“তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ‘তত্ত্ব’ ব্যর্থ স্বীকারের পর গণতন্ত্রের ‘তন্ত্র’ও যে ভুলমন্ত্র তথা মরিচিকা মাত্র এবং ইসলামের দৃষ্টিতে তাহা হারাম ও নাজায়িয”- সেইটা বুঝিতে দেশবাসী মুসলমানদের আর কতো দিন লাগিবে? (৩)

সংখ্যা: ১৮১তম সংখ্যা | বিভাগ:

গত ২৫শে সেপ্টেম্বর “দৈনিক দিনকাল” লিড নিউজ করে, “রাষ্ট্র পরিচালনায় তত্ত্বাবধায়ক সরকার স্থায়ী সমাধান নয় – প্রধান উপদেষ্টা।”

“দৈনিক জনতা” লীড নিউজ করে, “তত্ত্বাবধায়ক সরকার কোন স্থায়ী সমাধান নয় -ফখরুদ্দীন।”

“দৈনিক মানবজমিন” লীড নিউজ করে, “তত্ত্বাবধায়ক সরকারে কোন স্থায়ী সমাধান নয়।”

“দৈনিক ডেসটিনি” লীড নিউজ করে, “তত্ত্বাবধায়ক সরকার স্থায়ী সমাধান হতে পারে না।”

আর দৈনিক ভোরের কাগজ প্রধান লীড নিউজ করে: “নির্বাচিত সরকারেরই দেশ চালানো উচিৎ।”

অর্থাৎ ফখরুদ্দীন নিজেই স্বীকার করলেন যে তারা এতদিন যাবত তাদের কথিত অনুচিত কাজটাই করে আসছেন। তাহলে কি দেশবাসী দাবি করতে পারে না যে ফখরুদ্দীনের এখনই পদত্যাগ করা উচিত। সেই সাথে তাদের স্বীকৃত অনুচিত কাজটির জন্য তাদের প্রকাশ্যে দেশবাসীর কাছে বিশেষভাবে ক্ষমা চাওয়া উচিত।

মূলতঃ ফখরুদ্দীন সরকার এমন ফাসিক ও জালিম সরকার- যে আজকে মুখ ফুটে ক্ষমা চাইলেও তাদের অপরাধ এমনিতেই ক্ষমা হবার যোগ্য নয়।

কারণ তারা লাখো-কোটি গরিব মানুষের উপর নির্বিচারে জুলুম করেছেন। জরুরী অবস্থার নামে যা ইচ্ছা তাই করে বেড়িয়েছেন।

যা করেছেন তার মধ্যে মূলতঃ গরিবকে আরো গরিব এবং দেশের ছিন্নমূল জনগোষ্ঠীকেও হত-দরিদ্র মানুষকে তিলে তিলে নিঃশেষ করার নির্বুদ্ধিতা ও নির্মমতা।

সাতশ’ বক মেরে ফখরুদ্দীন আজ বকধার্মিক সেজেছেন।

ফখরুদ্দীন এখন বলছেন ভবিষ্যতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রয়োজনীয়তা থাকবে কিনা তা চিন্তা-ভাবনার সুযোগ রয়েছে।

ফখরুদ্দীন জনরোষের দৃষ্টিকে ঘুরিয়ে দূরগামী করার পাঁয়তারা করছেন।

কিন্তু জনগণ ফখরুদ্দীনের দেখানো পথে দৃষ্টি দিলে মূলতঃ ফখরবাজ ফখরুদ্দীন সরকারকে ছেড়ে দেয়া হবে।

সেইক্ষেত্রে ফখরুদ্দীনের কথার পরিবর্তে বরং এ কথা উচ্চারণ করতে হবে এবং জনগণকে এখনই সিদ্ধান্ত নিতে হবে, আন্দোলিত হতে হবে, ইস্পাত দৃঢ় সংকল্প নিতে হবে যে- জরুরী অবস্থার নামে এই তত্ত্বাবধায়ক সরকার তথা ফখরুদ্দীন সরকার দেশ, জাতি ও ধর্মের উপর যে নিদারুন স্টীম রোলার চালিয়েছে তার কি শক্ত, কঠিন ও দৃষ্টান্তমূলক বিচারের ব্যবস্থা, শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করবে তার যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়া।

