সব প্রশংসা মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত দুরূদ ও সালাম।
গত ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১২ ঈসায়ী তারিখ সোমবার আফগানিস্তানের বাগরামের মার্কিন ঘাঁটিতে পবিত্র কুরআন শরীফ-এ আগুন দেয় ন্যাটো সেনারা। কয়েকজন শ্রমিক কয়েকটি কপি উদ্ধার করেন।
আফগান কর্মকর্তারা জানান, ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে একটি লরিতে করে ময়লা আবর্জনার সঙ্গে কুরআন শরীফ-এর কয়েকটি কপি পোড়ানোর জন্য সামরিক ঘাঁটির নির্দিষ্ট স্থানে রাখা হয়, সেখানে সাধারণত বর্জ্য পদার্থ পোড়ানো হয়ে থাকে। বিষয়টি সেখানে কর্মরত ৫ জন আফগান কর্মীর নজরে আসে। তারা দেখতে পান যে, ময়লা আবর্জনার মধ্যে পবিত্র কুরআন শরীফ পোড়ানো হচ্ছে। (নাঊযুবিল্লাহ!)
এতে উত্তাল হয়ে উঠেছে আফগানিস্তান। দেশটিতে মোতায়েন মার্কিন নেতৃত্বাধীন ন্যাটো সেনাদের পবিত্র কুরআন শরীফ অবমাননা ঘটনার বিরুদ্ধে অব্যাহতভাবে বিক্ষোভ-সমাবেশ করেছেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। বিক্ষোভকারীদের উপর পুলিশের গুলি বর্ষণে গত ২২ ফেব্রুয়ারি বুধবার কমপক্ষে ৭ জন শহীদ এবং বিপুলসংখ্যক আহত হয়েছেন। পবিত্র কুরআন শরীফ অবমাননার প্রতিবাদে পাকিস্তানেও ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে।
এর আগে, গত বছর এপ্রিল মাসে যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যে এক মার্কিন পাদ্রি পবিত্র কুরআন শরীফ-এ আগুন দিলে আফগানিস্তানে সে সময় লাগাতার তিনদিন বিক্ষোভ হয়েছিল। সে সময় বিক্ষোভকারীরা উত্তরাঞ্চলীয় শহর মাজার-ই শরিফে জাতিসংঘ চত্বরে ঢোকার চেষ্টা করলে জাতিসংঘের সাত বিদেশি কর্মীসহ ১১ ব্যক্তি নিহত হয়। এছাড়া দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর কান্দাহারে সংঘর্ষে ৯ জন নিহত এবং ৮০ জনের বেশি আহত হয়েছিল।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, আমাদের দেশে সাধারণ শিক্ষিতজনেরা মনে করে থাকেন ইউরোপ, আমেরিকার লোক মাত্রই ভদ্র, শিক্ষিত এবং উদার। তাদেরকে অনুসরণ করে আমাদের দেশের মুসলমানদেরকে তারা অসাম্প্রদায়িক ও উদার হওয়ার আহবান জানায়। পাশাপাশি ওইসব লোকের সামনে আমাদের দেশের লোকদের ধর্মপ্রিয়তার কারণে তারা লজ্জা অনুভব করে। (নাঊযুবিল্লাহ!)
আমাদের দেশের সাধারণ লোকদের ধর্মপালনকে তারা ধর্মান্ধ ও মৌলবাদ বলে গালি দেয়। (নাঊযুবিল্লাহ) তারা চায় আমাদের ধর্মপ্রিয় লোকেরা বিধর্মীদের কোনো বিরোধিতা না করে, কোনো ক্ষেত্রে কোনো বিষয়ে প্রতিবাদ না করে। বরং ইসলামকে কাটছাঁট করে অথবা উপেক্ষা করে তথাকথিত আধুনিকতাকে গ্রহণ করে তারা মডারেট মুসলমান উপাধি অর্জন করে। (নাঊযুবিল্লাহ!)
অথচ বিধর্মীরা যে অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে ইসলাম ও মুসলমানদের প্রতি ঘৃণা পোষণ করে; তার প্রমাণ- প্রায়ই তারা আখেরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ব্যঙ্গচিত্র ছড়িয়ে দেয়ার কোশেশ করে। (নাঊযুবিল্লাহ!) এমনকি খোদ কুরআন শরীফও জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দেয়। (নাঊযুবিল্লাহ!)
মূলত বিধর্মীরা কখনই আমাদের প্রতি বুন্ধভাবাপন্ন নয়। তাদের মুখোশ একরকম। এবং তাদের মন আর একরকম। তাদের বাহির একরকম এবং ভেতর অন্যরকম। এদের প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, “ইহুদী-খ্রিস্টানরা চায় যে ঈমানদারগণ, ঈমান আনার পর পুনরায় কুফরী করে।” (নাঊযুবিল্লাহ!)
