বিদেশের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে দেশের বিদ্যুৎ খাত। ভারতের পাশাপাশি এবার চীন থেকেও একযোগে আমদানি করা হবে বিদ্যুৎ। অবিলম্বে এই আত্মঘাতী এবং জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ সিদ্ধান্ত থেকে সরকার সরে না আসলে অদূরভ বিষ্যতে ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখি হবে দেশ।

সংখ্যা: ২৬৩তম সংখ্যা | বিভাগ:

ক্রমবর্ধমান বিদ্যুৎ চাহিদার যোগান দিতে ক্রমান্বয়ে আমদানির দিকে ঝুঁকছে বাংলাদেশ। বর্তমানে ভারত থেকে ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আসছে বলে দাবি করা হচ্ছে। আগামী মাসে আরো ৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আসার কথা রয়েছে। প্রতিবেশী এই দেশটি থেকে দ্রুততম সময়ে আরো ২০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এছাড়া নেপাল ও ভুটান থেকেও বিদ্যুৎ আমদানি করতে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা অব্যাহত রয়েছে। সম্প্রতি দক্ষিণ এশিয়ার গন্ডি পেরিয়ে বিদ্যুৎ আমদানির জন্য চীনের দিকে ঝুঁকেছে সরকার। বিদ্যুৎ আমদানিতে ভারতের উপর নির্ভরশীলতা কমাতে চীন থেকে ৩০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, সরকার থেকে ভারতনির্ভরশীলতা কমানোর কথা বলা হলেও অনেক আগেই বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাত পুরোপুরিভাবে ভারতের উপর নির্ভরশীল হয়ে গেছে। বর্তমানে ভারত থেকে বাংলাদেশ মোট ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করছে। ২০১৩ সালে বহরমপুর ভেড়ামারা গ্রিড দিয়ে ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানি শুরু হয়। এই গ্রিড দিয়ে বর্তমানে ৫শ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আসছে। ভারতের ত্রিপুরার পালটানা বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে কুমিল্লা হয়ে আসছে ১৬০ মেগাওয়াট। আরো ৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ এই গ্রিড দিয়ে আসার কথা রয়েছে। ভারতের সরকারি ও বেসরকারি খাত থেকে আরো ২ হাজার মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ আমদানি প্রক্রিয়াধীন আছে। এছাড়া ভারতের ঝাড়খন্ডে নির্মাণাধীন আদানি গ্রুপের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির কথা রয়েছে। মেঘালয়সহ ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় কয়েকটি রাজ্যে নির্মাণের প্রক্রিয়াধীন পানিবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকেও বাংলাদেশ বিদ্যুৎ আমদানির সুযোগ পাবে বলে জানিয়েছে ভারত। নেপাল ও ভুটানের পানিবিদ্যুৎ প্রকল্পে বিনিয়োগের মাধ্যমেও বাংলাদেশ অদূর ভবিষ্যতে বিদ্যুৎ আমদানি করার কথা রয়েছে। পাশাপাশি ভারতের বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী আদানি ও রিলায়েন্সের কাছ থেকে ২ হাজার ৩৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ক্রয়ের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে সরকার। প্রতিষ্ঠান দুটির কাছ থেকে যে বিদ্যুৎ ক্রয় করা হবে তা দেশীয় বিদ্যুৎ কেন্দ্রে উৎপাদিত বিদ্যুতের তুলনায় অনেক বেশি দাম পড়বে।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতে কয়েকটি দেশ থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করার কথা বলা হলেও প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশের বিদ্যুৎখাত পুরোপুরি পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের উপর নির্ভরশীল এবং অপরপক্ষে ভারতও বাংলাদেশে বিদ্যুৎ রফতানী করার বিষয়ে অনেকটা অতিউৎসাহী।  আশঙ্কার বিষয় হলো, বর্তমানে ভারতেই বিদ্যুৎ ঘাটতির পরিমাণ ৫০ হাজার মেগাওয়াট। আর আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে যখন ভারতের বিদ্যুৎ চাহিদা বেড়ে দাঁড়াবে ৯ লাখ ৫০ হাজার মেগাওয়াট, তখন এই ঘাটতির পরিমাণ আরো অনেক বেড়ে যাবে। প্রশ্ন হচ্ছে, ভারতের বিদ্যুৎ ঘাটতি থাকা সত্ত্বেও দেশটি কেন বাংলাদেশে বিদ্যুৎ রফতানীতে এতটা আগ্রহী হয়ে উঠেছে। আর এই প্রশ্নের একটাই উত্তর হলো, বিদ্যুতে বাংলাদেশকে বিদেশনির্ভর তথা ভারতনির্ভর করে তোলার পরিকল্পনা নিয়েই দেশটি এগিয়ে যাচ্ছে। কারণ ভারত মনে করে- বাংলাদেশে স্থায়ীভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখার এটি হবে একটি কুটকৌশল। ভারত এ ব্যাপারে সীমাহীন চালবাজ। দেশটি ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে একটি গাইডলাইনের সূচনা করে, যার মাধ্যমে বাংলাদেশকে ভারতের উপর দিয়ে সরাসরি নেপাল ও ভুটান থেকে বিদ্যুৎ আনার ট্রানজিট সুবিধা দেবে না। এই গাইডলাইন অনুযায়ী ভারত চায়, তার নিজস্ব এজেন্সির মাধ্যমে নেপাল ও ভুটান থেকে বাংলাদেশকে বিদ্যুৎ আমদানি করতে হবে। এক্ষেত্রে ভারত প্রথমে নেপাল ও ভুটান থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করবে। এরপর ভারত দ্বিপক্ষীয় চুক্তির মাধ্যমে তা বাংলাদেশে রফতানী করবে।