পুরো সময়টাই ফখরুদ্দীন সরকার ছিল ‘ভাত দেয়ার ভাতার নয় কিল মারার গোসাই’ এবং প্রথম অবস্থায় তার তোড়জোরটা ছিল ‘ধরাকে সরা জ্ঞান না করার’ও বহু ঊর্ধ্বে।

আজকে কোথায় গেল ফখরুদ্দীনের জরুরী অবস্থার জরুরী বিধিমালা? কোথায় গেল ফখরুদ্দীন সরকারের প্রচারিত ওয়ান-ইলেভেনের চেতনা?

        ফখরুদ্দীন সরকার গ্রেফতারের পর হাসিনাকে দেশ বিদেশ ভ্রমণ করার সুযোগ করে দিয়েছে-

       ফখরুদ্দীন সরকার তারেক রহমানকে একদিনে ৫ মামলায় জামিন দিয়ে তাকে জামাই আদরে বিদেশ পাঠিয়ে দিয়েছে-

       ফখরুদ্দীন সরকার খালেদাকে মুক্তি দিয়ে তার কথায় ৪ উপদেষ্টাকে পাঠিয়ে তাকে সসম্মানে রাজনীতি করতে দিয়ে জরুরী অবস্থাকে অজরুরী করে ফেলেছে।

কিন্তু ফখরুদ্দীন সরকার কি ভুলেও চিন্তা করেছে যে তাদের জন্মলগ্নে ডাট-পাট আর নির্মমতার সাথে তারা যে হাজার হাজার হাট-বাজার তথা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদ করেছিল, যারা সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েছিল, যারা নিম্ন-মধ্যবিত্ত থেকে ভিখারীতে পরিণত হয়েছিল রাজনীতিবিদদের মুক্তির পাশাপাশি আজকে তাদেরও বিশেষ আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেয়ার দরকার আছে। তাদের বিষয়টিও ভাবার প্রয়োজন রয়েছে।

ফখরুদ্দীন সরকার লেভেল প্লেইং  ফিল্ডের কথা বলছে।

এক্ষেত্রে তারা শুধু হাসিনা-খালেদা, জলিল-ওবায়েদ, তারেক-কোকোর কথাই ভাবছে।

কিন্তু তারা কি করে ভুলে থাকতে পারে যে তারা সন্ধ্যা ৭টার পর সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধের হুকুম দিয়ে, রাস্তাঘাটে হকারদের উচ্ছেদ করে, তথাকথিত হলিডে মার্কেট করে কত লাখ-লাখ হকারকে অনাহারে দিন কাটাতে বাধ্য করেছে।

তারা দেশে নীরব দুর্ভিক্ষাবস্থা সৃষ্টি করেছে। মধ্যবিত্তকে নিম্ন-মধ্যবিত্তে আর নিম্ন-মধ্যবিত্তকে ফকিরে পরিণত করেছে।

কই তাদের লেভেল ঠিক করার ক্ষেত্রে জালিম ফখরুদ্দীন সরকারের কোনো কথা নেই, কোন মাথাব্যথা নেই।

এমনকি তথাকথিত সুশীল সমাজেরও কোন আওয়াজ নেই।

সেনাবাহিনী প্রধানেরও কোনো ভাষণ নেই,

কোন বিবৃতি লেখনী কিছুই নেই।

অথচ তারাই শ্রমিক-জনতা মেহনতী মানুষ। তারাই নাকি সেনাবাহিনী প্রধানের প্রধান আশা, বড় ভরসা, স্বপ্নদেখার ডাল- উন্নয়নের ভিত্তি।

কিন্তু জালিম ফখরুদ্দীন সরকার জরুরী অবস্থার তোড়জোরে তাদেরকে যে তছনছ করে দিয়েছেন আজকে ফখরুদ্দীন সরকার তার জরুরী অবস্থাকে অজরুরী প্রমাণ করলেও সেইসব ক্ষতিগ্রস্তদের মহাক্ষতি পূরণে অতি জরুরীভাবে এগিয়ে আসা তার প্রতিই এখন জরুরী অবস্থা স্বরূপ।

