সরকারের এক প্রভাবশালী মন্ত্রী সম্প্রতি দুঃখ করে বলেছেন, বর্তমান মিডিয়া বিশেষত ইলেকট্রনিক মিডিয়া প্রায় পুরোটাই জামাত-জোটের হাতে। আর এ কারণে ঐসব টিভি চ্যানেলে অবাধে ইসলামের অপব্যাখ্যা, কু-ব্যাখ্যা তথা মওদুদী ব্যাখ্যার ঢেড়া পেটানোর সুযোগ পায় কুখ্যাত রাজাকার মালানা আবুল কালাম আজাদ থেকে আরো সব কুখ্যাত জামাতী-খারিজী-দেওবন্দীরাও।
এতে ত্যক্ত-বিরক্ত, ক্ষুব্ধ, মহাক্ষুব্ধ ছিলো সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ।
কিন্তু সাধারণ ধর্মপ্রাণ মানুষের প্রতি রয়েছে মহান আল্লাহ পাক-এর অশেষ রহমত। কারণ, মহান আল্লাহ পাক কালামুল্লাহ শরীফ-এ ইরশাদ করেন, “আমি হক্ব এবং নাহক্ব পার্থক্য করা ব্যতীত ছাড়বো না।”
এ আয়াত শরীফ-এর সত্যতা জাহির হয়েছে।
রাজাকার ও জামাতী টিভি ভাষ্যকার মালানা আবুল কালাম আজাদ থেকে আরেক রাজাকার ও মওদুদী তাফসীরকারক দে.হো. সাঈদী ওরফে বাংলার ইহুদী যে-
চোর, মহাচোর, ধর্মচোর, দ্বীনের চোর
ইসলামের তৃতীয় স্তম্ভ যাকাত চোর
তা সম্প্রতি পত্র-পত্রিকায় প্রকাশ পেয়েছে।
গত ১১.০৪.২০০৯ ঈসায়ী তারিখে ‘দৈনিক ইনকিলাব’ পত্রিকায় হেডিং হয়: “জামাত ও বিএনপি নেতারা যাকাত বোর্ডের পৌনে দুই কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।”
খবরে বলা হয়: “জামাত-বিএনপি’র নেতারা যাকাত বোর্ডের পৌনে দুই কোটি টাকা লুটপাট করে নিয়ে গেছে। তবে জামাতের তিন নেতা সবচেয়ে বেশি টাকা লুটপাট করেছে। এদের মধ্যে দু’জন সাবেক সংসদ সদস্য। সংসদের প্যাডে চিঠি (ডিও) দিয়ে তারা এ টাকা লুটপাট করে। দুস্থ, অসহায় ও নিঃস্ব মানুষের জন্য রাখা টাকা বিএনপি-জামাত নেতারা আর্সেনিক দূরীকরণ, প্রশিক্ষণ, গৃহনির্মাণসহ বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের নামে লুটপাট করে। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্টে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। লুটপাটকারীদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি।
জানা যায়, ২০০৪ ও ২০০৫ সালের যাকাত বোর্ডের প্রায় এক কোটি ৬৯ লাখ টাকা এক সাথে বরাদ্দ দেয়া হয়। ওই সময় যাকাত বোর্ড বিএনপি ও জামাতপন্থী নেতাদের নিয়ে গঠিত হয়। ওই বোর্ডের সদস্যরা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে এক কোটি ৪০ লাখ টাকা নিজেরাই ভাগ বাটোয়ারা করে নেয়। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি টাকা নিয়েছে সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মোশারেফ হোসেন শাহজাহান, জামাতপন্থী টিভি ভাষ্যকার মালানা আবুল কালাম আজাদ, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সাবেক পরিচালক (অর্থ) লুৎফল হক। এছাড়া জামাত নেতা মালানা দে.হো সাঈদীও এ টাকা নিয়েছে। সে জাতীয় সংসদের প্যাডে চিঠি দিয়ে এ দানা নেয়। সাবেক ধর্মমন্ত্রী ৫৬ লাখ ৫০ হাজার এবং আবুল কালাম আজাদ ৪৫ লাখ টাকা এ বোর্ড থেকে নিয়েছে। দে.হো. সাঈদীসহ দুই জামাত নেতা ৫ লাখ করে টাকা নিয়েছে বলে তদন্ত কমিটির প্রাথমিক রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।