বলাবাহুল্য, ভারত থেকেই হোক বা চীন থেকেই হোক আমদানিনির্ভরতা কোনো সময়ই একটি দেশের জন্য সুখকর নয়। কারণ এর রয়েছে দীর্ঘস্থায়ী কুপ্রভাব। আজকে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাত অতিমাত্রায় ভারতের উপর নির্ভরশীল হওয়ার পর এবার আবার চীনের দিকে ঝুঁকছে। আর এতে করে অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাত একটি হুমকির মুখে থাকবে। সেইসাথে যেসব দেশ থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করা হবে সেইসব দেশের সাথে যদি কোনোসময় সম্পর্ক খারাপ হয় বাংলাদেশের, তাহলে তৎক্ষণাৎ বাংলাদেশের আমদানিনির্ভর বিদ্যুৎ খাত মহাসঙ্কটে পড়ে যাবে। যার একটি সামান্য উদাহরণ হলো- ১ নভেম্বর ২০১৪ সালে সারা বাংলাদেশ ব্লাকআউটের কবলে পড়েছিলো। আর এর মূল কারণই হলো ভারত ও বাংলাদেশ বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইনের সংযোগস্থলে বিপর্যয় ঘটেছিলো। অর্থাৎ বোঝা গেলো, সামান্য বিদ্যুৎ ত্রুটিতেই বাংলাদেশ মহাসঙ্কটে পড়বে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

প্রসঙ্গত, বিদেশ থেকে বিদ্যুৎ আমদানির বিপরীতে এদেশীয় বিকল্প ব্যবস্থাগুলো যথা বায়ুকল, ধানের তুষসহ পানি থেকে জেনারেটরের সাহায্য বিদ্যুৎ উৎপাদন বিভিন্ন অনুষঙ্গে ব্যয় করলে আমরা এতদিনে স্বল্প খরচেই বিদ্যুতে সমৃদ্ধ হতে পারতাম। বিদ্যুৎ খাতকে আমদানির্ভরতার করাল থাবা থেকে রক্ষা করা যেত। সেইসাথে দেশের অভ্যন্তরীণ আরো মূল্যবান রিসোর্স আছে। গভীর সমুদ্রে এবং স্থল ভাগে যে রিসোর্সগুলো রয়েছে সেগুলোকে ব্যবহার করতে হবে। অন্য দেশের উপর আমদানি নির্ভরতা বাদ দিয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানি- যেমন সূর্যের আলোকে ব্যবহার করার মধ্য দিয়ে দেশে সৌরশক্তির সম্ভাবনাকে জাগিয়ে তুলে বিদ্যুৎ খাতটি পূরণ করা যায়। আমাদের দেশের সূর্যের আলো অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় অনেক বেশি। বিশ্বের অনেক দেশেই সৌরশক্তিকে ব্যবহার করে তাদের দেশের বিদ্যুৎ ঘাটতি পূরণ করছে। কিন্তু আমাদের দেশের সরকারের বিদ্যুৎখাতে যুগপৎভাবে স্বদেশ নির্ভরতা এবং সুলভ করার প্রক্রিয়া দুটোরই কোনো উদ্যোগ বা চেতনা নেই।

বলাবাহুল্য, এ চেতনাহীনতা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার খিলাফ। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকার দাবিদার কি করে বিদ্যুৎ খাত পরনির্ভর করে রাখতে পারে তা আমাদের বোধগম্য নয়। কারণ দেশের বিদ্যুৎ ব্যবস্থা শুধু একটি শক্তিই নয়, বরং এটা দেশের সার্বভৌমত্বেরও স্তম্ভ। কাজেই একে নড়বড়ে রাখা সার্বভৌমত্বকে বিপন্ন রাখা। যা মুক্তিযুদ্ধের সরকারও করতে পারে না এবং মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের জনগণও বরদাশত করতে পারে না। কাজেই সরকার যদি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রচ্ছন্ন রাখে, তবে বিদ্যুৎখাতে বিদেশ নির্ভরতা মুক্ত করার জন্য মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের জনগণকেই প্রোজ্জ্বল ও প্রখর প্রতিবাদী হতে হবে।

-আল্লামা মুহম্মদ ওয়ালীউল্লাহ, ঢাকা।

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব।  খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-১১         

বৃটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে বৃটিশ ভূমিকা-১১

 রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর হাক্বীক্বী নায়িব ও ওয়ারিছ। তাঁর বিরোধীতাকারীরা মুনাফিক, কাফির ও শয়তানের অনুসারী -১১     

 “হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নিয়ে সিনেমা”  নিশ্চুপ উলামায়ে ‘ছূ’রা ॥ সর্বাঙ্গে দায়ী তারা 

অবশেষে তথাকথিত ইসলামী জামাতের আমীর নিজামী ও বায়তুল মোকাররামের তথাকথিত খতীব উবায়দুল হক, এরপর এবার মুফতে আমিনীও রাজারবাগ শরীফের তাজদীদ মানতে বাধ্য হলেন