ফখরুদ্দীন মূলতঃ গোটা জাতিকে গোলক ধাঁধাঁয় ফেলেছেন।

সংবিধান নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছেন।

জরুরী অবস্থা সম্পর্কে জনমনে বিভ্রান্তি তৈরি করেছেন।

জরুরী অবস্থার নামে ব্যক্তিগত খেয়াল-খুশি চরিতার্থ করেছেন

ফখরুদ্দীনের আজকের জরুরী অবস্থার যে হাল এ হালে অভ্যস্ত জনগণ যদি আগামী জরুরী অবস্থায় এ রকমভাবে চলাফেরা করে, তারেক রহমান-খালেদা জিয়াকে সংবর্ধনা দেয়ার মত জনসভা করে, গার্মেন্টস শ্রমিকদের মত আন্দোলন করে অথবা বর্তমান জরুরী অবস্থার নামে সার্বিক ঢিলেঢালা মন নিয়ে চলে

আগামী জরুরী অবস্থার জরুরী ফাঁদে পড়ে তাহলে তার জন্য কি আজকের সেনাবাহিনী সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জরুরী অবস্থার নামে অজরুরী হালই দায়ী নয়?

কারণ সাধারণ মানুষ অবস্থা দেখে চলে।

অবস্থা দেখে শেখে

অবস্থা দেখে তাদের অভ্যাস হয়

সে অভ্যাস তারা পরবর্তীতে ফলায়

সাধারণ মানুষ আইন পড়ে চলে না

সাধারণ মানুষ আইন জেনে চলে না

তবে ফখরুদ্দীন নিজেও চলেনি।

ফখরুদ্দনী বলেছে তত্ত্বাবধায়ক সাংবিধানিক সরকার। কিন্তু সংবিধানেই বর্ণিত রয়েছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার তিন মাসের এমনকি জরুরী অবস্থার মেয়াদও তিন মাস।

গত ২৫শে সেপ্টেম্বর ‘আমার দেশ’ পত্রিকায় প্রধান লিড নিজউ হয়: “সরকারের বৈধতার প্রশ্ন ঝুলে আছে উচ্চ আদালতে।”

খবরে বলা হয়: “অষ্টম জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন না হওয়ার বিষয়টিকে ইতোমধ্যেই হাইকোর্ট বিভাগ সংবিধান লঙ্ঘন হয়েছে বলে ঘোষণা করেছেন। চলতি বছরের মাঝামাঝি জরুরী অবস্থার সরকার ও সরকারের বিভিন্ন আইনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে মামলা রুজু হয়।

এছাড়া তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আদালত অবমাননা অধ্যাদেশ, বিবাহ ও তালাক রেজিস্ট্রেশন অধ্যাদেশকে অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেয়া রায় আপিল বিভাগের নির্দেশে স্থগিত রয়েছে। এসব রায়ে বলে দেয়া হয়েছিল নির্বাচন সংশ্লিষ্ট নয় এমন অধ্যাদেশ জারির এখতিয়ার অনির্বাচিত সরকারের নেই।

মূলতঃ তত্ত্বাবধায়ক সরকার সীমার বাইরে এত বেশি তত্ত্ব তালাশ করেছে যে, এখন খোদ তত্ত্বাবধায়ক সরকার তত্ত্ব নিয়েই কথা উঠেছে। যা স্বীকার করেছে ফখরুদ্দীন স্বয়ং নিজেও। সে বিবৃতি দিতে বাধ্য হয়েছে যে, “ভবিষ্যতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রয়োজনীয়তা থাকবে কিনা তা চিন্তা-ভাবনার সুযোগ রয়েছে।”

আসলে শুধু তত্ত্বাবধায়ক সরকারই নয় বরং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্মদাতা গোটা গণতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থাই থাকবে কিনা অথবা টিকবে কিনা তাই নিয়েই এখন সব গণতন্ত্রীদের গণফিকিরের প্রয়োজন রয়েছে। কারণ গণতন্ত্রীরা তত্ত্বাবধায়ক সরকার তত্ত্বের জন্ম দিয়েছিল গণতন্ত্র রক্ষার, স্বচ্ছ নির্বাচন করার পবিত্র আমানত হিসেবে শেষ ঢাল হিসেবে।

