গত ১০.০৬.২০১০ ঈসায়ী তারিখে ‘কিক অফ সেলিব্রেশন কনসার্ট’ স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৮টায় জোহানেসবার্গের সোয়েটোর অরলান্ডো স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়েছে। যাকে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘শুরুর আগে বিশ্বকাপ শুরু’ হিসেবে।
‘দ্য ফ্যাক্টরি অব ড্রিম’ নামে পরিচিত অরলান্ডো স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠেয় উদ্বোধনী কনসার্টকে ইতিমধ্যে সর্বকালের অন্যতম সেরা বলে অভিধা দিয়েছে। এতে অংশ নিয়েছে শাকিরা, অ্যালিসিয়া কিস, দ্য ব্লাক আইড পিয়াস, জন লেজেন্ড ও হাগ মাসেকেলাসহ বর্তমান ও সাবেক তথাকথিত ফুটবল তারকারা। কনসার্টের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের দায়িত্বে ছিলেন এমি অ্যাওয়ার্ড বিজয়ী কেভিন ওয়াল। এই কনসার্ট থেকে আয় হয়েছে কোটি কোটি ডলার।
এদিকে দক্ষিণ আফ্রিকার সাধারণ মানুষরা হতাশা এবং ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন রেডিও স্টেশনে ফোন করে? তাদের মূল বক্তব্য, ‘দক্ষিণ আফ্রিকায়- বিশ্বকাপের উদ্বোধনী দিনে গান গাওয়ার জন্য দক্ষিণ আফ্রিকার কোন গায়ক বা গায়িকা কি পাওয়া
যায়নি? তাদের প্রশ্ন: ‘কেন দক্ষিণ আমেরিকার একজন গায়িকাকে এই গানটি গাইতে হবে?
দক্ষিণ আফ্রিকার স্থানীয় টক রেডিও স্টেশনের হোস্ট জেনি ক্রিস উইলিয়ামস জানায়, অনেকেই ফোন করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে, করে যাচ্ছে? জেনি আরো বলে, ‘দক্ষিণ আফ্রিকার মানুষরা সত্যিই নিজেদের নিয়েই মশগুল? তারা তাদের নিজস্ব গান শুনতে চায়? যে কারণেই তাদের প্রশ্ন, ‘‘দেশে এত জনপ্রিয় গায়ক-গায়িকা থাকতে কেন বিদেশি একজনকে দিয়ে গানটি গাওয়ানো হচ্ছে? আমি নিজেও এই যুক্তিকে সমর্থন করি? দক্ষিণ আফ্রিকার জনগণ যুক্তি দেখাচ্ছে ‘‘বিশ্বকাপ আমাদের মহাদেশে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, আমাদের দেশে- গানও আমরা গাইতে চাই?”
শাকিরার এবারের বিশ্বকাপের “ওয়াকা ওয়াকা গানের” প্রতিবাদে দক্ষিণ আফ্রিকার মানুষ রাস্তায় মিছিল পর্যন্ত করেছে?
বলাবাহুল্য, শাকিরা প্রসঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকার জনগণের এ বিরোধিতা, এ আন্দোলনও অন্তত আমাদের জন্য তথা গোটা মুসলিম বিশ্বেও জন্য একটা বিরাট শিক্ষা হতে পারতো।
কারণ, দক্ষিণ আফ্রিকা নিজেই বিশ্বকাপ ফুটবলের আয়োজক। যেখানে বিশ্বের অন্যান্য রাষ্ট্রের খেলোয়াররা খেলতে থাকবে। কিন্তু তাদের উদ্বোধনী গানে তারা
বিজাতীয়
ভিনদেশী উপস্থিতি অস্বীকার করেছে।
অসহ্য বলে ব্যক্ত করেছে।
বিরোধিতা করছে।
বলাবাহুল্য, এ অভিব্যক্তি এসেছে তাদের নিজস্ব চেতনা থেকে।
নিজস্ব ঐতিহ্যের প্রতি আনুগত্য তথা শ্রদ্ধাবোধ থেকে।
নিজস্ব সংস্কৃতির চেতনা থেকে।
সর্বোপরি নিজস্ব স্বকীয়তা সংরক্ষণে দায়বদ্ধতা তার মর্যাদাকে বিকশিত করার অনুপ্রেরণা থেকে।
বলাবাহুল্য, দক্ষিণ আফ্রিকা একটা ঐতিহ্যগত জাতিগত বিভেদ, দ্বন্দ্ব-সংঘাতের দেশ।
সাদা-কালোর খুনোখুনির দেশ।
কিন্তু তারপরেও বিশ্বকাপের উদ্বোধনের গানে শাকিরার বিপক্ষে তারা এক হয়েছে। এক্ষেত্রে তারা বিভাজনের তথা দ্বন্দ্ব-সংঘাতের ঊর্ধ্বে উঠে গেছে।
তারা দেশের স্বকীয়তা সংরক্ষণ ও সম্মান প্রদর্শনের স্বার্থে এক হয়েছে।
একটা চেতনায় উজ্জীবিত হয়েছে।
বলাবাহুল্য, এ চেতনার জোর কতটুকু?
এ চেতনার প্রবর্তক কে?
তার শিকড় কত গভীরে?
তার জন্ম কতদিন আগে?
বলতে গেলে শাকিরা গান গাইবে তা প্রকাশের পরেই বা অতি নিকট সময়ে।
তাহলে, অনাদি অনন্তকালের সৃষ্টিকর্তা যিনি আল্লাহ পাক সেই আল্লাহ পাক উনার বান্দা, মুসলমানের কী
একবারও বিশ্বকাপ প্রসঙ্গে
ইসলামী জজবায়
উজ্জীবিত হওয়ার দরকার ছিলো না?
দক্ষিণ আফ্রিকায় শাকিরা বিরোধী চেতনার চেয়ে- খেলা বিরোধী
চেতনা যা
আল্লাহ পাক উনার দেয়া ইসলামী চেতনা অনেক বেশি সমুন্নত নয়?
অনুসরণীয় নয়?
পালনীয় নয়?
করণীয় নয়?
আর এর গভীরতা কি অনিবার্য নয়?
এর বর্ণনা কী স্পষ্ট নয়?
মুসলমান কী তার মুখাপেক্ষী নয়?
মুুসলমান কী অস্বীকার করতে পারে, কুরআন শরীফ-এর আদেশকে?
হাদীছ শরীফকে?
মৃত্যুকে?
কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ আমল না করার দোযখী শাস্তিকে?
কুরআন শরীফ-এ আল্লাহ পাক কী খেলা সম্পর্কে স্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা উচ্চারণ করেননি? (চলবে)
-মুহম্মদ আলম মৃধা
বৃটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে বৃটিশ ভুমিকা-৯