“গণসম্ভ্রম হরণের খবরগুলো আমাদেরকে খুব ব্যথিত করে। আমরা স্বাধীন দেশের নারী। আমাদের স্বাধীনতা আছে- কথা বলার, কাজ করার, বাইরে যাবার। অথচ সব সময়ই যেন আমাদের মধ্যে একটা পুরুষভীতি কাজ করে।” (দৈনিক ইত্তেফাক, ২০১০ ঈসায়ী সন)
উক্ত পত্রিকার উক্ত উক্তিগুলো সে লেখিকা করেছে যিনি দাবি জানিয়েছে তারা স্বাধীন দেশের নারী। একদিক থেকে বর্তমানে নারীরা স্বাধীন, যদি তাই না হতো তবে এমন করে মনের কথাগুলোকে কিভাবে ব্যক্ত করতে পারলো? তবে আমাদের দৃষ্টিতে-
‘স্বাধীনতা’র মানে কী-
বোরকা ছেড়ে রাস্তায় বের হওয়া?
পর্দা প্রথাকে পরাধীনতা মনে করা?
নিজেদের শখ, কামনা-বাসনা চরিতার্থ করার জন্য সাজ-সজ্জা করে শপিং মল, পার্কে ঘুরে বেড়ানো?
এসব কথা চিন্তা করতেই ‘তাসলিমা নাসরিনের’ কথা মনে পড়ে গেলো হঠাৎ করে। সে কিনা এই ‘স্বাধীনতার নামেই দাবি জানিয়েছিলো- ‘ছেলেরা যদি শার্ট খুলে রাস্তায় ঘুরে বেড়াতে পারে; তবে মেয়েরা কেন পারবে না?’ নাঊযুবিল্লাহ!
আর এই জন্য আমাদের মতো সচেতন নারীদের অবাক হতে হয় এই ভেবে যে, তারাও নারী আর আমরাও নারী। তারা স্বাধীনতার সংজ্ঞাটা উপলব্ধি করতে বারবারই ব্যর্থ হচ্ছে। কথায় আছে, ‘শিয়ালের কাছে মুরগি বর্গা দিলে’ সেটা কি বুদ্ধিমত্তার কাজ হলো, নাকি শিকারীকেই বরং স্বেচ্ছায় তার খাদ্যের যোগান দেয়া হলো? কোনটা? আসল সত্যি এটাই নয় কি?
পর্দাবিহীন রাস্তাঘাটে, যে কোনো প্রতিষ্ঠানে, পুরুষদের পাশাপাশি থাকাটা ‘স্বাধীনতা’ নয়। বরং নিজেদেরকে মুরগির মতোই শেয়ালরূপী পুরুষদের কাছে বর্গা দেয়া বা স্বেচ্ছায় ভোগের পাত্রী হওয়ায় পরাধীনতারই পরিচয় বহন করে।
সুতরাং দোষটা শুধুই কি পুরুষের? তা কিন্তু নয়। এক্ষেত্রে নারীদের দোষ-ত্রুটি যেমন রয়েছে তেমনি পুরুষদেরও রয়েছে।
বেহায়া-বেলেল্লাপনার মতো জীবনযাপনে একটা নারী যেমন করে ধ্বংস হয়, একটা পুরুষও তেমন করেই ধ্বংস হয়। আর এরই ফসল সম্ভ্রম হরণ আর গণসম্ভ্রম হরণ।
শরীয়তে ‘স্বাধীনা মহিলা’ বলতে তাদেরকেই বুঝানো হয় যারা একান্ত প্রয়োজনে পর্দার সাথে রাস্তায় বের হবে এবং কাজও করতে পারবে। তবে বোরকা (মাথার তালু থেকে পা পর্যন্ত) পরিহিত থাকার কারণে কোনো পুরুষ সে বখাটেই হোক আর সাধারণই হোক তাকে দেখতেও পাবে না, উত্ত্যক্তও করতে পারবে না।
আল্লাহ পাক উনার বিধান- ‘সূরা আহযাব’-এর ৫৯ নম্বর আয়াত শরীফ-এর পূর্ণ মিছদাক হতে পারলেই ‘স্বাধীনা নারী’ হিসেবে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হওয়া যাবে। আর তা না হলে পরাধীনই থাকতে হবে। অর্থাৎ বেপর্দা হয়ে পুরুষদের অধীনে থাকলে সব সময় পুরুষভীতিই কাজ করবে এবং এটাই স্বাভাবিক। খোলা খাবার বা মিষ্টির উপরই মশা-মাছি পড়ে থাকে। যা চোখে পড়লে কেউ খেতে চায় না। ঠিক তেমনি পর্দার বাইরে খোলাভাবে জীবনযাপন করলে পুরুষরূপী মশা-মাছি তো পড়বেই। সুতরাং পরের অধীনে বসবাস করা, চলাফেরা করা, কথা বলা, কাজ করার নাম ‘স্বাধীনতা’ নয়। এরই নাম পরাধীনতা। এ কথাটাই আজ তথাকথিত স্বাধীনতাকামী, নারী অধিকার দাবিকারী, সমঅধিকারের জন্য গলা ফাটানো নারীদের বুঝতে হবে। আর তা না হলে-
তাদের জাত যাবে
তাদের মান-মর্যাদা হারাবে
তাদের ঈমান যাবে
ইহকালও ধ্বংস হবে
পরকালও ধ্বংস হবে।
স্বাধীনতা নয় বরং পরাধীনতার জীবনই তাদের কলুষিত জীবনে কলঙ্কিত অধ্যায়ের সূচনা করবে।
আল্লাহ পাক তিনি যেন আমাদের মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লূহুল আলী এবং উনার আহলে বাইত শরীফ উনাদের মুবারক উসীলায় আমাদেরকে কলঙ্কিত জীবন থেকে সব সময়ের জন্য হিফাজত করেন। আমীন।
-আজিমা ফারহা।
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি ও ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা-৫০