সমস্ত প্রশংসা মুবারক খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি এবং অফুরন্ত দুরূদ শরীফ ও সালাম শরীফ পেশ করছি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি এবং আরো ছলাত শরীফ ও সালাম শরীফ পেশ করছি আমাদের প্রাণের আক্বা সাইয়্যিদুনা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম এবং উনার সম্মানিত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রতি।
পূর্ব (২২৮তম সংখ্যায়) প্রকাশের পর
ঐশী নির্যাতিত হলো এবং নৈতিক চরিত্র হারানোর কারণে সমাজের চোখে ধিকৃত হলো। শুধু তাই নয় ঐশীর মতো হাজারো মেয়ে, হাজারো ছেলে আজ পরিবারের চোখে ধিকৃত।
এদের এমন অবস্থা হওয়ার অনেক কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম কয়েকটি কারণ হলো-
১। অজ্ঞতা এবং মূর্খতা।
২। পিতা-মাতা থেকে কু-শিক্ষা অর্থাৎ পাশ্চাত্য শিক্ষা গ্রহণ করার প্রবণতা ।
৩। পিতা-মাতা হারাম কাজে মশগুল থাকার কারণে সন্তানদেরকে এ হারাম কাজে উদ্বুদ্ধ না করলেও বাধা প্রদান না করার ব্যর্থতা ।
৪। বড়দের বা মুরুব্বিদের প্রতি অসম্মান, অশ্রদ্ধা দেখানো।
৫। নিজেদের খারাপ কাজগুলোকে ভাল মনে করা।
৬। খারাপ বন্ধু বা বান্ধবীদের সঙ্গ লাভ।
৭। ঘরে বাবা-মা, ভাই-বোনদের আপন মনে না করা এবং তাদের কাছে ঘটে যাওয়া কোন বিষয় শেয়ার না করা।
৮। সর্বোপরি পরিবারে থেকেও পরিবার হতে জুদা হওয়ার কৌশল অবলম্বন করা।
৯। লেখাপড়ার প্রতি অনীহা।
১০। যাদের লেখাপড়া শেষ তাদের চাকরি-ব্যবসার প্রতি অনীহা।
১১। অনেকের সংসার আছে তা সত্ত্বেও স্ত্রী, সন্তানদের প্রতি অবহেলা ইত্যাদি।
যা ইবলিস শয়তানেরই উচ্চারণ বাক্য— “সে (শয়তান) বলল, আপনার ইজ্জতের কসম অবশ্যই আমি তাদের সকলকে বিভ্রান্ত করবো। তাদের মধ্যে থেকে আপনার মুখলিছ বান্দাগণ ব্যতীত।” (পবিত্র সূরা ছোয়াদ শরীফ : পবিত্র আয়াত ৮২, ৮৩)
এবং ইবলিস আরো বলল, “যেহেতু আমি বিপদগামী হয়েছি তাই আপনার সঠিক পথে আমি অবশ্য বসে থাকবো তাদেরকে অর্থাৎ বান্দা ও বান্দিদেরকে বিপথগামী করার জন্য।” (পবিত্র সূরা আ’রাফ শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১৬)
সুতরাং শয়তান তার নির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে কোশেশ করে যাচ্ছে মানুষকে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার নিয়ম-নীতি তর্জ-তরীক্বা থেকে সরিয়ে নিয়ে তার মতো ভ্রান্ত, অভিশপ্ত অন্ধকার জীবনে ফেলে দেয়ার জন্য। তারই প্রতিফল দেখতে পাচ্ছি এখনকার সমাজে অধিকাংশ পরিবারের পিতা-মাতা, স্বামী-স্ত্রীসহ সন্তান-সন্ততি সবার অধঃপতন। নাউযুবিল্লাহ!
অতএব, ভুক্তভোগী এ সকল পরিবারের সবাইকে ফিরে আসা উচিত পবিত্র কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ উনাদের দিকে; ইহকাল-পরকালের শান্তির জন্য। পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার ছায়াতলে আসলে দুনিয়াও পাবে আবার পরকালও পাবে। কোনটাতেই ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।
আর তাই নৈতিকতা অবক্ষয়কারী পরিবারদের প্রতি আমাদের আহবান—
“আপনারা ফিরে আসুন; মহান আল্লাহ পাক উনার দরবারে, উনার রহমতের কাছে, উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ইহসানের কাছে ।
ভুলে যান অতীতের সব জীর্ণজরা। তওবা করুন শুধু মহান আল্লাহ পাক উনাকে পাওয়ার আশায়। তাহলেই দেখবেন অনাবিল শান্তি বিরাজ করছে পরিবারের সমস্ত সদস্যদের মধ্যে। যেখানে থাকবে না কোন দুঃখ, ক্লান্তি, হাহাকার ।
একজন সন্তানের প্রথম হাতেখড়ি হয় মায়ের কাছ থেকে। কিন্তু মা যদি পবিত্র দ্বীনি শিক্ষা থেকে মাহরূম থাকে অর্থাৎ সে মায়ের পবিত্র দ্বীনি বিষয়ে জানা না থাকে তবে পরবর্তীতে সে দুনিয়াবি মা পবিত্র দ্বীনি বিষয়ে সন্তানদেরকে বুঝ দিতে পারে না। আর তাই মা-সন্তান উভয়েরই প্রয়োজন পবিত্র দ্বীনি শিক্ষা যিনি দিতে পারেন উনার ছোহবতে এসে পবিত্র দ্বীনি শিক্ষা গ্রহণ করা। আর এটাই হবে তার সেই দুনিয়াবী মায়ের জন্য সহজ। আর তাই আমরা আহ্বান জানাই, আপনারা আসুন! এমন একজন মুয়াল্লিমা উনার কাছে যিনি কুল-কায়িনাতের পথহারা, পথভোলা নারীদেরকে আলোর পথ দেখাচ্ছেন। পবিত্র দ্বীনি শিক্ষায় উজ্জীবিত করছেন। প্রতিটি মা, বোন, স্ত্রীদেরকে। আমাদের প্রাণপ্রিয়া সাইয়্যিদাতুন নিসা, নূরে জাহান, উম্মুল উমাম হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম উনার নিকট এসে তা’লীম গ্রহণ করে পবিত্র ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক মহিলা, সন্তানদের হক্ব সম্পর্কে জেনে বুঝে নেই এবং খাছ ফায়িজ-তাওয়াজ্জুহ ভিক্ষা চেয়ে হাক্বীক্বী মুসলিমা, হাক্বীক্বী মা, স্ত্রী, বোন হওয়ার কোশেশ করি। (আমীন)
-আহমদ আজীমা ফারহা
‘ইসলামের দৃষ্টিতে প্রাণীর ছবি তোলা, রাখা, আঁকা, দেখা হারাম’ মুজাদ্দিদে আ’যমের অনবদ্য তাজদীদ