‘থার্টিফাস্ট নাইট, ভালেন্টাইন ডে আর পহেলা বৈশাখের’ নামে হুজ্জোতির জন্য ধর্মব্যবসায়ীদের কৌশলগত নিষ্ক্রীয়তা, স্বার্থবাদী মৌসুমী রাজনৈতিক তৎপরতা এবং সংস্কৃতি বিপননকারীদের দূরভিসন্ধিতা ও মধ্যবিত্তের  তত্ত্ব-তালাশহীন প্রবণতা তথা হুজুগে মাতা প্রবৃত্তিই দায়ী-

সংখ্যা: ১৮০তম সংখ্যা | বিভাগ:

{কারো উপর ভর করে পাপের প্রচলন করার ইবলিস কাহিনী ইতিহাসে অনেক পুরানো। কাবিলের দ্বারা- হত্যা, আমর বিন লুহাইর দ্বারা- মুর্তি পূজা, হযরত লুত আলাইহিস্ সালাম-এর ক্বওম দ্বারা সমকাম, জলীলুল ক্বদর রসূল হযরত ইবরাহীম আলাইহিস্ সালামকে আগুনে নিক্ষেপকারীদের সর্দারের দ্বারা ব্যভিচার ও টিপ প্রচলন- ইতিহাসে ইবলিসের এরকম বহু নজীর। আর সম্প্রতিক সময়ে এদেশে ‘ভ্যালেন্টাইন ডে’ প্রর্বতনে ইবলিসের নতুন সংযোজন, ইবলিসের মুয়াজ্জিন শফিক রেহমান।

১৯৯৩ সালের সাপ্তাহিক যায়যায়দিনে ছোট এক লেখার মাধ্যমে লোফাফার শফিক রেহমান যদি এদেশে ভ্যালেন্টাইন ডে সংস্কৃতি চালুর জন্য অভিযুক্ত হয় তবে আজকের রমনার বটমূলে পহেলা বৈশাখের উৎসবের জন্য ইসলামের দৃষ্টিতে অভিযুক্ত করতে হয় তথাকথিত ছায়ানটের অধ্যক্ষা সানজীদা খাতুন ও নাওয়াজেশ আহমেদকে। ১৯৬৭ সালে তারাই প্রথম আজকের রমনার অশ্বথ মূলে (প্রকৃতপক্ষে বটমূলে নয়) পহেলা বৈশাখের এ উৎসব চালু করে।

আজকের পহেলা বৈশাখের নামে জান্তব মুখোশ র‌্যালীর প্রচলন ঘটায় চারুকলার ছাত্ররা ১৯৮৯ সালে। আর পান্তা-ইলিশের প্রচলন ঘটায় বোরহান আহমেদ গং ১৯৮৪ সালে।

এসব তথ্যকণিকা থেকে একটা জিনিস স্পষ্ট হয় যে, আজকে পহেলা বৈশাখের নামে যে মাতামাতি চলছে তা আসলে বাঙালী সংস্কৃতির ধারাবাহিকতা নয়, বিকাশ তো মোটেও নয়। সুতরাং অতি উৎসাহী দু’একজনের আহ্বানে মাতোয়ারা হওয়া বাঙালী সংস্কৃতির অবগাহন প্রমাণ করে না। বরং চিলে কান নিয়েছে ঘোষণাকারীর পিছনে হুযূগে মাতা বাঙালীর হুযূগী মনোভাবই প্রতিভাত হয়।

এক্ষেত্রে তাই চিলে কান নেয়নি এ ঘোষণাটাই হুযূগে মাতা বাঙালীর হুযূগ থেকে উত্তম। একইভাবে উৎকৃষ্ট কথিত পহেলা বৈশাখ ইসলামের দৃষ্টিতে মুসলমানের জন্য পালনীয় নয় এ আহ্বানও।

 এক সানজীদা খাতুন, বোরহান আহমেদ আর চারুকলার কিছু ছাত্ররা যদি পহেলা বৈশাখের নামে এমন উন্মাদানা তৈরি করতে পারে তাহলে ইসলামের দৃষ্টিতে উলামায়ে হক্কানী রব্বানীর কি এই অধিকার নেই যে, বিভ্রান্ত, পথহারা মুসলমানদের ইসলামের পথে আহ্বান করা। শরীয়তের সীমারেখা বর্ণনা করা।

