ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদ প্রচারের নেপথ্যে-৮

সংখ্যা: ১৮৫তম সংখ্যা | বিভাগ:

-আল্লামা আবুল বাশার মুহম্মদ রুহুল হাসান

[শয়তান যে মানুষকে নেক সুরতে ধোঁকা দেয়, এ বিষয়টি ভালোভাবে অনুধাবন করেছিলো শয়তানের অনুচর ইহুদী এবং খ্রিস্টানরা। মুসলমানদের সোনালী যুগ এসেছিল শুধু ইসলামের পরিপূর্ণ অনুসরণের ফলে। শয়তানের চর ইহুদী খ্রিস্টানরা বুঝতে পেরেছিল মুসলমানদের মধ্যে বিভেদ, অনৈক্য, সংঘাত সৃষ্টি করতে পারলেই ইসলামের জাগরণ এবং বিশ্বশক্তি হিসেবে মুসলমানদের উত্থান ঠেকানো যাবে। আর তা করতে হবে- ইসলামের মধ্যে ইসলামের নামে নতুন মতবাদ প্রবেশ করিয়ে। শুরু হয় দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা; যার মূলে থাকে খ্রিস্টীয় ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ। জন্ম হয় ওহাবী মতবাদের। ওহাবী মতবাদ সৃষ্টির মূলে থাকে একজন ব্রিটিশ গুপ্তচর- হেমপার। সে মিসর, ইরাক, ইরান, হেজাজ ও তুরস্কে তার গোয়েন্দা তৎপরতা চালায় মুসলমানদের বিভ্রান্ত করার জন্য। ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদের উপর তুর্কি ভাষায় রচিত মুহম্মদ আইয়ূব সাবরি পাশার “মিরাত আল হারামাইন” কিতাবের ইংরেজি অনুবাদ থেকে ধারাবাহিকভাবে অনুবাদ প্রকাশ করা হচ্ছে। ইনশাআল্লাহ।

(ধারাবাহিক)

মাযার শরীফগুলো তখন চিহ্নহীন হয়ে পড়ে। যদিও তারা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর রওজা মুবারক-এর গম্বুজও নামিয়ে ফেলার চেষ্টা করতে উদ্যত হয়েছিল। কিন্তু যারাই কুড়াল হাতে নিয়েছিল তাদের কেউ পাগল হয়ে যায়, কারো শরীর অবশ হয়ে যায় এবং পরবর্তিতে কেউ আর সেই ঘৃণিত অপরাধ করতে সক্ষম হয়নি। ওহাবীরা যখন মদীনা শরীফ-এ অবস্থান নেয় তখন ইবনে সউদ মুসলমানদের জড়ো করে তাদের অপবাদ দেয় এবং বলে, তোমাদের ধর্ম আজকে থেকে ওহাবী মতবাদ দ্বারা পূর্ণ করা হলো এবং আল্লাহ পাক তোমাদের উপর সন্তুষ্ট। তোমাদের পিতারা ছিল কাফির এবং মুশরিক। তাদের ধর্ম অনুসরণ করো না। প্রত্যেকে বলো যে, তোমাদের পূর্ব পুরুষরা কাফির ছিল। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর রওজা মুবারক-এর সামনে দাঁড়ানো এবং উনার কাছে কিছু আরজু করাকে নিষিদ্ধ বলে ওহাবীরা ফতওয়া দেয়। (নাঊযুবিল্লাহ) ওহাবীরা আরও বলে, শুধু রওজা মুবারক-এর পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় বলতে হবে, ‘সালাম ইয়া মুহম্মদ’ সুপারিশ করার তিনি কেউ নন। (নাঊযুবিল্লাহ)।

প্রথম ওহাবী মিশন:

আব্দুল আযীয নিষ্ঠুরভাবে মুসলমানদের হত্যা করে শুধু ওহাবী মতবাদ প্রচারের লক্ষ্যে। সে ১২১০ সালে (১৭৯৫) মক্কা শরীফ-এ তিনজন ওহাবীকে পাঠায়। আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের উলামাগণ কুরআন শরীফ এবং হাদীছ শরীফ-এর মাধ্যমে উত্তর প্রদান করেন। পক্ষান্তরে ওহাবীরা কোন উত্তর দিতে সক্ষম হয়নি। ওহাবীরা সত্য স্বীকার করা ভিন্ন অন্য কোন পথ খুঁজে পায়নি। তারা একটি দীর্ঘ ঘোষণা দেয় এবং স্বাক্ষর করে যে আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত-এর পথটি সঠিক এবং তারা ভুলের মধ্যে রয়েছে, যে পথ স্বাভাবিক নয়। কিন্তু আব্দুল আযীয তাদের কথায় কর্ণপাত করেনি। কারণ সে তখন একটি রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষের পেছনে দৌড়াচ্ছিল এবং নেতা হবার স্বপ্নে হৃদয়কে পূর্ণ করেছিল। ধর্মের আড়ালে সে মুসলমানদের উপর জুলুম বাড়িয়ে দিয়েছিল।

