ভারতের কাছে দেশের স্বার্থ বিলিয়ে দেবার নিকৃষ্ঠতম উদাহরণ রামপালে কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। আইন ভেঙ্গে, সংবিধান ভেঙ্গে জনগণকে ধোঁকা দিয়ে তৈরি হচ্ছে রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। মাত্র ১৫ ভাগ বিনিয়োগ করে ভারত মালিকানা পাবে ৫০ ভাগ। আর ধ্বংস হবে এদেশের সুন্দরবন। এদেশের অর্থনীতি। এ ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র রুখে দেয়ার দায়িত্ব জনগণের (৪)

সংখ্যা: ২২৯তম সংখ্যা | বিভাগ:

(পূর্ব প্রকাশিতের পর)

পরিবেশবিদদের মতে, সুন্দরবনের পাশে এমন মারাত্মক দূষণকারী একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র গড়ে উঠলে তা সুন্দরবনের পরিবেশ ও রয়েল বেঙ্গল টাইগারসহ ওই এলাকার জীববৈচিত্র্যকে হুমকির মুখে ঠেলে দেবে। পাশাপাশি সুন্দরবনের মাটির গুণগতমান নষ্ট, প্রাণীদের হরমোন জাতীয় সমস্যা, প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস, নদী দূষণ, মাটির উর্বরতা হ্রাস এবং উদ্ভিদের বিকাশকে বাধাগ্রস্ত  করবে। যে কারণে এটি নিয়ে বন বিভাগ আপত্তি করেছিল। কিন্তু বন বিভাগের আপত্তিকেও বিবেচনায়  নেয়া হয়নি। যদিও নিয়মানুযায়ী সুন্দরবনের মালিক বন অধিদফতর এবং এ বিষয়ে তাদের মতামতই সবচেয়ে  বেশি প্রাধান্য পাওয়ার কথা।

বন অধিদফতর তাদের লিখিত আপত্তিতে সরকারকে জানায়, কয়লাভিত্তিক পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপন করা হলে সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগার তথা সমস্ত জীববৈচিত্র্য হুমকির সম্মুখীন হবে।

পরিবেশ বিজ্ঞানীরা বলছে, কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বিপুল পরিমাণ কার্বন ডাই অক্সাইড, সালফার ডাই অক্সাইড, নাইট্রাস অক্সাইড, বিভিন্ন ক্ষুদ্র কণিকা, কার্বন মনো অক্সাইড, মারকারি বা পারদ, আর্সেনিক, সীসা, ক্যাডমিয়ামসহ পরিবেশ ও মানব স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর বিভিন্ন উপাদান নির্গত হয়। কয়লা পুড়ে ছাই তৈরি হয় এবং কয়লা ধোয়ার পর পানির সঙ্গে মিশে তৈরি হয় আরেকটি বর্জ্য  কোল স্লাজ বা স্লারি বা তরল কয়লা বর্জ্য। ছাই এবং স্লাজ উভয় বর্জ্যই বিষাক্ত কারণ এতে বিষাক্ত আর্সেনিক, মার্কারি বা পারদ, ক্রোমিয়াম এমনকি  তেজস্ক্রিয় ইউরোনিয়াম ও থোরিয়াম থাকে।

১৩২০ মেগাওয়াটের এ বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালাতে প্রতিদিন বিশাল পরিমাণ কয়লা পোড়াতে হবে। বর্তমানে বড়পুকুরিয়ায় ২৫০ মেগাওয়াটের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি চালু রাখতে প্রতিদিন কয়লা জ্বালাতে হয় ২৪০০ মেট্রিক টন। এতে ছাই হয় প্রতিদিন ৩০০ মেট্রিক টন। এ হিসেবে রামপালে কয়লা পুড়বে প্রতিদিন ১৩ হাজার মেট্রিক টন। এতে ছাই হবে প্রতিদিন প্রায় ১৬০০ মেট্রিক টন।

এছাড়া কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কঠিন ও তরল বর্জ্য বৃষ্টির পানিতে ধুয়ে, কয়লা সংরক্ষণ আধার  থেকে চুঁইয়ে ভূঅভ্যন্তরস্থ ও উপরিভাগের পানির সঙ্গে মিশে দূষণ ঘটায়। এর ফলে পানিজ উদ্ভিদ, মাছসহ পানির অভ্যন্তরের জীবচক্রের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। আবার কয়লার  ধোঁয়ার সাথে ছাই উড়ে অনেকদূর পর্যন্ত যায়। এর প্রভাবে মাটি ও উদ্ভিদসমূহ নানামুখী ক্ষতির শিকার হয়। এ ছাড়াও টারবাইন, কম্প্রেসার, পাম্প, কুলিং টাওয়ার, কনস্ট্রাকশনের যন্ত্রপাতি ও পরিবহনের যানবাহনের মাধ্যমে ব্যাপক শব্দ দূষণ ঘটে থাকে। এসব কারণেই আবাসিক এলাকা, কৃষিজমি এবং বনাঞ্চলের আশপাশে কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করার অনুমতি প্রদান করা হয় না।

