নারী অধিকার প্রসঙ্গে

সংখ্যা: ২১১তম সংখ্যা | বিভাগ:

১০ জানুয়ারী ২০১১, সোমবার, কালের কণ্ঠে ‘এগিয়ে চলো নারী’ শিরোনামে রিপোর্টটি কিছু উদ্ধৃতাংশ উল্লেখ করা হলো-

‘যদিও জানালার ফাঁক দিয়ে আকাশ দেখার সময় এখন শেষ। ঝাঁকে ঝাঁকে নারী এখন পুরুষের পাশাপাশি রাস্তা পার হচ্ছে। উন্মুক্ত প্রান্তরে দাঁড়িয়ে নীল আকাশ দেখছে। একা একা শেরাটনের উইন্টার গার্ডেন থেকে অমিতাভ বচ্চনের শো দেখে মধ্যরাতে বাড়ি ফিরছে। ……….. সাপের মতো নারী এখন খোলস বদলাতে শিখেছে। মুশকিল হচ্ছে সমাজপতিরা নারীর যোগ্যতাকে শ্রদ্ধা না করে  করছে বিদ্রƒপ। একজন অযোগ্য পুরুষের সঙ্গে যখন একজন সুযোগ্য নারীকে তুলনা করা হয় তখন বড় বেশি অন্তর জ্বালায় দগ্ধ হই। নারীর যোগ্যতার অবমূল্যায়ন এখনো আমাদের সমাজ থেকে দূরীভুত হচ্ছে না। নারী ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, পাইলট, শিক্ষক, প্রশাসক রাষ্ট্রের নেত্রী সবক্ষেত্রেই যোগ্যতার চিহ্নগুলোকে স্পষ্ট করে দিচ্ছে দিন-রাত। তারপরও শুনতে হচ্ছে- যতই না হোক, আফটার অল মহিলা। মানুষ বলতে দ্বিধা হয় কেন বুঝি না। নাম শুনেই বোঝা যায় সে মহিলা নাকি পুরুষ। কিন্তু একটি বিশেষণ জুড়ে দেয়ার অভ্যাস আমাদের পুরুষ কর্তাদের। মেয়েদের নামের আগে মিসেস কিংবা বেগমমসূচক লেজুড় লাগাতে হবে। কিন্তু কেন?’

এখন আমাদের কথা হচ্ছে- সময়ের প্রেক্ষাপট বদলেছে ঠিকই, পরিস্থিতি বদলেছে, সমাজের অবস্থা বদলেছে ঠিকই; কিন্তু তাই বলে জানালার ফাঁক দিয়ে ‘আকাশ’ দেখা যাবে না, তা কেন? আকাশ দেখতে হলে বেহায়া, নির্লজ্জের মত পুরুষ মহিলা পাশাপাশি রাস্তায় দাঁড়িয়ে আকাশ দেখতে হবে কেন? মহান আল্লাহ পাক আকাশ, মাটি, গাছ-পালা, নদী-নালা অর্থাৎ এককথায় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অবলোকন করার জন্য আমাদের চোখ দিয়েছেন, দৃষ্টি দিয়েছেন। তা আমরা যে কোন সময় অবলীলায় সে সব দৃশ্য যার যার অবস্থান থেকে সহজেই দেখতে পারি। আল্লাহ পাক আমাদের ঘর-বাড়ি দিয়েছেন, ঘর-বাড়ির ছাদ দিয়েছেন, গ্রামাঞ্চল হলে বাড়ীর সাথেই উঠান দিয়েছেন, আশে পাশে খালি বিস্তর জমি পড়ে রয়েছে। যেখান থেকে সহজেই পর্দার মধ্য থেকেই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। শুধু তাই নয় পর্দার মধ্যে থেকেই ঘরের বাইরে বের হলে বা ছফরে চলাকালীন যানবাহনে বসেও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অবলোকন করা যায়।

এর জন্য পুরুষ-মহিলা পাশাপাশি বেহায়ার মত বেপর্দা অবস্থায় থাকতে হবে তা তো নয়। সুতরাং শরীয়তের বিধান জানা এবং পালনের মধ্যে অনেক ইতমিনান রয়েছে এবং শালিনতা রয়েছে। কিন্তু যারা শরীয়তটাকে মানবে না, পর্দা মানবে না সে নারী হোক বা পুরুষ হোক শুধু তাদের পক্ষেই সম্ভব গান-বাজনা করা, মদ খাওয়া। মেয়েদের নিয়ে ফুর্তি করা অথবা ঘর-সংসার ফেলে অন্য পুরুষের সঙ্গ লাভ করা। কিন্তু তাদের ফায়সালাও হচ্ছে সেরকমই। যার প্রতিচ্ছবি আমরা দেখতে পাই প্রতিদিনের পেপার পত্রিকা খুললেই লাঞ্ছনা, টিজিং, আত্মহত্যা, হত্যা ইত্যাদি ঘটনার মধ্য দিয়ে।

