“তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ‘তত্ত্ব’ ব্যর্থ স্বীকারের পর গণতন্ত্রের ‘তন্ত্র’ও যে ভুল মন্ত্র তথা মরিচীকা মাত্র এবং ইসলামের দৃষ্টিতে তাহা হারাম ও নাজায়িয”-      সেইটা বুঝিতে দেশবাসী মুসলমানদের আর কতদিন লাগিবে? (১)

সংখ্যা: ১৭৯তম সংখ্যা | বিভাগ:

রাজাকার, ধর্মব্যবসায়ী, জামাতিরা এখন আর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রূপকার দাবী করিয়া তাহাদের কৃতিত্ব জাহির করে না। জামাতিরা যে ইসলাম করেনা তাহারা যে মূলতঃ রাজনীতি করে তাহা তাহাদের গুরু গো’আযম তাহার আত্মজীবনী “জীবনে যা দেখলাম” গ্রন্থে অকপটে স্বীকার করিয়াছেন। আবার গো’আযম যে এই তথ্য ব্রিটিশ প্রথা হইতে চুরি করিয়াছেন তাহার প্রমাণও ঐ বইয়ে রহিয়াছে।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের গ্যাঁড়াকলে পড়িয়া হাসফাঁস করিতেছেন আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা সবাই। তত্ত্বাবধায়ক সরকার তত্ত্বের মাঝে যে কত সর্বনাশা বীজ লুকাইয়া ছিলো তাহা এখন হাড়ে হাড়ে টের পাইতেছেন সবাই।

যেই সেনাবাহিনী ছিলো দেশ জনতার শেষ ভরসার স্থল, শ্রদ্ধার পাত্র, দেশ রক্ষার সৈনিক- সেই মহান সেনাবাহিনীকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিজেদের রক্ষার্থে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করিতেছে।

দ্রব্যমূল্যের সীমাহীন ঊর্ধ্বগতি, ভোজ্যতেল, ডিজেল, গ্যাসের বহুগুণ দামবৃদ্ধি হইতে আরম্ভ করিয়া ইসলাম ধর্মের উপর বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আঘাত দেশবাসী মহাআক্রোশে প্রত্যক্ষ করিতেছে। তাহারা ভেতরে ভেতরে তুষের আগুনের মত ধিকি ধিকি করিয়া জ্বলিতেছে।

ভোটার আইডি কার্ডের নামে অবলা গ্রাম্য গৃহবধুকেও হারাম ছবি তোলার জন্য বাধ্য করা হইতে শুরু করিয়া কুরআন শরীফ-এর আয়াত শরীফ-এর স্পষ্ট ও প্রকাশ্য লঙ্ঘন করিয়া বাবার সম্পত্তিতে ভাই-বোনের সমান অংশীদারিত্বের নীতিমালা ঘোষণা করিয়াছে।

এই যে এতসব দুঃশাসন, অপশাসন তাহার পরও জনগণ মাটি কামরাইয়া, থমকাইয়া আছে; তাহা কেবলমাত্র ঐ সেনাবাহিনীর ভয়। সেই কারণে সাধারণের মধ্যে এখন প্রকাশ্য বলাবলি হয় যে, ‘সেনাবাহিনীর শক্তি যদি না থাকিত তাহা হইলে এই সরকার দুই ঘণ্টাও টিকিতে পারিত কিনা সন্দেহ।’

এই দিকে সেনাবাহিনী রহিয়াছে সংবিধানের বিধান বলে। জরুরী অবস্থা জারির কারণে। জরুরী অবস্থা জারি স্বাধীনতা উত্তর বহুবার দেশবাসী প্রত্যক্ষ করিয়াছে। কিন্তু তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে জরুরী অবস্থা জারির ঘটনা এই প্রথম।

আর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়সীমা তিন মাস। পাশাপাশি জরুরী অবস্থা জারির মুদ্দতকালও তিন মাস। কিন্তু তত্ত্বাবধায়ক সরকার যদি জরুরী অবস্থা জারি করে তবে তাহার মেয়াদকাল কত হইবে তাহা নাকি সংবিধানে বর্ণিত নাই। এবং ইহাই নাকি বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক সরকারের তিনমাস অতিক্রম করিয়া প্রায় দুই বৎসর পর্যন্ত বহাল তবিয়তে টিকিয়া থাকার গুঢ় তত্ত্ব। অন্ততঃ বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক সরকারের তত্ত্ব তালাশকারীদের মতামত ইহাই।

কিন্তু সংবিধান বিশেষজ্ঞরা বলেন অন্য কথা। রাজনীতিক সরকার হউক অথবা তত্ত্বাবধায়ক সরকার হউক, জরুরী অবস্থা জারি করিলে তাহার মেয়াদ তিন মাস হইবে ইহাই সংবিধান সম্মত কথা। দেশ রক্ষা ও দেশচালনার ক্ষেত্রে সংবিধানের বিধানগুলো রাজনীতিক সরকার আর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নীতিমালা মূলতঃ একই। নচেৎ তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাহাদুরের জন্য আলাদা একখান তত্ত্বাবধায়ক সরকার সংবিধান তত্ত্ব প্রণয়ন করিতে হইবে।

