‘নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ধর্মনিরপেক্ষ ছিলেন’ সংসদে এমন মহামিথ্যাচার করে সুবিধাবাদী নাস্তিক ও জাসদ সভাপতি মাইনউদ্দিন এমপি পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার গভীর অবমাননা করেছে এবং এদেশের ৯৭ ভাগ মুসলমানের ধর্মীয় অনুভূতিতে চরম আঘাত দিয়েছে। তার বিরুদ্ধে যুগপৎ ধর্মদ্রোহিতা ও রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা সরকারকেই করতে হবে।

সংখ্যা: ২২৩তম সংখ্যা | বিভাগ:

সব ছানা-ছিফত খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য। এমন ছানা-ছিফত যাতে তিনি সন্তুষ্ট হন। অপরিসীম, অকৃত্রিম, অগণিত দুরূদ ও সালাম মুবারক নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি। এমন দুরূদ ও সালাম মুবারক যা তিনি পছন্দ করেন।

ধর্মব্যবসায়ী জামাতীদের সাথে আবারো বাম-নাস্তিকদের মধ্যে সাদৃশ্য খুঁজে পাওয়া গেলো। উভয়েই ধর্মকে ব্যবহার করতে অতি উৎসাহী। উভয়েই ধর্মের নামে বিভ্রান্তি ছড়াতে পারদর্শী। অথচ কার্যত উভয়েই ধর্মবিশ্বাস ও পালন থেকে অনেক দূরে। কিন্তু তারপরেও শুধুমাত্র কায়েমী স্বার্থবাদের জন্য ধর্মের কথা উভয়ের মুখে।

স্বাধীনতা উত্তর আওয়ামী লীগের ঘোর শত্রু ছিল জাসদ। আওয়ামী লীগ বিদ্বেষী ব্যাপক প্রচারণা ও বিপুল কর্মী তৈরি এমনকি আওয়ামী লীগারদের হত্যা করার জন্য জাসদ তৈরি করেছিল ‘গণবাহিনী’। এটাকে কাউন্টার দেয়ার জন্যই বঙ্গবন্ধুকে করতে হয়েছিল ‘রক্ষী বাহিনী’।

১৯৭২ সালের ৩১ অক্টোবর ‘শেখ মুজিবুর রহমানের সরকারকে জাসদ বুর্জোয়া শ্রেণীর সরকার বলে ঘোষণা করে এবং তাকে উৎখাতের সর্বাত্মক সংগ্রামে অবতীর্ণ হয়’ (জাসদের রাজনীতি, নজরুল ইসলাম, প্রাচ্য প্রকাশনী, ১৯৮১)।

জাসদ চেয়েছিল যেকোনো মূল্যে শেখ মুজিব সরকারের পতন। শেখ মুজিব জীবিত থাকতে জাসদের আন্দোলনের কৌশল ছিল রাষ্ট্রক্ষমতা থেকে বুর্জোয়া শ্রেণীর উচ্ছেদ এবং তার পরিবর্তে সর্বহারা শ্রেণীর নেতৃত্বে সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থার প্রবর্তন। (১৯৭৪ সালে গৃহীত থিসিস)।

জাসদ নেতারা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পর আমাদের উদ্দেশ্য ছিল জনগণের রাষ্ট্র এবং সরকার কায়েম করা। এরই প্রেক্ষিতে আমরা ’৭২-এর সংবিধানের বিরোধিতা করে জাসদ প্রতিষ্ঠা করি।

স্বাধীনতা-উত্তর এই জাসদই পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার ঐতিহ্যম-িত এদেশের মেধাবী ছাত্রদের নাস্তিক বানানোর প্রক্রিয়া শুরু করে। সমাজতন্ত্রী রাশিয়ার মদদপুষ্ট হয়ে তারা অত্যন্ত সক্রিয়ভাবে নাস্তিক্যবাদী কর্মতৎপরতা চালায়। জাসদের বর্তমান কার্যকরী সভাপতি হচ্ছে মাইনউদ্দীন খান বাদল এমপি। গত ৪ মার্চ ২০১৩ ঈসায়ী তারিখে সে আবারো পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাকে পুঁজি করে, পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার নাম ব্যবহার করে তার নাস্তিক্যবাদী দর্শন ব্যক্ত করেছে। জামাতে মওদুদীর বিরোধিতা করতে গিয়ে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার নামে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে, মিথ্যাচার করেছে, গুমরাহী ছড়িয়েছে।

বাদলের বক্তব্যে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ধর্মনিরপেক্ষ বলে ঘোষণা করা হয়েছে। সেই সাথে মদীনা শরীফ উনার সাথে আওয়ামী লীগ সরকারের তুলনা করা হয়েছে। বলা হয়েছে, ইসলামই ধর্মনিরপেক্ষতা ধারণ করে।” নাঊযুবিল্লাহ!

আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার প্রতি মহাধৃষ্টতামূলক ও মহা মিথ্যাচারিতামূলক; এ বক্তব্যের জন্য আমরা তীব্র নিন্দাবাদ জানাচ্ছি। চরম প্রতিবাদ করছি। কারণ ধর্মনিরপেক্ষতা সম্পূর্ণ অনৈসলামিক একটা শব্দ। রাষ্ট্রে ধর্মনিরপেক্ষতা চালু থাকলে শিক্ষা ব্যবস্থা, অর্থব্যবস্থা, আইনব্যবস্থা, সংস্কৃতি তথা সবকিছুতেই অনৈসলামের প্রতিফলন হয়। কোন কিছুতেই পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার প্রযোজ্য হয় না।

অথচ পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক তিনি স্পষ্টভাষায় ইরশাদ মুবারক করেন, “হে ঈমানদারগণ! তোমরা পরিপূর্ণভাবে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে প্রবেশ করো।” পবিত্র আয়াত শরীফ অনুযায়ী রাষ্ট্রের ধর্মনিরপেক্ষ সংস্কৃতি তথা পবিত্র দ্বীন ইসলাম বিরোধী কর্মকা- সব বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়া একই আলোকে পবিত্র কুরআন শরীফ উনার শত শত পবিত্র আয়াত শরীফ রয়েছে। যেমন, ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “মহান আল্লাহ পাক উনার কাছে একমাত্র মনোনীত দ্বীন বা জীবন ব্যবস্থা হলো- পবিত্র ইসলাম।”

আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে প্রেরণ করেছেন সত্য দ্বীনসহ অন্য সব ধর্মকে বাতিল ঘোষণা করে।”

কাজেই পবিত্র দ্বীন ইসলাম অন্য কোন ধর্মকে স্বীকারই করে না। যদিও পালনের অনুমতি দেয়। কিন্তু পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার সাথে সাংঘর্ষিক হয়ে নয়। পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার পরিধি ও পরিম-ল প্রতিষ্ঠার আলোকে। কাজেই পবিত্র দ্বীন ইসলাম বাদ দিয়ে ধর্মনিরপেক্ষতা গ্রহণ কোনমতেই বরদাশতযোগ্য নয়। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “পবিত্র দ্বীন ইসলাম ব্যতীত অন্য কোন ধর্ম যে তালাশ করে তার থেকে তা গ্রহণ করা হবে না এবং সে পরকালে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।”

অপরদিকে ধর্মনিরপেক্ষতার নামে বিধর্মীদের সাথে মিল-মিশ বা সাযুজ্য রাখাও পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে গ্রহণযোগ্য নয়। বিধর্মীরা সবাই মুসলমানগণের খাছ শত্রু। পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “আপনি মুসলমানগণদের জন্য সবচেয়ে বড় শত্রুরূপে পাবেন ইহুদীদেরকে অতঃপর মুশরিকদেরকে।”

দেখা যাচ্ছে, ইহুদী ও হিন্দুরা মুসলমানদের বড় শত্রু। আর অন্য পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “হে ঈমানদাররা! তোমরা ইহুদী-নাছারাদের কখনো বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না।” এরূপ অন্য অনেক পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে তাদেরকে মুসলমানগণের শত্রু ও ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। শুধু ধর্মনিরপেক্ষতার নামে বিধর্মীদের সাথে সহঅবস্থান মুসলমানদের জন্য পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে জায়িয নয়। যেখানে ধর্মনিরপেক্ষতা থাকে, সেখানে পবিত্র দ্বীন ইসলাম থাকে না। আর যেখানে পবিত্র দ্বীন ইসলাম থাকে সেখানে ধর্মনিরপেক্ষতা থাকে না।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এদেশ ধর্মনিরপেক্ষতার জন্য স্বাধীন হয়নি। ৬৬-এর ৬ দফা, ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ৭০-এর নির্বাচন কোথাও ধর্মনিরপেক্ষতার কথা ছিল না। বরং ৭০-এর অন্যতম নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিল ‘পবিত্র কুরআন-সুন্নাহ বিরোধী কোন আইন পাসে হবে না।”