সুতরাং উক্ত ঘটনাগুলোর জন্য বেপর্দা নারী-পুরুষ উভয় দায়ী। অর্থাৎ বেপর্দাই হচ্ছে সমস্ত অপকর্মের মূল।

এছাড়া আছে দ্বীনি শিক্ষার অভাব।

আছে পিতা-মাতার সন্তানের প্রতি গাফলতি, উদাসীনতা।

আছে স্বামী বা অন্যান্য অভিভাবকদের স্ত্রী বা অন্যান্য অধীনস্তদের প্রতি তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য ভাব।

লেখিকার এই বিষয়টা খুবই হাস্যকর। কারণ একজন পুরুষ যেমন মানুষ, একজন নারীও মানুষ। শারীরিক গঠনের কারণে মানুষ হিসেবেই সাব্যস্ত হয়, কোন অমানুষ বা পশু-পাখি তো সে হচ্ছে না। তাহলে যে নারী সেতো তার নাম, তার পোশাক-পরিচ্ছেদ, কণ্ঠ, কথা-বার্তা, মন-মানসিকতা নারীদের মতোই তো হওয়া বাঞ্ছনীয়। এর ব্যতিক্রম হলে সে তো আর নারী থাকছে না। উদাহরণ হিসেবে ধরা যাক কোন নারী দেখতে নারীর মতোই, কণ্ঠ পুরুষের মতো, পোশাক পড়েছে নারীদের মতোই, কিন্তু শারীরিক গঠন কিছু মহিলার মতো, কিছু ছেলেদের মতো এমন অবস্থায় তাকে কি বলা যাবে; শুধু একজন নারী নাকি একজন পুরুষ? অথচ আমাদের সমাজে এমন মানুষদেরকে শুধু ‘নারী’ বা ‘পুরুষ’ বলে অখ্যায়িত করে না। এদেরকে বলা হয় হিজরা। এখন কথা হচ্ছে হিজরারাও কিন্তু মানুষ। আর এদের মধ্যে শরীয়তের হুকুম-আহকাম একইভাবে বলবৎ রয়েছে। তবে শারীরিক গঠনে যদি মহিলাদের লক্ষণ পরিলক্ষিত হয় তবে মহিলাদের হুকুম বর্তাবে আর ছেলেদের লক্ষণ প্রকাশ পেলে ছেলেদের হুকুম বর্তাবে।

লেখিকা নিজের নামের আগে তিনি যে মহিলা সেটা জানাতে ইচ্ছুক নন, এদিকে তিনি পুরুষও নন। এদিকে আবার নিজেকে মানুষ দাবি করতে রাজি আছেন। সুতরাং এদের মতো মানুষের জন্য হিজরা উপাধিই যথেষ্ট। কারণ এসব তথাকথিত মহিলারা স্বাভাবিক নয় বা সুস্থ নয়। তারা অসুস্থ, জরাগ্রস্থ। আর তাই ‘অস্বাভাবিকতাই তাদের চরিত্রের সবচেয়ে বড় ত্রুটি।

শুধুমাত্র কথার বাতুলতা দিয়েই ‘নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা’ করা সম্ভব নয়। এর জন্য চাই নারীদের সুশিক্ষা অর্থাৎ দ্বীনি শিক্ষা অর্জন করা। পুরুষকে পুরুষদের অবস্থানে থাকতে দেয়া। আর মহিলাদেরকে তাদের স্ব স্ব অবস্থানে থাকতে দেয়া অর্থাৎ পুরুষদের সাথে পাল্লা দেয়া নয় বরং শরীয়তের নিয়ম অনুযায়ী যার যার বৈশিষ্ট্যে বৈশিষ্ট্যবান হওয়া।

তাহলেই পুরুষরা নারীদেরকে সম্মান করবে। আর নারীও হেয় প্রতিপন্ন হবে না কোনখানেই।

আল্লাহ পাক আমাদের প্রত্যেককে যামানার সুমহান মুজাদ্দিদ, আল্লাহ পাক উনার খাছ লক্ষ্যস্থল ওলী আওলাদে রসূল মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম ও উনার পাক আহলিয়া সাইয়্যিদাতুন নিসা, নূরে জাহান আমাদের আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম উনাদের ওসীলায় হাক্বীক্বীভাবে ‘নারীত্বের অধিকার ও মর্যাদা’ বুঝার তাওফীক্ব দান করুন। আমীন।

আজিমা ফারহা

প্রসঙ্গঃ আমেরিকায় ইহুদী প্রভাব ও নিয়ন্ত্রণ- ২

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কাযযাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৩৩

ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা-৩৪

চাঁদ দেখা এবং নতুন চন্দ্রতারিখ শুরু নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা- ১

কোকাকোলা ও অন্যান্য কোমল পানীয় সম্পর্কে উন্মোচিত সত্য-১৮