তিন ওহাবী মক্কা শরীফ-এর মুসলমানদের বুঝাবার লক্ষ্যে ২০টি বিষয় উপস্থাপন করে। (সেগুলো সংক্ষিপ্তভাবে উপরের তিনটি বিষয়ের মধ্যে স্থান পায়) ওহাবী নজদী বলে বেড়াতো যে, হাম্বলী মাযহাবের ইমাম, ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর ইজতিহাদ হচ্ছে, ইবাদত ঈমানের একটি শাখা। কিন্তু ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর সকল ইজতিহাদ লিপিবদ্ধ ছিল এবং মক্কা শরীফ-এর উলামাদের তা বিস্তারিত জানা ছিল। সুতরাং উনারা সহজেই ঐ তিনজন ওহাবীকে বুঝাতে সক্ষম হন যে ওহাবীদের এ ধরনের অপবাদ মিথ্যা।

ঐ তিন ওহাবী সত্যকে উপেক্ষা করে তাদের ধারণায় বদ্ধমূল থেকে বলতো তাদের ওহাবী আক্বীদাই সত্য। তারা আরও বলতে থাকে, মক্কা শরীফ-এর মুসলমানগণ নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর রওজা মুবারক, হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এবং হযরত মাহযুব রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর মাযার শরীফ যিয়ারত করেন এবং বলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ, ও ইবনে আব্বাস ও মাহযূব (মাহযুব হচ্ছেন সাইয়্যিদ আব্দুর রহমান যিনি সেই সময়ের প্রখ্যাত আলিম ছিলেন। ১২০৪ (১৭৯০) সালে তিনি ইন্তিকাল করেন এবং মুয়ালা কবরস্থানে শায়িত আছেন।) ওহাবীরা আরও বলে, “আমাদের ইমাম ওহাবী নজদীর ইজতিহাদ অনুযায়ী যারা ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহম্মদুর রসূলাল্লাহ’ বলেন, কিন্তু আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো ইবাদত করেন তবে তারা কাফির হয়ে যান। এক্ষেত্রে তাদের হত্যা করা এবং তাদের সম্পদ লুণ্ঠন করা শরীয়তসম্মত।” আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের উলামারা তার প্রতি উত্তরে বলেন, আল্লাহ পাক-এর মাহবুব বান্দাগণের মাযার শরীফ যিয়ারত করা, উনাদের ওসীলা দিয়ে দুয়া করার অর্থ উনাদের ইবাদত করা নয়। যিয়ারতকারীরা তাদের ইবাদত করার উদ্দেশ্য নিয়ে যিয়ারত করে না বরং তাদের ওসীলা করে আল্লাহ পাক-এর কাছে দুয়া করেন। তারা দলীল দিয়ে প্রমাণ করেন যে, এটি শরীয়তসম্মত এমনকি প্রয়োজনীয়ও বটে। (চলবে)

ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি ও ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা-৫০

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-১৩ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৫১

‘থার্টিফাস্ট নাইট, ভালেন্টাইন ডে আর পহেলা বৈশাখের’ নামে হুজ্জোতির জন্য ধর্মব্যবসায়ীদের কৌশলগত নিষ্ক্রীয়তা, স্বার্থবাদী মৌসুমী রাজনৈতিক তৎপরতা এবং সংস্কৃতি বিপননকারীদের দূরভিসন্ধিতা ও মধ্যবিত্তের  তত্ত্ব-তালাশহীন প্রবণতা তথা হুজুগে মাতা প্রবৃত্তিই দায়ী

অবশেষে জামাতীরা স্বীকার করিল যে, মুক্তি পাইতে চাহিলে মুরীদ হইতে হয়। আল্লাহ পাক-এর ওলী বা দরবেশ হইতে পারিলে মুক্তি পাওয়া যায়। কিন্তু জামাতীরা তাহা নয় বলিয়াই আখিরাত তো দূরের কথা দুনিয়াতেই তাহারা দুর্নীতির দায়ে গ্রেফতার। আর মইত্যা রাজাকারের ফতওয়া অনুযায়ী তো- তাহাকেই কতল করা ওয়াজিব।