দুষ্টের দমনে যে পুলিশ সে পুলিশই এখন বড় দুষ্ট ও দুরনীতিবাজ হয়ে উঠছে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ হাজার হাজার রাষ্ট্রযন্ত্র তার ব্যর্থতা ঘুচাবে কী করে?

সংখ্যা: ২১৯তম সংখ্যা | বিভাগ:

সব প্রশংসা মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত দুরূদ ও সালাম।

পুলিশে দুর্নীতি বাড়ছে। বাড়ছে ক্ষমতার অপব্যবহার। কমছে সেবার মান। থানায় গিয়ে মানুষ প্রতিকার পাচ্ছে না। পাচ্ছে খারাপ ব্যবহার। তল্লাশি চৌকির নামে মানুষকে হয়রানি করা হচ্ছে।

দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের মানুষকে সরকারি সেবা পেতে সবচেয়ে বেশি ঘুষ দিতে হয়। আর এদেশে সবচেয়ে বেশি ঘুষ দিতে হয় পুলিশকে। এর ঠিক পরপরই রয়েছে বিচার বিভাগ। দুর্নীতিবিরোধী আন্তর্জাতিক সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের (টিআই) এক জরিপভিত্তিক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।

হাজারো অপরাধে জড়িয়ে পড়েছে পুলিশ। জমি দখল, ঘুষ, গ্রেপ্তার বাণিজ্য, চুরি, ছিনতাই, চাঁদাবাজির ঘটনাতেই নয়, ডাকাতির ঘটনায়ও তারা জড়িত। হত্যাকাণ্ডে মতো ভয়ঙ্কর অপরাধে যুক্ত হয়েছে তারা। আটক কিংবা গ্রেপ্তার না দেখিয়ে দিনের পর দিন থানা হেফাজতে নির্যাতন করে টাকা আদায়ের অভিযোগও রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। যে বাহিনীর নীতি ‘দুষ্টের দমন শিষ্টের পালন’, হালে সেই পুলিশ বাহিনীর এক শ্রেণীর সদস্যের নৈতিকতাবর্জিত অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ার ঘটনা উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে চলেছে। চলতি বছরের গত ৭ মাসেই ২১ হাজার অভিযোগ জমা পড়েছে এদের বিরুদ্ধে। এর আগের বছরে প্রায় ২৫ হাজার অভিযোগ জমা হয়েছে। তাদের কর্মকাণ্ডে গোটা বাহিনীর ভাবমূর্তির ওপর আঘাত হানার উপক্রম হয়েছে। এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে কর্তৃপক্ষ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতেও শুরু করেছে। পুলিশ সদর দপ্তর ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স সূত্র জানিয়েছে, গত ১৯ মাসে বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ সদর দপ্তরের সিকিউরিটি সেলে প্রায় ৪৬ হাজার অভিযোগ জমা পড়েছে। তদারক কর্মকর্তারা কঠোর গোপনীয়তা অবলম্বন করে ওইসব অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছেন। ইতিমধ্যে পুলিশ সদর দপ্তর ২১,১৯৭ জন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে শস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে। এর মধ্যে ২০১১ সালে ১৩,৭৪৫ জন এবং চলতি বছরের গত ৭ মাসে (জানু-জুলাই) ৭,৪৫২ জন পুলিশ সদস্য ও কর্মকর্তাকে শাস্তি দেয়া হয়েছে। পুলিশ সদর দপ্তরের সিকিউরিটি সেলের এএসপি ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, যত সংখ্যক পুলিশ সদস্য ও কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তার তুলনায় প্রায় তিন গুণ অভিযোগ জমা পড়ে পুলিশ সদর দপ্তরের সিকিউরিটি সেলে। এ হিসাবে গত ১৭ মাসে শুধু পুলিশ সদর দপ্তরেই অর্ধ লক্ষাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে।

সূত্রমতে, ২০১১ সালে শাস্তিপ্রাপ্ত পুলিশের মধ্যে কনস্টেবল থেকে এসআই পদ মর্যাদার ১২,৯৭২ সদস্যকে লঘু দন্ড দেয়া হয়েছে। গুরুদন্ড দেয়া হয়েছে ৬১২ জন পুলিশ সদস্য ও কর্মকর্তাকে।  গুরুতর অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় পুলিশের ৯০ জন সদস্যকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে ৩৭ জনকে। ওই সময়ে ইন্সপেক্টর পদ মর্যাদার ২৩ পুলিশ কর্মকর্তাকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দেয়া হয়। ১৯ জন ইন্সপেক্টরকে লঘু দন্ড, ৩ জন ইন্সপেক্টরকে গুরুদন্ড ও একজন ইন্সপেক্টরকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া নানা ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অপরাধে পুলিশের ৭ জন এএসপি, ১ জন এডিশনাল এসপি ও ৩ জন এসপির বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সর্বশেষ গত সোমবার পুরান ঢাকার মিটফোর্ডে চাঁদাবাজির অভিযোগে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের দু’জন ইন্সপেক্টর ও ৪ জন কনস্টেবলকে ক্লোজ করা হয়েছে। পুলিশ সদর দপ্তরের সিকিউরিটি সেল সূত্র জানায়, সম্প্রতি বিনা অপরাধে শেরে বাংলানগর থানা পুলিশ সাংবাদিকদের পিটিয়েছে। চকবাজার এলাকায় নিরপরাধ ব্যক্তিদের থানা হেফাজতে নির্যাতন চালিয়ে টাকা আদায় করেছে পুলিশের চার কর্মকর্তা। পুলিশের কর্মকর্তারা জানায়, গুরুতর অভিযোগের তদন্তে সত্য প্রকাশ হওয়ার পরই তাদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। গত ২৬শে সেপ্টেম্বর রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুষ নেয়ার অভিযোগে ট্রাফিক পুলিশের চার সার্জেন্ট জিয়াউল হক, শহীদুল ইসলাম, শাহীন ও হেলালউদ্দিনকে বরখাস্ত করা হয়েছে। একই অভিযোগে ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক মাজেদ আলীকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। ঘটনার তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই বরখাস্তকৃত কর্মকর্তারা রাজধানীর মৎস্য ভবন, মগবাজার, গুলশান-১ ও মহাখালী এলাকায় পরিবহনের মালিকদের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা ও ঘুষ নিচ্ছিল। অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও জননিরাপত্তার পরিবর্তে দলীয় স্বার্থরক্ষা, গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে প্রতিহত করতে স্বাধীন দেশে পুলিশকে পেটোয়া বাহিনী হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এ কারণেই পুলিশের মতো সুশৃঙ্খল বাহিনীর সদস্যরা বিভিন্ন অপরাধ কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ছে।