যাকাত বোর্ডের টাকা বিএনপি-জামাত নেতারা লুটপাট করে নিয়ে গেছে বলে সম্প্রতি সংবাদপত্রে বিভিন্ন আলিম বিবৃতি দিলে বিষয়টি ইসলামিক ফাউন্ডেশন (ইফা) পরিচালক (অর্থ ও হিসাব) আইয়ুব আলী চৌধুরীকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। এ কমিটি তদন্ত করে যাকাত বোর্ডের টাকা লুটপাটের প্রাথমিক সত্যতা পায়। তদন্ত কমিটির সদস্য মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াদুদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বিষয়টি নিয়ে তারা প্রাথমিকভাবে তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন। এখন যেসব এলাকার নামে যাকাত বোর্ডের টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছিলো সেখানে সরেজমিন তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত শেষ হলে লুটপাটকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ইফা’র তদন্ত কমিটির প্রাথমিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পবিত্র কুরআন শরীফ-এ নির্ধারিত আটটি খাতের বাইরে কোন ব্যক্তি বা এনজিওকে যাকাত দেয়া যায় না। অথচ বিগত যাকাত বোর্ডের টাকা এমনভাবে বণ্টন করা হয়েছে সেখানে পবিত্র কুরআন শরীফ-এর বিধান সুস্পষ্টভাবে লঙ্ঘন করা হয়েছে। জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য মুজিবুর রহমান যুক্তিবাদী বলেছেন, বিএনপি-জামাত সরকারের আমলে যাকাত বোর্ডের টাকা কুরআন-সুন্নাহর বিধানের বাইরে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। আমরা এ লুটপাটের বিচার চাই।” (দৈনিক ইনকিলাব-১১/০৪/০৯)
উল্লেখ্য, একই রিপোর্ট ১৮-১০-০৬ তারিখে দৈনিক যায়যায়দিনেও প্রকাশিত হয়েছিল, হেডিং হয়েছিল-
‘যাকাত বোর্ডের ১ কোটি ৭০ লাখ টাকা ভাগ বাটোয়ারা’
খবরে বলা হয়: “সরকারি যাকাত বোর্ডের টাকাও এখন আর সঠিক জায়গায় যাচ্ছে না। দুস্থদের টাকা খরচ হচ্ছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে। ধর্ম প্রতিমন্ত্রী নিজে এবং যাকাত বোর্ড কমিটির লোকজন নিজেদের হাতে গড়া বিভিন্ন সংগঠনের মধ্যে দুস্থদের জন্য আসা এ টাকা ভাগ বাটোয়ারা করে নিচ্ছেন। রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে কমিটির বাইরেরও অনেকে এ টাকায় ভাগ বসাচ্ছেন। গত অর্থবছরে যাকাত ফান্ডের প্রায় এক কোটি সত্তর লাখ টাকা এভাবেই ভাগ বাটোয়ারা হয়ে গেছে।
জানা গেছে, গত ২০০৪-০৫ অর্থবছরে এক কোটি ৬৯ লাখ ৩২ হাজার ৮২ টাকা ধর্ম প্রতিমন্ত্রী নিজের খুশিমতো বরাদ্দ দিয়েছেন। এর মধ্যে নিজের গ্রামের সংগঠন ‘বন্ধুজন পরিষদের’ নামে বরাদ্দ নিয়েছেন সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা। কমিটির সাবেক সদস্য মাওলানা আবুল কালাম আজাদের সংগঠন মসজিদ কাউন্সিল ফর কমিউনিটি অ্যাডভান্সমেন্টকে দিয়েছে ৪৫ লাখ। ইসলামী ঐক্যজোটের (আমিনী) সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা মুহিউদ্দীন খানের সংগঠন তওহিদ মিশনকে দিয়েছে ৮ লাখ ৬৫ হাজার টাকা। বাকি টাকা তিনি কমিটির সদস্যদের সুপারিশে যাকাত বোর্ডের বিভিন্ন প্রকল্পে বরাদ্দ দিয়েছেন।”
বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, কুরআন-সুন্নাহয় উল্লিখিত প্রতিষ্ঠানে দেয়ার কোন বিধান নেই। আর ঐসব প্রতিষ্ঠানের নামে সংশ্লিষ্টরা যে পুরো টাকাই পেটে পুরে দেন সে সত্যই এখন বেরিয়ে এসেছে।
প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য, কুরআন শরীফ-এ মহান আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, “তোমরা ঐ কথা বল কেন? যা তোমরা নিজেরা করো না?”