কিন্তু সেই মহাপবিত্র ও আস্থাভাজন তত্ত্বাবধায়ক সরকারই ‘বেড়ার নিজেই ক্ষেত খেয়ে ফেলার’ চেয়েও ভয়ঙ্কর উদাহরণ তৈরি করল।

ক্ষমতা কুক্ষিগত করার, ক্ষমতার অপব্যবহার করার চরম জঘন্য ও নিকৃষ্ট নজীর তৈরি করল।

এদিকে আইন মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বর্তমান জরুরী অবস্থার সরকার ক্ষমতায় আসার পর ১৫০টির বেশি অধ্যাদেশ জারি করেছে। সর্বশেষ গত সপ্তাহে তথ্য অধিকার আইন অধ্যাদেশ অনুমোদন করেছেন সরকার। এ অধ্যাদেশটির বিভিন্ন বিষয়েও অনেক আপত্তিকর বিষয় রয়েছে।”

দেখা যাচ্ছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার শুধু রাজনৈতিক বিষয়েই নয়, ধর্মীয় ক্ষেত্রেও তার ক্ষমতার ব্যবহার করে ধর্মবিরুদ্ধ অধ্যাদেশ জারি করে বসেছে।

ছবিসহ ভোটার আইডি কার্ড, বিবাহ-রেজিস্ট্রি-তালাক প্রসঙ্গ তার নগণ্য উদাহরণ।

কাজেই শুধু তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রসঙ্গেই নয় মূলতঃ গোটা গণতন্ত্র সম্পর্কে গণতন্ত্রীদের এখন গণখেয়াল জাগরিত করতে হবে যে, আসলে শুধু তত্ত্বাবধায়ক সরকারই নয় গোটা গণতন্ত্রেই লুকিয়ে রয়েছে গণবিধ্বংসী গণবীজ।

তথাকথিত অধ্যাদেশ প্রণয়ন ক্ষমতা আর নির্বাহী আদেশ বলে এরা ছেলেকে মেয়ে আর মেয়েকে ছেলে বানানো ছাড়া আর সবকিছু করতে পারে।

শুধু হারাম ছবিই বাধ্য নয়, মদ-শুকর খাওয়াও বাধ্য করতে পারে। বন্ধ করতে পারে নামায-রোযা। নষ্ট করতে পারে সব ইসলামী অনুভূতি। আজকের ব্যাপক বেপর্দা, বেহায়া তারই সাক্ষাত প্রমাণ।

অতএব, এ গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে গণ আন্দোলন গড়ে তোলা মুসলমানের জন্য ইসলামের দৃষ্টিতে ফরয-ওয়াজিব।

– মুহম্মদ তারীফুর রহমান

ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি ও ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা-৫০

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-১৩ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৫১

‘থার্টিফাস্ট নাইট, ভালেন্টাইন ডে আর পহেলা বৈশাখের’ নামে হুজ্জোতির জন্য ধর্মব্যবসায়ীদের কৌশলগত নিষ্ক্রীয়তা, স্বার্থবাদী মৌসুমী রাজনৈতিক তৎপরতা এবং সংস্কৃতি বিপননকারীদের দূরভিসন্ধিতা ও মধ্যবিত্তের  তত্ত্ব-তালাশহীন প্রবণতা তথা হুজুগে মাতা প্রবৃত্তিই দায়ী

অবশেষে জামাতীরা স্বীকার করিল যে, মুক্তি পাইতে চাহিলে মুরীদ হইতে হয়। আল্লাহ পাক-এর ওলী বা দরবেশ হইতে পারিলে মুক্তি পাওয়া যায়। কিন্তু জামাতীরা তাহা নয় বলিয়াই আখিরাত তো দূরের কথা দুনিয়াতেই তাহারা দুর্নীতির দায়ে গ্রেফতার। আর মইত্যা রাজাকারের ফতওয়া অনুযায়ী তো- তাহাকেই কতল করা ওয়াজিব।