কুরআন শরীফ-এ আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, “তোমরা আইয়্যামে জাহেলিয়াতের মত নিজেদের সৌন্দর্য প্রকাশ করে বেড়িওনা।”
অন্য আয়াত শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, “আল্লাহ পাক-এর বান্দাদের মাঝে খুব কম সংখ্যকই আল্লাহ পাক-এর শোকর গুজারী করে।”
উভয় আয়াত শরীফ-এর সমন্বয় করলে দাঁড়ায় যে, খুব কম সংখ্যক মহিলাই নিজেদের সৌন্দর্য জাহির করে চলবে না।
এবং অধিকাংশ মহিলাই নিজেদের সৌন্দর্য জাহির করে চলবে।
আর সৌন্দর্য প্রকাশের চিন্তা-চেতনা-কৌশল তাদের মাঝে থাকবে।
ইন্টারনেটে খবর দেয়া হয়, “মোস্ট স্টাইলিশ ওম্যান ডেইম হেলেন মিরেন।”
খবরে বলা হয়, “ডেইম হেলেন মিরেন এতদিন শুধু অভিনেত্রী হিসেবেই পরিচিত ছিলেন। এবার তিনি অন্য কারণে সবার দৃষ্টি কেড়েছেন। ৬৩ বছর বয়সী মিরেন এবার মোস্ট স্টাইলিশ ওম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। প্রতিযোগিতায় তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন কেইরা নাইটলি, ইয়াসমিন লিবন ও অ্যাগনেস ডেইনের মতো বিখ্যাত শোবিজ তারকারা। স্তন-ক্যান্সার নিরাময় অভিযানের অংশ হিসেবে লন্ডনে আয়োজন করা হয় ‘দ্য মোস্ট স্টাইলিশ ওম্যান’ পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের। এতে ডেইম হেলেন যে পোশাকে হাজির হন, তা অন্যদের সৌন্দর্যবোধের মাপকাঠিকে ছাড়িয়ে যায়। লম্বা স্কার্ট, সঙ্গে জ্যাকেট- এই আকর্ষণীয় পোশাকে তিনি হাজির হয়েছিলেন অনুষ্ঠানে। বয়সের আধিক্য তার সৌন্দর্যের পথে বাধা হয়ে দেখা দেয়নি। এ ব্যাপারে ডেইম হেলেনের মন্তব্য, আমি বিস্মিত। আমি সৌন্দর্যপিয়াসী এবং এও জানি, আমি সুন্দরী নই। আমি মেরিলিন মনরোর মতো গর্জিয়াসনেস, সেক্সিনেস পছন্দ করি, কিন্তু আমি জানি, আমি তা নই।”
কাফিরদের মধ্যে দু’টো প্রবণতা লক্ষণীয়।
তারা দেখতে চায়,
তারা দেখাতে চায়।
তারা দেখে আনন্দ পায়,
তারা দেখিয়ে পুরস্কার পায়।
বলাবাহুল্য, কাফিরদের জন্য রয়েছে নিশ্চিত জাহান্নাম। আর মুসলমানদের জন্য নিশ্চিত জান্নাত ইনশাআল্লাহ।
সুতরাং মুসলমানদের আমল কাফিরদের চেয়ে আলাদা তো হবেই। এ যে শুধু জান্নাতে যাওয়ার জন্য কষ্ট তাই নয়। এবং এ শরাফত, ভদ্রতা, মনুষ্যত্ব, নিরাপত্তা, আভিজাত্যের সাথেও সম্পৃক্ত।
হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তাই বলেছিলেন, “তোমাদের কী একটুও আত্মমর্যাদাবোধ নেই, তোমরা নিজেদের স্ত্রী-মেয়েদের এভাবে বাজারে ছেড়ে দাও কীভাবে?”
সত্যিই কাফিরদের চিন্তা-চেতনা-দর্শন-জীবন-অনুভূতি দেখে বিস্মিত হতে হয়।
এরা মানুষ না পশু, না আসলে পশুর চেয়েও অধম।
এদের কাছে আজ খুব বাহাদুরির, খুব আকর্ষণীয়,
খুব মর্যাদাপূর্ণ শব্দ হলো ‘যৌন আবেদনময়ী মহিলা।’ (নাউযুবিল্লাহ)
যে মহিলা নিজেকে যত বেশি যৌন আবেদনময়ী করে তুলতে পারে সে মহিলাই তাদের কাছে তত প্রিয়। (নাউযুবিল্লাহ)
তথাকথিত নারীবাদীরা আসলে ‘নারীবাদী’ শব্দ ব্যবহারের অনুপযুক্ত।
‘নারীবাদী’ শব্দ তারা অবৈধভাবে ব্যবহার করছে। কারণ, নারীলোলুপ পুরুষরা নারীকে চায় ভোগ্যপণ্যরূপে।
আর নারীরা অসহায়ের মত পুরুষের ভোগ্যপণ্যরূপেই এবং ভোগের যত প্রকার রয়েছে সে রূপেই নিজেদের তুলে ধরে।
পুরুষের কু-বাসনা চরিতার্থ করে
পুরুষের ভোগে ব্যবহৃত হয়ে নিজেদের জীবিকা সম্মান অর্জন করে।
এটা কী নারীত্বের চরম অবমাননা নয়?
