প্রসঙ্গ : শতকরা ৯৭ ভাগ এমপি অপরাধমূলক কাজে জর্জরিত। প্রমাণিত হলো- খোদ গণতন্ত্রই একটা গণগলদযুক্ত প্রক্রিয়া তথা গণধোঁকার শাসনব্যবস্থা

সংখ্যা: ২২০তম সংখ্যা | বিভাগ:

সব প্রশংসা মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্ নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত দুরূদ ও সালাম।

গত ১৫ অক্টোবর ২০১২ ঈসায়ী তারিখ সোমবার দৈনিক আল ইহসান শরীফসহ প্রায় সব পত্রিকায়ই বিষয়টি ফার্স্ট লীড নিউজ হয়েছে। উল্লেখযোগ্য হেডিংগুলো ছিল :

“টিআইবির গবেষণা : ৯৭ শতাংশ সংসদ সদস্য নেতিবাচক কর্মকাণ্ডে জড়িত”

“৫৩ ভাগ এমপি খুন দখল, চাঁদাবাজি টেন্ডারবাজি ও প্রতারণায় জড়িত- টিআইবি”

“টিআইবির অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ : অধিকাংশ এমপি দখল টেন্ডার ও চাঁদাবাজিতে জড়িত।”

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “সাংসদদের কাজের সীমাবদ্ধতা চিহ্নিত করা, সংসদ এবং সংসদের বাইরে সাংসদদের ইতিবাচক ও নেতিবাচক কাজের পর্যালোচনার জন্য এই গবেষণা করা হয়েছে। গবেষণার ১৪৯ জন সাংসদকে নিয়ে আলোচনা হয়। এর মধ্যে ক্ষমতাসীন দলের ১৩৬ এবং বিরোধী দলের ১৩ জন। এদের নিয়ে সাতটি বিভাগের ৪২টি জেলায় ৪৪টি দল গঠন করে আলোচনা করা হয়। শিক্ষক, ব্যবসায়ী, আইনজীবী, গণমাধ্যমকর্মী ও অন্যান্য পেশার মোট ৬০০ জন্য ব্যক্তি আলোচনায় অংশ নেয়।

৬০০ জন পেশাজীবীর প্রত্যক্ষ আলোচনায় ১৪৯ জন সাংসদের নাম এসেছে। টিআইবি কিছু কিছু ক্ষেত্রে তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা যাচাই করেছে। তাই প্রতিবেদনটিকে ধারণাভিত্তিক বলা যাবে না।

আলোচিত সাংসদদের মধ্যে ৯৭ শতাংশ নেতিবাচক কাজের সঙ্গে জড়িত বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। এদের মধ্যে ২৭ জন মন্ত্রী/প্রতিমন্ত্রী, সাতজন নারী সদস্য এবং বিরোধী দলের পাঁচজন সদস্যও আছে।

অভিযোগের ধরন সম্পর্কে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আলোচিত সাংসদদের ৮১ দশমিক ৮ শতাংশ প্রশাসনিক কাজে সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং বদলি ও নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তার করে। এসব সাংসদের বিরুদ্ধে খুব কম ক্ষেত্রে মামলা হয়েছে। কোথাও কোথাও সাংসদেরা পাল্টা মামলা করেছে। কোন কোন ক্ষেত্রে সাংসদদের চাপে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বদলি করা হয়েছে।

উল্লিখিত সাংসদদের ৭৬ দশমিক ৯ শতাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সভাপতি হিসেবে ক্ষমতার অপব্যবহার, কমিটি নিয়ন্ত্রণ, পছন্দের সদস্য নির্বাচন, শিক্ষক নিয়োগ নিয়ন্ত্রণ, অর্থের বিনিময়ে চাকরি দেয়া, কমিশনের বিনিময়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্তি করা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বরাদ্দের অপব্যবহার ইত্যাদি দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। এসব অনিয়মের ঘটনায় সাংসদের হাতে শিক্ষক লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।

১৪৯ সাংসদের ৭৫ দশমিক ৫ শতাংশ উন্নয়ন বরাদ্দের অপব্যবহার করেছেন। এর মধ্যে স্থানীয় উন্নয়নকাজে ব্যক্তিগত ও পারিবারিক সুবিধা নেয়া, নিজস্ব কর্মীদের সুবিধা দেয়া, ভুয়া প্রকল্প ও প্রতিষ্ঠানের নামে বরাদ্দ নেয়া, টিআর ও কাবিখা বিতরণে অনিয়ম ইত্যাদি আছে। এসব সাংসদের মধ্যে ৭৮ দশমিক ৭ শতাংশ বরাদ্দ অনুমোদন দিতে গিয়ে কমপক্ষে ৫ শতাংশ হারে কমিশন আদায় করে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে বেশি কমিশনের বিনিময়ে দলীয় কর্মীদের কাজ না দিয়ে অন্য দলের কর্মীদের দেয়া হয়।

