সব প্রশংসা খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত দুরূদ মুবারক ও সালাম মুবারক।
দ্রব্যমূল্যের চাপে নুয়ে পড়ছে সাধারণ মানুষ। আয় না বাড়লেও থেমে নেই নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্য বৃদ্ধি। প্রতিটি মানুষ পুড়ছে মূল্যের স্ফুলিঙ্গে। নির্বাচনী ইশতেহারে এক নম্বর প্রতিশ্রুতি ছিল দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসা হবে। সরকারের প্রতিশ্রুতির কোন প্রতিফলন হয়নি। ফলে সীমিত আয়ে উচ্চমূল্যে পণ্য ক্রয় করতে ভোক্তাকে কাটছাঁট করতে হচ্ছে পারিবারিক নানা দিকের বাজেট। অনেকে হিমশিম খাচ্ছে এই পরিস্থিতি উত্তরণ ঘটাতে।
বর্তমান সরকারের চার বছরে দ্রব্যমূল্য পরিস্থিতির কোন উন্নতি হয়নি। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে বড় রকমের কোন কৌশল অবলম্বন করা হয়নি। রাষ্ট্রীয় বাজার নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা টিসিবিকে টিকিয়ে রাখা হয়েছে। কিন্তু পুরোদমে সক্রিয় করা হয়নি। পণ্য কেনাকাটার জন্য টিসিবিকে আদৌ কোন থোক বরাদ্দ দেয়া হয়নি। একদিকে থেমে থাকছে না বাজারের লাগাম। অন্যদিকে আয় বাড়ছে না সে অনুপাতে। ফলে সাধারণ মানুষ বিনোদন, চিকিৎসা বাজেট কাটছাঁট করে পরিস্থিতি উত্তরণ করছে। চলতে গিয়ে অনেকে ঋতগ্রস্ত হয়ে পড়ছে। এর মধ্যে আবার নতুন করে বাড়ানো হয়েছে সব ধরনের জ্বালানির মূল্য। আগামীতে বিদ্যুতের মূল্যও বাড়ছে। ফলে মূল্যস্ফীতির যাঁতাকলে নিষ্পেষিত হচ্ছে কোটি কোটি মানুষ।
এই দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয়। ২০১২ সালে জীবনযাত্রার ব্যয় গড়ে বেড়ে দাঁড়ায় ৬ দশমিক ৪২ শতাংশ, ২০১১ সালে জীবনযাত্রার ব্যয় দাঁড়ায় ১১ দশমিক ৯৬ শতাংশ।
উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে মধ্যবিত্তরা হয়তো সঞ্চয় ভেঙে খাচ্ছে অথবা তাদের জীবনযাত্রার মান কমেছে। আর নিম্নবিত্তদের জীবনযাত্রার মান কমছেই। তার মতে, দেশের বণ্টন ব্যবস্থায় সমস্যা রয়েছে। ফলে কিছু মানুষের আয় বাড়লেও তাতে সামগ্রিকভাবে অর্থনীতি তেমন লাভবান হয় না।
সরকারের অভ্যন্তরীণ ঋত সংগ্রহের অন্যতম উৎস সঞ্চয়পত্র খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে গত বছর ১ মার্চ থেকেই সব ধরনের সঞ্চয়পত্রের সুদহার বাড়ানো হয়। চালানো হয় ব্যাপক প্রচারণা। কিন্তু ফল শূন্য। এ খাতের কোনও উন্নতি নেই। গত অর্থবছরে ৬ হাজার কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে এ খাতে নিট বিনিয়োগ এসেছিল মাত্র ৪৭৮ কোটি টাকা। আর চলতি অর্থবছরের রেকর্ড ৭ হাজার ৪০০ কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে প্রথম ৬ মাসে এসেছে মাত্র ১৭৭ কোটি ৪২ লাখ টাকা।
উল্লেখ্য, মোট বিক্রি থেকে মূল বা ভাঙানোর পরিমাণ বাদ দিলে নিট বিনিয়োগ পাওয়া যায়। দেখা যাচ্ছে, মানুষ সঞ্চয়পত্র যাও কিনছে তার চেয়ে বেশি ভাঙিয়ে নিচ্ছে।
এদিকে, সঞ্চয়পত্র খাতে বিনিয়োগ খরা না কাটার পেছনে উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধিকেই দায়ী করেছে অর্থনীতিবিদসহ সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, মানুষের মৌলিক চাহিদা যেমন, খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষা সব ক্ষেত্রেই ব্যয় অনেক বেড়েছে। সে অনুপাতে বাড়েনি আয়। এ কারণে মানুষের সঞ্চয়প্রবণতা এমনিতেই কমে গেছে।