এটা কী নারী ব্যক্তিত্বের চরম অপমান নয়?
এটা কী নারীদের মর্যাদার চরম ক্ষুণœতা নয়?
কিন্তু তারপরেও তথাকথিত নারীবাদীরা নারীত্বের চরম অবমাননার এই পুরুষতন্ত্রের বিরুদ্ধে বলছে না কেন?
কেন তারা শ্লোগান তুলছেন না-
‘নারী দেহকে পুরুষের লালসার দ্রব্যে পরিণত করা যাবে না?’ ‘নারীকে পুরুষের লোভনীয় দৃষ্টির জন্য সংক্ষিপ্ত বসনে চলতে দেয়া হবে না?’
‘নারীকে নৃত্যগীত করে পুরুষের মনোরঞ্জনের জন্য প্রদর্শিত হতে দেয়া হবে না?’
‘পুরুষের কু-বাসনা
কু-দৃষ্টির উপাদান হয়ে
নারীকে নাম অর্থ কামাতে হবে- এ ব্যবস্থা চলতে দেয়া যাবে না?’ বলাবাহুল্য, নারীদের এ দুরবস্থা আজ কত সঙ্গীন হয়ে উঠেছে।
ইন্টারনেটে প্রকাশিত আরেক খবর থেকে তার প্রমাণ পাওয়া যায়।
খবরের হেডিং হয়: “জোভি মার্সের বুদ্ধি।”
খবরে বলা হয়, “অনেকদিন ধরেই আলোচনায় আসতে পারছিলেন না ইংলিশ গ্ল্যামারস মডেল গার্ল জোভি মার্স। তাই দর্শক নজর কাড়তে তিনি নতুন এক বুদ্ধি আঁটেন। এজন্য তিনি সার্জারি করে তার বক্ষ আরো উন্নত করান। তার বিশ্বাস, স্বল্প বসনায় উন্নত বক্ষ তাকে বেশ আকর্ষণীয় করে তুলবে। ক’দিন আগে এ রকমই এক ড্রেস পরে মার্স গিয়েছিলেন লন্ডনের এক ক্লাবে। তার ওই নতুন রূপ আর বিশাল বক্ষ সেদিন অনেকেরই নজর কেড়েছিলো। এতে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন মার্স।” উল্লেখ্য, তথাকথিত নারীবাদী প্রগতিবাদীরা আদৌ অনুভব করেনা যে,
এটা আসলে নারীত্বের কত অবমাননা।
মনুষ্যত্বের কত অপমান।
পশুর জীবন যাপনের সমান।
একজন নারী- পুরুষের লালসার চোখে আকর্ষণীয় হয়ে না থাকতে পারলে তার কোন দাম নেই। কোন নাম নেই। নেই অর্থ। নেই জীবন যাপনের উপাদান।
দুঃখজনক হলেও সত্য যে, সে পশুবৎ দর্শনই আমাদের দেশের মেয়েদের মধ্যেও ভীষণভাবে সংক্রমিত হয়েছে।
এদেশের মেয়েরাও এখন পুরুষের কাছে আকর্ষণীয় হওয়ার জন্য তাদের দৃষ্টির সুখের জন্য পুরুষের লালসার রুচি অনুযায়ী নিজেদের তুলে ধরছে। (নাউযুবিল্লাহ)
কিন্তু তারপরেও নাকি এখানে সেখানে নারীবাদীরা বিভিন্ন সময়ে তাদের অস্তিত্বের জানান দিচ্ছে। ব্যাঙের ছাতার মত এখানে সেখানে অনেক তথাকথিত নারীবাদী সংগঠন গজিয়ে উঠেছে।
মূলতঃ এরা কখনই নারীবাদীরূপে নিজেদের পরিচিতি জাহির করতে পারে না।
নারীবাদী সংগঠনরূপে নিজেদের অস্তিত্ব ধারণ করতে পারে না।
প্রকৃত নারীবাদী পূর্ণ পর্দানশীনরাই- একথা আজ পর্দানশীল নারীদের উপলব্ধি করতে হবে।
নারীদের অবমাননা রোধে
পুরুষের ভোগ্যপণ্যরূপে পুরুষের লালসার চোখের আরামদায়ক বস্তু হিসেবে পরিগণিত হওয়ার বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন করে
শরীয়তী পর্দার বিস্তার করে নিজেদের প্রকৃত নারীবাদী হিসেবে প্রতিষ্ঠা অর্জন করতে হবে।
– মুহম্মদ জিসান আরিফ
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা-৩৪
চাঁদ দেখা এবং নতুন চন্দ্রতারিখ শুরু নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা- ২
কোকাকোলা ও অন্যান্য কোমল পানীয় সম্পর্কে উন্মোচিত সত্য-১৮
কট্টর কমুনিস্ট মাওসেতুং এর নতুন ভাবশিষ্য ফুলতলীর লংমার্চ এবং তার শরয়ী পর্যালোচনা ও প্রসঙ্গ কথা-৩