বলাবাহুল্য, এই নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির কারণেই আওয়ামী লীগের পক্ষে দেশে ৯৭ ভাগ মুসলমাননের মধ্যে স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন উঠেছিল। আওয়ামী লীগ ২৯৭ সিট পেয়েছিল।

আজকে যারা বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছিল ধর্মনিরপেক্ষতা’- আমরা তাদের ’৭১-এর ১০ এপ্রিল স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পড়ে দেখতে অনুরোধ জানাই। সেখানেও ধর্মনিরপেক্ষতার কোন কথা ছিল না।

মূলত স্বাধীনতার পরে ইন্দিরা গান্ধীর প্রভাবে ও নির্দেশে তার এজেন্টদের মাধ্যমে এদেশের সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা অন্তর্ভুক্ত হয়। এবং ধর্মনিরপেক্ষতার অপব্যাখ্যা করা হয়। বলা হয়, ধর্মনিরপেক্ষতা মানে ‘যার যার ধর্ম সে পালন করবে’। কিন্তু এ কথা পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয় না। কারণ পবিত্র দ্বীন ইসলাম থাকলে সেখানে গান-বাজনা, বেপর্দা, বেহায়া, সুদ-ঘুষ, পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ বিরোধী আইন ইত্যাদি চলতে পারে না। কিন্তু ধর্মনিরপেক্ষতায় তা চলতে পারে এবং চলছে। তাই সবাই জানে এবং বুঝে দেশে পবিত্র দ্বীন ইসলাম চলছে না। ধর্মনিরপেক্ষতা আর পবিত্র দ্বীন ইসলাম যদি এক হতো তাহলে দেশে ইসলামী আন্দোলনের কোন প্রয়োজন ছিল না। ৯৭ ভাগ মুসলমান প্রতিনিয়ত দোয়া করতেন না, “আয় মহান আল্লাহ পাক আপনি এদেশে পবিত্র দ্বীন ইসলাম দিন।” কাজেই চিহ্নিত নাস্তিক জাসদ সভাপতি ধর্মনিরপেক্ষতা আর পবিত্র দ্বীন ইসলাম এক বলে এদেশের ৯৭ ভাগ মুসলমানের ধর্মীয় অনুভূতিতে গভীর আঘাত দিয়েছে। রাষ্ট্রধর্ম দ্বীন ইসলাম উনার অবমাননা করেছে কাজেই তার বিরুদ্ধে যুগপৎ ধর্মদ্রোহিতা ও রাষ্ট্রদ্রোহিতার জন্য সরকারকেই অতিসত্বর সক্রিয় ব্যবস্থা নিতে হবে।

মূলত এসব অনুভূতি ও দায়িত্ববোধ আসে পবিত্র ঈমান ও পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাদের অনুভূতি ও প্রজ্ঞা থেকে। আর তার জন্য চাই নেক ছোহবত তথা মুবারক ফয়েজ, তাওয়াজ্জুহ। যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, যামানার মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবতেই সে মহান ও অমূল্য নিয়ামত হাছিল সম্ভব। মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের তা নছীব করুন। (আমীন)

-মুহম্মদ আরিফুর রহমান

ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি ও ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা-৫০

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-১৩ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৫১

‘থার্টিফাস্ট নাইট, ভালেন্টাইন ডে আর পহেলা বৈশাখের’ নামে হুজ্জোতির জন্য ধর্মব্যবসায়ীদের কৌশলগত নিষ্ক্রীয়তা, স্বার্থবাদী মৌসুমী রাজনৈতিক তৎপরতা এবং সংস্কৃতি বিপননকারীদের দূরভিসন্ধিতা ও মধ্যবিত্তের  তত্ত্ব-তালাশহীন প্রবণতা তথা হুজুগে মাতা প্রবৃত্তিই দায়ী

অবশেষে জামাতীরা স্বীকার করিল যে, মুক্তি পাইতে চাহিলে মুরীদ হইতে হয়। আল্লাহ পাক-এর ওলী বা দরবেশ হইতে পারিলে মুক্তি পাওয়া যায়। কিন্তু জামাতীরা তাহা নয় বলিয়াই আখিরাত তো দূরের কথা দুনিয়াতেই তাহারা দুর্নীতির দায়ে গ্রেফতার। আর মইত্যা রাজাকারের ফতওয়া অনুযায়ী তো- তাহাকেই কতল করা ওয়াজিব।