ধর্মনিরপেক্ষতার দাবিদার ভারতে মুসলমানদের প্রতি নিরপেক্ষতার পরিবর্তে চলছে চরম নিপীড়ন। এদেশের হিন্দুরা ধর্মনিরপেক্ষতার নামে রামরাজত্ব চালাতে চায় কিন্তু ভারতে মুসলমানরা কতটুকু দলিত-মথিত সে খবর কী তারা রাখে? ভারতে মুসলমানদের প্রতি নির্যাতন ও নিপীড়নের ভয়াবহতার প্রকৃত খবর ক’জনে রাখে? অথচ মিডিয়ায়ও এসব খবরের সংখ্যা কম নয় (৯)

সংখ্যা: ২১৮তম সংখ্যা | বিভাগ:

ভারতের এক-তৃতীয়াংশ মুসলিম দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে। তাদের মাসিক আয় ৫৫০ রুপিরও কম। (সূত্র : দ্য টাইম্স অব ইন্ডিয়া।)

শিক্ষা ও চাকরির ক্ষেত্রে মুসলমানদের জন্য কোটা সংরক্ষণ ইস্যুতে সাম্প্রতিক বিতর্কের মধ্যেই অর্থনৈতিক গবেষণা সংস্থা ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর অ্যাপ্লাইড ইকোনমিক রিসার্চের (এনসিএইআর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।

এনসিএইআর জানায়, প্রতি ১০ জন মুসলিমের ৩ জন মুসলিম দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে। ২০০৪-০৫ সালে তাদের মাসিক আয় ছিল ৫৫০ রুপিরও কম।

অবশ্য গ্রামের তুলনায় শহরের মুসলিমদের অবস্থা তুলনামূলক ভালো আছে। গ্রামের মুসলিমদের মাসিক আয় ৩৩০ রুপি।

সবাই জানেন ভারতের পুলিশ হচ্ছে মুসলিম বিদ্বেষী। মুসলিম হত্যায় তারা ওতপ্রোতভাবে জড়িত। ২০০২ সালের গুজরাটে দাঙ্গা হচ্ছে তার অব্যর্থ প্রমাণ।

বহুমতের প্রতিফলন ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমে নেই। সংবাদ মাধ্যমে সন্ত্রাস সম্পর্কিত একতরফা হিন্দু দৃষ্টিভঙ্গির উপর নির্ভর করে রিপোর্ট তৈরি করা হয়। কোনো নিরপেক্ষ বিশ্লেষকের পক্ষে ঘটনার সত্যস্বরূপ উঘাটন কোনোভাবেই সম্ভব হয় না।

টমাস এরিকসন যেমন বলে, সংবাদ মাধ্যমে উদ্ধৃত আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ শব্দগুচ্ছের ততক্ষণ পর্যন্ত কোনো অর্থ হয় না, যতক্ষণ না আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে সক্রিয় লোকদের পরিচিতির ও তাদের মধ্যকার পরস্পর নির্ভর সম্পর্কের যথার্থ বিবরণ তুলে ধরা না হয়। সঠিক মন্তব্য করেছেন পিটার ভ্যান ড্যর ভীয়র। সে বলেছে, সংবাদ পরিবেশনের নামে সংবাদমাধ্যমগুলো সত্যকে আরও আড়ালে ঠেলে দিচ্ছে।

সন্দেহভাজন সন্ত্রাসীদের ওপর অবৈধ পন্থায় বর্বর নির্যাতন অনুষ্ঠানের সংবাদ মাধ্যমে কোনোকালে ফুটে ওঠে না। সন্দেহভাজনদের জন্য টর্চার সেল কায়েম করা হয়। আইনবহির্ভূত কয়েদখানা তৈরি হয় তাদের জন্য। পুলিশ এনকাউন্টারের নামে তাদের হত্যা করা হয়। বেআইনী পুলিশী বর্বরতার সাক্ষ্য-প্রমাণ লোপাট করে দেয়া হয়। এভাবেই বেপরোয়া হত্যা নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন ভারত জুড়ে নির্দোষ মুসলিম জনগণ শুধুমাত্র সন্দেহের ভিত্তিতে।

২০০৯ জুলাইয়ে ‘দি উইক’ মুসলিম বন্দীদের কাছ থেকে জোর-জুলুম ভিত্তিক তথ্য সংগ্রহের জন্য ১৫টি টর্চার চেম্বার খুঁজে পাওয়ার খবর প্রকাশ করে। দি উইক মন্তব্য করে টর্চার চেম্বারগুলো হচ্ছে ভারতের নিজস্ব পদ্ধতির গুয়ান্তানামো বে বা গিটমো। মে, ২০০৮-এ ১৪ বছরের এক মুসলিম কিশোরকে তুলে নিয়ে যায় গুজরাট পুলিশ। বন্দুকের ডগায় গাড়িতে তুলে নিয়ে গিয়ে বন্দী শিবিরে তার উপর নির্যাতন চালানো হয়। ছেলেটির মায়ের দরখাস্তে সাড়া দিয়ে কোর্ট তার মুক্তির আদেশ দেয় এবং দশ দিন পর ওই কিশোর মুক্তি পায়। আদালতে মোকদ্দমা এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করলে ভয়াবহ পরিণতি ভুগতে হবে বলে ছেলেটির পরিবারকে পরে পুলিশ শাসিয়ে দেয়। ভারতীয় আইনজীবীরা মুসলিমদের পক্ষে মোকদ্দমা চালাতে প্রায়শই ইতস্তত করে। অবলম্বনহীন একটি জনসম্প্রদায়ে পরিণত হয়েছে ভারতের মুসলিম সম্প্রদায়।

