হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “তোমরা কার কাছ থেকে দ্বীনি ইলম শিক্ষা করছো তা আগে দেখ।” স্বভাবতই ভার্জিনিয়া কমনওয়ে লথ ইুনিভার্সিটির ইসলামিক সাবজেক্ট তথা ইসলামিক স্টাডিজের ক্ষেত্রে একটি সন্দেহযুক্ত বিষয়। কেননা, কমনওয়েলথ ধারণাটি ব্রিটিশ রাজতন্ত্রের ব্রিটিশ রাণীর প্রতি আনুগত্য তথা ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকের প্রতীক। আর ঔপনিবেশিক ব্রিটিশ যে কূট ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার করে মুসলমানদের দ্বীন ও দুনিয়ার মারাত্মক ক্ষতি করছে তা আজও মহাপীড়ায়াদক।
উরারফব ধহফ জঁষব থিউরি প্রয়োগ করে তারা পর্যায়ক্রমে ভারত উপমহাদেশকে মুসলমানদের থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে। তাদের প্রতিনিধি লর্ড উউলিয়াম মেকলে বলেছিলো, “আমরা এদেশ থেকে চলে যাব ঠিকই কিন্তু আমরা এদেশে এমন একটি জনগোষ্ঠী রেখে যাব যারা রক্ত, গোশতে এবং চেহারায় হবে ভারতীয় কিন্তু তাদের চিন্তা-চেতনায় তারা হবে ইংরেজ।”
তাই এ ষড়যন্ত্রের জাতি যখন তাদের দেশে, কমনওয়েলথ ইউনিভার্সিটির নামে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগে খুলে রাখে তখন তা গভীর সন্দেহজনক বলে প্রতিপন্ন হয়। বিশেষত: এ উপমহাদেশের আশি হাজার মাদরাসা তথা ইসলামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ধ্বংসের পর তারাই আবার ইসলামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরি করবে তা যে শুধু ‘গুরু মেরে জুতা দান হবে’ বিষয়টি তাতেই শেষ না। বরং এও যে নতুন এক ষড়যন্ত্র এবং এর মাধ্যমেই যে তারা তাদের অনুগামী একশ্রেণীর তথাকথিত ইসলামী পণ্ডিত বের করতে চাইছে, যারা ইসলাম ধর্মের মাঝে নতুন ফিৎনা-ফ্যাসাদ তৈরি করবে; ভার্জিনিয়া কমনওয়েলথ ইউনিভার্সিটির ইসলামিক স্টাডিজের মুরতাদ অধ্যাপক ড: কমিনা (আমিনা) ওয়াদুদের জুমুয়ার নামাযে ইমামতির দাবী দ্বারা তাই প্রতিভাত হয়।
এদিকে এই স্বঘোষিত ইমাম ও তার সহযোগী ইক্বামতদাতা সম্পর্কে প্রকাশিত হয়েছে আরো জঘন্য তথ্য। জানা যায়, ইক্বামতদাতা আসরা নুমানি ভারতীয় বংশোদ্ভূত মুসলিম হলেও সে বড় হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়াতে। সেখানে বিয়ের আগেই তার সন্তানের জন্ম নিয়ে হুলস্থল শুরু হলে সে বিদ্রোহ করে। পরবর্তী পর্যায়ে কুমারী মাতা হিসেবে সে মক্কা শরীফ-এ হজ্জ করে। এর আগে সে ভার্জিনিয়ার একটি মসজিদে জুমুয়ার নামাযের সময় সামনের দরজায় দিয়ে ঢুকে পুরুষদের সারিতে জোরপূর্বক বসে নামায পড়তে গিয়ে বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু হয়েছিলো।
অতি সম্প্রতি সে ‘ফ্রম মক্কা টু মিডল আমেরিকা’ নামে একটি বই লিখেছে। নিউইয়র্ক টাইমসের সম্পৃক্ত কয়েকজন মন্তব্য করেছেন, “আসরা নুমনানি তার বই প্রকাশের আগে বিশ্বব্যাপী বিতর্ক তুলেছে। এটা তার বইয়ের কাটতি বাড়ানো একটি কৌশল ছাড়া আর কিছুই নয়।” অর্থাৎ পাক্কা ধর্ম ব্যবসায়ীর মত এটাও তার একটা চাল।
পাশাপাশি আরো চমকপ্রদ তথ্য হচ্ছে যে, মুরতাদ ড: কমিনা নামধারী এই মুরতাদ নামাযে দাঁড়িয়ে ক্বিরায়াত আরম্ভ করার সাথে সাথে সূরা ভুলে যায়। এবং তার পিছনে ইক্তিদাকারী সবাই যখন লোকমা দিতে ব্যর্থ হয় তখন বাইরের এক লোক লোকমা দেয় এবং তা শুনে সে নামায পড়ায়।
উল্লেখ্য, নামাযের আগে মুরতাদ কমিনা প্রায় তিনঘণ্টা খুৎবাতে ইসলামে মহিলাদের অবস্থান, মর্যাদা সম্পর্কে তার মনগড়া ব্যাখ্যা পেশ করে। সে তার খুৎবাতে বলে, স্যুটের সঙ্গে ম্যাচ করে টাই পরার মতোই পুরুষ ও মহিলাদের সম্পর্ক। এখানে কোন ধরনের বৈশম্যের সুযোগ নেই। ইসলাম বা কুরআন শরীফ-এ কোথাও মহিলারা পুরুষের সঙ্গে নামায বা ইমামতি করতে পারবে না এমন কোন কথা নেই।
মূলত: মুরতাদের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে কয়েকটি বিষয় বিশেষভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হয়-
যে ব্যক্তি ইসলাম ও মহিলাদের অবস্থান সম্পর্কে প্রায় সূরা ভুলে যায়; বিষয়টি তাহলে কি দাঁড়ায়?
