ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদ প্রচারের নেপথ্যে-৭

সংখ্যা: ১৮৪তম সংখ্যা | বিভাগ:

-আল্লামা আবুল বাশার মুহম্মদ রুহুল হাসান

[শয়তান যে মানুষকে নেক সুরতে ধোঁকা দেয়, এ বিষয়টি ভালোভাবে অনুধাবন করেছিলো শয়তানের অনুচর ইহুদী এবং খ্রিস্টানরা। মুসলমানদের সোনালী যুগ এসেছিল শুধু ইসলামের পরিপূর্ণ অনুসরণের ফলে। শয়তানের চর ইহুদী খ্রিস্টানরা বুঝতে পেরেছিল মুসলমানদের মধ্যে বিভেদ, অনৈক্য, সংঘাত সৃষ্টি করতে পারলেই ইসলামের জাগরণ এবং বিশ্বশক্তি হিসেবে মুসলমানদের উত্থান ঠেকানো যাবে। আর তা করতে হবে- ইসলামের মধ্যে ইসলামের নামে নতুন মতবাদ প্রবেশ করিয়ে। শুরু হয় দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা; যার মূলে থাকে খ্রিস্টীয় ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ। জন্ম হয় ওহাবী মতবাদের। ওহাবী মতবাদ সৃষ্টির মূলে থাকে একজন ব্রিটিশ গুপ্তচর- হেমপার। সে মিসর, ইরাক, ইরান, হেজাজ ও তুরস্কে তার গোয়েন্দা তৎপরতা চালায় মুসলমানদের বিভ্রান্ত করার জন্য। ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদের উপর তুর্কি ভাষায় রচিত মুহম্মদ আইয়ূব সাবরি পাশার “মিরাত আল হারামাইন” কিতাবের ইংরেজী অনুবাদ থেকে ধারাবাহিকভাবে অনুবাদ প্রকাশ করা হচ্ছে। ইনশাআল্লাহ।

(ধারাবাহিক)

এটা নিশ্চিত যে, প্রত্যেক মুসলমান বিশ্বাস করেন আল্লাহ পাক সবকিছু সৃষ্টি করেছেন, তিনি ছাড়া আর কেউ কোন কিছু সৃষ্টি করতে পারেন না। যদি কোন মুসলমান বলে, আমি এখন নামায পড়বো না, এতে বোঝা যাবে যে তিনি বোঝাতে চাচ্ছেন তিনি ঐ সময় বা ঐ স্থানে নামায পড়বেন না অথবা তিনি ইতোমধ্যেই নামায আদায় করেছেন।

কেউ তাকে দোষারোপ করতে পারবে না, অপবাদ দিতে পারবে না যে, তিনি আসলে নামায পড়তে চান না। ঐ ব্যক্তিকে যেমনি কাফির, মুশরিক বলা থেকে মুসলমানদের বিরত থাকতে হবে তেমনি যারা মাযার শরীফ যিয়ারত করেন এবং ওফাতপ্রাপ্ত আওলিয়ায়ে কিরামগণের কাছে সুপারিশের জন্য দুয়া চান এবং “আমার ঐ দুয়াগুলো যেন কবুল হয়” বা বলেন, “ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমার জন্য সুপারিশ করুন।” এতে বোঝা যায় মুসলমানগণের এরকম শব্দ ব্যবহার করা শরীয়তসম্মত, সৎ নিয়তযুক্ত।

ওহাবী নজদীর বিশ্বাস এর প্রচারণাসমূহ সমূলে উৎপাটন করা হবে পূর্ণ ইলম এবং প্রজ্ঞার দ্বারা। বহু কিতাব রচিত হয়েছে যেখানে প্রমাণ করা হয়েছে ওহাবী নজদী ভুল পথে ছিল এবং মুসলমানদের অপবাদ দিয়েছিল। এছাড়াও ইসলামের মধ্য থেকেই ইসলামের ক্ষতিসাধনের চেষ্টা করেছিল। ইয়েমেনের একজন প্রখ্যাত মুফতী সাইয়্যিদ আব্দুর রহমান (রহমতুল্লাহি আলাইহি) লিখেন যে, একটি হাদীছ শরীফ-এর উদ্ধৃতিই যথার্থ হবে যা প্রমাণ করে ওহাবী নজদী ভুল পথে ছিল। “আরবের পূর্ব দেশ থেকে একটি সম্প্রদায়ের আবির্ভাব হবে, তারা কুরআন শরীফ পড়বে যা তার গলার নীচে নামবে না। তারা ইসলামকে ত্যাগ করবে, যেমনি ধনুক থেকে তীর ছুটে যায়। তারা দাড়ি মুণ্ডাবে।” তাদের মু-িত চেহারাগুলো স্পষ্ট প্রকাশ করবে যে এরা ওহাবী নজদীর অনুসারী এবং ভুল পথে চালিত। এই হাদীছ শরীফ জানার পর আর অন্য কোন কিতাব পড়ারও প্রয়োজন পরে না। ওহাবী নজদীর কিতাবে নির্দেশ দেয়া আছে যে, তার অনুসারীরা মাথা এবং মুখের অংশবিশেষ মুণ্ডাবে। এরকম নির্দেশ ৭২ ফিরকার অন্যান্য দলগুলোর মধ্যে নেই।

