ভারত কার্যতঃ বাংলাদেশকে মরুভূমি করার যুদ্ধ শুরু করেছে। ভারতের আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্পের বাস্তবায়ন তার সাক্ষাৎ প্রমাণ। চরম নতজানু পররাষ্ট্রনীতির সমালোচনা করলেই দায়িত্ব শেষ হবে না। জনস্বার্থেই জনগণকে সোচ্চার প্রতিবাদী হয়ে ভারতের আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্প প্রতিহত করতে হবে।

সংখ্যা: ২৬৫তম সংখ্যা | বিভাগ:

বাংলাদেশের মনোলোভা, মনোরোমা, শস্য শ্যামলিমা, অভূতপূর্ব সবুজ নৈসর্গিক দৃশ্যের প্রাণ হলো নদী। আর নদী ঠিক থাকতে হলে উজান থেকে প্রবাহ সুষ্ঠু থাকতে হবে। কিন্তু বর্তমানে ভারতে যে আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে তাতে বাংলাদেশের নদীগুলোর অস্তিত্ব মহাসঙ্কটে পড়বে। বাকী নদীগুলোও বিলীন হবে। দেশ মরুময় হবে। বিপর্যস্ত ও বিধ্বস্ত হবে জনজীবন তথা জনগণ।

দৈনিক আল ইহসান শরীফের তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, ১৯৪৭ সালের স্বাধীনতা লাভের পরপরই ভারতের বিশিষ্ট প্রকৌশলী ও তৎকালীন নেহেরু মন্ত্রিসভার পানিসম্পদমন্ত্রী ড. কে এল রাও ভারতের সব নদী এবং নীরাশয় সংযুক্ত করার এক সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার কথা তার ‘ওয়াটার রিসোর্সেস অব ইন্ডিয়া’তে ব্যক্ত করে। ১৯৮০ সালের দিকে পরিকল্পনাটি পুনর্জীবিত করা হয়। ২০০৩ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী পরিকল্পনাটির ব্যাপারে একটি টাস্কফোর্স গঠন করে ভারতকে বন্যা ও খরামুক্ত করার ঘোষণা দেয়।

বাজপেয়ীর আমলে ভারত প্রথম যে আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্পের অবতারণা করেছিল, নরেন্দ্র মোদী সরকার আবার নবউদ্যমে সে কাজে হাত দিয়েছে।

প্রকল্প বাস্তবায়নে দেশের বিভিন্ন রাজ্যের সেচমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকের পর ভারতের পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী সানওয়ার লাল জাট ঘোষণা করেছে, সরকারের পাঁচ নং প্রকল্পটা হবে মানস-সঙ্কোশ-তিস্তা-গঙ্গার মধ্যে সংযোগ ঘটানো; এ সবগুলোই আন্তর্জাতিক নদী। আন্তর্জাতিক নদী হওয়ায় ভারতের এই মহাপ্রকল্প প্রভাবিত করবে বাংলাদেশকে, বাংলাদেশের সমাজ ব্যবস্থাকে তথা গোটা জীবন ব্যবস্থাকে।

উল্লেখ্য, আন্তঃনদী সংযোগ পরিকল্পনার মূল লক্ষ্য হলো ব্রহ্মপুত্র অববাহিকা, যেখানে পানি উদ্বৃত্ত বলে ধরা হয়, সেখান থেকে গঙ্গায় এবং পরে পূর্ব ও দক্ষিণ ভারতে পানি নিয়ে যাওয়া। দিল্লিতে ‘সাউথ এশিয়া নেটওয়ার্ক অন ড্যাম, রিভার্স অ্যান্ড পিপল’এর কর্ণধার হিমাংশু ঠক্কর বলছে, দেশে আন্তঃনদী সংযোগ পরিকল্পনার মূল প্রকল্প কিন্তু আসলে এটাই।

এছাড়া আন্তঃনদী সংযোগ মহাপ্রকল্পের অংশ হিসেবে যেসব নদীর অববাহিকায় উদ্বৃত্ত পানি থেকে তা অন্য অববাহিকায় যেখানে ঘাটতি রয়েছে সেখানে স্থানান্তর করা হবে। এরমধ্যে ১৮টি নদী হিমালয় অঞ্চলের ও ২০টি উপদ্বীপ অঞ্চলের। এ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ভারত সরকার সারা দেশে ৭৪টি পানির আধার ও বেশকিছু বাঁধ নির্মাণ করবে। এর মাধ্যমে দেশটিতে তারা আড়াই কোটি হেক্টর জমি সেচের আওতায় এনে পানিবিদ্যুৎ উৎপাদন নিশ্চিত করবে। এরই মধ্যে তারা ১১টি সংযোগ খালের সমীক্ষা সম্পন্ন করে ফেলেছে।