মূলত : এর দ্বারা এটাই প্রতিভাত হয় যে, আসলে ইসলাম ধর্মের মাঝে গভীর কুফরী মতবাদ ঢোকানোর চেষ্টায় সে বিশেষভাবে ট্রেনিংপ্রাপ্ত। কিন্তু ইসলাম ধর্মের আহকাম পালনের সময় তার আসলরূপ তথা খাঁটি জিহালতি পরিস্কারভাবে প্রকাশিত।
মুসলমান শিশুরা শিশুবস্থায় নামাযের সূরা-ক্বিরাত শিখে এবং মৃত্যুপর্যন্ত সেই ছোটবেলার শিক্ষা দিয়েই নামায পড়ে। পক্ষান্তরে মুরতাদ ড: কমিনা লক্ষ-কোটি বছরের ইতিহাস পাল্টিয়ে দেয়ার মত স্বঘোষিত ইসলামী বিশেষজ্ঞ দাবী করার পরও নামাযের শুরুতেই সে সূরা-ক্বিরায়াত ভুলে যায়; এ ঘটনার দ্বারা মূলত: মুসলমান হিসেবেই তার প্রতি ঘোর সন্দেহ ঘনীভূত হয়। বরং সে যে ইহুদীদের চর, মুসলমান নামের অন্তরালে আসলে ইহুদী সেটাই প্রতিভাত হয়।
মূলত: এ কারণেই সে বলতে পেরেছে, ‘কুরআন শরীফ-এ কোথাও মহিলারা পুরুষের সঙ্গে নামায বা ইমামতি করতে পারবে না এমন কোন কথা নেই।’
অথচ মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “নিশ্চয়ই পুরুষ জাতিকে মহিলাদের উপর প্রাধান্য দেয়া হয়েছে।”
এ আয়াত শরীফ উনার তাফসীরে সব ইমাম-মুজতাহিদ, আউলিয়ায়ে কিরাম এক মত যে, “ইমামতিতে একচ্ছত্র অধিকার পুরুষের। পাঁচ ওয়াক্ত নামায, জুমুয়া, ঈদ কোনটিতেই মহিলাদের ইমামতি জায়িয নেই।
বিশেষত: এই মুরতাদ মহিলা এটাও জানে না যে, মহিলাদের জন্য জুমুয়াই ফরয নয়। বরং তাদের জন্য পরতে হবে যোহরের নামায।
জানা যায়, তথাকথিত ‘জাগো মুসলিম’ নামক একটি ওয়েব সাইট সংগঠনের পক্ষ থেকে এই কর্মসূচী আয়োজন করা হয়েছিলো। নামাযে ৮৫ জন মহিলা ও শিশুসহ ৫০ জন পুরুষ মোট ১৩৫ জন অংশগ্রহণ করে। এরপর তাদের কর্মসূচী হচ্ছে প্রতি শুক্রবার আমেরিকার এক একটি সিটিতে নামায পড়া।
তাদের আরো দাবী হচ্ছে, “মসজিদে মূল প্রবেশদ্বার দিয়ে মহিলাদের প্রবেশের সুযোগ, পুরুষের সঙ্গে সামনের কাতারে দাঁড়ানো, খুৎবা ও ইমামতির সুযোগ।”
মূলত: এতে করে যে সুস্পষ্টভাবে ইসলামের মধ্যে বিকৃতি সাধন করার পায়তারা চলছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
বস্তুত: ইহুদী-খ্রিস্টানরা তাদের নিজেদের আসমানী কিতাব বিকৃত করেছে। কাজেই বিকৃতি সাধন তাদের মজ্জাগত। সুতরাং ইসলামের ভিতরে তাদের নিজেরদ এজেন্ট তৈরি করে তারা সেই বিকৃতি সাধন করতে চাইছে।
হাদীছ শরীফ উনার ভাষায় এরা হচ্ছে, দাজ্জালের চেলা। এটা ক্বিয়ামতের আলামত। এদের সম্পর্কে হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, “আখিরী যামানায় এমন সব মিথ্যাবাদী দাজ্জাল বের হবে তারা এমন সব কথা বলবে যা তোমরা শোননি তোমাদের বাপ-দাদা চৌদ্দপুরুষ শুনেনি। তোমরা তাদের কাছে যেয়ো না তাদেরকে তোমাদের কাছে আসতে দিয়ো না। তবে তারা তোমাদের গোমরাহ করতে পারবে না।”
-মুহম্মদ ওয়ালীউল ইসলাম, ঢাকা।
বৃটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে বৃটিশ ভূমিকা-১১