কুরআন শরীফ-এ মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ করেন, “ইহুদী-খ্রিস্টানরা ততক্ষণ পর্যন্ত তোমাদের প্রতি খুশি হবেনা যতক্ষণ পর্যন্ত তোমরা তাদের তর্জ-তরীক্বা গ্রহণ না করবে।” (নাঊযুবিল্লাহ)
আর হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে- “সব কাফিরর ধর্ম এক।” অর্থাৎ বিধর্মীরা সবাই গভীরভাবে ইসলাম ও মুসলিম বিদ্বেষী। কাজেই প্রতিটি মুসলমান দেশ ও ব্যক্তি মুসলমানদের জন্য বিধর্মীদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি হতে হবে কঠোর।
যে আদর্শ সার্থকভাবে প্রতিফলিত হয়েছে আমীরুল মু’মিনীন, ফারুকে আ’যম হযরত উমর বিন খত্তাব আলাইহিস সালাম উনার জীবনী মুবারক-এ। উনার লক্ববই ছিল ‘আসিদ্দাউ আলাল কুফফার’। অর্থাৎ কাফিরদের প্রতি কঠোর।
অধুনা “এক বিশ্ব, এক পরিবার।” “এক বিশ্ব এক স্বপ্ন” “বিশ্বায়ন” অথবা “বিশ্বপল্লী” ইত্যকার বিভিন্ন শ্লোগানে কাফিরদের সাথে মুসলমানদের একাকার করে ফেলার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এবং প্রায় সব মুসলমানদেশ নিজস্ব স্বকীয়তা হারিয়ে কাফিরদের সে প্রতারণাপূর্ণ শ্লোগানে হারিয়েও গেছে। (নাঊযুবিল্লাহ!)
কিন্তু “ব্যঙ্গচিত্র” অথবা পবিত্র “কুরআন শরীফ” পোড়ানোর ন্যায় ঘটনা মুসলমানদের হুঁশ হওয়া উচিত। কাফিররা যে মহান আল্লাহ পাক, মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের শত্রু এবং বিদ্বেষী তথা ইসলাম ও মুসলমানদের চরম শত্রু সে কথা প্রতিটি মুসলমানকে এবং প্রতিটি মুসলমান দেশের কর্ণধারদের বিলক্ষণ বুঝতে হবে।
প্রসঙ্গত: আজকে তথাকথিত নোবেল বিজয়ী অমর্ত্য সেনকে এদেশে বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি করা হয়। এবং সে ইসলাম এবং মুসলমানকে বাদ দিয়ে শুধু বাঙালি সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের কথা তুলে ধরে। অথচ সে তার বইয়ে ভারতের সব মুসলমানদের ‘হিন্দু’ হয়ে যেতে বলেছে। কিন্তু এদেশে এসে তারা অসাম্প্রদায়িক চেতনার কথা বলে মুসলমানদের ধর্মান্ধ ও মৌলবাদ বলে গালি দিচ্ছে।
বলাবাহুল্য, ৯৭ ভাগ মুসলমানের এদেশের অমর্ত্য সেনরা কখনই কোনো অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হতে পারেনা। এ হীনম্মন্যতা এদেশের চলতে পারেনা। আজকে মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম সাইয়্যিদুনা রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার রূহানী শক্তিতে বলীয়ান হয়ে দীপ্ত কণ্ঠ মুবারক-এ দ্বিধাহীনচিত্তে একথা বলার মোক্ষম সময় এসেছে যে পৃথিবীর সব বিধর্মীরাই মুসলমানদের জান-মাল, ইজ্জত, পরিবার-পরিজন তথা দেশ ও স্বাধীনতার শত্রু।
এসব শত্রুদের পরামর্শে মুসলমান দেশ চলতে পারে না। এদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে মুসলমান থাকতে পারে না। মুসলমান দেশ জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র হতে পারে না। জাতিসংঘের বিভিন্ন ইসলাম বিরোধী চুক্তিতে মুসলমান দেশ স্বাক্ষর করতে পারেনা।
মুসলমান লা-শরীক মহান আল্লাহ পাক উনাকে ভয় করে। উনারই ইবাদত করে। উনারই কাছে সাহায্য চান। মুসলমান কোনো বিধর্মীর মুখাপেক্ষী নয়। মুহতাজ নয়। মুসলমানদের বিজয় নিকটবর্তী।
মূলত ইসলামী প্রজ্ঞার অভাবে কোন সরকারই এ সত্যটি আদৌ উপলদ্ধি করতে পারেনি। সঙ্গতকারণেই আমরা মনে করি, সরকারেরও প্রয়োজন রয়েছে নেক পরামর্শ তথা নেক ছোহবত, রূহানী সংস্পর্শ তথা ফয়েজ-তাওয়াজ্জুহ।
যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবতেই সে মহান নিয়ামত হাছিল সম্ভব। মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সবাইকে তা নছীব করুন। (আমীন)
–মুহম্মদ আরিফুর রহমান
প্রসঙ্গঃ আমেরিকায় ইহুদী প্রভাব ও নিয়ন্ত্রণ- ২
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা-৩৪
চাঁদ দেখা এবং নতুন চন্দ্রতারিখ শুরু নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা- ১