এই দিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার তত্ত্ব যে আসলে গণতন্ত্রের তন্ত্রকেই মহাভুল বলিয়া উপহাস করে সেই দিকে এই তত্ত্ব আবিস্কারদের মোটেই খেয়াল ছিলো না। এবং হুজুগে মাতা বাঙ্গালীও যে খেয়াল দিবে, ভাবিবে, উপলব্ধি করিবে- সে ফুসরৎ তাহাদেরও অদ্যাবধি মিলে নাই।

বলাবাহুল্য, (১৯৯১-’৯৬) বিএনপি সরকার আমলে মাগুরা উপনির্বাচনে কারচুপির কারণে ক্ষমতাসীন সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে তাহার অধীনে নির্বাচন করা নিয়া রাজনৈতিক দলগুলোর মনের সন্দেহ প্রকাশ্য সংঘাতে রূপ নিয়েছিলো। আর সত্যিই ক্ষমতাসীন সরকার ক্ষমতার অপব্যবহার করিয়া কিরূপ মহাকারচুপির নির্বাচন করিতে পারে ১৯৯৬ এর ১৫ই ফেব্রুয়ারির নির্বাচন তাহার নিকৃষ্ট প্রমাণ।

তাহা হইলে বিষয় যাহা দাঁড়ায় যে, গণতান্ত্রিক দলগুলো একে অপরকে গণতন্ত্রী বলিয়া গণ্য করে না। আওয়ামী লীগ মনে করে বিএনপি গণতন্ত্রী নয়। গণতন্ত্রের প্রাণ ‘স্বচ্ছ নির্বাচন’ উহাদের হাতে সম্ভব নয়। আবার আওয়ামীলীগের ক্ষেত্রেও বিএনপি একই কথা।

ইহাতে ফলাফল যা প্রতিভাত হয় যে, বিএনপি এবং আওয়ামী লীগ উভয়ের কেউই গণতন্ত্রী নয়। এবং তাহার পাশাপাশি আওয়ামী লীগ, বিএনপি তথা গণতন্ত্রী রাজনৈতিক দলগুলোর পেছনে গোটা গণসাধারণ অর্থাৎ জনগণও গণতন্ত্রী নয়।

গণতন্ত্রের তন্ত্র- নির্বাচনী মন্ত্র তাহারা মানে না। গণতন্ত্রের নির্বাচনে তাহাদের বড়ই সন্দেহ, সংশয়, ভয়। গণতন্ত্রের ক্ষমতা যাহারই হাতে যাইবে তাহার দ্বারাই গণতন্ত্র ক্ষয়ের বড় ভয়।

অর্থাৎ গণতন্ত্রই গণতন্ত্রীদের জন্য নিরাপদ শাসনব্যবস্থা নয় এবং এই নিরাপত্তাহীনতা হইতেই কথিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্ম হয়।

যাহার দ্বারা গণতন্ত্রীরাই যে গণতন্ত্র অস্বীকার করে অথবা গণতন্ত্রের তন্ত্রই যে গলদ বহন করে তাহা অত্যন্ত নির্ভুল ও নির্ভেজালভাবে প্রমাণিত হয়।

মূলতঃ এইসব কথা অতি সূক্ষ্ম হইলেও একটু ফিকির করিলেই তাহার মর্ম উপলব্ধি করা যায়। হাদীছ শরীফ-এ তাই ফিকিরের ফযীলত বর্ণনা করা হইয়াছে। বলা হইয়াছে, “কিছুক্ষণ সময় ফিকির করা ষাট বছর বে-রিয়া নফল ইবাদতের চাইতে শ্রেষ্ঠ।” (সুবহানাল্লাহ)

মহান আল্লাহ পাক আমাদের সবাইকে ফিকির করার তাওফিক এনায়েত করুন। (আমীন)

– মুহম্মদ তারীফুর রহমান

ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি ও ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা-৫০

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-১৩ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৫১

‘থার্টিফাস্ট নাইট, ভালেন্টাইন ডে আর পহেলা বৈশাখের’ নামে হুজ্জোতির জন্য ধর্মব্যবসায়ীদের কৌশলগত নিষ্ক্রীয়তা, স্বার্থবাদী মৌসুমী রাজনৈতিক তৎপরতা এবং সংস্কৃতি বিপননকারীদের দূরভিসন্ধিতা ও মধ্যবিত্তের  তত্ত্ব-তালাশহীন প্রবণতা তথা হুজুগে মাতা প্রবৃত্তিই দায়ী

অবশেষে জামাতীরা স্বীকার করিল যে, মুক্তি পাইতে চাহিলে মুরীদ হইতে হয়। আল্লাহ পাক-এর ওলী বা দরবেশ হইতে পারিলে মুক্তি পাওয়া যায়। কিন্তু জামাতীরা তাহা নয় বলিয়াই আখিরাত তো দূরের কথা দুনিয়াতেই তাহারা দুর্নীতির দায়ে গ্রেফতার। আর মইত্যা রাজাকারের ফতওয়া অনুযায়ী তো- তাহাকেই কতল করা ওয়াজিব।