এই সাংসদদের ৭০ দশমিক ৬ শতাংশ হত্যা, খাসজমি দখল, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি ও প্রতারণার সঙ্গে জড়িত। এদের মধ্যে ৫৩ দশমিক ৫ শতাংশ সাংসদ নিজেরাই বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে জড়িত। এসব সাংসদের মধ্যে মাত্র ২৪ দশমিক ১ শতাংশের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা হয়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সাংসদের প্রভাবের কারণে সংশ্লিষ্ট থানা মামলা গ্রহণ করেনি।

সাংসদদের ৬৯ দশমিক ২ শতাংশ জেলা পর্যায়ের সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের কেনাকাটায় প্রভাব বিস্তার করে থাকে। এদের মধ্যে ৭১ দশমিক ৭ শতাংশ সাংসদ নিজের, কিংবা আত্মীয়-স্বজনের কিংবা অন্যের লাইসেন্স ব্যবহার করে ঠিকাদারি ব্যবসা পরিচালনা করে। তারা দরপত্র কিনতে বা জমা দিতে বাধা দেয়া, সমঝোতার মাধ্যমে কাজ বণ্টনের সঙ্গে জড়িত। ৬২ দশমিক ২ শতাংশ সাংসদ নির্বাচনী আইন লঙ্ঘন এবং ৮ দশমিক ৪ শতাংশ সাংসদ মিথ্যা তথ্য দিয়ে প্লট বরাদ্দ নেয়ার সঙ্গে জড়িত।”

উল্লেখ্য, সংসদ সদস্য বা এমপি হিসেবে প্রচলিত ধারণায় শুধু সংসদের সদস্য হিসেবে কল্পনা করা হয়। যাদের কাজ এলাকার উন্নয়ন বলে ধারণা করা হয়। আসলে সংসদ সদস্যের কাজ কিন্তু শুধু তা নয়। সংসদ সদস্য অর্থ হলো আইনসভার সদস্য অথবা আইন প্রণেতা তথা খধি গধশবৎ।

বাংলাদেশ সংবিধানের ৬৫ (১) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘জাতীয় সংসদ’ নামে বাংলাদেশের একটি সংসদ থাকিবে এবং এই সংবিধানের বিধানাবলী-সাপেক্ষে প্রজাতন্ত্রের আইন প্রণয়ন ক্ষমতা সংসদের উপর ন্যস্ত হইবে।’

এক্ষেত্রে সংসদ সদস্যরা কত বড় মহান দায়িত্ব পালন করে তা বলার অপেক্ষা রাখেনা এবং সংসদ সদস্য হিসেবে তাদের পবিত্র শপথ ও করতে হয়। প্রসঙ্গত এই শপথের ধারাভাষ্য নি¤œরূপ :

“আমি…………………সংসদ সদস্য নির্বাচিত হইয়া সশ্রদ্ধচিত্তে শপথ (বা দৃঢ়ভাবে ঘোষণা) করিতেছি যে, আমি যে কর্তব্যভার গ্রহণ করিতে যাইতেছি, তাহা আইন-অনুযায়ী ও বিশ্বস্ততার সহিত পালন করিব; আমি বাংলাদেশের প্রতি অকৃত্রিম বিশ্বাস ও আনুগত্য পোষণ করিব এবং সংসদ-সদস্যরূপে আমার কর্তব্য পালনকে ব্যক্তিগত স্বার্থের দ্বারা প্রভাবিত হইতে দিব না।”

উল্লেখ্য, এই শপথ গ্রহণ ব্যতিরেকে কোন সংসদ সদস্য তার কার্যভার শুরু করতে পারে না। করলে তা আইনগত দ-নীয় হয়। বাংলাদেশ সংবিধানের ৬৯ নম্বর অনুচ্ছেদে বর্ণিত হয়েছে :

“কোন ব্যক্তি এই সংবিধানের বিধান অনুযায়ী শপথ গ্রহণ বা ঘোষণা করিবার এবং শপথপত্রে বা ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষরদান করিবার পূর্বে কিংবা তিনি সংসদ-সদস্য হইবার যোগ্য নহেন বা অযোগ্য হইয়াছেন জানিয়া সংসদ সদস্যরূপে আসন গ্রহণ বা ভোটদান করিলে তিনি প্রতি দিনের অনুরূপ কার্যের জন্য প্রজাতন্ত্রের নিকট দেনা হিসাবে উসুলযোগ্য এক হাজার টাকা করিয়া অর্থদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।”