জাতীয় সঞ্চয় পরিদপ্তরের হালনাগাদ প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে মোট সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে ১১ হাজার ৫৫৮ কোটি ৪০ লাখ টাকা। এ সময়ে সরকারকে ভাঙানো বাবদ মূল পরিশোধ করতে হয়েছে ১১ হাজার ৩৮০ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। অর্থাৎ এ সময়ে নিট বিনিয়োগ এসেছে ১৭৭ কোটি ৪২ লাখ টাকা। গত অর্থবছরের তুলনায় এ সময়ে নিট বিক্রি কমেছে ৪৬ দশমিক ৮৮ শতাংশ। আগের অর্থবছরের একই সময়ে নিট বিনিয়োগ এসেছিল ৩৩৪ কোটি টাকা। এছাড়া বর্ষপঞ্জী হিসেবে গত বছর এ খাতে মোট বিক্রি হয়েছে ২২ হাজার ৫০৪ কোটি টাকা। এ সময়ে মূল পরিশোধ হয়েছে ২২ হাজার ১৮১ কোটি টাকা। অর্থাৎ নিট বিনিয়োগ এসেছে ৩২২ কোটি টাকা। ২০১১ সালে ১৬ হাজার ১০২ কোটি টাকা বিক্রির বিপরীতে মূল পরিশোধ করতে হয় ১৫ হাজার ৬৮০ কোটি টাকা। গত বছর মার্চে সুদহার বাড়ানোর পরও সঞ্চয়পত্রের বিক্রি বাড়েনি। মে, নভেম্বর ও ডিসেম্বরে নিট বিনিয়োগ ঋতাত্মক পর্যায়ে নেমে যায়। অর্থাৎ এই তিন মাসে সঞ্চয়পত্র যা বিক্রি হয়েছে তার চেয়ে বেশি মূল পরিশোধ করতে হয়েছে সরকারকে। এছাড়া সুদ তো আছেই।
বিশেষজ্ঞরা বলছে, খাদ্যে রেকর্ড মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পাওয়ায় এর প্রভাবে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী বিঘিœত হতে পারে। উল্লেখ্য, এমনিতেই দেশের ৪০ শতাংশ দরিদ্র মানুষ ক্রয়ক্ষমতা হারিয়ে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। তার উপর লাগামহীন এ খাদ্য মূল্যস্ফীতির কারণে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবারগুলোতে করুণ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় দরিদ্র থেকে আরও দরিদ্র হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে। এ অবস্থায় ঝুঁকিগ্রস্ত জনগণের জন্য রেশন সুবিধা চালু এবং খাদ্য নিরাপত্তা বেষ্টনী কার্যক্রম আরও সম্প্রসারণ করা একান্ত দরকার।
সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচীর আওতায় ৮৪টি প্রকল্প চালু থাকলেও এরমধ্যে খাদ্য সংশ্লিষ্ট কর্মসূচি মাত্র ৩টি। এর ফলে খাদ্য মূল্যস্ফীতির প্রভাব থেকে দরিদ্রদের রক্ষা করতে পারছে না এসব কর্মসূচি।
নানামুখী সঙ্কটে নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত মানুষ এখন অস্থির। এ কারণে সরকারের জন্য এখন বিরাট চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ। বিশেষ করে আগামী বাজেট অত্যাসন্ন। এ অবস্থায় অর্থনীতির গতি প্রবাহ ঠিক রাখাতে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ সরকারের জন্য একান্ত কর্তব্য।
মূলত সব সমস্যা সমাধানে চাই সদিচ্ছা ও সক্রিয়তা তথা সততা। কিন্তু এর জন্য প্রয়োজন নেক ছোহবত মুবারক, নেক সংস্পর্শ মুবারক তথা রূহানী ফয়েজ-তাওয়াজ্জুহ মুবারক।
যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবত মুবারক-এ কেবলমাত্র তা পাওয়া সম্ভব। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে তা নছীব করুন। (আমীন)
-মুহম্মদ মাহবুবুর রহমান
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি ও ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা-৫০