ভারতের আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্পগুলো হলো: তিস্তা-গঙ্গা-মানস-সঙ্কোশ, কোশি-মেচি, কোশি-ঘাঘড়া, গন্ধক-গঙ্গা, গঙ্গা-যমুনা, সারদা-যমুনা, যমুনা-পশ্চিম যমুনা খাল থেকে শবরমতি সংযোগ পর্যন্ত রাজস্থান খালের সম্প্রসারণ, চুনার-শোন বাধ সংযোগ, শোন বাঁধ-গঙ্গা সংযোগের দক্ষিণাঞ্চলীয় উপনদী, গঙ্গা-দামোদর সংযোগ, ফারাক্কা-সুন্দরবন সংযোগ ও ব্রহ্মপুত্র-গঙ্গা (জেটিএফ) সংযোগ।

আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্পের অংশ হিসেবে আসাম, পশ্চিমবঙ্গ ও বিহারের ‘তিস্তা-গঙ্গা-মানস-সঙ্কোশ’ নদী সংযোগ প্রকল্পের কাজ শুরু হবে।

এ প্রকল্প এ অঞ্চলের কৃষি ও পানির প্রাপ্যতা আগের চেয়ে অনেক সহজ করে তুলবে; একই সঙ্গে তা দক্ষিণের রাজ্যগুলোতে বিপুল পানি সরবরাহ নিশ্চিত করবে। ভারতের ‘ন্যাশনাল ওয়াটার ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি’ প্রায় দুদশকের পর্যবেক্ষণে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ৩৮টি নদীসহ বিভিন্ন নদীর মধ্যে ৩০টি সংযোগ খাল স্থাপনের পরিকল্পনা করে।

ভারতের ১২ হাজার কোটি মার্কিন ডলার ব্যয়ে এই প্রকল্পের পরিকল্পনা তৈরির কাজ ২০১৬ সালের মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে বলে জানা গেছে। প্রকল্পের আওতায় ১৭ হাজার ৩০০ কোটি ঘনমিটার পানি গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র থেকে প্রত্যাহার করে ভারতের উত্তর-পশ্চিম ও দক্ষিণ অঞ্চলের শুকনো এলাকায় নিয়ে যাওয়া হবে।

প্রকল্পটির লক্ষ্য হলো, দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তর এই পানি-প্রবাহ ব্যবহার করে ১২ হাজার ৫০০ কিলোমিটার খাল খনন, তিন কোটি ৫০ লাখ হেক্টর জমিতে সেচ প্রদান এবং ৩৪ হাজার মেগাওয়াট পানিবিদ্যুৎ উৎপাদন। এছাড়া নৌ-চলাচল ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং খরা পরিস্থিতিও এভাবে মোকাবিলা করা হবে।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, দৈনিক আল ইহসান শরীফের পর্যালোচনায় জানা গেছে, ভারত সরকার তার নিজ দেশের কৃষি, সেচ ও পানিবিদ্যুতের প্রয়োজন মেটানোর তাগিদে যে আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে তাতে বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল, উত্তর-মধ্যাঞ্চল, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল ও দক্ষিণ-মধ্যাঞ্চলের শাখা নদীগুলোর পানি-প্রবাহ আশঙ্কাজনকহারে কমে যাবে। ভারতজুড়ে আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্পের প্রভাব বিবেচনায় বাংলাদেশের পানি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব সংযোগ খালের মাধ্যমে পানি প্রত্যাহার করা হলে বাংলাদেশের বিশাল অংশ কার্যত মরুভূমিতে পরিণত হবে।

এই মরুময়তার থাবায় মানুষের জীবনযাত্রা, প্রকৃতি ও কৃষিতে বিপর্যয় নেমে আসবে। আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্পের মাধ্যমে ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা ও গঙ্গা নদীর পানি-প্রবাহ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আর শুকিয়ে যাবে পানিভূমিগুলোও, যার লক্ষণ এখনই দেখা যাচ্ছে। লবণাক্ততা দেশের মধ্যাঞ্চল পর্যন্ত উঠে আসতে পারে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি কমে গেলে। ফারাক্কা বাঁধের প্রভাবে ইতোমধ্যেই দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের লবণাক্ততা বৃদ্ধি পেয়েছে আশঙ্কাজনকভাবে।