কারণ, পহেলা বৈশাখে মাতোয়ারা বিভ্রান্ত মুসলমান কখনো বলেনি যে, তারা ইসলাম ত্যাগ করেছে। বরং পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানে গিয়েও তারা স্বীকার করে যে তারা মুসলমান। অথচ পহেলা বৈশাখের তথাকথিত আনন্দ যে মুসলমানিত্বের বাইরে এ অনুভবের ঘাটতি তাদের মাঝে বিরাজমান।

এ ঘাটতির পিছনে দায়ী তথাকথিত সংস্কৃতিবাদী এবং ধর্মব্যবসায়ী, জামাতী, খারিজী, রাজাকার আল বাদরদের কুপমু-তা ও আদর্শহীনতা তথা আমলহীনতা। সব মিলিয়ে তৈরি হয়েছে এক মহা অবিমৃষ্যকারীতা ও ঢের অনৈসলামীপনা। এ গোলকধাধা হতে বেরিয়ে আসতে হবে মুসলমানকে তার নিজের তাগিদেই। নিজেদের কল্যাণেই। মহান আল্লাহ পাক সবাইকে তৌফিক নছীব করুন, কবুল করুন। (আমীন)}

পহেলা বৈশাখ পালনকারীদের নেপথ্য শক্তিদাতা হল তথাকথিত ইসলামপন্থি রাজনীতিকরা।

তারা এবং তাদের মুখপত্র দৈনিকগুলো ইদানিংকাল প্রায়ই উচ্চারণ করছে জাতীয়তাবাদী ও ইসলামপক্ষের শক্তি।

জাতীয়তাবাদী বলতে তারা এক্ষেত্রে বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদীদের বোঝান তথা বি.এন.পি.কেই উল্লেখ করেন। কিন্তু তারপরেও মূলতঃ তারা জাতীয়তাবাদকেই সমর্থন করেন তাই না বরং এ জাতীয়তাবাদকে তারা মূলতঃ ইসলামের সমর্থক ও সহযোগী বলে ব্যক্ত করেন। এবং সে কারণেই তারা জাতীয়তাবাদী ইসলামপক্ষের শক্তি বলে

কিন্তু আসলে কথিত জাতীয়তাবাদী চেতনাকে কোনভাবেই ইসলামীকরণ করা যায় না। যা করা হচ্ছে তা আসলে ইসলামের নামে অপব্যাখ্যা।

আর ইসলামের নামধারী ধর্মব্যবসায়ীদের সে অপব্যাখ্যার কারণেই সবার ধর্মবিরোধী অপশক্তিগুলো এত গজরাতে পারছে। যা খুশী তাই বলছে।

উল্লেখ্য, তথাকথিত ইসলামপন্থীরা শুধু ইসলামের নামে বিকৃত লেবাসটাই আটকে আছে। হাক্বীক্বত ইসলাম সম্পর্কে কোন ইলমই তাদের নেই।

তারা ইলম কালাম হীন আশাদ্দোদ দরজার জাহিল নাদান যে; তারা জানেনা যে কথিত বাঙালী অথবা বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ যার কথাই বলা হোক না কেন যেখানে ধর্ম বা ইসলামকে তার একটা অঙ্গ বা উপাদান হিসেবে দেখা হয়। ঊর্ধ্বে নয়।

তথাকথিত জাতীয়তাবাদীরা জাতীয়তাবাদের মূলে যেসব ‘সাবজেকটিভ’ ‘অবজেকটিভ’ উপাদান সক্রিয় থাকে বলে উল্লেখ করেছেন, সেগুলো হলো একটি নিদৃষ্টি রাষ্ট্র সীমায় বসবাসকারী জনগণের- “Common language, value systems, religion and literature, common economic and political creeds, common government, historical traditions, symbols and experiences, conflict an common enemies, the growth of communication system etc.”

