গত ২৬ জুন-২০১১ ঈসায়ী তারিখে আন্তর্জাতিক মাদকবিরোধী দিবস উপলক্ষে মাদকদ্রব্য অধিদফতর আয়োজিত এক আলোচনায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, আইন করে মাদক নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যে প্রচলিত আইনের চরম ব্যর্থতা প্রতিভাত হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে কোনরূপ প্রতিবন্ধকতার কথা উল্লেখ করেননি। কিন্তু প্রচলিত আইনের প্রয়োগের পরও তার ব্যর্থতা অস্বীকার করতে পারেননি।
এদিকে সংসদে খোদ প্রধানমন্ত্রীর কথায় প্রকাশ পেয়েছে যে, নিজ নিজ এলাকায় অফিসের জন্য বরাদ্দকৃত দশ হাজার টাকাও কথিত ‘মাননীয় সংসদ সদস্যরা’ নিজ নিজ পকেটে রেখে দেন। ভদ্র কথায় আত্মসাৎ করেন। আর সোজা কথা চুরি করেন। মাননীয় আইন প্রণেতারা নিজেরাই চুরি করেন- একথা যতটা না লজ্জাকর তার চেয়েও বিস্ময়কর হল খোদ সংসদ সদস্যরাই সংসদনেত্রীর কথা শোনেন না, মানেন না। বলাবাহুল্য, এ খেদোক্তি স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী বহুবার করেছেন। যা পত্রিকায়ও প্রকাশিত হয়েছে।
প্রসঙ্গত: উল্লেখ্য গত ২৭ জুন-২০১১ ঈসায়ী তারিখের পত্রিকায় আসন্ন রমযান উপলক্ষে বাজার দর না বাড়ানোর জন্য প্রধানমন্ত্রীর আহবানও পত্রিকায় এসেছে। আর আগে একইভাবে বাজার দর না বাড়ানোর জন্য বাণিজ্যমন্ত্রীর আহবান এবং তার বিপরীত ফল দেখার বিশেষ তিক্ত অভিজ্ঞতাও এদেশের জনগণের রয়েছে। সরল কথায় সর্বত্র একটা বিষয়ই প্রতিফলিত হচ্ছে। দেশের মন্ত্রী-প্রধানমন্ত্রীর কথা কেউ শোনেনা এবং প্রচলিত আইনের দ্বারা প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না। আইন, আইন প্রয়োগকারী তথা সংস্থা প্রশাসন থেকে বিচার বিভাগ এবং মন্ত্রী থেকে প্রধানমন্ত্রী সবাই এক্ষেত্রে প্রকাশ্যে চরম ব্যর্থ। এ ব্যর্থতা তারা স্বীকার করছেন। কিন্তু তার দায় নিচ্ছেন না। এবং ব্যর্থতা থেকে উদ্ধারের পথ কী? তা নির্ণয়ে অথবা স্বীকারেও তারা এগিয়ে আসছেন না।
বলাবাহুল্য, প্রধানমন্ত্রী থেকে পিওন সবাই মানুষ। কেউ মানুষ তৈরীকারী- আল্লাহ পাক নন। সাধারণ মানুষ মানুষের অন্তরের গতি-প্রকৃতি উপলব্ধি করতে পারেনা। নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। তাই মানুষের তৈরী আইন কখনও মানুষকে শৃঙ্খলিত করতে পারেনা। এক মানুষের তৈরি আইনের ফাঁক-ফোকর অন্য মানুষ সহজেই ধরে ফেলতে পারে। আইনের প্যাঁচ গলিয়ে অথবা প্রভাব তৈরি করে সহজেই পার পেয়ে যেতে পারে। জাল কাগজ-পত্র দিয়ে হাইকোর্ট থেকে জামিন অথবা অনেক বিচারপতির দুর্নীতিই এক্ষেত্রে পর্যাপ্ত উদাহরণ নয়। বরং কোনটি উদাহরণ নয় সে প্রশ্নও এখানে সঙ্গত।
অপরদিকে মানুষের কথা মানুষের অন্তরে প্রভাব বিস্তার করতে পারে অতি-অল্পই। এক্ষেত্রে সম্পূর্ণ বিপরীত এবং অনিবার্য বিষয় হল- মহান আল্লাহ পাক উনার ওহী। উনার আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে বর্ণিত হাদীছ শরীফ। অর্থাৎ কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ।
যে কারণে দেখা যায় যত গুনাহগার বা সাধারণ লোকই হন তিনিও যখন রোজা রাখেন তখন প্রচ- গরমের দিনেও পুকুরে ডুব দিয়ে অথবা একাকী বাড়িতে থেকেও তিনি পানি পান করেননা অথবা খাদ্য খাননা। এখানেই ওহীক বোধের সার্থকতা এবং অনবদ্যতা। তার বিপরীতে কোন সাধারণ মানুষের জন্য মানুষকে হিদায়েত করার যোগ্যতা নেই। কারণ সাধারণ মানুষ নিজেই নিজের অজান্তে অনিয়ম করে থাকে। আর মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, æতোমরা ওই কথা বল কেন? যা তোমরা নিজেরাই করনা।”
বলাবাহুল্য আদেশ দেয়ার ক্ষমতা মহান আল্লাহ পাক, আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং উনাদের মনোনীত প্রতিনিধি উলীল আমর তথা মুজাদ্দিদে আ’যম উনার।
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, æতোমরা আল্লাহ পাক উনার, উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং যাঁরা উলীল আমর উনাদের হুকুম পালন কর।”
মূলত: এছাড়া যারা আদেশ দিবে, যারা মানুষের আইন প্রয়োগ করতে চাবে তারা জালিম, ফাসিক, কাফির। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, æযারা মহান আল্লাহ পাক উনার আদেশ ব্যতীত আইন প্রয়োগ করে তারা জালিম, ফাসিক ও কাফির।”
বলাবাহুল্য আল্লাহ পাক উনার আইন প্রয়োগ না করলে শুধু যে জালিম, ফাসিক ও কাফির হবে তাই নয় বরং প্রচলিত আইনের দ্বারা সমাজে কোনদিনই শান্তি ও ইনসাফ আসবেনা। সবচেয়ে বড় কথা প্রচলিত আইনেরও শতভাগ প্রয়োগ বাস্তবে কোনদিন হবেনা।
-মুহম্মদ ওয়ালীউল্লাহ
চাঁদ দেখা এবং নতুন চন্দ্রতারিখ শুরু নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-১৪
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা-৪৫