২০০৬ সালে সাচার কমিটির রিপোর্টে বলা হয়, পর্যাপ্ত সংখ্যক যোগ্য আইনজীবীর অভাবে ভুগছেন মুসলিম জনগণ। দুর্দশার সর্বশেষ প্রান্তে নিক্ষিপ্ত ভারতের মুসলিম সম্প্রদায়ের কণ্ঠস্বর ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমে অনুপস্থিত।

১৯৯৬ সালে ৪১৩ জন মুসলিমকে সিমি সদস্য বলে আটক করা হয়। অথচ তখন সিমির সদস্য সংখ্যা ১৩২। সিমিকে নিষিদ্ধ করার পেছনে কোনো আইনী ভিত্তির উপস্থিতি ভারত সরকার আজও পর্যন্ত তুলে ধরেনি। ১৩ জুলাই হামলার দুদিন পর হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির ডক্টরেটধারী কুখ্যাত রাজনৈতিক ও সাবেক মন্ত্রী সুব্রামানিয়ম স্বামী একটি নিবন্ধ লিখে ‘হাউ টু ওয়াইপ আউট ইসলামিক টেরর’ নামে। কোনো দলিল প্রমাণ ছাড়াই হামলার জন্য মুসলিমদের দায়ী ঠাওরান এই গুণধর ভারতীয়। ৯ দিন পর নরওয় গুলিবর্ষণ কা-ের জন্য এভাবেই মুসলিমদের দায়ী সাব্যস্ত করেছিল নিউইয়র্ক টাইমস ও ওয়াশিংটন পোস্ট ও সান।

কর্ণাটক রাজ্যের মালেগাঁওয়ে একটি মুসলিম কবরস্তানে ২০০৬ সেপ্টেম্বরে বিস্ফোরণে নিহত হয় ৩৫ ব্যক্তি। হত্যাকা-ের দোষ সংবাদ মাধ্যম মুসলমানদের ঘাড়ে চাপায়। হায়দরাবাদের মক্কা মসজিদে বোমা বিস্ফোরণে মারা যান ১০ জন মুসলিম।

প্রবীণ স্বামী নির্বিচার দোষ চাপিয়ে দেয় মুসলমানদের উপর। ভারতীয় শহরগুলো ইসলামপন্থী সন্ত্রাসীদের খপ্পরে চলে গেছে- এমন মন্তব্যও ছড়িয়ে দেয় প্রবীণ স্বামী। কিন্তু পরবর্তীতে তদন্তে প্রকাশ পায় মালেগাঁওয়ে ও মক্কা মসজিদে হামলা চালিয়েছিল হিন্দু জঙ্গি জাতীয়তাবাদীরা।

সুব্রামানিয়াম স্বামীর কথায় আসা যাক। এই মুসলিম বিদ্বেষী লিখে, ইসলামপন্থী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সমষ্টিগত হিন্দু-মানসচেতনা আমাদের (হিন্দুদের) গড়ে তুলতে হবে। হিন্দুর প্রতি আন্তরিক মমত্ববোধ তাদের মধ্যে থেকে থাকলে মুসলমানরাও হিন্দুদের সঙ্গে এসে যোগ দিতে পারে।

কিন্তু মুসলমান হলেও তাদের পূর্ব পুরুষ ছিল হিন্দু- এই গর্ববোধ তাদের মনে জেগে না ওঠা পর্যন্ত আমার বিশ্বাস হয় না যে, তারা হিন্দুদের সঙ্গে এসে যুক্ত হবে।

হিন্দু-আদিত্বে আস্থাহীন সুব্রামানিয়ম স্বামী লিখে, মুসলমানদের ভোটাধিকার থাকা উচিত নয়। সে ভারতকে হিন্দুরাষ্ট্র ঘোষণার প্রস্তাব করে। (ইনশাআল্লাহ চলবে)

-মুহম্মদ তা’রীফুর রহমান

ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি ও ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা-৫০

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-১৩ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৫১

‘থার্টিফাস্ট নাইট, ভালেন্টাইন ডে আর পহেলা বৈশাখের’ নামে হুজ্জোতির জন্য ধর্মব্যবসায়ীদের কৌশলগত নিষ্ক্রীয়তা, স্বার্থবাদী মৌসুমী রাজনৈতিক তৎপরতা এবং সংস্কৃতি বিপননকারীদের দূরভিসন্ধিতা ও মধ্যবিত্তের  তত্ত্ব-তালাশহীন প্রবণতা তথা হুজুগে মাতা প্রবৃত্তিই দায়ী

অবশেষে জামাতীরা স্বীকার করিল যে, মুক্তি পাইতে চাহিলে মুরীদ হইতে হয়। আল্লাহ পাক-এর ওলী বা দরবেশ হইতে পারিলে মুক্তি পাওয়া যায়। কিন্তু জামাতীরা তাহা নয় বলিয়াই আখিরাত তো দূরের কথা দুনিয়াতেই তাহারা দুর্নীতির দায়ে গ্রেফতার। আর মইত্যা রাজাকারের ফতওয়া অনুযায়ী তো- তাহাকেই কতল করা ওয়াজিব।