অপরদিকে ব্রহ্মপুত্রের উপর নির্ভরশীল বাংলাদেশ অংশ যেখানে ধান ও গমের মোট উৎপাদনের ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ হয়ে থাকে সে অঞ্চল পানির অভাবে নিষ্ফলা ধূসর মরু হয়ে যেতে পারে। গঙ্গার উপর নির্ভরশীল দেশের এক-তৃতীয়াংশ এলাকার ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটবে। নদীর সঙ্গে সম্পৃক্ত কৃষি, মৎস্য, পশুসম্পদ, শিল্প-কারখানা বিপর্যস্ত হবে। পাশাপাশি আর্সেনিক দূষণ তীব্র হবে, নদীর নাব্যতা কমে গিয়ে নৌচলাচল ব্যাহত হবে, ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর নেমে যাবে, ক্ষতিগ্রস্ত হবে বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল সুন্দরবন।

এ ধরনের প্রকল্পে বাংদেশের নদীর প্রাকৃতিক প্রবাহ বদলে যাবে। সৃষ্টি হবে পানিবদ্ধতা। অসংখ্য মানুষ বাস্তুহারা হবে। নদীর পলিপ্রবাহ ব্যাহত ও মৎস্যসম্পদ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ডুবে যাবে অসংখ্য বন আর খোলা মাঠ। এর কারণে বাংলাদেশের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হবে।

আন্তর্জাতিক আইন ও গঙ্গার পানিবণ্টন চুক্তি অনুযায়ী ভারত একতরফাভাবে আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারে না, যা দুই দেশের বিদ্যমান চুক্তি অনুযায়ী আইনের লঙ্ঘন।

বিশ্বের অন্যান্য অনেক দেশ অভিন্ন নদী নিয়ে তাদের দেশের অধিকার রক্ষা করেছে। বিশ্বের অভিন্ন নদীগুলোর মধ্যে ইউরোপের ১১টি দেশ দানিউব নদীর পানি বণ্টন নিয়ে সমঝোতায় পৌঁছেছে। এশিয়ার মেকং নদীর পানি বণ্টনে ভিয়েতনাম, লাওস, কাম্পুচিয়া, থাইল্যান্ড প্রভৃতি দেশকে সহযোগিতা করেছে জাতিসংঘ। এভাবে যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিকো, ভারত ও পাকিস্তান প্রভৃতি দেশের মধ্যে অভিন্ন নদীর পানির পরস্পর নায্য হিস্যা প্রাপ্তিতে একমত হতে পেরেছে। কিন্তু বাংলাদেশ সরকারের নিষ্ক্রিয়তা ও নতজানু নীতির কারণে ভারত দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশকে শোষণ করে আসছে। আর এখন সর্বশান্ত করতে চাইছে। একথা ঠিক যে, সরকারের চরম নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণেই এসব হচ্ছে। তবে এক্ষেত্রে সরকার যদি ব্যর্থ হয় জনগণ কী শুধু চেয়ে চেয়ে দেখবে? দেশটা সরকারের নয়। জনগণের। কাজেই জনস্বার্থেই জনগণকেই সোচ্চার প্রতিবাদী হয়ে ভারতের আন্তঃসংযোগ প্রকল্প প্রতিহত করতে হবে।

-আল্লামা মুহম্মদ মাহবুবুল্লাহ, ঢাকা।

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কাযযাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ উনার হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-১০৩

মুবারক হো- হাদিউল উমাম, বাবুল ইলম, কুতুবুল আলম, জামিউল আলক্বাব, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত শাহদামাদ ছানী হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার মুবারক বিলাদত শরীফ

হিন্দুরা অন্তর থেকে মুসলমানদেরকে ঘৃণা করে ও অস্পৃশ্য মনে করে। আবুল মনসুর আহমদ, বঙ্গবন্ধুর আত্মকথা, মীর মোশাররফসহ অনেক সাহিত্যিকের লেখনীতেই এর প্রমাণ রয়েছে। বিশেষত রবীন্দ্র বঙ্কিম শরৎসহ হিন্দু সাহিত্যিকদের রচনায় এর প্রমাণ বিস্তর। কিন্তু বর্তমানে তথাকথিত বুদ্ধিজীবীরা ও হিন্দু তোষণকারী প্রশাসন পারলে হিন্দুদের মাথায় তুলে রাখে। হিন্দুরা যে মুসলমানদের শত্রু জ্ঞান করে- সে কথা অস্বীকার করে। পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে মুশরিক-হিন্দুদের বড় শত্রু বলা হয়েছে। অতএব, ওদের থেকে সাবধান।

ভারতকে কানেকটিভিটির নামে ট্রানজিট দেয়ার বৈধতা বর্তমান সরকারের নেই। ভারতকে কোনোমতেই ট্রানজিট দেয়া যাবে না। দিলে ৯৭ ভাগ ঈমানদার জনগোষ্ঠী বরদাশত করবে না।

আন্তর্জাতিক পানি ব্যবহারের বিধিবিধান লঙ্ঘন করে ভারত নির্মাণ করছে টিপাইমুখ বাঁধ। বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের জোর প্রতিবাদ দরকার।