ওহাবী নজদী মহিলাদের মাথা মু-নের নির্দেশ দিয়েছিল। একজন মহিলা জবাব দিয়েছিল, “পুরুষের দাড়ির মত মহিলাদের মাথার চুল তাদের অলঙ্কার। আল্লাহ পাক যে অলঙ্কার দিয়ে মানুষকে ভূষিত করেছেন মানুষের পক্ষে তা ত্যাগ করা কি উচিত হবে?” ওহাবী নজদী এর কোন প্রতি উত্তর দিতে পারেনি। যদিও আব্দুল ওহাব নজদীর অসংখ্য বাতিল আক্বীদা রয়েছে তবে তার মধ্যে তিনটি প্রধান-

১.         সে শিখিয়েছিল, আমল ঈমানের অংশ এবং যদি কেউ কোন ফরযকে বাদ দেয়, যেমন কেউ যদি কখনো অলসতার কারণে নামায আদায় না করে অথবা কোন বছর কৃপণতা করে যাকাত আদায় না করে, যদিও সে বিশ্বাস করে নামায আদায় এবং যাকাত দেয়া ফরয, তথাপি সে কাফির হবে। সে ব্যক্তিকে অবশ্যই হত্যা করতে হবে এবং তাদের সম্পত্তি ওহাবীদের মধ্যে বিতরণ করে দিতে হবে।

২.         ওহাবীরা বিশ্বাস করে, নবী আলাইহিমুস সালাম এবং আওলিয়ায়ে কিরামগণের ওসীলা দিয়ে দুয়া করা শিরক। কোন বিপদ থেকে রক্ষা বা কোন ইচ্ছা পূরণের জন্য নবী আলাইহিমুস সালাম এবং আওলিয়ায়ে কিরামগণের কাছে চাওয়াও শিরকের অন্তর্ভুক্ত। তারা বলে, ‘দালায়েল আল খায়রাত’ বইটি পড়া নিষিদ্ধ।

৩.         তারা আরও বিশ্বাস করে কোন কবরের গম্বুজ নির্মাণ করা এবং সেখানে যারা গিয়ে দুয়া কালাম পড়ে বা খিদমত করে তাদের উদ্দেশ্যে বাতি জ্বালানোও শিরক। ছওয়াব রেছানীর উদ্দেশ্যে কোন হালাল পশু কুরবানী করাও শিরকের অন্তর্ভুক্ত। তাদের দৃষ্টিতে এরকম কাজ করা হচ্ছে আল্লাহ পাক ভিন্ন অন্য মানুষের ইবাদত করা। যখন সউদ বিন আব্দুল আযীয মক্কা শরীফ এবং মদীনা শরীফ-এ প্রবেশ করে তখন নবীদের নবী, রসূলদের রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর রওজা মুবারক ব্যতীত সকল ছাহাবা আজমাঈন ও আহলে বাইত রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম এবং সকল শহীদগণ-এর মাযার শরীফ-এর উপর যত গম্বুজ ছিল তা সব ধ্বংস করে দিয়েছিল।  (নাউযুবিল্লাহ) (চলবে)

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কাযযাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৩৩

ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা-৩৪

চাঁদ দেখা এবং নতুন চন্দ্রতারিখ শুরু নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা- ১

কোকাকোলা ও অন্যান্য কোমল পানীয় সম্পর্কে উন্মোচিত সত্য-১৮

কট্টর কমুনিস্ট মাওসেতুং এর নতুন ভাবশিষ্য ফুলতলীর লংমার্চ এবং তার শরয়ী পর্যালোচনা ও প্রসঙ্গ কথা