সমস্ত প্রশংসা মহান আল্লাহ পাক উনার এবং অফুরন্ত দুরূদ ও সালাম পেশ করছি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি। আরও ছলাত ও সালাম পেশ করছি আমাদের প্রাণের আক্বা সাইয়্যিদুনা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম এবং আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রতি।
একজন কবি লিখেছে-
“দেখিতে গিয়েছি পর্বতমালা
দেখিতে গিয়েছি সিন্ধু
দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া
ঘর হতে শুধু দু’পা ফেলিয়া
একটি ধানের শীষের উপর
একটি শিশির বিন্দু।”
কথাটা মিথ্যা নয়। বরং চিরন্তন সত্যি। মানুষের বাস্তবতাটা ঠিক এমনই। সে বিশ্ব জুড়ে সফর করে দুনিয়ার সৌন্দর্য উপভোগ করার আশা পোষণ করে থাকে। অথচ তার ঘরের পাশেই রয়েছে অনাবিল সৌন্দর্যের অবারিত ধারা সে সৌন্দর্য সে গ্রহণ করতে পারে না, অবলোকন করতে পারে না মহান আল্লাহ পাক উনার সৃষ্টির অপার মহিমা।
ঠিক তেমনি অধিকাংশ মুসলমানদের একই অবস্থা। সে মুসলমান হওয়া সত্ত্বেও তার ঘরে কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ফিক্বাহর কিতাব থাকা সত্ত্বেও সে নিজের অস্তিত্ব, নিজের সত্তা ভুলে গিয়ে গ্রহণ করে অন্য সত্তা, অন্য জাত। নিজেদের মুসলমানিত্ব ক্ষুণœ করে গ্রহণ করে বেদ্বীন-বদদ্বীনদের তর্জ-তরীক্বা। নিজেদের দ্বীন ইসলামে তারা শান্তি খুঁজে পায় না- শান্তি খুঁজে অন্যের ধর্মের রীতি-নীতির মধ্যে। এখনকার সমাজে এটাই হচ্ছে হাল ফ্যাশন। কি পুরুষ, কি নারী সবাই যেন একই সুতায় বাধা। দ্বীনী শিক্ষা নেই। ফরয, ওয়াজিব, সুন্নত আমল পালন করেনি। কোন নারী-পুরুষ নামকাওয়াস্তে নামাযই শুধু পড়ে। পর্দা নেই, হালাল-হারাম বাছাই নেই একাকার হয়ে যাওয়া তাদের জীবনের মূল্য উদ্দেশ্য। তারা বুঝে না বা বুঝার চেষ্টা করে না।
একজন নারী সে তার ঘরের গৃহিণী, মা, নানী-দাদী, বোন, খালা ইত্যাদি। সেই নারীর অধীনস্থদের সে শেখাবে শরীয়তের জ্ঞান অর্থাৎ উঠা-বসা, চলা-ফেরা, পোশাক-আশাক, প্রতিটি ক্ষেত্রে সুন্নতের অনুসরণ করবে। শেখাবে পিতা-মাতার হক্ব কিভাবে আদায় করতে হয়। সন্তানের হক্ব কিভাবে আদায় করতে হয়, সংসারে নারীর কি অধিকার রয়েছে, কি দায়িত্ব-কর্তব্য রয়েছে ইত্যাদি ইত্যাদি।
কিন্তু ঘরে ঘরে নারীদের সেই দ্বীনি শিক্ষা অর্জনের আগ্রহ, চেষ্টা কোথায়? শুধুমাত্রই ঘুম, রসনা-বিলাস, দুনিয়ার জন্য আনন্দ ফুর্তি করা বৈ আর কিছুই নয়। এই তথাকথিত নারীদের সন্তানরা শিখেনা দ্বীনি কোন শিক্ষা। মুসলমানের মুসলমানিত্ব কিভাবে বজায় রাখতে হয় সেটা তারা শিখে না। কারণ তাদের মা দ্বীনি শিক্ষা দেয় না, তাদের পিতা দ্বীনি কোন শিক্ষা দেয় না। আর তারও কারণ সেই তথাকথিত মা-বাবারা নিজেরাই দ্বীনি শিক্ষা অর্জন করেনি বা জানে না।
অথচ এখন বর্তমান যুগে আমাদের দেশে এই দ্বীনি শিক্ষা অর্জন করা কতই না সহজ। আমাদের মাঝেই রয়েছেন সাইয়্যিদুনা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম এবং সাইয়্যিদাতুন নিসা হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম উনারা। উনারা নায়িবে রসূল, খাছ মুয়াল্লিম, মুয়াল্লিমা এবং ইলমে ফিক্বাহ, ইলমে তাছাউফের ধারক-বাহক। এ যুগের রাহবার উনারাই। সুতরাং পুরুষরা এসে সরাসরি শিক্ষা নিতে পারে সাইয়্যিদুনা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার কাছ থেকে। আর মহিলারা এসে শিক্ষা নিতে পারে সাইয়্যিদাতুনা হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম উনার খাছ ছোহবতের মাধ্যম দিয়ে। অথচ নিজেদের দেশে নিজেদের মূল রাজধানী শহরে রাজারবাগ শরীফ এত নিকটে থাকার পরও তথাকথিত নারীদের দেখা হলো না রাজারবাগ দরবার শরীফ, দেখা হলো না হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম উনাকে। শেখা হলো না, মূল ফরয-ওয়াজিব, সুন্নত শিক্ষা। বুঝা হলো না ঈমান-আক্বীদার বিষয়। শুধুমাত্র দূর দূরান্তে অন্ধের মতো ঘুরে বেড়ানোই সার হলো- কিছুই হাছিল হলো না। মহান আল্লাহ পাক তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, ‘ওলীআল্লাহ উনাদের নিকট রহমত রয়েছে’ সেই রহমতের হিস্যা তারা পেলো না। ঘরের পাশেই রাজারবাগ দরবার শরীফ, ঘরের পাশেই রহমতের ভা-ার। সেখান থেকে রহমতের কোন হিস্যা তারা নিতে পারলো না।
আফসুস! এখানেই তথাকথিত নারী-পুরুষের জন্যই।
“দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া
ঘর হতে শুধু দু’পা ফেলিয়া
একটি ধানের শীষের উপর
একটি শিশির বিন্দু।”
মহান আল্লাহ পাক তিনি যেন আমাদের প্রত্যেককেই এই খাছ রহমতের দরবার শরীফ-এ আসার এবং দ্বীনি শিক্ষা অর্জন করার তৌফিক দান করুন। (আমীন)
-আহমদ আজিমা ফারহা।
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি ও ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা-৫০