গত বছরের ৫ মে ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান ড. আব্দুস সাত্তার ম-লের   নেতৃত্বে পরিবেশবিদদের একটি দল প্রস্তাবিত কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির জায়গা পরিদর্শন করে। তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কারণে সুন্দরবনের ২৩ ধরনের ক্ষতির হিসেব তুলে ধরে। তার মধ্যে রয়েছে,এতে সুন্দরবনের স্বাভাবিক চরিত্র বিনষ্ট হবে, তৈরি হবে অসংখ্য কয়লা ডিপো, শুরু হবে গাছ কাটা, বনে আগুন লাগানো, বাঘ, হরিণ, কুমির ধরা। কয়লা পোড়া সালফার ডাই অক্সাইড, নাইট্রাস অক্সাইড, কার্বন মনো অক্সাইড, কার্বন ডাই অক্সাইড, ক্লোরোফ্লোরো কার্বন ইত্যাদি সুন্দরবনের জৈবিক পরিবেশ ও বায়ুম-লকে বিঘ্নিত করবে। বায়ুম-লের সালফার ডাই অক্সাইড ও কার্বন যৌগসমূহ থেকে সৃষ্ট গ্রীন হাউজ গ্যাস বনের জন্য অতি মারাত্মক ক্ষতিকর এসিড বৃষ্টি ঘটাবে এবং তা শুধু সময়ের ব্যাপার। ওই অঞ্চলের এবং আশপাশের কৃষি জমিতে উৎপাদিত কৃষিপণ্য খেলে মানবদেহে ছড়িয়ে পড়বে অ্যাজমা, ফুসফুসবাহিত নানা রোগ, এমনকি ক্যান্সারের সম্ভাবনাও রয়েছ। প্রস্তাবিত কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ প্রকল্প স্থাপিত হলে সুন্দরবনের ঐতিহ্য মূল্য ব্যাপকভাবে হ্রাস পাবে।

এসব ক্ষতির বাইরে রয়েছে পানির হিসাব। কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে প্রচুর মিষ্টি পানির প্রয়োজন হয়। রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির পানি আসবে সংলগ্ন পশুর নদী থেকে। এজন্য বিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিচালনাকারীদের লবণাক্তমুক্তকরণ প্ল্যান্ট বসানোর প্রয়োজন পড়বে।

পশুর নদী এমনিতেই শুকিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে পশুর নদী থেকে এই হারে পানি প্ল্যান্টে টেনে নিলে সেক্ষেত্রে নদীর উপর নির্ভরশীল জনগোষ্ঠীর  সেচকার্য বিঘিœত হবে। এই নদীটি সুন্দরবনের অনেকখানি অংশের জীবনপ্রবাহকে টিকিয়ে রেখেছে। নদীটি শুকিয়ে যেতে থাকলে মারা পড়বে সুন্দরবনের অসংখ্য প্রাণী। (সূত্র: সুন্দরবনভিত্তিক বিষয়ক বিভিন্ন বই, কোর্ট রেফারেন্স, ইন্টারনেট সোর্স, বিভিন্ন সাক্ষাৎকার ও সাম্প্রতিক পত্র-পত্রিকা এবং সংবিধান) (ইনশাআল্লাহ চলবে)

-মুহম্মদ ওয়ালীউর রহমান

ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি ও ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা-৫০

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-১৩ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৫১

‘থার্টিফাস্ট নাইট, ভালেন্টাইন ডে আর পহেলা বৈশাখের’ নামে হুজ্জোতির জন্য ধর্মব্যবসায়ীদের কৌশলগত নিষ্ক্রীয়তা, স্বার্থবাদী মৌসুমী রাজনৈতিক তৎপরতা এবং সংস্কৃতি বিপননকারীদের দূরভিসন্ধিতা ও মধ্যবিত্তের  তত্ত্ব-তালাশহীন প্রবণতা তথা হুজুগে মাতা প্রবৃত্তিই দায়ী

অবশেষে জামাতীরা স্বীকার করিল যে, মুক্তি পাইতে চাহিলে মুরীদ হইতে হয়। আল্লাহ পাক-এর ওলী বা দরবেশ হইতে পারিলে মুক্তি পাওয়া যায়। কিন্তু জামাতীরা তাহা নয় বলিয়াই আখিরাত তো দূরের কথা দুনিয়াতেই তাহারা দুর্নীতির দায়ে গ্রেফতার। আর মইত্যা রাজাকারের ফতওয়া অনুযায়ী তো- তাহাকেই কতল করা ওয়াজিব।