অর্থাৎ প্রতি সংসদ সদস্যের জন্যই শপথ একটি বড় বিষয়। এ শপথের মধ্যে বিদ্যমান রয়েছে আইন অনুযায়ী ও বিশ্বস্ততার সাথে দায়িত্ব পালন করার কথা। এ শপথে সংযুক্ত রয়েছে সংসদ সদস্যরূপে কর্তব্য পালনকে ব্যক্তিগত স্বার্থের দ্বারা প্রভাবিত না করার কথা। কিন্তু প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী ৯৭ ভাগ সংসদ সদস্য শুধু কৃত শপথ বা ওয়াদাই ভঙ্গ করেনি উল্টো তারা নিজেরাই হত্যা, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, দখল ইত্যাদি মারাত্মক ফৌজদারী অপরাধে জড়িত হয়ে গেছে।

অনেকেই এটা গণতন্ত্রের জন্য হুমকি বলে মন্তব্য করেছে। আসলে এটা গণতন্ত্রের জন্য হুমকি নয়, বরং এটা গণতন্ত্রের জন্মগত গলদ। স্বভাবজাত ত্রুটি। আজ পর্যন্ত এমন কোন কথিত গণতান্ত্রিক সরকার দেখানো যাবেনা যেখানে সংসদ সদস্য কেন? মন্ত্রী অথবা খোদ প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত কৃত শপথ অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছে। অর্থাৎ তারা প্রত্যেকেই শপথ ভঙ্গকারী। গণতন্ত্রের গণধারাটাই এমন।

প্রকাশিত প্রতিবেদন আমাদেরকে গণতন্ত্রের গণগলদটিই চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে। সঙ্গতকারণেই গণতন্ত্রের নামে গণধোঁকার শাসন আর চলতে পারেনা। গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে বললেই যারা অগ্নিশর্মা হয়ে উঠে তাদেরকে মনে রাখতে হবে গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে বলাও গণতান্ত্রিক অধিকার। গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে বলিয়া যদি গণস্বার্থ রচনা করা যায় তা হলে সেটাও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া। কাজেই মূর্খ গণতন্ত্রীদের সম্পর্কে গণসচেতনতা অর্জন করতে হবে। গণতন্ত্রের ফাঁকাবুলি নিয়ে গণমানস আর বুঁদ হয়ে থাকতে পারেনা। গণতন্ত্রের আইন প্রণেতারাই যখন সরাসরি ফৌজদারী অপরাধে জড়িত হয়ে পড়ে তখন শুধু আইন প্রণেতাদের অপরাধ প্রবণতাই প্রতিভাত হয়না খোদ গণতন্ত্রই অপরাধী প্রমাণিত হয়। এই প্রমাণিত সত্য দেশ-জাতি ও জনগণ যত দ্রুত বুঝবে ততই তাদের জন্য রহমত, খায়ের, বরকত।

মূলত এসব অনুভূতি ও দায়িত্ববোধ আসে  ঈমান ও ইসলাম উনাদের অনুভূতি ও প্রজ্ঞা থেকে। আর তার জন্য চাই নেক ছোহবত তথা ফয়েজ, তাওয়াজ্জুহ। যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, যামানার মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবতেই সে মহান ও অমূল্য নিয়ামত হাছিল সম্ভব। মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের তা নছীব করুন। (আমীন)

-মুহম্মদ মাহবুবুর রহমান

ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি ও ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা-৫০

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-১৩ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৫১

‘থার্টিফাস্ট নাইট, ভালেন্টাইন ডে আর পহেলা বৈশাখের’ নামে হুজ্জোতির জন্য ধর্মব্যবসায়ীদের কৌশলগত নিষ্ক্রীয়তা, স্বার্থবাদী মৌসুমী রাজনৈতিক তৎপরতা এবং সংস্কৃতি বিপননকারীদের দূরভিসন্ধিতা ও মধ্যবিত্তের  তত্ত্ব-তালাশহীন প্রবণতা তথা হুজুগে মাতা প্রবৃত্তিই দায়ী

অবশেষে জামাতীরা স্বীকার করিল যে, মুক্তি পাইতে চাহিলে মুরীদ হইতে হয়। আল্লাহ পাক-এর ওলী বা দরবেশ হইতে পারিলে মুক্তি পাওয়া যায়। কিন্তু জামাতীরা তাহা নয় বলিয়াই আখিরাত তো দূরের কথা দুনিয়াতেই তাহারা দুর্নীতির দায়ে গ্রেফতার। আর মইত্যা রাজাকারের ফতওয়া অনুযায়ী তো- তাহাকেই কতল করা ওয়াজিব।