এ বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে যেসব উপাদানকে মূখ্য করে দেখা হয় তাহলো, (১) বাংলাদেশের ভূমি অর্থাৎ আন্তর্জাকি সীমানার মধ্যবর্তী বাংলাদেশের ভৌগলিক ও রাজনৈতিক এলাকা; (২) ধর্ম, বর্ণ, গোত্র নির্বিশেষ দেশের জনগণ; (৩) বাংলাদেশের ভাষা বাংলা ভাষা; (৪) বাংলাদেশের সংস্কৃতি- জনগণের আশা-আকাঙ্খা,  উদ্দীপনা ও আন্তরিকতার ধারক ও বাহক বাংলাদেশের নিজস্ব কৃষ্টি ও সংস্কৃতি; (৫) দুশ’ বছর উপনিবেশ থাকার প্রেক্ষাপটে বিশেষ অর্থনৈতিক বিবেচনার বৈপ্লবিক দিক; (৬) সর্বোপরি বাংলাদেশের ‘৭১ রে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ যার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের ‘বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের দর্শন বাস্তব ও চূড়ান্তরূপ লাভ করেছে।

লক্ষ্যণীয় যে, বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের ক্ষেত্রে ধর্মকে তথা ইসলামকে অধীন কর দেয়া হয়েছে। একটা উপাদান মাত্র বলে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে।

অর্থাৎ একটা উপাদান যেমন গোটা সমগ্রিক সত্ত্বার উপর প্রাধান্য বিস্তার করতে পারেনা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না তেমনি জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে ইসলামকে জাতীয়তাবাদের ধারনা ও চেতনার উপর প্রাধান্য বিস্তার করতে পারে না।

আর কথিত জাতীয়তাবাদের যেহেতু কোন পাপ-পূণ্যের পরিধি নেই সেহেতু তারা কোন চেতনায় পাপ-পূণ্যের বিষয়টিকে আমলে নেয় না।

সে কারণেই কথিত জাতীয়তাবাদীরা পহেলা বৈশাখকে মুসলমান, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ ও হিন্দুদের একীভূত চেতনা হিসেবে দেখে।

এদিকে তথাকথিত ইসলামপন্থীরা বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদকে ইসলামপক্ষের সহযোগী শক্তি হিসেবে প্রচারণা চালায়; তারা ক্ষমতা হারায় জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে প্রচারণা চালানো পহেলা বৈশাখের নামে যাবতীয় হারাম উৎসবের বিরোধিতা করতে বাঙ্গালীরা বাংলাদেশী হিন্দু, বৌদ্ধ খ্রিস্টানের ধর্ম বিশ্বাসও চেতনা বা আমলের বিপরীতে মুসলমানদের স্বকীয়তা ফুটিয়ে তুলতে। মূলত মুসলমানদের ঈমান ও আমল  হেফাযতে সহায়ক ভূমিকা রাখতে।

ইসলামের দৃষ্টিতে এরা মুনাফেক বিবেচ্য। এবং এরাই ইসলামের বড় শত্রুরূপে চিহ্নিত। সঙ্গতকারণেই এদের সম্পর্কে সচেতন হওয়া প্রত্যেক মুসলমানের ঈমানী কর্তব্য।

-মুহম্মদ ওয়ালীউর রহমান

ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি ও ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা-৫০

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-১৩ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৫১

‘থার্টিফাস্ট নাইট, ভালেন্টাইন ডে আর পহেলা বৈশাখের’ নামে হুজ্জোতির জন্য ধর্মব্যবসায়ীদের কৌশলগত নিষ্ক্রীয়তা, স্বার্থবাদী মৌসুমী রাজনৈতিক তৎপরতা এবং সংস্কৃতি বিপননকারীদের দূরভিসন্ধিতা ও মধ্যবিত্তের  তত্ত্ব-তালাশহীন প্রবণতা তথা হুজুগে মাতা প্রবৃত্তিই দায়ী

অবশেষে জামাতীরা স্বীকার করিল যে, মুক্তি পাইতে চাহিলে মুরীদ হইতে হয়। আল্লাহ পাক-এর ওলী বা দরবেশ হইতে পারিলে মুক্তি পাওয়া যায়। কিন্তু জামাতীরা তাহা নয় বলিয়াই আখিরাত তো দূরের কথা দুনিয়াতেই তাহারা দুর্নীতির দায়ে গ্রেফতার। আর মইত্যা রাজাকারের ফতওয়া অনুযায়ী তো- তাহাকেই কতল করা ওয়াজিব।