةٌ عَلٰى كُلِّ مُسْلِمٍ وَّ مُسْلِمَةٍ
অর্থ: হযরত আনাস ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, প্রত্যেক মুসলমান নর-নারীর জন্য দ্বীনি ইলম অর্জন করা ফরয। (ইবনে মাজাহ শরীফ)
আর এই দ্বীনি ইলম অর্জন করতে হলে একজন হক্কানী-রব্বানী আলিম উনার ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করাও আবশ্যক। যা মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন তিনি সম্মানিতও পবিত্র সূরা কাহাফ শরীফ উনার ২৮নং সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
وَاصْبِرْ نَـفْسَكَ مَعَ الَّذِيْنَ يَدْعُوْنَ رَبَّـهُمْ بِالْغَدَاةِ وَالْعَشِيِّ يُرِيْدُوْنَ وَجْهَهٗ
অর্থ: ঐ সকল লোক উনাদের ছোহ্বত মুবারককে লাযিম করে নাও, যে সকল লোক সকাল-সন্ধ্যা মহান আল্লাহ পাক উনার সন্তুষ্টি মুবারক উনার উদ্দেশ্যে যিকির-আযকারে মশগূল থাকেন।
অর্থাৎ, মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন তিনি পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফে প্রত্যেককে একজন হক্কানী রব্বানী আলিম উনার ছোহবত মুবারককে আবশ্যক করে নিতে বলেছেন ।
মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন তিনি সম্মানিত ও পবিত্র সুরা নূর শরীফ উনার ৩০-৩১ নং সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফে পুরুষ ও মহিলা উভয়ের জন্যই পর্দা করা ফরয করেছেন। তাই, মহিলাদের জন্য একজন পুরুষ হক্কানী রব্বানী আলিম উনার ছোহবত ইখতিয়ার করা এবং উনার থেকে মহিলা সংক্রান্ত ইলম অর্জন করা ফিকিরের বিষয়। এক্ষেত্রে যদি মহিলাদের জন্য একজন হক্কানী রব্বানী আলিমা হন তাহলে উনার ছোহবত ইখতিয়ার করা এবং উনার থেকে মহিলা সংক্রান্ত যাবতীয় ইলম অর্জন করা সহজ সম্ভব হয়।
অতএব, প্রত্যেক পুরুষ ও মহিলার জন্য ফরয হচ্ছে একজন হক্কানী রব্বানী ওলী আল্লাহ উনার নিকট বাইয়াত হয়ে ছবক নিয়ে যিকির আযকার করে ছোহবত ইখতিয়ার করার মাধ্যমে ফায়িযে ইত্তিহাদী হাছিল করে তাকমীলে পৌঁছা। (অসমাপ্ত)