জামাতী মালানা আবুল কালাম আজাদ এবং দে.হো. সাঈদী ওরফে বাংলার ইহুদী-
রাজাকারগিরি, মিথ্যা, দুর্নীতি, ইসলামের অবমাননা, ইসলামের অপব্যাখ্যা থেকে অবশেষে যাকাত ফান্ডের টাকা পর্যন্ত চুরি করেছে। প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য, এরাই দেশে ইসলামী আইন চায়। আর সে ইসলামী আইন অনুযায়ী এদেরই এখন হাত কাটতে হয়।
অপরদিকে কুরআন শরীফ-এ আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, “তোমরা ঐ কথা বল কেন? যা তোমরা নিজেরা করনা?”
সুতরাং যারা নিজেরাই রাজাকার, চোর, চরিত্রহীন তারা আবার কী করে সাধারণ মানুষকে আমলের কথা,
ইসলামের কথা শোনাতে পারে?
প্রবাদ রয়েছে, ‘চোরে না শোনে ধর্মের কাহিনী।’
তাই দেখা যাচ্ছে, ’৭১-এর রাজাকার, খুনি, ধর্ষক, লুটেরা, যুদ্ধাপরাধী জামাতীরা স্বাধীনতার ৩৬ বছর পরও ধর্মের কথা শোনেনি।
বরং ধর্মের নামে তারা ’৭১-এ যেমন রাজাকারগিরি করেছিলো তেমনি স্বাধীনতার ৩৬ বছর পর ক্ষমতায় সমাসীন হয়ে তারা ধর্মের স্তম্ভেই তথা যাকাত ফান্ডের টাকাই আত্মসাত করলো।
অথচ তারা পরিধান করে আছে ইসলামের লেবাছ।
* ইসলামী প্রোগ্রামের নামে তারা টিভি চ্যানেলে মওদুদীবাদী শিক্ষা দিচ্ছে।
* আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত বিরোধী হাজারো কুফরী আক্বীদা শিক্ষা দিচ্ছে।
* শবে বরাতের বিরুদ্ধে বলছে।
* পবিত্র ঈদে মিলাদুন্ নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বিরুদ্ধে বলছে।
* মীলাদ শরীফ ও মীলাদ শরীফ-এ ক্বিয়াম শরীফ-এর বিরুদ্ধে বলছে।
* আউলিয়ায়ে কিরামগণের বিরুদ্ধে বলছে। (নাঊযুবিল্লাহ)
মূলতঃ তথাকথিত মালানা আবুল কালাম আজাদ ও মালানা দে.হো. সাঈদী ওরফে বাংলার ইহুদী তথা এসব চোর-বাটপার লুটেরা, ধর্ষক, যুদ্ধাপরাধী, রাজাকাররা যে- আউলিয়ায়ে কিরামগণের বিরুদ্ধে বলবে এটাই সত্য।
কারণ, কুরআন শরীফ-এ আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, “নিশ্চয়ই জীন ও ইনছানের মধ্যে যারা বদ ও দুষ্ট প্রকৃতির তারাই নবী-রসূল তথা আউলিয়ায়ে কিরামগণের বিরোধিতা করে।”
যাকাত চোর মালানা আবুল কালাম আজাদ ও যাকাত চোর সাঈদী তাদের ওয়াজে আউলিয়ায়ে কিরামগণের বিরোধিতা করে যথার্থই প্রমাণ করেছে যে, তারা সত্যিই কুরআন শরীফ-এ উল্লিখিত বদ ও দুষ্ট লোক।
কিন্তু কথা হলো এসব মুনাফিকরা রয়েছে-
ইসলামের লেবাছে
ইসলামের পোশাকে
ইসলামের ছূরতে।
অপরদিকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম। এসব রাজাকার, জামাতী মুনাফিকরা ইসলামের অবমাননা করছে।
রাষ্ট্রদ্রোহী কাজ করছে।
কাজেই তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহী মামলা সহ ইসলামের নামে তাদের সব প্রোগ্রাম বন্ধ করে দেয়ার আইন প্রণয়ন করা দরকার।
“কুরআন-সুন্নাহ বিরোধী কোনো আইন পাশ হবে না”- এ প্রতিশ্রুতির সরকারের কাছে দেশের ধর্মপ্রাণ মানুষ তাই আশা করে।
মহান আল্লাহ পাক রহমত করুন কবুল করুন ও
কামিয়াব করুন। (আমীন)
মুহম্মদ মাহবুব আলম
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি ও ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা-৫০