এর আগে ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদের নাতি রাকিবকে রাজধানীর গুলশানে বেদম মারধর করে পুলিশ। রেসিং কার চালানোর অপরাধে তাজউদ্দিনের নাতিকে মারধরের ঘটনায় দেশব্যাপী চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। ওই ঘটনায় গুলশান থানার তৎকালীন ওসি শাহ আলমকে প্রত্যাহারসহ কয়েক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়। অনেকে ক্ষেত্রে রাজনৈতিক কারণে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের বিররুদ্ধে কঠোর শাস্তি গ্রহণ করা হয় না। বেশির ভাগ থানার ওসির সঙ্গে স্থানীয় এমপির ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে। এ কারণে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার পরও তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয় না।

পুলিশের অভিযোগের তদন্ত পুলিশই করে। এ কারণেই পুলিশের দুর্নীতি কমছে না। এছাড়া শুধু বরখাস্ত করেই শাস্তির বিধান একটা রীতি হয়ে গেছে পুলিশ বিভাগে। ১৯৯৬ সালে সীমা ও ১৯৯৫ সালে ইয়াসমীনকে গণসম্ভ্রমহরণে পুলিশ জড়িত ছিল। ক্ষমতার দাপটে সীমা সম্ভ্রমহরণ মামলার অন্যতম আসামি ওসি সিরাজ বারবার চাকরিচ্যুত হয়েও আবার চাকরি ফিরে পায়। এ কারণে সরকারদলীয় নেতাদের সাপোর্ট বন্ধ ও নিয়োগ প্রক্রিয়া স্বচ্ছ না হলে পুলিশে দুর্নীতি কমবে না।

এসব অবস্থা প্রতিভাত করে দেশে প্রচলিত আইনের কোন শাসন নেই অথবা প্রচলিত আইনী প্রক্রিয়া ব্যর্থ। মূলত: দুটোই সত্য। সরকার নিজেও তা স্বীকার করে থাকে। এক্ষেত্রে রোজা একটি বড় উদাহরণ। রোজাদার যখন রোজা রাখে তখন ভর দুপুরে প্রচন্ড গরমের মধ্যে পুকুরে ডুব দিলেও সে পানির নিচেও পানি পান করেনা। কারণ তার মধ্যে রয়েছে মহান আল্লাহ পাক উনার ভয়। পক্ষান্তরে প্রচলিত আইনের উৎস হলো মানুষ এবং প্রচলিত আইনকে ভয় করতে হলে মূলত মানুষকেই ভয় করা হয়। অথচ মানুষ স্বভাবগতভাবে অন্য মানুষকে বেশি ভয় পায়না। সেক্ষেত্রে মহান আল্লাহ পাক উনার ভয়ই প্রকৃতপক্ষে মানুষকে অপরাধ থেকে বিরত রাখতে পারে।

মূলত কথিত পুলিশী শাসনের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রযন্ত্র সম্পূর্ণ ব্যর্থ এবং ব্যর্থ হওয়াই স্বাভাবিক। এক্ষেত্রে সাতানব্বই ভাগ মুসলমানের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রযন্ত্র খুব সহজেই সুফল পেতে পারে যদি মহান আল্লাহ পাক উনার ভয় সাতানব্বই ভাগ জনগোষ্ঠী মুসলমানের মাঝে ঢুকিয়ে দেয়া হয়। তাহলেই আজকের চাঁদাবাজি, ছিনতাই, সন্ত্রাস, পুলিশের দুর্নীতি, মাদক, রাহাজানি ইত্যাদির ভারে ব্যর্থ রাষ্ট্রযন্ত্র সোজা হতে পারবে, কাঙ্খিত সফলতা পাবে। মূলত সব সমস্যা সমাধানে চাই সদিচ্ছা ও সক্রিয়তা তথা সততা। কিন্তু এর জন্য প্রয়োজন নেক  ছোহবত, নেক সংস্পর্শ তথা রূহানী ফয়েজ-তাওয়াজ্জুহ। যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার নেক মুবারক ছোহবতেই কেবলমাত্র তা পাওয়া সম্ভব। মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে তা নছীব করুন। (আমীন)

-মুহম্মদ আশিকুল্লাহ

প্রসঙ্গঃ আমেরিকায় ইহুদী প্রভাব ও নিয়ন্ত্রণ- ২

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কাযযাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৩৩

ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা-৩৪

চাঁদ দেখা এবং নতুন চন্দ্রতারিখ শুরু নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা- ১

কোকাকোলা ও অন্যান্য কোমল পানীয় সম্পর্কে উন্মোচিত সত্য-১৮